খুঁজুন
শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩২

ভাঙ্গন আতংকে পাঁচগ্রামের বাসিন্দারা

ধনাগোদা নদীতে দাঁড়িয়ে আছে বেইলি ব্রীজ, দুপাশে নেই দুই কি.মি রাস্তা

মনিরুজ্জামান বাবলু
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ৮:৪৩ অপরাহ্ণ
ধনাগোদা নদীতে দাঁড়িয়ে আছে বেইলি ব্রীজ, দুপাশে নেই দুই কি.মি রাস্তা

চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে ধনাগোদা নদীতে দাঁড়িয়ে আছে বেইলি ব্রীজ। নদীর জলে ভেসে গেল দুপাশের দুই কিলোমিটার রাস্তা। ফসলী জমি ও বসতভিটা নিয়ে আতংকে পাঁচ গ্রামের নদীপাড়ের শত শত পরিবার। বসতভিটা ও ফসলি জমি রক্ষায় একটি স্থায়ী প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।

চাঁদপুরের ধনাগোদা নদীর উপরে দাঁড়িয়ে আছে একটি বেইলি ব্রীজ। ব্রীজটি দেখলে বুঝার উপায় নেই, ব্রীজের উপর দিয়ে যানবাহন ও গ্রামবাসীর চলাচল ছিল। ব্রীজটির দুই পাশের প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা নদীতে বিলীন।

চাঁদপুর সদরের বিষ্ণুপুর নতুন বাজার থেকে মতলব দক্ষিণের বরদিয়া আড়ং বাজারের কানুদি- বরদিয়া সড়ক ছিল এটি। রাস্তা বিলীন হওয়ার পর এখন ভাঙ্গছে নদীপাড়ের পাঁচ গ্রামের মানুষের বসতভিটা ও ফসলি জমি। বসতভিটার ভাঙ্গন আতংকে নদীপাড়ের মানুষের কাটছে নির্ঘুম রাত।

বিষ্ণুপুর গাজী বাড়ীর বাসিন্দা নাজমা বেগম বলেন, ব্রীজ আছে, রাস্তা চলে গেছে। আমরা ৬ জনের পরিবার, একটা প্রতিবন্ধী মেয়ে আছে, তাদের নিয়ে থাকতে অনেক কষ্ট হয়। রাতে কখন ভেঙে পড়ে যায়, তাই সজাগ থাকা লাগে। দিনের মাঝে ঘুমাই।

তার স্বামী আবুল বাসার বলেন, আমরা ৫০ বছর ধরে এখানে বসবাস করতেছি। এই পর্যন্ত আমাদের অনেক কষ্টে দিন গেছে। আমাদের এক বাড়ি ভেঙে নিয়ে গেছে আরেক বাড়ি ভাঙতেছে। বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে অনেক কষ্টে আছি।

বৃদ্ধ ফরিদ উদ্দিন বলেন, পুরানো কবরস্থান ভেঙেচুরে গেছে। এখনো আমাদের বাড়িঘর সব ভেঙে নিয়ে যাইতেছে। চারটা মসজিদ, তিনটা স্কুল। কানুদি-বহরদিয়া রোড ভেঙে যাচ্ছে। সরকারের কাছে স্থায়ী বাঁধ চাই।

দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙনে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় দুই এলাকার মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের প্রধান সড়ক ছিল এটি। এখন নৌকা আর দূরের পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হলে রাস্তাটি পুনরায় সচল করার দাবী এলাকাবাসীর।

স্থানীয় বাসিন্দা তাসলিমা বেগম বলেন, আমাদের এখানে রাস্তা ছিল। এখন নদীতে রাস্তা ভেঙে নিয়ে গেছে। ব্রীজটা নদীর উপরে আছে। আমাদের স্থানীয় বাঁধ দিয়ে যেন আমাদের বাড়িঘর আটকানো হয়। ব্রীজটা এখন নদীর মাঝে ভাসতেছে। রাস্তাঘাট সব ভেঙে নিয়ে গেছে নদীতে। আমরা পরিবার নিয়ে অনেক আতংকে আছি। সরকারের কাছে স্থায়ী একটা বাঁধ চাই।

