খুঁজুন
শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ২৩ কার্তিক, ১৪৩২

বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার স্টেশন: মহড়ায় হাঁকডাক, কাজে শূন্য

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:৪০ অপরাহ্ণ
বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার স্টেশন: মহড়ায় হাঁকডাক, কাজে শূন্য

বছরের পর বছর মহড়ায় দক্ষতা দেখিয়ে বাহবা কুড়ালেও বাস্তবে ব্যর্থতার মুখে পড়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব ফায়ার ইউনিট। মাত্র ২৮০ মিটার দূরত্বের আগুনও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি তারা। শুরুতে এই আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে এড়ানো যেতো শত শত কোটি টাকার ক্ষতি।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিদুর্ঘটনায় নিজেদের সক্ষমতা জানান দিতে রানওয়ের পাশে বছরে বেশ কয়েকবার মহড়ার আয়োজন করে বেবিচক। এ মহড়ায় অংশ নিয়ে নিজেদের কসরত দেখান বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা। মহড়া শেষে করতালিতে বাহবা দেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বাস্তবে যখন বিমানবন্দরটির কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে তখন তারা আর পেরে ওঠেননি।

যদিও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা এবং বেবিচক চেয়ারম্যানের দাবি, আগুন লাগার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার কর্মীরা।

তবে প্রশ্ন উঠেছে, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে যদি ঘটনাস্থলে ফায়ার কর্মীরা পৌঁছে থাকেন, তাহলে তারা কেন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেন না? ৩০ সেকেন্ডে তো পুরো কার্গো ভিলেজে আগুন ছড়ানোর কথা নয়। আবার এটি বড় কোনো বিস্ফোরণের ঘটনাও নয়, যেটা মুহূর্তেই চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের গাফিলতি ও অদক্ষতার কারণে ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়নি। আবার বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে থাকা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সংশ্লিষ্টদেরও দায় কম নয়। কারণ, কার্গো ভিলেজের সামনের অ্যাপ্রোনে আমদানি করা শত শত টন মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছিল বিমান। ফলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি কার্গো ভিলেজের কাছে যেতে পারেনি। যদিও পাইপ দিয়ে অনেক দূরের আগুনও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। প্রায় ২৭ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলে। আগুন নেভাতে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরাও আগুন নেভাতে যোগ দেন। ভয়াবহ এই আগুনের কারণে কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল ও অন্য বিমানবন্দরে অবতরণও করাতে হয়েছে। আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে লাগা আগুনে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাসহ আমদানিকারকদের পণ্য সামগ্রীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং তথা উড়োজাহাজে পণ্য ওঠানো-নামানো এবং সরবরাহের কাজটি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এরই অংশ হিসেবে তারা কার্গো ভিলেজ এবং এর সামনে অ্যাপ্রোনে মালামাল স্তূপ করে রাখে। এর মধ্যে গত শনিবার দুপুর ২টায় কার্গো ভিলেজের ভেতরে আগুন লাগে। তখন বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের (এটিসি) মাধ্যমে বার্তা যায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ফায়ার স্টেশনে। নির্দেশনা পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায় দুটি ইউনিট (প্রতিটি ইউনিটে ছয়জন করে সদস্য)। তবে অ্যাপ্রোনে অগোছালোভাবে রাখা পণ্যের স্তূপের কারণে তারা উৎসের কাছে গিয়ে আগুন নেভানোর সুযোগ পায়নি। দূর থেকে পানি ছিটিয়ে লাভ হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানবন্দরের দুজন ফায়ার কর্মী জানান, শাহজালাল বিমানবন্দরে মোট চারটি পানির গাড়ি আছে। এর মধ্যে একটি অকেজো। যখন কার্গোতে আগুন লাগে, তখন বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা করছিল। তাই দুটি গাড়ি নিয়ে তারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু যেখানে ফায়ারের গাড়ি রাখা হয়েছে, সেখান থেকে আগুনের উৎস পর্যন্ত পাইপ ঘুরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। অর্থাৎ, এত লম্বা পাইপ গাড়িতে ছিল না। তাই বাইরে থেকে ছড়িয়ে সঠিক জায়গায় পানি পৌঁছানো যায়নি। এর মধ্যে বাতাসে আগুন চারপাশে ছড়াতে থাকে। আবার বিমানবন্দর চালু থাকায় বাকি একটি গাড়িও এখানে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী বিমানবন্দরের রানওয়ের কাছাকাছি অন্তত দুটি ফায়ার গাড়ি সবসময় প্রস্তুত রাখতে হয়।

এর কিছু সময় পর ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি বিমানবন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নানান অব্যবস্থাপনার কারণে তারা আগুন নেভাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেননি। আবার বিমান দ্রুত পণ্যগুলো সরিয়ে দিতে পারলে কাছাকাছি গিয়ে পানি ছিটানো যেতো। তাহলে আগুন এত ছড়িয়ে পড়তো না, এত ক্ষয়ক্ষতিও হতো না।

নিজস্ব ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাওয়ার ১০ মিনিট পরে যায় বিমানবাহিনীর ফায়ার ইউনিট। এরপর সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। আগুন নেভাতে ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট এবং সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসার সদস্যরা কাজ করে। প্রায় সাত ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত ৯টার দিকে বিমানবন্দর চালু হয়। আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয় প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর।

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেননি বিমানের কার্গো পরিদপ্তরের পরিচালক শাকিল মেরাজ।

তবে গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় বিমান একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে কারও গাফিলতি থাকলে তা তদন্তে উঠে আসবে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের তিনদিন পর মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেবিচকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুরো বিষয় তুলে ধরেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক। তবে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সে যে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে তার কোনো দায় নেননি তিনি।

মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকের ভাষ্য, কার্গো ভিলেজটি বেবিচকের হলেও এটির কার্যক্রম পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সিঅ্যান্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং) এজেন্ট ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে সেখানে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে আছে বিমান। আর মালামালগুলো ক্লিয়ার করার দায়িত্ব সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের। এছাড়া সেখানে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রয়েছে। এগুলো ম্যানেজ করার দায়িত্ব তাদের।

তবে তদন্তের আগে কাউকে দায় দিতে চান না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তদন্ত যেহেতু চলছে, এটা শেষ হওয়ার আগে কিছু বলা ঠিক নয়। আমি কারও দিকে আঙুল তুলতে চাই না।’

বেবিচক চেয়ারম্যান কারও দিকে আঙুল তুলতে না চাইলেও তার নিজস্ব ফায়ার স্টেশনের সক্ষমতা কতটুকু আছে সে বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নগুলো বারবার এড়িয়ে যান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই এলাকায় (কার্গো ভিলেজ) প্রায় ১৪০টি ফায়ার এক্সটিংগুইশার ছিল। আমরা কাগজপত্রে প্রমাণ পেয়েছি, নিয়মিত ফায়ার সেফটি কার্যক্রম চলতো। শুধু জুন মাসেই প্রায় ২০০ জন কর্মীকে ফায়ার ড্রিল প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে একদিন আমরা ফায়ার ড্রিল অনুশীলন করি। এটি সাধারণত বিমান সংক্রান্ত দুর্ঘটনা বা আগুনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য করা হয়। এর বাইরে প্রতিদিন আমাদের ফায়ার টিম বিভিন্ন সেকশনে গিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালায়।’

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ওইদিন রাতেই সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এই কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে (২৩ অক্টোবর) প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এই কমিটি অগ্নিকাণ্ডের কারণ, ক্ষয়ক্ষতি এবং কার কী দায়দায়িত্ব ছিল তা নির্ধারণ করবে।

অন্যদিকে ঘটনা তদন্তে সোমবার (২০ অক্টোবর) পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। পাঁচ সদস্যের এই তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে। কমিটির সদস্যদের ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া রোববার (১৯ অক্টোবর) বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেছে। সবকটি কমিটি তাদের তদন্ত কাজ চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) সদস্য। এ সংস্থা বেসামরিক বিমান চলাচলে মান ও নিয়ম তৈরি এবং বাস্তবায়ন করে। এর মধ্যে রয়েছে বিমান চলাচল, নিরাপত্তা ও পরিবেশগত মান। এছাড়া দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে এবং আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলকে আরও নিরাপদ ও দক্ষ করতে কাজ করে সংস্থাটি। কানাডার মন্ট্রিলে এ সংস্থার সদর দপ্তর অবস্থিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেবিচকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, আইসিএও নিয়ম অনুযায়ী একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে সব ধরনের আগুন নির্বাপণের কার্যকর ব্যবস্থা থাকা দরকার। কিন্তু শাহজালাল বিমানবন্দরে সেটা নেই। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও চরম অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতা রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বিমানবন্দরটি আইসিএও’র গ্রেডে মান হারাবে।

তবে এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, ‘অগ্নিদুর্ঘটনার পর আমরা কী পদক্ষেপ নিয়েছি আইসিএও এটা দেখবে। আমাদের করণীয় নিয়ে হয়তো দিকনির্দেশনা দেবে। কিন্তু এর মাধ্যমে বিমানবন্দরটির গ্রেড বা মান কমবে না।’

রামপুরে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ
রামপুরে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন

“বই পড়লে আলোকিত হই, না পড়লে অন্ধকারে রই” বইয়ের সঙ্গেই গড়ে উঠুক সুন্দর সমাজ এই স্লোগানে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের বদরখোলা বাজারে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। যুব সমাজকে মাদক ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখতে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে পাশাপাশি গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান এই পাঠাগারের মূল উদ্দেশ্য।

শুক্রবার ৩১ অক্টোবর বিকালে বদরখোলা বাজারে বিদ্যাঘর পাঠাগার ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাণুরাগীও সমাজসেবক মাওলানা জসিম উদ্দিন পাটওয়ারী।


বিদ্যাঘর পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে ও বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও বিদ্যাঘর পাঠাগারের সচিব আমিরুল ইসলাম রিয়াজের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রধান শিক্ষক মফিজুল ইসলাম মাষ্টার, সাবেক সহকারী উপাধ্যক্ষ মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মমিনুল হক রাজাপুরী, নাসিরকোট ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মোঃ শরীফুল্লাহ।

এছাড়াও এলাকার নবীণ প্রবীণ ও গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গগণ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বিদ্যাঘর পাঠাগারের মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ যাতে জ্ঞান অর্জন করতে পারে, সেজন্য বিভিন্ন মনিষীদের বই পাঠাগারে রাখতে হবে। পাশাপাশি ইসলামী জ্ঞান চর্চার জন্য ইসলামী বই সংরক্ষণ করতে হবে।

ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫০ অপরাহ্ণ
ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছিল ২২ দিনের ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞা। এসময় নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল। দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে নদীতে নামবেন জেলেরা।

শেষ সময়ে কেউ মেরামত করছেন নৌকা, কেউবা পুরোনো জাল সেলাই করে নিচ্ছেন নতুন করে। চোখে মুখে আনন্দের অনুভূতি থাকলেও আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। তারা বলছেন, এবছর ভরা মৌসুমেও নদীতে ইলিশের দেখা মেলেনি। আর এখন মৌসুম শেষ। জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলে কষ্টের পাল্লা ভারী হবে।

এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন চাঁদপুরে নিবন্ধিত ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু তা ছিল জেলেদের কাছে অপ্রতুল। ওই সময় জীবিকা হারিয়ে চরম কষ্টে পড়েন জেলেরা।

এদিকে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ ধরতে না গেলেও নিষেধাজ্ঞার পর বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে এবং মহাজন ও এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করতে হয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মূল জেলেদের কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা থেকে বাদ পড়েছে। অথচ যারা মাছ ধরতে জীবনেও নদীতে নামেনি এমন বিভিন্ন পেশার বেশ কিছু মানুষ সরকারী সহায়তার কার্ড পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। এমনকি বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা পেয়েও সরকারের নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে নির্বিচারে মা ইলিশ শিকার করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে সরকারের পরবর্তী সহযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ারও আহ্বান জানান।

মৎস্য কর্মকর্তারা আশা করছেন, ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার গত বছরের চেয়ে মাছের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে পারে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হয়নি। এবার রেকর্ড পরিমাণে ইলিশ উৎপাদন হতে পারে।

তিনি আরও জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করেছিল সরকার।

এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চালানো ৪৪৫ টি অভিযানে ৭৭ টি মামলা ও ৭৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১১৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাঁজা প্রদান করা হয়। এছাড়া ৬ কোটি মিটার অবৈধ জাল, ১১০০ টন ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় প্রদান করাহয়।

জনশ্রুতি আছে অভিযানে সময় অনেক জেলে সরকারের বরাদ্দ করা চাল পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই উপকূলের জেলেরা জাল, নৌকা, ট্রলার ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। বিশেষ করে হরিনা ঘাট, আখনের ঘাট, পুরানবাজার রনাগোয়াল, লঞ্চ ঘাট, হাইমচরের নীলকমল, মতলব উত্তর মোহনপুর নৌঅঞ্চলের জেলেরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথবাহিনি। এ ঘটনায় দুই মাদক কারবারি পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের ছোট বাড়ি এলাকা থেকে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীর খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জেলা ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান ও ফরিদগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত রাজিব চক্রবর্তী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকদিরামপুর গ্রামের খলিল বেপারির ছেলে মাদক কারবারি আল-আমিন (২৫) ও তার সহযোগী হত্যা মামলার আসামি রুবেল হোসেন (২৮) ফজরের নামাজের পর একটি প্রাইভেটকারে করে বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে আসে। পরে আল-আমিনের বাড়ির গোসলখানায় গাঁজাগুলো লুকিয়ে রাখে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

পরে এলাকাবাসী পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।

এলাকাবাসী জানায়, রুবেল হোসেন এর আগে একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। গত ১০ দিন আগে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আবারও মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে ওঠে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের বাইক্কারবাগানের পাশের ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী সোহেল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে মামলার অন্যতম আসামি ছিল রুবেল হোসেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন স্বপন মিয়াজী জানান, সকালে ফজরের নামাজের পর এলাকাবাসী আমাকে জানায়, এ এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি রুবেল জেল থেকে বের হয়ে আবারও মাদক কারবারির সাথে জড়িয়ে পড়েছে এবং বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে থানা পুলিশকে খবর দেই। তিনি আরো জানান, তাদের কারনে এ এলাকার যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্ আলম বলেন, সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ডিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করি। তবে মূল মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। আল-আমিনের বাবা খলিল বেপারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।