খুঁজুন
শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫, ২০ আষাঢ়, ১৪৩২

নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:৩৭ অপরাহ্ণ
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। এর মধ্যে তিনি পদত্যাগ না করলে আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মশাল মিছিল বের করার কর্মসূচি দিয়েছেন তারা।
সোমবার শিক্ষা ভবনের সামনে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে এই আল্টিমেটাম দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আদ্রিতা রায়।
তিনি বলেন, আমরা এখানে যারা আছি আজকে আমরা প্রত্যেকে গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার, গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী। এই যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বসে আছেন, উনি আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে বসে আছেন। কিন্তু তিনি তার দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ‘বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্ম’ থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই।
আদ্রিতা রায় আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে তার ব্যর্থতার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে। তা না হলে আমরা আগামীকাল রাজু ভাস্কর্য থেকে আমাদের সর্বোচ্চ জনবল নিয়ে মশাল মিছিল বের করবো। সেই মিছিল থেকে আমরা আমাদের নয় দফা বাস্তবায়নের লড়াই বেগবান করবো।
এ সময় তিনি সারা দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে গণপ্রতিরোধ-আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
এর আগে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবি উত্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিশকাত তানিশা।
তাদের দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জননিরাপত্তাদানে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দায়স্বীকারপূর্বক পদত্যাগ করতে হবে; সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে; অবিলম্বে পাহাড়, সমতলসহ সারাদেশে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও নিপীড়নের সব ঘটনার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে ধর্ষণের ঘটনার বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে; সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে ধর্ষণ ও নারী-নিপীড়ন প্রতিরোধের আইনসমূহে প্রয়োজনীয় যৌক্তিক সংযোজন, বিয়োজন ও সংশোধন করতে হবে; নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর ধর্ষণের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে, ধর্ষণের শিকার ব্যক্তির লিঙ্গ, যৌনতা, ধর্ম, বর্ণ, জাতি, জাতীয়তা, প্রতিবন্ধিতা ও বয়স নির্বিশেষে সবার ন্যায়বিচারের অভিগম্যতা নিশ্চিত করতে হবে; অপরাধী বা ভুক্তভোগীর জেন্ডার নির্বিশেষে, সব ধরনের পেনিট্রেশনকে ধর্ষণের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ধর্ষণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ‘সাজা প্রদান নির্দেশিকা’ প্রণয়ন করা যা অভিযুক্ত এবং ভুক্তভোগীর শারীরিক-মানসিক অবস্থা এবং সম্ভাব্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে শাস্তির আনুপাতিকতা নিশ্চিত করবে; ধর্ষকের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে রাষ্ট্রীয় ভাবে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে; বৈবাহিক বা এই ধরনের সম্পর্কে ধর্ষণের ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতিক্রমে ভুক্তভোগীর চধংঃ ঝবীঁধষ ঐরংঃড়ৎু জিজ্ঞাসা করার ক্ষেত্রে কেবল নারী বিচারকরা থাকতে পারবেন এবং তা ক্লোজ ডোরের মধ্যে জিজ্ঞাসা করা হবে, এর নিশ্চয়তা দিতে হবে; যৌন হয়রানি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পদক্ষেপ নিতে হবে।
দাবির মধ্যে আরও রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের নীতিমালার গণতান্ত্রিক সংস্কার সাধন করে, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রের জন্য যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল গঠন আইন করে বাধ্যতামূলক করতে হবে; প্রতিষ্ঠানের অংশীজনদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে সেলের গঠনপ্রক্রিয়া আইনে বিবৃত করতে হবে; সেলের কার্যপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ এবং অভিযুক্ত বা অভিযোগকারীর যেকোনো ধরণের ক্ষমতাপ্রয়োগের আওতামুক্ত রাখতে হবে। এটি নিশ্চিত করতে সেলকে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান এবং একইসাথে সেলের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের বন্দোবস্ত করতে হবে; বিচার ও আইন ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের জেন্ডার সংবেদনশীলতার প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে; প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে জেন্ডার সংবেদনশীলতার পাঠ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; সম্মতি ও পছন্দের পরিষ্কার ধারণা দেয়, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধের তথ্য ও জ্ঞান প্রদান করে এমন পাঠ, পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ধর্ষণের কেস নেওয়া নিয়ে যে থানাগত জটিলতা তা দূর করতে হবে। বিশেষ আইন অথবা বিশেষ সেল এর অধিকারবলে ধর্ষণ এর অভিযোগ যেকোনো থানা গ্রহণ করবে এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে; ভুক্তভোগী ও সাক্ষীকে সকল প্রকার সুরক্ষা প্রদানের জন্য ২০১১ সালে পর্যালোচিত সাক্ষী সুরক্ষা আইন পুনরায় পর্যালোচনা ও প্রয়োগ করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবির মধ্যে আরও আছে চবির নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা, স্লাটশেমিং এবং বরখাস্তের ঘটনা পূর্ণ তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ স্লাটশেমিং করলে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে; বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সমন্বয়ে স্বাধীন যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। সেলে আবশ্যিক নারী সদস্য থাকবে। অপরাধ প্রমাণ সাপেক্ষে, দোষীকে শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা উক্ত সেলকে দিতে হবে।
এর আগে এই ৯ দাবিতে দুপুর আড়াইটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে’র ব্যানারে পদযাত্রাটি বিকাল ৩টা ৫ মিনিটে শিক্ষাভবনের সামনে এলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের পদযাত্রা আটকে দেয়।
এ সময় ব্যারিকেড সরানো নিয়ে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ভবন থেকে সচিবালয় যাওয়ার রাস্তায় অবস্থান নেন। এ সময় তাদের বিভিন্ন বক্তব্য ও স্লোগান দিতে শোনা যায়। এছাড়া তাদের হাতে থাকা পোস্টার-প্ল্যাকার্ডে ‘ধর্ষণ কী, ধর্ষণ কেন, আইন কী জানে’, ‘পাহাড় থেকে সমতল, সকল ধর্ষণের বিচার চাই’, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি, ধর্ষণের রাজনীতি’, ‘আমরা জন্ম থেকে শহীদ’, ‘তনু ধর্ষণ ও হত্যার বিচার কই’, ‘রাষ্ট্র তুই ধর্ষক’ প্রভৃতি প্রতিবাদী লেখা দেখা যায়।

চাঁদপুর জেলা তাঁতীদলের সাবেক নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা

জাহাঙ্গীর আলম রাজু
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫, ১:১৪ পূর্বাহ্ণ
চাঁদপুর জেলা তাঁতীদলের সাবেক নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা
জাতীয়বাদী তাঁতীদল চাঁদপুরস্থ কেন্দ্রীয় সদস্যবৃন্দ ও চাঁদপুর জেলা তাঁতীদলের সাবেক নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আগামী নির্বাচনে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিককে সার্বিক সহযোগীতা ও তার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ৩ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় বৈশাখী চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও মতবিনিময় সভায় চাঁদপুর জেলা তাঁতীদল কমিটি ও তার অধীনস্থ সকল কমিটি বিলুপ্ত করায় নতুন করে কিভাবে কমিটি করা যায় সে বিষয়েও ব্যাপক আলোচনা করা হয়।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয়বাদী তাঁতীদল কেন্দ্রটি কমিটির সদস্য মো. আবুল কালাম, চাঁদপুর জেলা তাঁতীদলের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক সফিকুর রহমান পাটওয়ারী, আরিফ ইকবাল নিটু তালুকদার, মনির হোসেন প্রধানীয়া, নার্গিস কবির খান, অলি উল্যাহ ছৈয়াল, আসাদুজ্জামান ইলিয়াস পাটওয়ারী।
চাঁদপুর জেলা তাঁতীদলের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক আলহাজ্ব মো. আশ্রাফুল আমিন মজুমদারের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, হাইমচর উপজেলা তাঁতীদলের সাবেক সভাপতি হান্নান গাজী, সাবেক সাধারণ সম্পাদ্ক সবুজ মিয়া, চাঁদপুর সদর উপজেলার সাবেক সদস্য সচিব মো. সোহেল মাঝি, কচুয়া উপজেলার সাবেক আহবায়ক কবির হোসেন মেম্বার, ছেঙ্গারচর পৌর তাঁতীদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গর্জন সরকার, মতলব দক্ষিণ উপজেলার সাবেক সভাপতি হাজী ইলিয়াস মিজি, ফারিদগঞ্জ উপজেলার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল মিয়াজী, হাজীগঞ্জ উপজেলার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন প্রমূখ।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা তাঁতীদলের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. মজিবুর রহমান গাজী, তাঁতীদল নেতা হযরত আলী, উম্মে কুলসুমা, খাদিজা আক্তার প্রমুখ।
সভায় বক্তরা বলেন, আজকে আমাদের সভার মূল উদ্দেশ্য হলো চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ভাই আগামী ১৭ বছর জেল-জুলুম, মামলা-হামলার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে দল পরিচালনা করেছেন। বহু ত্যাগ শিকারের পরও বর্তমানে একটি চক্র জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রভাকান্ড চালাচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৩ আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ভাইকে নির্বাচিত করতে তাঁতীদলের সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করে যাবে।

বিআরটিএ সেবা গ্রহিতাদের পদে পদে ভোগান্তি

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫, ৭:১৯ অপরাহ্ণ
বিআরটিএ সেবা গ্রহিতাদের পদে পদে ভোগান্তি

গাড়ির নিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, নম্বর প্লেট লাগানো ও মালিকানা হস্তান্তরসহ সেবা নিতে আসা গ্রাহকরা পদে পদে ভোগান্তিতে পড়েন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চাঁদপুর কার্যালয়ে। এই কার্যালয়ে আসলে দালালদের দেখলে মনে হবে তারা দপ্তরেরই কর্মচারি। কর্মচারিদের সাথে বাহিরের লোকদের যোগসাজসে অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে এই দপ্তর। এই ধরণের অনিয়মের চিত্র দীর্ঘদিনের। কর্তৃপক্ষ বলছে এসব অনিয়ম পর্যায়ক্রমে সমাধান করার চেষ্টা করবেন।

সরেজমিন এই কার্যালয়ে কয়েকদিন অবস্থান করে সেবা নিতে আসা লোকজন, দালাল চক্রের সদস্য ও কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এই দপ্তরে সরকারি কর্মচারি ৩জন। কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন মটরযান পরিদর্শক এবং অপরজন সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার)। এছাড়া দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক একজন কর্মচারি কাজ করেন। এদের বাহিরে দালাল হিসেবে অফিসের চেয়ার টেবিল ব্যবহার করে কাজ করেন মো. শহীদ, মো. শাহজাহান, মো. মানিক ও মোহাম্মদ আলী।

এসব দালালের বাহিরেও গ্রাহকদের কাছ থেকে কাজ করার বিনিময়ে দালালি করার জন্য আসেন অটোরিকশা চালক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা রিপন ও ট্রাক লরি শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা মন্টু।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কর্মচারি জিয়া হক হলেন অফিসের সকল অনিয়মের সমন্বয়ক। তাকে সহযোগিতা করেন শহীদ, শাহজাহান, আলী ও মানিক।

মঙ্গলবার ভোরে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে এসেছেন প্রায় দুই শতাধিক সেবা গ্রহীতা। এদের মধ্যে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যাক্তি বলেন, সরকারি ফি পরিশোধ করার পরেও নানা রকম ভুল দেখিয়ে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। দালালদের মাধ্যমে টাকা দিলে খুব সহজেই কাজ হয়ে যায়।

ফরিদগঞ্জ থেকে আসা একজন গ্রাহক বলেন, চাঁদপুরের সুমাইয়া মটরস এর মাধ্যমে তিনি ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য ১২ হাজার টাকা দিয়েছেন। তার লাইসেন্সের পাওয়ার ক্ষেত্রে সব কাজ তারা করে দিবেন।

এছাড়াও শহরের যে কয়েকটি মটর সাইকেল বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে, সবগুলোর বিক্রয় কর্মী কিংবা ম্যানেজারই হচ্ছেন এই দপ্তরের দালাল। তারা মটরসাইকেলের নিবন্ধন প্রতি অতিরিক্ত ১ হাজার টাকা দেন বিআরটিএর দপ্তরে। বিআরটিএর কার্যালয়ে হাতেনাতে পাওয়াগেছে শহরের স্টেডিয়াম রোডের হিরো নিলয় মটরসাইকেল সোরুমের ম্যানেজার নয়নকে।

এই বিষয়ে একাধিক মটরসাইকেল বিক্রয় কেন্দ্রের বিক্রয় কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিআরটিএর অফিস অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে তারাও প্রতিকার চান।

ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে আসা লোকজন প্রতিসপ্তাহের নির্ধারিত দিনে এই কার্যালয়ে আসেন। সেখানে থাকে একাধিক দালাল। নম্বর প্লেট লাগানোর কাজ করেন মোহাম্মদ আলী। তিনি হলেন দালালদের একজন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কপ্লেক্সের ভেতরে উপআনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো অফিসের পিয়ন এবায়েদুল হক। তিনি ফ্রিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে আসা লোকদের কোন জামেলা ছাড়া লাইসেন্স করে দেয়ার চুক্তি করেন। হাতে নাতে তাকে পাওয়া যাই এই কাজে।

এবায়েদুল হক বলেন, আমি ভোর ৬টায় আসি। এখানে যারা আসেন তাদের কাজের চুক্তি করে দিলে ২০০টাকা করে পাই। তিনি তাৎক্ষনিক সরকারি টেলিফোন ব্যবহার করে দালাল আলীকে নিয়ে আসেন দ্বিতীয় তলায়। আলী সাংবাদিক দেখে কেটে পড়ে।

