খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ রুটে অতিরিক্ত সিএনজি ভাড়া, চালকদের কাছে যাত্রীরা অসহায়

তারেক রহমান তারু
প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ৮:১২ অপরাহ্ণ
চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ রুটে অতিরিক্ত সিএনজি ভাড়া, চালকদের কাছে যাত্রীরা অসহায়

সিএনজি চালকদের সুবিধার্থে ছাত্রজনতার দাবিতে চাঁদপুর সেতুর টোল বন্ধ হলেও ফরিদগঞ্জ চাঁদপুর রুটে সিএনজি চালকরা যেন এখনো বেপরোয়া। আগে যেখানে ফরিদগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে কালিবাড়ি যাতায়াত করা যেতো ৫০ টাকায় বর্তমানে সেটা অনির্ধারিত। সকালে এক রকম ভাড়া দিতে হচ্ছে, বিকেলে আরেক রকম।

ফরিদগঞ্জ থেকে চাঁদপুর কালিবাড়ি পর্যন্ত জনপ্রতি ৯০-১০০ টাকা নিচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে। লঞ্চ ঘাটে যাতায়াত করা যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে ভাড়া সঠিক ভাড়া থেকে কয়েকগুন বেশি হয়ে যায়। বৃষ্টি হলেও ভাড়া বাড়িয়ে নেওয়া হয়। দিনের একেক সময়ে একেক রকম ভাড়া নিতেও দেখা যায়।

যাত্রীরা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলে সিএনজি চালকদের খারাপ ব্যবহারের শিকার হতে হয়। কেউ কেউ প্রতিবাদ করলে সিএনজি চালকরা সংঘবদ্ধ হয়ে যাত্রীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করার ঘটনাও ঘটেছে।

নারী যাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণের ঘটনা ঘটছে অহরহ। সিএনজির পিছনের সিটে ৩ জনের সিটে অনেক নারী পুরুষের সাথে শেয়ার করে বসতে না চাইলে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করার ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজের এক নারী শিক্ষার্থী জানান, আমি যখনই কলেজে যাই সিএনজি চালকদের খারাপ আচরনের শিকার হই। কখনো ভাড়া অতিরিক্ত চাওয়া নিয়ে, কখনো পুরুষের সাথে বসতে না চাইলে তারা খারাপ ব্যবহার করে।

এ বিষয়ে মোঃ রফিক নামের এক যাত্রী বলেন, আজ ঈদের ১০ দিন চলে গেছে তবুও ফরিদগঞ্জ থেকে চাঁদপুর যেতে হলে ৯০-১০০ টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে। সন্ধ্যার পরে সে ভাড়া আরও বেশি হয়ে যায়।

এ বিষয়ে এক সিএনজি চালক অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কথা শিকার করেন বলেন, লঞ্চ ঘাট পর্যন্ত ১০০-১২০ টাকা ভাড়া নেই। সিরিয়ালের গাড়ি তাই এরকম ভাড়া নিতে হয় এবং অনেক সময় যাত্রী পাওয়া যায় না তাই বাড়তি নিচ্ছেন তারা।

যাত্রীরা দিন দিন এ রুটে সিএনজি চালকদের কাছে জিম্মি হয়ে আসছেন। ভাড়া নিয়ে এমন হওয়ার পিছনে মূল কারন প্রশাসন কর্তৃক মনিটরিং এবং নির্ধারিত ভাড়া না থাকাকেই দায়ী করছেন যাত্রীরা।

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

চাঁদপুর থেকে ফরিদগঞ্জ রুটে ভাড়া নির্ধারিত করে দেওয়া হলে জনদূর্ভোগ এবং সিএনজি চালকদের অঘোষিত চাঁদাবাজি বন্ধ হবে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।

রামপুরে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ
রামপুরে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন

“বই পড়লে আলোকিত হই, না পড়লে অন্ধকারে রই” বইয়ের সঙ্গেই গড়ে উঠুক সুন্দর সমাজ এই স্লোগানে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের বদরখোলা বাজারে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। যুব সমাজকে মাদক ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখতে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে পাশাপাশি গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান এই পাঠাগারের মূল উদ্দেশ্য।

শুক্রবার ৩১ অক্টোবর বিকালে বদরখোলা বাজারে বিদ্যাঘর পাঠাগার ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাণুরাগীও সমাজসেবক মাওলানা জসিম উদ্দিন পাটওয়ারী।


বিদ্যাঘর পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে ও বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও বিদ্যাঘর পাঠাগারের সচিব আমিরুল ইসলাম রিয়াজের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রধান শিক্ষক মফিজুল ইসলাম মাষ্টার, সাবেক সহকারী উপাধ্যক্ষ মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মমিনুল হক রাজাপুরী, নাসিরকোট ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মোঃ শরীফুল্লাহ।

এছাড়াও এলাকার নবীণ প্রবীণ ও গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গগণ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বিদ্যাঘর পাঠাগারের মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ যাতে জ্ঞান অর্জন করতে পারে, সেজন্য বিভিন্ন মনিষীদের বই পাঠাগারে রাখতে হবে। পাশাপাশি ইসলামী জ্ঞান চর্চার জন্য ইসলামী বই সংরক্ষণ করতে হবে।

ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫০ অপরাহ্ণ
ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছিল ২২ দিনের ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞা। এসময় নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল। দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে নদীতে নামবেন জেলেরা।

শেষ সময়ে কেউ মেরামত করছেন নৌকা, কেউবা পুরোনো জাল সেলাই করে নিচ্ছেন নতুন করে। চোখে মুখে আনন্দের অনুভূতি থাকলেও আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। তারা বলছেন, এবছর ভরা মৌসুমেও নদীতে ইলিশের দেখা মেলেনি। আর এখন মৌসুম শেষ। জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলে কষ্টের পাল্লা ভারী হবে।

এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন চাঁদপুরে নিবন্ধিত ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু তা ছিল জেলেদের কাছে অপ্রতুল। ওই সময় জীবিকা হারিয়ে চরম কষ্টে পড়েন জেলেরা।

এদিকে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ ধরতে না গেলেও নিষেধাজ্ঞার পর বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে এবং মহাজন ও এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করতে হয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মূল জেলেদের কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা থেকে বাদ পড়েছে। অথচ যারা মাছ ধরতে জীবনেও নদীতে নামেনি এমন বিভিন্ন পেশার বেশ কিছু মানুষ সরকারী সহায়তার কার্ড পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। এমনকি বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা পেয়েও সরকারের নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে নির্বিচারে মা ইলিশ শিকার করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে সরকারের পরবর্তী সহযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ারও আহ্বান জানান।

মৎস্য কর্মকর্তারা আশা করছেন, ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার গত বছরের চেয়ে মাছের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে পারে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হয়নি। এবার রেকর্ড পরিমাণে ইলিশ উৎপাদন হতে পারে।

তিনি আরও জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করেছিল সরকার।

এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চালানো ৪৪৫ টি অভিযানে ৭৭ টি মামলা ও ৭৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১১৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাঁজা প্রদান করা হয়। এছাড়া ৬ কোটি মিটার অবৈধ জাল, ১১০০ টন ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় প্রদান করাহয়।

জনশ্রুতি আছে অভিযানে সময় অনেক জেলে সরকারের বরাদ্দ করা চাল পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই উপকূলের জেলেরা জাল, নৌকা, ট্রলার ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। বিশেষ করে হরিনা ঘাট, আখনের ঘাট, পুরানবাজার রনাগোয়াল, লঞ্চ ঘাট, হাইমচরের নীলকমল, মতলব উত্তর মোহনপুর নৌঅঞ্চলের জেলেরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথবাহিনি। এ ঘটনায় দুই মাদক কারবারি পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের ছোট বাড়ি এলাকা থেকে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীর খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জেলা ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান ও ফরিদগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত রাজিব চক্রবর্তী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকদিরামপুর গ্রামের খলিল বেপারির ছেলে মাদক কারবারি আল-আমিন (২৫) ও তার সহযোগী হত্যা মামলার আসামি রুবেল হোসেন (২৮) ফজরের নামাজের পর একটি প্রাইভেটকারে করে বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে আসে। পরে আল-আমিনের বাড়ির গোসলখানায় গাঁজাগুলো লুকিয়ে রাখে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

পরে এলাকাবাসী পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।

এলাকাবাসী জানায়, রুবেল হোসেন এর আগে একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। গত ১০ দিন আগে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আবারও মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে ওঠে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের বাইক্কারবাগানের পাশের ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী সোহেল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে মামলার অন্যতম আসামি ছিল রুবেল হোসেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন স্বপন মিয়াজী জানান, সকালে ফজরের নামাজের পর এলাকাবাসী আমাকে জানায়, এ এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি রুবেল জেল থেকে বের হয়ে আবারও মাদক কারবারির সাথে জড়িয়ে পড়েছে এবং বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে থানা পুলিশকে খবর দেই। তিনি আরো জানান, তাদের কারনে এ এলাকার যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্ আলম বলেন, সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ডিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করি। তবে মূল মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। আল-আমিনের বাবা খলিল বেপারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।