১৫ বছরেও হয়নি স্কুল সরকারীকরণ, ৫ শিক্ষকের মানবেতর জীবন
ফরিদগঞ্জে এক স্কুল সরকারী করতে হাইকোর্টের নির্দেশের পরও


১৫ বছরেও স্কুল সরকারীকরণ না হওয়ায় বিনা বেতনে পাঠদান করে মানবেতর জীবন কাটছে পাঁচ শিক্ষকের। ২০১৩ সালে চাঁদপুরের বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সরকারীকরণ হলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও বৈষম্যের গ্যাঁড়াকলে আটকে যায় চাঁদপুরের ফরিদঞ্জের একটি বেসরকারী বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়টি জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৫নং পূর্ব গুপ্টি ইউনিয়নের ত্রিদোনা রেজিষ্টার বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। চার কক্ষ বিশিষ্ট টিনসেডে ১৬২ শিক্ষার্থী আর ৫ শিক্ষক নিয়ে চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। গেল ১৯৯৩ সালে গ্রামবাসীর উদ্যোগে নির্মিত হয় বিদ্যালয়টি।
২০১৩ সালে দ্বিতীয় ধাপে বিদ্যালয়টি সরকারীকরণের খবরে বেজায় খুশি হওয়া শিক্ষক ও গ্রামবাসী এখন হতাশাগ্রস্থ। সুকৌশলে তৎকালীন আওয়ামীলীগ নেতারা একই সালে বিদ্যালয়বিহীন এলাকা দেখিয়ে ১৫শ প্রকল্পের আওতায় একটি ভবন নেন ত্রিদোনা গ্রামে। তারপর শুরু হয় গ্রামে থাকা একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরকারীকরণের ষড়যন্ত্র।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস। ২০ বছর ধরে সরকারীকরণের আশায় এই বিদ্যালয়ে পাঠদান করে আসছেন। স্বামী আর ৪ সন্তান নিয়ে চলছে মানবেতর জীবন। চাকরী জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ দেখে যাওয়া তার স্বপ্ন। তার মতো বাকী চার শিক্ষকও ২০১৩ সাল থেকে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন।
বিদ্যালয়ে গিয়ে কথা হয় প্রধান শিক্ষক মো. ওয়ালিউল্ল্যাহ ভূঁইয়ার সাথে। তিনি বিদ্যালয়টি সরকারীকরণে বাঁধা প্রসঙ্গে বলেন, হাইকোর্টে ২০১৯ সালে তাদের একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে বেসরকারী বিদ্যালয়টি ও পাশ্ববর্তী ত্রিদোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাথে একীভূত করা এবং ৫ শিক্ষককে আত্মীয়করণের নির্দেশ দেন। রায়ের আট বছরেও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অদৃশ্য কারণে এখনো তাদেরকে একীভূত করেনি।
প্রধান শিক্ষক মো. ওয়ালিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া আরো জানান, স্কুলটি সরকারীকরণে উপজেলা, জেলা প্রশাসকসহ জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সুপারিশ থাকা স্বত্বেও মন্ত্রণালয়ে ফাইলটি বন্দি হয়ে আছে। দ্রুত বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ ও শিক্ষকদের সরকারীকরণে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও পদক্ষেপ নেয়ার প্রত্যাশা করেন তিনি।
জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন বলেন, সবশেষ ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি হাইকোর্টের নির্দেশনুযায়ী একীভূত করতে প্রাথমিক র্শিক্ষা অধিদপ্তরে সুপারিশ প্রেরণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন