খুঁজুন
মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ১২ কার্তিক, ১৪৩২

ভোটের আগে লুটের অস্ত্র নিয়ে মাথাব্যথা

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ৬:৫৯ অপরাহ্ণ
ভোটের আগে লুটের অস্ত্র নিয়ে মাথাব্যথা

গত বছর ৫ আগস্টের পর পুলিশের লুণ্ঠিত বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও গোলাবারুদ এখনো উদ্ধার হয়নি। সবশেষ হিসাব বলছে, এখনো এক হাজার ৩৬৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও দুই লাখ ৫৭ হাজার ৭২০ রাউন্ড গোলাবারুদ বেহাত অবস্থায় রয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এসব অস্ত্র ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

অস্ত্র উদ্ধারে সহায়তা করতে তথ্যদাতাদের পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। যদিও তা এখনো কার্যকর ফল বয়ে আনেনি। গত এক বছরে ডেভিল হান্টসহ একাধিক বিশেষ অভিযান চালিয়েছে সরকার। এখনো অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে তৎপরতা চলছে। তবুও লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদের বড় অংশ রয়ে গেছে অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে।

অপরাধ বিশ্লেষক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, এ অস্ত্র উদ্ধারে ব্যর্থতা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় ঝুঁকি তৈরি করবে। প্রভাবশালীরা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তাদের হয়ে সন্ত্রাসীরা নাশকতা চালাতে পারে, সৃষ্টি করতে পারে সংঘাত ও সহিংসতা। এতে ভোটের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস সামনে রেখে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র ব্যবহার করে দুর্বৃত্তরা নির্বাচনে সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চাপের মধ্যে রাখতে পারে। এসব অস্ত্র আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটের মাঠে প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, এসব অস্ত্র কয়েকবার হাত বদল হয়েছে। ফলে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারে। চলে গেছে অপরাধীদের হাতে। লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। যদিও উদ্ধার করা কঠিন।

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, গত বছর ৫ আগস্টের পর দেশের ৬৬৪টি থানার মধ্যে ৪৬০ থানা ও ১১৪টি ফাঁড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও গণভবন থেকে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৫ হাজার ৭৫৩টি অস্ত্র লুট হয়। এছাড়া ৬ লাখ ৫১ হাজার ৮৩২টি গোলাবারুদ নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে ৪ হাজার ৩৯০টি। এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি ১ হাজার ৩৬৩টি। এছাড়া গোলাবারুদের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ১১২টি। এখনো উদ্ধার হয়নি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৭২০টি।

পুলিশ জানায়, লুট হওয়া ১ হাজার ১০৬টি চায়না রাইফেলের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৯৯১টি। আরেকটি মডেলের ১২টি রাইফেলের মধ্যে ১১টি উদ্ধার হলেও একটি উদ্ধার হয়নি। এসএমজি-(টি ৫৬) ২৫১টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ২২১টি। এলএমজি (টি-৫৬) ৩৪টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩১টি। পিস্তল (টি-৫৪) ৫৩৯টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩২৫টি। ৯ ইনটু ১৯ মিমি ১ হাজার ৯২টি পিস্তলের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৬৩০টি। ৯ ইনটু ১৯ এসএমজি/এসএমটি ৩৩টির মধ্যে সবকটি উদ্ধার হয়েছে। ১২ বোরের শর্টগান ২ হাজার ৭৯টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ১৬৭৫টি। ৩৮ মিমি গ্যাসগান ৫৮৯টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৪৫৮টি। ৩৮ মিমি টিয়ারগ্যাস লাঞ্চার ১৫টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৮টি। এখনো উদ্ধার হয়নি ৭টি। ২৬ মিমি পিস্তল ৩টির মধ্যে একটি উদ্ধার হয়েছে।

গোলাবারুদের মধ্যে বিভিন্ন বোরের ৬ লাখ ১২ হাজার ৯৮২টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ১১২টি। এখনো উদ্ধার হয়নি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৭২০টি। বিভিন্ন ধরনের টিয়ারগ্যাস শেলের ৩১ হাজার ২১২টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ১৯ হাজার ৮২১টি, বিভিন্ন ধরনের টিয়ারগ্যাস গ্রেনেড ১ হাজার ৪৮৬টির মধ্যে ১ হাজার ১৯৫টি, সাউন্ড গ্রেনেড ৪ হাজার ৭৪৬টির মধ্যে ৩ হাজার ৫৭৪টি, কালার স্মোক গ্রেনেড ২৭৩টির মধ্যে ২৩২টি, সেভেন মাল্টিপল ব্যাং স্টান গ্রেনেড ৫৫টির মধ্যে ৩৩টি, ফ্ল্যাশ ব্যাং/৬ গ্রেনেড ৯০০টির মধ্যে ৬১৬টি ও হ্যান্ড হেল্ড টিয়ারগ্যাস স্প্রে ১৭৮টির মধ্যে উদ্ধার হয়েছে মাত্র ৬২টি।

চলতি বছরের ২৫ মে রাত ১১টায় রাজধানীর বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন গুলশান থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসান সাধন। এসময় দুই তরুণ তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে। এর দুদিন পর ২৭ মে মিরপুরে গুলি করে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীর ২১ লাখ টাকা ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। ৬ আগস্ট মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে গুলিতে মারা যান শাহেন শাহ নামে এক তরুণ।

শুধু ঢাকায় নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে। গত ২০ আগস্ট দাবি করা ৫০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে এক ব্যবসায়ীর বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে একদল অস্ত্রধারী যুবক। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে হামলার বিষয়টি ধরা পড়ে। এসব ঘটনায় কোন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে নিশ্চিত না হলেও লুট হওয়া অস্ত্র ব্যবহারের শঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।

ঢাকা ও চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক কয়েকটি খুন ও বড় ছিনতাইয়ের ঘটনায় লুট হওয়া অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে বলে গোয়েন্দাদের তথ্য রয়েছে। অস্ত্র কার হাতে গেছে, কোথায় পাচার হচ্ছে—এসব তথ্য জানার পরও যথাযথ অভিযান চালানো হয়নি বলে অভিযোগ। এতে অপরাধীদের মনোবল বেড়েছে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাহীনতাও বাড়ছে।

প্রতিটি নির্বাচন ঘিরে অবৈধ অস্ত্রের চাহিদা বাড়ে। স্থানীয় পর্যায়ে আধিপত্য বিস্তার, ভোটকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিপক্ষকে ভয় দেখানোর কাজে অস্ত্রের ব্যবহার নতুন নয়। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, এবারও নির্বাচনের আগে নতুন করে ‘অস্ত্রের বাজার’ সচল হওয়ার আভাস মিলছে। এর সঙ্গে লুট হওয়া অস্ত্রও মিশে গেলে সহিংসতার ঝুঁকি বহুগুণে বাড়বে।

গত ১০ আগস্ট স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় গত বছরের ৫ আগস্টের আগে-পরে যেসব অস্ত্র লুট হয়েছে, তা উদ্ধারে সরকার শিগগির বিজ্ঞপ্তি দেবে। অস্ত্র উদ্ধারে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে সরকার পুরস্কার দেবে।

অপরাধ বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘সরকারের চেষ্টার পরও অস্ত্র উদ্ধার যথাযথ হয়নি। লুট হওয়া অস্ত্রগুলো সমাজের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য হুমকি। সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ অস্ত্র নির্বাচনে ব্যবহার হওয়ার অনেক আশঙ্কা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এছাড়া আমরা দেখতে পেয়েছি চাঁদাবাজি, ছিনতাই, দখল বাণিজ্যের হাতবদল হয়েছে। এসব অস্ত্র অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার হচ্ছে। পুলিশকে দ্রুতই চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে এসব অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে, না হলে সমাজের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে।’

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে র‍্যাব-২ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ নাজমুল্লাহেল ওয়াদুদ বলেন, ‘এক বছরে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে পুলিশ বাহিনীকে। গত বছরের ৫ আগস্ট থানা ও স্টেশনগুলো ফেলে পালিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশ সদস্যরা। লুট হয়েছিল তাদের আগ্নেয়াস্ত্র। লুট হওয়া অস্ত্রের একটা অংশ উদ্ধার হলেও এখনো অনেক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এসব অস্ত্র কয়েকবার হাতবদল হয়েছে। ফলে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারে।’

নির্বাচন সামনে রেখে অনেকেই পরিস্থিতি খারাপের চেষ্টা করছে, তবে সেটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। যদিও উদ্ধার করা কঠিন।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘লুট হওয়া অস্ত্র আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। এসব অস্ত্র পড়ে থাকে না, একাধিক হাত ইতোমধ্যে বদল হয়েছে। সন্ত্রাসীদের কাছে এতদিন পৌঁছে গেছে। এখনো সময় আছে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা জরুরি।’

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এএইচএম শাহাদাত হোসাইন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান চলমান। দেশব্যাপী অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে লুট হওয়া অনেক অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি অস্ত্রগুলো উদ্ধারেও কাজ করছে পুলিশসহ যৌথ বাহিনী।’

ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫০ অপরাহ্ণ
ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছিল ২২ দিনের ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞা। এসময় নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল। দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে নদীতে নামবেন জেলেরা।

শেষ সময়ে কেউ মেরামত করছেন নৌকা, কেউবা পুরোনো জাল সেলাই করে নিচ্ছেন নতুন করে। চোখে মুখে আনন্দের অনুভূতি থাকলেও আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। তারা বলছেন, এবছর ভরা মৌসুমেও নদীতে ইলিশের দেখা মেলেনি। আর এখন মৌসুম শেষ। জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলে কষ্টের পাল্লা ভারী হবে।

এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন চাঁদপুরে নিবন্ধিত ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু তা ছিল জেলেদের কাছে অপ্রতুল। ওই সময় জীবিকা হারিয়ে চরম কষ্টে পড়েন জেলেরা।

এদিকে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ ধরতে না গেলেও নিষেধাজ্ঞার পর বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে এবং মহাজন ও এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করতে হয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মূল জেলেদের কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা থেকে বাদ পড়েছে। অথচ যারা মাছ ধরতে জীবনেও নদীতে নামেনি এমন বিভিন্ন পেশার বেশ কিছু মানুষ সরকারী সহায়তার কার্ড পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। এমনকি বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা পেয়েও সরকারের নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে নির্বিচারে মা ইলিশ শিকার করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে সরকারের পরবর্তী সহযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ারও আহ্বান জানান।

মৎস্য কর্মকর্তারা আশা করছেন, ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার গত বছরের চেয়ে মাছের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে পারে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হয়নি। এবার রেকর্ড পরিমাণে ইলিশ উৎপাদন হতে পারে।

তিনি আরও জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করেছিল সরকার।

এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চালানো ৪৪৫ টি অভিযানে ৭৭ টি মামলা ও ৭৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১১৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাঁজা প্রদান করা হয়। এছাড়া ৬ কোটি মিটার অবৈধ জাল, ১১০০ টন ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় প্রদান করাহয়।

জনশ্রুতি আছে অভিযানে সময় অনেক জেলে সরকারের বরাদ্দ করা চাল পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই উপকূলের জেলেরা জাল, নৌকা, ট্রলার ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। বিশেষ করে হরিনা ঘাট, আখনের ঘাট, পুরানবাজার রনাগোয়াল, লঞ্চ ঘাট, হাইমচরের নীলকমল, মতলব উত্তর মোহনপুর নৌঅঞ্চলের জেলেরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথবাহিনি। এ ঘটনায় দুই মাদক কারবারি পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের ছোট বাড়ি এলাকা থেকে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীর খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জেলা ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান ও ফরিদগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত রাজিব চক্রবর্তী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকদিরামপুর গ্রামের খলিল বেপারির ছেলে মাদক কারবারি আল-আমিন (২৫) ও তার সহযোগী হত্যা মামলার আসামি রুবেল হোসেন (২৮) ফজরের নামাজের পর একটি প্রাইভেটকারে করে বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে আসে। পরে আল-আমিনের বাড়ির গোসলখানায় গাঁজাগুলো লুকিয়ে রাখে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

