খুঁজুন
শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ২৩ কার্তিক, ১৪৩২

চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুটে দ্রুতগামী নৌযান দেয়ার দাবী

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:২২ অপরাহ্ণ
চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুটে দ্রুতগামী নৌযান দেয়ার দাবী

চাঁদপুর নৌ বন্দর দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র, ঐতিহাসিক সংযোগস্থল এবং গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থান হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বহুবছর চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চের সেবার মান উন্নতি না হওয়ায় যাত্রী সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই রুটে দ্রুতগতিসম্পন্ন নৌযান চালু করা ও সেবার মান বৃদ্ধির দাবী জানিয়েছে বিভিন্ন পেশা শ্রেণির লোকজন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে জেলাবাসীর পক্ষে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক।

সোমবার সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।

চাঁদপুর নৌ বন্দরটি এক সময় ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে থাকলেও তিন নদীর মোহনা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া এবং ডাকাতিয়া নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় বিকল্প হিসেবে শহরের নিশি বিল্ডিং এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে বর্তমানে তৈরী হচ্ছে আধুনিক নৌ বন্দর। কিন্তু আধুনিক নৌ বন্দরের সাথে নৌযানগুলোও আধুনিক হওয়া প্রয়োজন মনে করেন এই রুটের যাত্রীরা।

চাঁদপুর পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ বলেন, এই রুটের লঞ্চগুলোতে উন্নতি হয়নি। তাদের মত করে পরিচালনা করে। তারা শীত এবং গরম মৌসুমে এসির ভাড়া একই রকম নেয়। কিন্তু সেবার মান বৃদ্ধি হয়নি।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সমাজকর্মী শিমুল হাসান বলেন, ঢাকা-চাঁদপুর নৌরুটে ভ্রমণ খুবই চমৎকার। কিন্তু ৫০ টাকার ভাড়া ৩০০টাকা হলেও যাত্রী সেবার মান ভালো হয়নি। সেবার মান বৃদ্ধি হলে যাত্রী বাড়বে।

শহরের পুরান বাজারের বাসিন্দা শিক্ষক ও লেখক আইরিন সুলতানা লিমা বলেন, সড়ক পথের চাইতে লঞ্চে এখন সময় বেশি লাগে। সড়ক পথে দুই থেকে আড়াই ঘন্টায় ঢাকায় পৌঁছানো যায়। সেখানে লঞ্চে সময় লাগে ৪ থেকে সাড়ে ৪ঘন্টা। এই পদ্ধতির পরিবর্তন করে দ্রুতগামী নৌযান এখন সময়ের দাবী।

শহরের কুমিল্লা সড়কের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, দ্রুত নৌযান এবং সেবার মান উন্নত করে যৌক্তিক ভাড়া নিতে পারে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তবে বর্তমান সেবার মান খুবই খারাপ। এক সময় লঞ্চের ভ্রমণই ছিলো সবার কাছে প্রথম পছন্দ। বিশেষ করে চাঁদপুরের দক্ষিণাঞ্চল ও শরীয়তপুরের যাত্রীরা এখনো এই রুটে যাতায়াত করে।

শহরের চেয়ারম্যানঘাট এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী এ.ওয়াই.এম. জাকারিয়া বলেন, আরো অনেক আগে চাঁদপুর নৌ বন্দর নির্মাণ এবং লঞ্চগুলোর যাত্রীসেবা বৃদ্ধির প্রয়োজন ছিলো। ব্যবস্থাপনা বেহাল হওয়ার কারণে যাত্রী অনেক কমেছে। এখন নতুন করে আধুনিক নৌ বন্দর নির্মাণ এবং দ্রুতগামী নৌযান দিলেও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা খুবই কম মনে হয়।

তিনি আরো বলেন, বিমান বন্দর, রেল স্টেশন ও বাস স্ট্যান্ডে যাত্রীরা তাদের মালপত্র নিয়ে আসতে কোন জামালে পোহাতে হয় না। কিন্তু লঞ্চঘাটে প্রত্যেক যাত্রীকে এই বিষয়টি নিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এই ঘাট ইজারা দিয়ে কি ধরণের সুবিধা হয়, বিষয়টি নিয়ে ভাবা প্রয়োজন।

এদিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন গত ১৬ অক্টোবর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে দেয়া চিঠিতে উল্লেখ করেন, ঢাকা থেকে বরিশাল বিভাগের সকল জেলা এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ঢাকাসহ সারাদেশের লঞ্চ, কার্গো ও জাহাজ চলাচলের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে চাঁদপুর নদী বন্দর ব্যবহৃত হয়। চাঁদপুর শহর পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় অবস্থিত হওয়ায় এবং ইলিশের বাড়ি হিসেবে পরিচিতি পাওয়ায় ভ্রমন পিপাসু মানুষের কাছে আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হিসেবে গড়ে উঠেছে। জনসাধারণ নৌ পথে চাঁদপুর-ঢাকা যাতায়াতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

বর্তমানে নদীপথে চাঁদপুর-ঢাকা যাতায়াতে সাড়ে ৩ঘন্টা থেকে ৪ঘন্টা সময় লাগে। অপরদিকে সড়কপথে যাতায়াতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা। ধীরগতির পুরোনো লঞ্চ সড়কপথের তুলনায় নদীপথে দীর্ঘ সময় ব্যয় হওয়ায় জনসাধারণ নদীপথে যাতায়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। নদীপথে যাতায়াত তুলনামূলক কম ব্যয়বহুল, আরামদায়ক ও নিরাপদ। নদীপথের যাতায়াত স্বল্পসময়ে সম্পন্ন করার জন্য দ্রুতগতির লঞ্চ চলাচল নিশ্চিত করা প্রয়োজন। লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলে বর্তমানে যে সকল লঞ্চ ৩ঘন্টায় চাঁদপুর থেকে ঢাকায় পৌছায় ওইসব লঞ্চ আড়াই ঘন্টায়ও পৌঁছানো সম্ভব।

এছাড়াও বেশিরভাগ লঞ্চে নিম্নমানের আসন, অপ্রতুল লাইফ জ্যাকেট, অপরিস্কার শৌচাগার ও অভ্যন্তরীণ পরিবেশ সন্তোষজনক নয়। এদিকে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ানে চাঁদপুর আধুনিক লঞ্চ টার্মিনালের উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ লঞ্চে যাতায়াতের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না কলে উন্নত লঞ্চ টার্মিনাল নির্মাণ করেও আশানুরুপ ফল না পাওয়া সম্ভাবনা বেশি।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুট সচল রাখার জন্য আমি মনে করি আধুনিক এবং দ্রুতগতিসম্পন্ন লঞ্চ চালুর উদ্যোগ, লঞ্চসমূহ সংস্কার, সেবার মান বৃদ্ধি, আধুনিকায়ন এবং আড়াই ঘন্টার মধ্যে চাঁদপুর-ঢাকা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর জেলার জনসাধারণ ছাড়াও শরীয়তপুর এবং লক্ষ্মীপুর জেলার কয়েকটি এলাকার জনগণ চাঁদপুর হতে ঢাকায় নৌরুটে যাতায়াত করেন। সড়কের ওপরে চাম কমাতে হলে জনপ্রিয় এই নৌরুটের সেবার মান বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, অন্যথায় ভবিষ্যতে যাত্রীর অপ্রতুলতায় লঞ্চ সেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

রামপুরে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ
রামপুরে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন

“বই পড়লে আলোকিত হই, না পড়লে অন্ধকারে রই” বইয়ের সঙ্গেই গড়ে উঠুক সুন্দর সমাজ এই স্লোগানে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের বদরখোলা বাজারে বিদ্যাঘর পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। যুব সমাজকে মাদক ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখতে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে পাশাপাশি গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান এই পাঠাগারের মূল উদ্দেশ্য।

শুক্রবার ৩১ অক্টোবর বিকালে বদরখোলা বাজারে বিদ্যাঘর পাঠাগার ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাণুরাগীও সমাজসেবক মাওলানা জসিম উদ্দিন পাটওয়ারী।


বিদ্যাঘর পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে ও বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও বিদ্যাঘর পাঠাগারের সচিব আমিরুল ইসলাম রিয়াজের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রধান শিক্ষক মফিজুল ইসলাম মাষ্টার, সাবেক সহকারী উপাধ্যক্ষ মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মমিনুল হক রাজাপুরী, নাসিরকোট ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মোঃ শরীফুল্লাহ।

এছাড়াও এলাকার নবীণ প্রবীণ ও গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গগণ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বিদ্যাঘর পাঠাগারের মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ যাতে জ্ঞান অর্জন করতে পারে, সেজন্য বিভিন্ন মনিষীদের বই পাঠাগারে রাখতে হবে। পাশাপাশি ইসলামী জ্ঞান চর্চার জন্য ইসলামী বই সংরক্ষণ করতে হবে।

ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫০ অপরাহ্ণ
ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছিল ২২ দিনের ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞা। এসময় নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল। দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে নদীতে নামবেন জেলেরা।

শেষ সময়ে কেউ মেরামত করছেন নৌকা, কেউবা পুরোনো জাল সেলাই করে নিচ্ছেন নতুন করে। চোখে মুখে আনন্দের অনুভূতি থাকলেও আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। তারা বলছেন, এবছর ভরা মৌসুমেও নদীতে ইলিশের দেখা মেলেনি। আর এখন মৌসুম শেষ। জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলে কষ্টের পাল্লা ভারী হবে।

এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন চাঁদপুরে নিবন্ধিত ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু তা ছিল জেলেদের কাছে অপ্রতুল। ওই সময় জীবিকা হারিয়ে চরম কষ্টে পড়েন জেলেরা।

এদিকে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ ধরতে না গেলেও নিষেধাজ্ঞার পর বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে এবং মহাজন ও এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করতে হয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মূল জেলেদের কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা থেকে বাদ পড়েছে। অথচ যারা মাছ ধরতে জীবনেও নদীতে নামেনি এমন বিভিন্ন পেশার বেশ কিছু মানুষ সরকারী সহায়তার কার্ড পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। এমনকি বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা পেয়েও সরকারের নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে নির্বিচারে মা ইলিশ শিকার করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে সরকারের পরবর্তী সহযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ারও আহ্বান জানান।

মৎস্য কর্মকর্তারা আশা করছেন, ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার গত বছরের চেয়ে মাছের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে পারে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হয়নি। এবার রেকর্ড পরিমাণে ইলিশ উৎপাদন হতে পারে।

তিনি আরও জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করেছিল সরকার।

এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চালানো ৪৪৫ টি অভিযানে ৭৭ টি মামলা ও ৭৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১১৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাঁজা প্রদান করা হয়। এছাড়া ৬ কোটি মিটার অবৈধ জাল, ১১০০ টন ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় প্রদান করাহয়।

জনশ্রুতি আছে অভিযানে সময় অনেক জেলে সরকারের বরাদ্দ করা চাল পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই উপকূলের জেলেরা জাল, নৌকা, ট্রলার ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। বিশেষ করে হরিনা ঘাট, আখনের ঘাট, পুরানবাজার রনাগোয়াল, লঞ্চ ঘাট, হাইমচরের নীলকমল, মতলব উত্তর মোহনপুর নৌঅঞ্চলের জেলেরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথবাহিনি। এ ঘটনায় দুই মাদক কারবারি পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের ছোট বাড়ি এলাকা থেকে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীর খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জেলা ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান ও ফরিদগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত রাজিব চক্রবর্তী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকদিরামপুর গ্রামের খলিল বেপারির ছেলে মাদক কারবারি আল-আমিন (২৫) ও তার সহযোগী হত্যা মামলার আসামি রুবেল হোসেন (২৮) ফজরের নামাজের পর একটি প্রাইভেটকারে করে বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে আসে। পরে আল-আমিনের বাড়ির গোসলখানায় গাঁজাগুলো লুকিয়ে রাখে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

পরে এলাকাবাসী পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।

এলাকাবাসী জানায়, রুবেল হোসেন এর আগে একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। গত ১০ দিন আগে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আবারও মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে ওঠে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের বাইক্কারবাগানের পাশের ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী সোহেল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে মামলার অন্যতম আসামি ছিল রুবেল হোসেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন স্বপন মিয়াজী জানান, সকালে ফজরের নামাজের পর এলাকাবাসী আমাকে জানায়, এ এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি রুবেল জেল থেকে বের হয়ে আবারও মাদক কারবারির সাথে জড়িয়ে পড়েছে এবং বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে থানা পুলিশকে খবর দেই। তিনি আরো জানান, তাদের কারনে এ এলাকার যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্ আলম বলেন, সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ডিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করি। তবে মূল মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। আল-আমিনের বাবা খলিল বেপারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।