পথচারী গৃহবধূ জান্নাতুন নাঈম বলেন, আগে রাস্তা ছিল, এখন রাস্তা নাই। এই কারনে আমরা অর্ধেক পথ রাস্তা দিয়ে আসছি আর অর্ধেক পথ মানুষের বাড়ি হেঁটে হেঁটে আসছি।

সোহেল প্রধানীয়া বলেন, ওইখান থেকে এইটুক পর্যন্ত ভেঙে নিছে। এখন আমরা সরকারের কাছে বাঁধ চাই। রাস্তা যতটুকু হইছিল আমরা অনেক খুশি হইছি। বেড়িবাঁধ হবে আমাদের বলছে কিন্তু এখনো হয় নাই। সরকারের কাছে আমাদের গ্রামবাসীর আবেদন দ্রুত আমাদের এই ভাঙন রক্ষা করার জন্য স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে দেন- এটা আমাদের আকুল দাবি।

তৎকালীন সময়ে পরিকল্পিতভাবে রাস্তা ও ব্রীজটি নির্মিত হয়নি দাবী করে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, এখানে ২.১ কিলোমিটার একটি স্থায়ী প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। নকশা প্রণয়নের নিমিত্তে ডিজাইন দপ্তরে পাঠানো হয়। নকশা পাওয়া গেলে দ্রুতই কারিগরি কমিটি প্রতিবেদন এবং ডিপিপি দাখিল করা হবে।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, বিষ্ণুপুর এলাকায় আমরা গত বর্ষায় আমরা যে সমস্ত এলাকায় নদী ভাঙ্গনের প্রবণতা ছিল এবং বিশেষ করে যেখানে কিছু স্থাপনা আছে স্কুল তারপর বাজার, মসজিদ এবং মন্দির সংলগ্ন যেই জায়গা আছে সেই জায়গাতে আমরা অস্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজ করে নদী ভাঙ্গনের প্রবণতা অনেকটাই রোধ করেছি। এর পাশাপাশি আমরা এখানে একটি স্থায়ী ২.১ কিলোমিটার একটি স্থায়ী প্রকল্পের জন্য আমরা ইতোমধ্যে কারিগরি কমিটি গঠন হয়েছে। আমরা নকশা প্রণয়নের নিমিত্তে ডিজাইন দপ্তরে লিখেছি, তো নকশা পাওয়া গেলে আমরা দ্রুতই কারিগরি কমিটি প্রতিবেদন এবং ডিপিপি দাখিল করবো এলাকায়।

এই রাস্তা ও চারটি ব্রীজ নির্মিত হয় ২০০৮ সালে, গেলো ৩/৪ বছর ধরে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে রাস্তাটি। ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গনের কবলে দুই উপজেলার কানুদি, মনোয়ারখাদী, বিষ্ণুপুর, লালপুর ও বরদিয়া গ্রাম।

জাতীয় গ্রিডে ত্রুটি

ঢাকার কয়েক জেলাসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন

আলোকিত চাঁদপ্রু ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:২৪ অপরাহ্ণ
ঢাকার কয়েক জেলাসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন

জাতীয় গ্রিডে ত্রুটির কারণে ঢাকা বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলাসহ খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সবকটি জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। এতে অন্ধকারে রয়েছে জেলাগুলো। শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ৪৮ মিনিটে জাতীয় গ্রিডে সমস্যা দেখা দেয়। ফলে সন্ধ্যা নামতেই অন্ধকারে ছেয়ে যায় দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের ২১ জেলা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন দেশের বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) লিমিটেডের খুলনা অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হায়দার আলী।

তিনি বলেন, জাতীয় গ্রিডে ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে। তবে এখন কয়েকটি জেলায় পুনরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। তবে সবকটি জেলায় এখনো বিদ্যুৎ দিতে পারিনি।

বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়া জেলাগুলো হলো- খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা।

ফরিদগঞ্জে সমকামিতার অভিযোগে দু’কিশোরীকে পুলিশে সোপর্দ

আনিছুর রহমানর সুজন
প্রকাশিত: শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:০৮ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে সমকামিতার অভিযোগে দু’কিশোরীকে পুলিশে সোপর্দ

দুই ধর্মের দুই কিশোরীকে সমকামিতার অভিযোগে অভিভাবকরা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায়। ওই কিশোরী হলো: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের ইউসুফ মিয়ার মেয়ে রিতু ও গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার অনিল এর মেয়ে আরোহি।

স্থানীয় সূত্র ও কিশোরীরা জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে উভয়ের টিকটকের মাধ্যমে পরিচয় ঘটে। এরই মাঝে একে অপরের বাড়িতে আসা-যাওয়া ও মনেরভাব বিনিময় হয়।

এক পর্যায়ে রিতু কয়েকদিন পূর্বে গোপালগঞ্জ আরোহির কাছে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে সে আরোহিকে নিয়ে তাদের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলা বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নে সকদিরামপুর গ্রামে শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) চলে আসে।

তারা জানায়, ১৭ এপ্রিল মৌখিকভাবে পরিনয় সূত্রে আবদ্ধ হয়েছি। আমরা আবেগে নয়, মন থেকেই একে অপরের প্রতি ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা ও অবশেষে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হয়েছি। তবে তারা বিবাহ বন্ধনের কোন প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি।

এদিকে সমকামিতার ঘটনা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর রিতুর পরিবার শনিবার (২৬ এপ্রিল) তারা নিজেরা আরোহি ও রিতুকে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

ফরিদগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ্ আলম জানান, আরোহী নামের মেয়েটি হারিয়ে যাওয়া জিডি মূলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।

চাঁদপুরে ৪ মাদক কারবারিসহ ৭ কিশোর গ্যাং সদস্য গ্রেপ্তার

আলোকিত চাঁদপ্রু ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ৮:৪১ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে ৪ মাদক কারবারিসহ ৭ কিশোর গ্যাং সদস্য গ্রেপ্তার

চাঁদপুর সদর, কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় যৌথ বাহিনীর পৃথক অভিযানে তালিকাভুক্ত ৪ মাদক কারবারি ও ৭ কিশোর গ্যাং সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান।

তিনি বলেন, স্থানীয় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে টৃথক অভিযানে সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি ও কিশোর গ্যাং সদস্যদের গ্রেপ্তার করে।

এর মধ্যে ২৪ এপ্রিল দিনগত রাতে সদর উপজেলার হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে হেলাল (২২) ও মাসুদ (২৬) নামে মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৮ কেজি গাঁজা।

একই রাত সোয়া ১টার দিকে কচুয়া উপজেলার পলাশপুর নামক স্থান থেকে মো. মোহসীন (৩০) ও মো. এরশাদ খান (৪০) নামে দুই মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, নগদ ১৫ হাজার টাকা এবং একটি মোটর সাইকেল।

একই রাতে চাঁদপুর শহরের প্রেসক্লাব সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আপন (১৯), শিপন (১৯), ফারহান (১৮) নামে কিশোর গ্যাংয়ের তালিকাভুক্ত তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৩টি সাইনিজ কুড়াল, ৩টি রাম দা ও একটি চাপাতি।

অপরদিকে ২৫ এপ্রিল দিনগত রাত ১১টায় ফরিদগঞ্জ আর্মি ক্যাম্প থেকে অভিযান পরিচালনা করে উপজেলার কাশারা নামক স্থান থেকে তালিকাভুক্ত কিশোর গ্যাং সদস্য মো. হৃদয় (১৮), তাহমিদ হোসেন (১৯), মামুন মিয়া (১৮) ও শাহেদ মোল্লাকে (১৭) গ্রেপ্তার করা হয়।

লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান বলেন, জব্দ মাদকদ্রব্য, গ্রেপ্তার মাদক কারাবির এবং কিশোর গ্যাং সদস্যদের স্ব স্ব থানায় পরিবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।