খুঁজুন
রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ২৪ কার্তিক, ১৪৩২

তরুণরা অচলায়তন ভাঙলেও থাকছে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কা

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮:২৭ অপরাহ্ণ
তরুণরা অচলায়তন ভাঙলেও থাকছে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কা

দক্ষিণ এশিয়ায় তরুণদের নেতৃত্বে আন্দোলনের জেরে কয়েক বছরের ব্যবধানে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালে সরকারের পতন হয়েছে। বিক্ষোভের ঢেউ লেগেছে আরও কয়েকটি দেশে। এসব আন্দোলনের মাধ্যমে তরুণরা শাসকগোষ্ঠীর অচলায়তন ভাঙার এক রীতি তৈরি করতে পেরেছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, রীতি ভাঙলেও এর মধ্যে দিয়ে দেশগুলোর রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক খাতে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। আবার এ পরিস্থিতিকে ভবিষ্যৎ শক্তিশালী করার সুযোগ হিসেবেও দেখছেন তারা।

তরুণদের আন্দোলন ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ও চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে নেপালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন করেছে। এনেছে নতুন নেতৃত্ব। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, এসব আন্দোলন শুধু রাজনৈতিক দাবি নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা জনগণের অসন্তোষ-ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সাইমন মহসীন মনে করেন, তরুণদের অসন্তোষের প্রকাশ হিসেবে সংঘটিত আন্দোলনগুলো সংশ্লিষ্ট দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

সাইমন বলেন, দুর্বল গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে এমন আন্দোলন স্থিতিশীলতা আরও দুর্বল করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি অশান্তি দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থা কমায় এবং সরকারের নজরদারি ও দমনমূলক পদক্ষেপ বাড়াতে পারে, যা তরুণদের আরও বিচ্ছিন্ন করবে।

এ গবেষকের দৃষ্টিতে সামাজিকভাবে প্রজন্মগত ফাটল স্পষ্ট হচ্ছে। একদিকে আছে বেকার ও হতাশ তরুণরা, অন্যদিকে ঝুঁকি এড়ানো ও ক্ষমতাশালী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত বয়স্করা। এটি সামাজিক সংহতি দুর্বল করতে এবং পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতি বাড়াতে পারে।

অর্থনৈতিক প্রভাবের কথা উল্লেখ করে সাইমন বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি অশান্তি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন, বাণিজ্য ও পর্যটন ব্যাহত এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ উন্নয়ন থেকে নিরাপত্তা খাতে সরিয়ে দেয়। সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্নের কারণে রপ্তানি ধীর হতে পারে, নতুন চাকরি সৃষ্টিতে বাধা আসে, ফলে তরুণ বেকারত্ব বাড়ে। এরই মধ্যে দুর্বল অর্থনীতিতে এমন আন্দোলন ও অস্থিতিশীলতার চক্র ঋণ, মূল্যস্ফীতি ও মূলধন প্রস্থানের সমস্যা বাড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি সীমিত করে।’

একই সময়ে এ অশান্তি পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য সুযোগও তৈরি করে বলে মনে করেন সাইমন। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমারা সহায়তা, নীতি শর্তাবলি বা নরম শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে প্রশাসন ও অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। তারা প্রায়ই গণতান্ত্রিক যুব আন্দোলনের আড়ালে ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ এগিয়ে নিয়ে যায়।’

তবে এ পরিস্থিতিকে নতুন সুযোগ হিসেবে দেখতে চান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওবায়দুল হক। তিনি বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশে ‘জেনারেশন জেড’ তরুণদের নেতৃত্বে আন্দোলনগুলো রাষ্ট্রের অচলায়তন ভাঙার নতুন ধারা তৈরি করেছে। এ ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন নয়। মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে থাকা চাপা ক্ষোভ এতে প্রকাশ পেয়েছে। তরুণরা অচলায়তন ভাঙতে চাইছেন, যার প্রভাব সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে পড়ছে।

তরুণদের এ সাহসের পেছনের কারণ হিসেবে ওবায়দুল বলেন, পশ্চিমারা নিয়মভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থার (রুলস বেসড ইন্টারন্যাশনাল অর্ডার) কথা বলে। কিন্তু ফিলিস্তিন বা গাজার মতো ঘটনার ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান মানুষের আস্থা হ্রাস করছে। তরুণরা দেখেছেন, বিদ্যমান অচলায়তন ভাঙা সম্ভব আর এতে তাদের মধ্যে নতুন সাহস ও উদ্যোগ তৈরি হয়েছে। এটি ধ্বংসাত্মক নয়, বরং একটি প্রক্রিয়ার অংশ, যা সমাজকে নতুনভাবে গড়ার পথ দেখায়।

আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট অস্থিরতাই শুধু অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে বলে মনে করেন না ঢাবির এ শিক্ষক। তিনি বলেন, বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং জলবায়ুর পরিবর্তনও প্রভাব ফেলছে। উদাহরণস্বরূপ, বর্ষাকালের ধরনের পরিবর্তন সরাসরি কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে। এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ বা এলডিসি গ্রাজুয়েশন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত নীতি পরিবর্তনও অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে।

এ অস্থিরতা ইতিবাচকও হতে পারে বলে মনে করেন ওবায়দুল। তিনি বলেন, এটি নতুন সুযোগের জন্ম দিচ্ছে। তবে আমরা কতটা প্রস্তুত এবং সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারছি কি না তা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়িক ও নীতি-নির্ধারণের স্তরে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অচলায়তনের এ পর্যায়কে আমরা একটি ট্রানজিশন ফেজ (রূপান্তরের পর্যায়) হিসেবে দেখতে পারি, যেখানে নতুন বাস্তবতা এবং নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

ওবায়দুলের পরামর্শ- ধৈর্য ধরতে হবে। বর্তমান অবস্থা ভবিষ্যতে দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার সম্ভাবনা রাখে।

আন্দোলনের নেপথ্যে:

শ্রীলঙ্কায় আন্দোলনের পেছনের কারণ ছিল অর্থনৈতিক বিপর্যয়। ২০২২ সালের মার্চে দেশটিকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়। দৈনন্দিন জীবন কঠিন হয়ে যায়। দীর্ঘ লোডশেডিং, জ্বালানি ও গ্যাসের জন্য দীর্ঘ লাইন এবং মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। ফলে কলম্বোয় রাষ্ট্রপতির সচিবালয় ও রাজনৈতিক নেতাদের বাড়ি, এমনকি প্রধান গণমাধ্যমের কার্যালয়েও হামলা হয়।

বাংলাদেশে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান মূলত সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটার বিরুদ্ধে শুরু হয়। তবে পুলিশি দমন, ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগে বাধা দেওয়া এবং নিহত হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লে আন্দোলন রাজনৈতিক অস্থিরতার দিকে গড়ায়। সহস্রাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর অবশেষে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। পরে তিনি ভারতে আশ্রয় নেন।

নেপালে সাম্প্রতিক জেনারেশন জেড বা জেন জি নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে। যদিও সরকার বলেছিল প্ল্যাটফর্মগুলো অপব্যবহার হচ্ছে। আর আন্দোলনকারীদের মূল ক্ষোভের কারণ ছিল বৈষম্য, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি। হাজার হাজার কিশোর-কিশোরী স্কুলের পোশাকেই রাস্তায় নেমে আসে। কয়েক দিনের সংঘর্ষে ৭০ জনের বেশি নিহত ও শত শত আহত হন। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে পরিস্থিতি শিথিল হয়।

রামপুরে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ
রামপুরে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন

“বই পড়লে আলোকিত হই, না পড়লে অন্ধকারে রই” বইয়ের সঙ্গেই গড়ে উঠুক সুন্দর সমাজ এই স্লোগানে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের বদরখোলা বাজারে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। যুব সমাজকে মাদক ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখতে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে পাশাপাশি গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান এই পাঠাগারের মূল উদ্দেশ্য।

শুক্রবার ৩১ অক্টোবর বিকালে বদরখোলা বাজারে বিদ্যাঘর পাঠাগার ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাণুরাগীও সমাজসেবক মাওলানা জসিম উদ্দিন পাটওয়ারী।


বিদ্যাঘর পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে ও বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও বিদ্যাঘর পাঠাগারের সচিব আমিরুল ইসলাম রিয়াজের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রধান শিক্ষক মফিজুল ইসলাম মাষ্টার, সাবেক সহকারী উপাধ্যক্ষ মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মমিনুল হক রাজাপুরী, নাসিরকোট ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মোঃ শরীফুল্লাহ।