পরে এলাকাবাসী পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।

এলাকাবাসী জানায়, রুবেল হোসেন এর আগে একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। গত ১০ দিন আগে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আবারও মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে ওঠে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের বাইক্কারবাগানের পাশের ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী সোহেল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে মামলার অন্যতম আসামি ছিল রুবেল হোসেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন স্বপন মিয়াজী জানান, সকালে ফজরের নামাজের পর এলাকাবাসী আমাকে জানায়, এ এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি রুবেল জেল থেকে বের হয়ে আবারও মাদক কারবারির সাথে জড়িয়ে পড়েছে এবং বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে থানা পুলিশকে খবর দেই। তিনি আরো জানান, তাদের কারনে এ এলাকার যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্ আলম বলেন, সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ডিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করি। তবে মূল মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। আল-আমিনের বাবা খলিল বেপারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগ শুরু করলেন ইঞ্জি. মমিনুল হক

মো. ইউসুফ বেপারী
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:২১ অপরাহ্ণ
ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগ শুরু করলেন ইঞ্জি. মমিনুল হক

হাজীগঞ্জে ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে নিজ ইউনিয়নে গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করলেন বিএনপির কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক ইঞ্জি. মমিনুল হক।

শুক্রবার দিনব্যাপী তিনি উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করেন। এরমধ্যে তিনি ইউনিয়নের নোয়াদ্দা, উত্তর রায়চোঁ, বড়কুল রামকানাই উচ্চ বিদ্যালয়, রায়চোঁ বাজার, মধ্য বড়কুল, আড়ুলি, মোল্লাডহর, দিকচাইল, সেন্দ্রা ও কোন্দ্রা এলাকায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন।

পথসভায় ইঞ্জি. মমিনুল হক চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে ইউনিয়নবাসীর সম্মতি চাইলে উপস্থিত লোকজন একযোগে হাত উঁচিয়ে সম্মতি প্রকাশ এবং ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এসময় তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির ২২টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভায় গণসংযোগ ও পথসভা কার্যক্রম শুরু করলাম। দেশের মানুষ বিএনপিকে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। তারা ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে তারেক রহমানকে আগামির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাছান মিয়াজীর সভাপতিত্বে গণসংযোগ ও পথসভায় সফর সঙ্গী ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ রহিম পাটওয়ারী, বিএনপি নেতা আব্দুল কাদের মিয়া, ইঞ্জি. জাহাঙ্গীর আলম, ইমান হোসেন, অহিদুল ইসলাম মোহন, আব্দুল গফুর পাটওয়ারী, ওলি উল্যাহ, আলমগীর হোসেন, মোশারফ হোসেন, তাফাজ্জল হোসেন বতু, শাহাদাত হোসেন মিলন, জামাল মেম্বার, মিজানুর রহমান, মাসুদ রানা, উপজেলা মৎসজীবি দলের সভাপতি মো. ইমান হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম চৌধুরী মিঠু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক এসএম ফয়সাল হোসাইন, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব দ্বীন ইসলাম টগর, ছাত্রনেতা শামছুদ্দিন খাঁন নূর, কবির হোসেন রাজু, ইউনিয়ন যুবদল নেতা আব্দুল জব্বার, ইকবাল বেপারী, ইমাম হোসেন, আব্দুল মতিন, আলাউদ্দিন, হেলাল উদ্দিন, হোসেন মজুমদার, স্বেচ্ছাসেবক নেতা মাসুম চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, সুমন রাজ, হাসানাত, সোহাগ, কৃষক নেতা মিজানুর রহমান, ছাত্রনেতা আলামিন দিনু, হাবিবুর রহমান, ওসমান গণি, সাব্বির হোসেন, শেখ ফরিদসহ সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।