খুঁজুন
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৬ ভাদ্র, ১৪৩২

বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান বৈঠক: ভারতের জন্য কৌশলগত বার্তা?

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫, ৯:১৯ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান বৈঠক: ভারতের জন্য কৌশলগত বার্তা?

বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের অংশগ্রহণে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আয়োজিত এই বৈঠকে তিন দেশ একটি সম্ভাব্য জোট গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে আঞ্চলিক ভারসাম্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

গত বৃহস্পতিবার চীনের কুনমিং শহরে আয়োজিত ‘নবম চায়নাসাউথ এশিয়ান এক্সপো’ এবং ‘ষষ্ঠ চায়নাসাউথ এশিয়া কো-অপারেশন ফোরাম’-এর সাইডলাইনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন চীনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইডং, বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এবং পাকিস্তানের অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ।

বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, তিন দেশ প্রতিবেশীসুলভ মনোভাব, সমতা, পারস্পরিক আস্থা, উন্মুক্ততা ও অন্তর্ভুক্তির ভিত্তিতে সহযোগিতা জোরদারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই সঙ্গে তারা বহুপক্ষীয়তা ও উন্মুক্ত আঞ্চলিকতার পক্ষে কাজ করতে আগ্রহী বলেও জানায়। তিন দেশই নিশ্চিত করেছে, এই উদ্যোগ কোনো তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে নয়।
বৈঠকে অবকাঠামো, যোগাযোগ, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, স্বাস্থ্য, কৃষি, সমুদ্রনীতি, তথ্যপ্রযুক্তি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। এসব খাত চিহ্নিত করে পারস্পরিক সমঝোতা বাস্তবায়নে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।

চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ মনে করেন, এই আলোচনার গন্তব্য এখনো স্পষ্ট নয়। তিনি বলেন, ‘ত্রিদেশীয় যে আলাপ শুরু হয়েছে, সেটি এখনো খুব স্পষ্ট নয় যে তারা কী করতে চায়। বেশ কিছু বিষয়ে সহযোগিতার কথা বলা হলেও শেষপর্যন্ত কতদূর এগোয় সেটাই দেখার বিষয়।’

তবে তার মতে, এই উদ্যোগের পেছনে প্রতিবেশী শক্তিধর রাষ্ট্র ভারতকে একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টাও থাকতে পারে। কারণ, এই তিন দেশের কারও সঙ্গেই ভারতের সম্পর্ক বর্তমানে খুব একটা ভালো নয়।
মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘ভারতকে দেখানোর একটা প্রয়াস থাকতে পারে যে, আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি তাহলে অনেক কিছু করা সম্ভব। ভারতকে নাড়া দিয়ে দেখা যে তারা এগিয়ে আসে কিনা। এর আগেও বিসিআইএম করিডোর বন্ধ হয়ে যায় ভারতের অনাগ্রহেই, সার্কও অচল হয়ে আছে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলুল হালিম রানা এই ত্রিপক্ষীয় কাঠামোকে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা হিসেবে দেখছেন। তার মতে, ‘এই তিন দেশের সঙ্গেই ভারতের আস্থা সংকট রয়েছে সীমান্ত ইস্যু, কাশ্মীর প্রসঙ্গ এবং আঞ্চলিক নেতৃত্বের প্রশ্নে।’

ফজলুল হালিম রানা বলেন, ‘জোটটি যদি কেবল অর্থনৈতিক সহযোগিতায় সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে আন্তর্জাতিকভাবে বড় কোনো সংকট তৈরি নাও হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, চীন এমন কাঠামোকে প্রাথমিকভাবে অর্থনৈতিক কূটনীতি হিসেবে উপস্থাপন করলেও তা দীর্ঘমেয়াদে কৌশলগত প্ল্যাটফর্মে পরিণত হতে পারে।’ এতে ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়ার পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক একটি নতুন বলয়ের উত্থান ঘটতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