এছাড়াও এলাকার নবীণ প্রবীণ ও গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গগণ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বিদ্যাঘর পাঠাগারের মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ যাতে জ্ঞান অর্জন করতে পারে, সেজন্য বিভিন্ন মনিষীদের বই পাঠাগারে রাখতে হবে। পাশাপাশি ইসলামী জ্ঞান চর্চার জন্য ইসলামী বই সংরক্ষণ করতে হবে।

ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫০ অপরাহ্ণ
ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছিল ২২ দিনের ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞা। এসময় নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল। দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে নদীতে নামবেন জেলেরা।

শেষ সময়ে কেউ মেরামত করছেন নৌকা, কেউবা পুরোনো জাল সেলাই করে নিচ্ছেন নতুন করে। চোখে মুখে আনন্দের অনুভূতি থাকলেও আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। তারা বলছেন, এবছর ভরা মৌসুমেও নদীতে ইলিশের দেখা মেলেনি। আর এখন মৌসুম শেষ। জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলে কষ্টের পাল্লা ভারী হবে।

এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন চাঁদপুরে নিবন্ধিত ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু তা ছিল জেলেদের কাছে অপ্রতুল। ওই সময় জীবিকা হারিয়ে চরম কষ্টে পড়েন জেলেরা।

এদিকে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ ধরতে না গেলেও নিষেধাজ্ঞার পর বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে এবং মহাজন ও এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করতে হয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মূল জেলেদের কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা থেকে বাদ পড়েছে। অথচ যারা মাছ ধরতে জীবনেও নদীতে নামেনি এমন বিভিন্ন পেশার বেশ কিছু মানুষ সরকারী সহায়তার কার্ড পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। এমনকি বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা পেয়েও সরকারের নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে নির্বিচারে মা ইলিশ শিকার করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে সরকারের পরবর্তী সহযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ারও আহ্বান জানান।

মৎস্য কর্মকর্তারা আশা করছেন, ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার গত বছরের চেয়ে মাছের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে পারে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হয়নি। এবার রেকর্ড পরিমাণে ইলিশ উৎপাদন হতে পারে।

তিনি আরও জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করেছিল সরকার।

এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চালানো ৪৪৫ টি অভিযানে ৭৭ টি মামলা ও ৭৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১১৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাঁজা প্রদান করা হয়। এছাড়া ৬ কোটি মিটার অবৈধ জাল, ১১০০ টন ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় প্রদান করাহয়।

জনশ্রুতি আছে অভিযানে সময় অনেক জেলে সরকারের বরাদ্দ করা চাল পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই উপকূলের জেলেরা জাল, নৌকা, ট্রলার ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। বিশেষ করে হরিনা ঘাট, আখনের ঘাট, পুরানবাজার রনাগোয়াল, লঞ্চ ঘাট, হাইমচরের নীলকমল, মতলব উত্তর মোহনপুর নৌঅঞ্চলের জেলেরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথবাহিনি। এ ঘটনায় দুই মাদক কারবারি পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের ছোট বাড়ি এলাকা থেকে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীর খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জেলা ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান ও ফরিদগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত রাজিব চক্রবর্তী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকদিরামপুর গ্রামের খলিল বেপারির ছেলে মাদক কারবারি আল-আমিন (২৫) ও তার সহযোগী হত্যা মামলার আসামি রুবেল হোসেন (২৮) ফজরের নামাজের পর একটি প্রাইভেটকারে করে বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে আসে। পরে আল-আমিনের বাড়ির গোসলখানায় গাঁজাগুলো লুকিয়ে রাখে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

পরে এলাকাবাসী পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।

এলাকাবাসী জানায়, রুবেল হোসেন এর আগে একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। গত ১০ দিন আগে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আবারও মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে ওঠে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের বাইক্কারবাগানের পাশের ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী সোহেল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে মামলার অন্যতম আসামি ছিল রুবেল হোসেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন স্বপন মিয়াজী জানান, সকালে ফজরের নামাজের পর এলাকাবাসী আমাকে জানায়, এ এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি রুবেল জেল থেকে বের হয়ে আবারও মাদক কারবারির সাথে জড়িয়ে পড়েছে এবং বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে থানা পুলিশকে খবর দেই। তিনি আরো জানান, তাদের কারনে এ এলাকার যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্ আলম বলেন, সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ডিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করি। তবে মূল মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। আল-আমিনের বাবা খলিল বেপারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।