দুইদিন এই দপ্তরে অবস্থান করলে দপ্তরের অধিকাংশ দালাল স্থান ত্যাগ করে বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। দালালদের মধ্যে মানিকের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, আমি এখন কাজ করি না। চিকিৎসার জন্য আসছি। এমনিতে অফিসের সামনে বসে আছি।

দপ্তর ছেড়ে চলে যান দালাল শহীদ। তিনি বলেন, ভাই আমার বিষয়ে কিছু লেইখেন না। আরেক দালাল শাহজাহান। তিনি প্রাইভেটকার দিয়ে পরীক্ষা নেন। সেখানে জনপ্রতি নেন ২০০টাকা। তিনি আবার ক্ষমতাদর আত্মীয় স্বজনের পরিচয় দেন। তাকে দেখলে মনে হবে অফিসের বড় বাবু।

হাতে নাতে ধরা পড়া দালাল মোহাম্মদ আলীকে জিজ্ঞাসা করা হয় আপনি এই দপ্তরের কোন পদে চাকরি করেন। সে এলোমেলো উত্তর দিয়ে কেটে পড়েন। মূলত তিনি কাজ করেন নম্বর প্লেট লাগানোর। সেখানেও লোকদের জিম্মি করে ২০০ টাকার স্থলে নেন ৪০০টাকা।

এই অফিসের দৈনিক হাজিরার কর্মচারি জিয়া হক। সরেজমিন চিত্র ধারণ ও তথ্য নেয়ার সময় তিনি বার বার এই প্রতিবেদককে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। তিনি আরেক সাংবাদিক দিয়ে ফোন করান কেন বিআরটিএর দপ্তরে যাওয়া হয়েছে। সেখানে সাংবাদিকের কাজ কি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই দপ্তরের অনিয়মের চিত্র আনতে গেলে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেন জিয়া হক। সকল অনিয়মগুলো তার কাছে স্পষ্ট। দালালদের মাধ্যমে জিয়া হকই সকল কাজ সম্পন্ন করেন। তার শক্তি হিসেবে আছে কথিত কয়েকজন সাংবাদিক। তাদের নিজস্ব সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও গাড়ি আছে। সেগুলো নিবন্ধন ছাড়া গাড়ি। তাদের এসব অনিয়ম চাপা রাখার জন্য এই কাজে যুক্ত থাকেন।

জিয়া হক বলেন, আমি কোন অনিয়মে নাই। আমি সবার সাথে খুব ভালো আচরণ করি।

দপ্তরের অধিকাংশ সময় উপস্থিত থাকেন মটরযান পরিদর্শক আলা উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি বিগত ৫ মাস আগে এই কার্যালয়ে যোগ দিয়েছি। অনিয়ম থাকতে পারে। তবে আমার চোখে পড়ে না।

বিআরটিএ চাঁদপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমি দুই জেলার দায়িত্বে। লক্ষ্মীপুর জেলায় কাজ করতে হয়। আবার চাঁদপুর কার্যালয়ে আসি। এই কার্যালয়ের যেসব অনিয়মের কথা জানতে পেরেছি, খোঁজ খবর নিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করবো।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে চাঁদপুরে রক্তদান কর্মসূচী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫, ৭:০৩ অপরাহ্ণ
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে চাঁদপুরে রক্তদান কর্মসূচী

বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন উপলক্ষে রক্তদান কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রাঙ্গনে চাঁদপুর ডক্টর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর আয়োজনে ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সহযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিম।

তিনি তার বক্তব্যে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব বছর বছর নয়। এই সরকারের দায়িত্ব হলো রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রিত করে নির্বাচন দেয়া। আমরা চাই দ্রুত নির্বাচন দিন। জনগনের প্রতিনিধির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করুন। ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিন। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করবেন না। আর যদি বিলম্ব হয় তাহলে এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না।

চাঁদপুর ডক্টর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর সভাপতি ডা. মোবারক হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং ড্যাবের সংগঠক ডা. সৈয়দ আহমেদ কাজল ও ডা. নূরে আলমের যৌথ পরিচারনায় বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের উপাধক্ষ্য ডা. হারুনুর রশীদ, সহকারী পরিচালক ডা. আশ্রাফ আহমেদ চৌধুরী, কাডিলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মীর মুনতাকিম হায়দার, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল আজিজ প্রমুখ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মুনির চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শরীফ উদ্দিন পলাশ, চাঁদপুর জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. কোহিনুর রশীদ, সদর উপজেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তার হোসেন সাগর, পৌর বিএনপির সদস্য মীর আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, জেলা যুবদলের সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরুল আমিন খান আকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার, পৌর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. মাসুদুর রহমান মাঝি, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমান হোসেন গাজী, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সফিউদ্দিন বাবলু, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. জিসান আহমেদ, চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. সোহেল গাজীসহ আরো অনেকে।