ড. ফজলুল হালিম আরও বলেন, ‘পশ্চিমা শক্তিগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান এই উদ্যোগকে চীনের প্রভাব বিস্তারের কৌশল (ইনফ্লুয়েন্স প্রজেকশন) হিসেবে দেখছে। ফলে এটি দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার পাশাপাশি ব্লক রাজনীতির পুনরুত্থানের ইঙ্গিতও বহন করতে পারে।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এই অধ্যাপকের মতে, ভারত কোয়াড, বিমস্টেক ও আইওআরএর মতো কাঠামোর মাধ্যমে একটি নিজস্ব বলয় তৈরি করছে, যেখানে চীনের অংশগ্রহণ নেই। ফলে চীন বিকল্প কাঠামো তৈরিতে আগ্রহী, বিশেষ করে এমন দেশগুলোকে নিয়ে যাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক টানাপোড়েনপূর্ণ।

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের জন্য এটি একটি কূটনৈতিক সুযোগ, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কোণঠাসা অবস্থায়। আর বাংলাদেশের জন্য এটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ও উন্নয়ন সহযোগিতা জোরদারের একটি সম্ভাবনা।’

অধ্যাপক ফজলুলের ভাষায়, ‘ভারতের আগমুহূর্তে এই কাঠামোর উত্থান এবং এতে ভারতের অনুপস্থিতি নিছক উন্নয়নমূলক কোনো উদ্যোগ নয়; বরং এটি কৌশলগত বার্তা পাঠানোর প্রচেষ্টা এই বিশ্লেষণ অনেক পর্যবেক্ষকই করছেন।’

চীন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পেছনে রয়েছে একাধিক আঞ্চলিক ও ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে এই উদ্যোগকে ভারত কীভাবে দেখবে, এবং তা দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত ভারসাম্যে কী প্রভাব ফেলতে পারে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা অনেকে মনে করছেন, ত্রিপক্ষীয় এই উদ্যোগে যুক্ত হওয়ার আগে বাংলাদেশের জন্য আঞ্চলিক বাস্তবতা, বিদ্যমান সম্পর্ক ও সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়াগুলো গভীরভাবে মূল্যায়ন করা জরুরি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এহসানুল হক বলেন, ‘এই ধরনের জোটে যাওয়ার আগে বাংলাদেশকে অবশ্যই একটি সুপরিকল্পিত হোমওয়ার্ক করতে হবে। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ ছাড়া কৌশলগত এমন পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক হবে না। কারণ, অবশ্যম্ভাবীভাবে ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া আসবে এটা অপ্রত্যাশিত কিছু নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ করে পাকিস্তানের সঙ্গে যদি বাংলাদেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়, তাহলে ভারত সেটা ইতিবাচকভাবে নেবে না। ভারতের দিক থেকে এই ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হবে এমনটা ভাবাও কঠিন। ফলে এই পরিস্থিতি সামলানো বাংলাদেশের জন্য কিছুটা কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে।’

এহসানুল হকের মতে, ‘এই ধরনের জোটে যোগ দেওয়ার আগে সুবিধা-অসুবিধাগুলো বাস্তবভিত্তিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। কারণ, ভারতের সঙ্গে চীন ও পাকিস্তান উভয়েরই ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক বৈরি সম্পর্ক রয়েছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে বাংলাদেশকে সতর্কতার সঙ্গে আগাতে হবে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বৈঠকটিকে ‘অনানুষ্ঠানিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, আঞ্চলিক শান্তি, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ত্রিদেশীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পারস্পরিক সমঝোতার বিষয়গুলো বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের কথা জানানো হয়েছে।
বৈঠকের পর শুক্রবার চীন ও পাকিস্তান পৃথক বিবৃতি দিলেও বাংলাদেশ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় একদিন পর। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বৈঠকটিকে ‘অনানুষ্ঠানিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, আঞ্চলিক শান্তি, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বাংলাদেশের বিবৃতিতে জানানো হয়, সহযোগিতা জোরদারে অবকাঠামো, যোগাযোগ, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, সমুদ্রবিষয়ক কার্যক্রম, তথ্যপ্রযুক্তি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ কয়েকটি খাত চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘এই উদ্যোগ কোনো তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে নয়’—এ কথাটিও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়।
পাকিস্তানের বিবৃতিতে জনকেন্দ্রিক উন্নয়নের অভিন্ন আকাঙ্খার কথা তুলে ধরে বলা হয়, চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে ইসলামাবাদ আগ্রহী।

তিন দেশের বিবৃতিতেই ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্তের কথা পুনরায় উল্লেখ করা হয়েছে, যা ভবিষ্যৎ ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে কাজ করবে।

চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ চীন থেকে ৮ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে এবং চীনে রপ্তানি করেছে ৪৬১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। গত অর্থবছরে চীন থেকে মোট আমদানি মূল্য ছিল ১৬ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার, অন্যদিকে রপ্তানির পরিমাণ ছিল মাত্র ৭১৫ মিলিয়ন ডলার।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। এরপরও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রধান প্রতিবেশী ভারত এখনও বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশ ৯০০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। তার বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১৫৭ কোটি ডলারের।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়লেও সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কিছুটা উষ্ণতা দেখা যাচ্ছে। কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ছে, ভিসা নীতি শিথিল হচ্ছে এবং বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা উল্লেখযোগ্যভাবে গড়ে ওঠেনি। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, এই বাণিজ্যের পরিমাণ ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও কম।

শাহরাস্তিতে মাদক ও স্বৈরাচার বিরোধী আলোচনা সভা

মোঃ সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৩০ অপরাহ্ণ
শাহরাস্তিতে মাদক ও স্বৈরাচার বিরোধী আলোচনা সভা

মাদকের বিষয়ে শাহরাস্তি উপজেলার টামটা দক্ষিণ ইউনিয়ন ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো একটি প্রতিবাদী আলোচনা সভা ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। ৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মাদক ব্যবসায়ী ও স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।

আলোচনা সভায় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বিল্লাল শিকদারের সভাপতিত্ব ও টামটা দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবদলের নেতা মো. মমিন শিকদার (লিটন মাস্টার) এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের ব্রাঞ্চ অফিসার মনির হাওলাদার।

এছাড়াও অন্যানদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, টামটা দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকশামীম আহমেদ, ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বিল্লাহ হোসেন শিকদার, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেরাজুন নবী (রাজু), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল প্রিন্স, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম (মানিক), সৌদি আরবের রিয়াদ শাখার বিএনপির সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদিন, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক দিদার হোসেন মজুমদার।

সভায়বক্তারা মাদকের ভয়াবহতা এবং সমাজে এর বিস্তার রোধে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্সের ওপর জোর দেন এবং এই সামাজিক ব্যাধি থেকে যুবসমাজকে রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

আলোচনা সভা শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। যা স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এই আয়োজনের মাধ্যমে এলাকার মাদক নির্মূল ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

শাহরাস্তিতে ​মহিলা মাদরাসার কমিটির বিরুদ্ধে মানববন্ধন

মো. সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ
শাহরাস্তিতে ​মহিলা মাদরাসার কমিটির বিরুদ্ধে মানববন্ধন

শাহরাস্তিতে বলশিদ মহিলা মডেল আলিম মাদরাসার নতুন কমিটি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামকে সভাপতি করার পর থেকেই এই বিতর্ক শুরু হয়। তার পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। ইতিমধ্যে কমিটির তিনজন সদস্য পদত্যাগও করেছেন।

​স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদরাসার কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াটি ছিল অস্বচ্ছ ও গোপনে। তারা বলছেন, মাদরাসার নাম তিনবার পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথমে “ফজিলতের নেছা মহিলা মাদরাসা”, পরে “শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা মাদরাসা” এবং এখন “বলশিদ মডেল মহিলা আলিম মাদরাসা” নাম রাখা হয়েছে। যদিও মাদরাসার ফটকে এখনও আগের নামফলকই ঝুলছে। ​এছাড়াও সভাপতি আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে আরও কিছু গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

​তিনি একসাথে একাধিক মাদরাসার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। ​তার স্ত্রী নাজমা বেগম মাদরাসার অফিস সহকারী হলেও তিনি নাকি বাড়িতে বসেই হাজিরা খাতায় সই করেন। ​তাদের পরিবারের আরও পাঁচজন সদস্য মাদরাসার বিভিন্ন পদে চাকরি করছেন।

অভিভাবক সদস্য খোরশেদ আলম জানান, “আমার দুই মেয়ে এখানে পড়ে। আমাকে হঠাৎ ডেকে অভিভাবক সদস্য হিসেবে সই করতে বলা হয়। এটা একটা কৌশল ছিল বুঝতে পেরে আমি পদত্যাগ করেছি।”

​ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, “গোপনে অসৎ উদ্দেশ্যে এই কমিটি করা হয়েছে। আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানতাম না।”

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন জানান, অধ্যক্ষের কক্ষের চাবি ও কমিটির সব নথিপত্র সভাপতির কাছেই থাকে।

