কচুয়ার সাচার কলাকোপা পার্কে
চাঁদপুর ল্যাবরেটরি স্কুলের শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত


ভ্রমণ মানুষকে কুপমন্ডুকতার ছত্রছায়া থেকে মুক্ত করে বিশাল পৃথিবীর অপার সৌন্দর্যের মধ্যে ঠাঁই দেয়। মানুষের মনকে করে তোলে উদার। ক্ষুদ্র এ মানব জীবনকে দান করে গতিশীলতা। আর সেই ভ্রমণ যদি হয় শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে তাহলে তো কথাই নেই।
বর্ণাঢ্য আয়োজন, উৎসব মুখর পরিবেশ এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চাঁদপুর ল্যাবরেটরি স্কুলের শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকসহ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অংশগ্রহণে শনিবার কচুয়া উপজেলার সাচার কলাকোপা পার্কে এ শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী এ শিক্ষা সফরে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষা সফরের মাধ্যমে মানুষের অসম্পূর্ণ ও আবদ্ধ জ্ঞান বিকাশ লাভের সুযোগ পায়। শিক্ষা সফর একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনকে করে আনন্দময় ও পরিপূর্ণ। শিক্ষা সফরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সুযোগ পায় নিজের দেশ ও জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তথা নিজের শেকড় সম্পর্কে জানতে। এছাড়াও দেশ ও জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও জীবনযাত্রার সাথে পরিচিত হতে পারে, যা তাদের জ্ঞানের সীমাকে প্রসারিত করে।
বই পড়ে যে শিক্ষা অর্জন করা হয় তা পরিপূর্ণ শিক্ষা নয়। শিক্ষার সাথে বাস্তব জ্ঞানের সংমিশ্রণ ঘটাতে পারলেই তা হয়ে উঠে পরিপূর্ণ শিক্ষা। নানা রকম ব্যবহারিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে এ পূর্ণতা অর্জন করা যায়। এসব কর্মকান্ডের মধ্যে শিক্ষা সফর অন্যতম। শিক্ষা সফরে গিয়ে শিক্ষার্থীরা শুধু আনন্দ লাভই করে না, বরং ঐতিহাসিক বিভিন্ন বিষয় প্রত্যক্ষ করে এবং সে বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করে। তাই প্রকৃত ও পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা অর্জনের জন্য শিক্ষা সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রোববার সকাল ৯টায় চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে শিক্ষা সফরের বাস কচুয়ার সাচারের উদ্দেশ্যে রওনা করে। সকাল সাড়ে ১০ টায় শিক্ষা সফরের বাস সাচার কলাকোপা পার্কে অবস্থান করে। বেলা ১১ টা থেকে শুরু হয় শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পরিচালনা করেন, বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যক্ষ মৃদুল কান্তি দাস, হাহাহা সাংস্কৃতিক কর্মী রিপন সরকার, সাংবাদিক ও লেখক আশিক বিন রহিম। তাদের সহযোগিতা করেন বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষিকা বৃন্দ।
দুপুরে মধ্যাহ্ন ভোজ শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সংগীত পরিবেশন করে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ মৃণাল কান্তি দাস, সংগীতশল্পী মেধাসহ অন্যান্যরা।
সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয় রেফেল ড্র সহ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ। এসময় শিক্ষা সফরে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করায় বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও নবরূপা টেক্সটাইলের স্বত্বাধিকারী মাসুদ মুন্সী এবং চাঁদপুরের প্রসিদ্ধ বিপণী বিতান ১৯৯ এর স্বত্বাধিকারী আবুল কালামকে বিশেষ ধন্যবাদ জানানো হয়।
চাঁদপুর ল্যাবরেটরী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ মৃণাল কান্তি দাসের পরিচালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কলাকোপা পার্কের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট সমাজসেবক পপন ভুঁইয়া, বিদ্যালয়ের উপদেষ্টা দুলাল গোস্বামী, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মুক্তা হোসেন, ইয়াকুব পাটোয়ারী, পঙ্কজ দে, মনির হোসেন, মশিউর রহমান আপেল, সানজিদা মাহফুজ, আশিক বিন রহিম, রিপন সরকার, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাস, নাজনিন হোসাইন, বিথী কর্মকার, সুমি শীল, তানজিলা আক্তার, স্মৃতি, বৃষ্টিসহ সকল শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকগণ। এর আগের দিন একুশে ফেব্রুয়ারি চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা ভাষা প্রভাত ফেরীতে অংশগ্রহণ সহ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
আপনার মতামত লিখুন