​সভাপতি আমিনুল ইসলাম সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মাদরাসার নাম দুইবার পরিবর্তন হয়েছে, তিনবার নয়। অন্য প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হয়েও এখানে সভাপতি হওয়া নিয়মসিদ্ধ। যারা পদত্যাগ করেছেন, সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।”

​উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেন জানিয়েছেন, “কমিটি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

স্থানীয়দের দাবি, এই বিতর্কিত কমিটি বাতিল করে একটি স্বচ্ছ কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে যদি সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সুপার মনিরুজ্জামানকে অপসারণ করা না হয়, তাহলে তারা আরও কঠোর আন্দোলন করবেন।

এলাকাবাসীর সর্বস্তরের জনগণের অংশ গ্রহনে  মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন,ওই সময় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় এলাকাবাসী সৈয়দ আহমেদ দুলাল, কামরুল আহসান মজুমদার, মমতাজ উদ্দিন ভূঁইয়া, শাহ আলম খান, বাবুল হোসেন পাটোয়ারী, গিয়াস উদ্দিন মিয়াজী, লিপন, মনির হোসেন, রুহুল আমিন পাটোয়ারী, কিরণ মুন্সি, মোশারেফ মেম্বার, হেলাল মুন্সী, সাগরসহ বহু অভিভাবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের হামলায় শিশুসহ মা ও মেয়ে আহত

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৯:৩০ অপরাহ্ণ
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের হামলায় শিশুসহ মা ও মেয়ে আহত

চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০ নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের মাঝি বাড়িতে পারিবারিক কলহের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় বসত ঘর ভাংচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়ও প্রতিপক্ষের হামলায় শিশু সহ মা ও মেয়ে আহত হয়েছে। এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনার বিবরনে ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের মাঝি বাড়ির দুলাল গংদের সাথে শাহানারা বেগমের সাথে সম্পত্তিগত ও পারিবারিক ভাবে বিরোধ চলে আসছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দুলাল, সানু (৫০) ও তাদের ৩ মেয়ে বিথী, রিমা, সাবিনা জোরপূর্বক শাহানারা বেগমের বসত ঘরে প্রবেশ করে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় শাহানারা বেগম, তার মেয়ে জান্নাত আক্তার ও নাতনি ১০ বছরের শিশু উম্মে আইমান গুরুতর আহত হয়। এছাড়াও হামলাকারীরা তাদের বসত ঘর সহ ভিতরের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে। শাহানারা বেগমদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে উপস্থিত লোকজন শাহানারা বেগম সহ আহতদের উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। শাহানারা বেগম ও নাতিন উম্মে আইমানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং জান্নাত আক্তারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি দেন।

জান্নাত আক্তার বলেন, তাদের সাথে আগে থেকেই পারিবারিক বিষয় নিয়ে একটু দ্বন্দ ছিলো। তারা প্রতিনিয়ত আমাদেরকে প্রাণে মারার হুমকি দিত এবং নুন থেকে চুন ঘষলেই তারা আমাকে ও আমার মাকে মারতে আসতো। রবিবার আমি ঘরে বসে আমার মামাতো বোনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলতেছি, এ সময় আমাদের ঘরের পাশ দিয়ে রিমা যাওয়ার সময় কি শুনে তার বাবা মা ও বোনদেরকে নিয়ে এসে আমাদেরকে মারধর করে এবং গালিগালাজ করতে থাকে।

শাহানারা বেগমের ছেলে অলিউল্লাহ বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম না। যখনই আমি বাড়ি থেকে সরে যাই তখনই তারা আমার মাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়। আমার বোন স্বামীর বাড়ি থেকে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসছে, তাদের উপর এভাবে হামলা করেছে এবং পরবর্তীতে আমার বোন ও আমি বাড়িতে না থাকলে আমার মাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। আমাদের অপরাধ আমরা তাদের বংশের না এবং স্থানীয় না, আমরা মামার বাড়িতে থাকি এজন্য আমরা বাড়ি থেকে সরে যাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়। তাই আমি প্রশাসনের কাছে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসীদের শাস্তির আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার চাই।

শাহানারা বেগমের ছেলে অলিউল্লাহ বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় দুলাল, সানু, বিথী, রিমা, সাবিনাকে বিবাদী কের একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ বাহার মিয়া বলেন, বিষয়টি জেনেছি, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখতেছি।