খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫, ১৯ আষাঢ়, ১৪৩২

বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান বৈঠক: ভারতের জন্য কৌশলগত বার্তা?

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫, ৯:১৯ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান বৈঠক: ভারতের জন্য কৌশলগত বার্তা?

বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের অংশগ্রহণে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আয়োজিত এই বৈঠকে তিন দেশ একটি সম্ভাব্য জোট গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে আঞ্চলিক ভারসাম্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

গত বৃহস্পতিবার চীনের কুনমিং শহরে আয়োজিত ‘নবম চায়নাসাউথ এশিয়ান এক্সপো’ এবং ‘ষষ্ঠ চায়নাসাউথ এশিয়া কো-অপারেশন ফোরাম’-এর সাইডলাইনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন চীনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইডং, বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এবং পাকিস্তানের অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ।

বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, তিন দেশ প্রতিবেশীসুলভ মনোভাব, সমতা, পারস্পরিক আস্থা, উন্মুক্ততা ও অন্তর্ভুক্তির ভিত্তিতে সহযোগিতা জোরদারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই সঙ্গে তারা বহুপক্ষীয়তা ও উন্মুক্ত আঞ্চলিকতার পক্ষে কাজ করতে আগ্রহী বলেও জানায়। তিন দেশই নিশ্চিত করেছে, এই উদ্যোগ কোনো তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে নয়।
বৈঠকে অবকাঠামো, যোগাযোগ, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, স্বাস্থ্য, কৃষি, সমুদ্রনীতি, তথ্যপ্রযুক্তি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। এসব খাত চিহ্নিত করে পারস্পরিক সমঝোতা বাস্তবায়নে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।

চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ মনে করেন, এই আলোচনার গন্তব্য এখনো স্পষ্ট নয়। তিনি বলেন, ‘ত্রিদেশীয় যে আলাপ শুরু হয়েছে, সেটি এখনো খুব স্পষ্ট নয় যে তারা কী করতে চায়। বেশ কিছু বিষয়ে সহযোগিতার কথা বলা হলেও শেষপর্যন্ত কতদূর এগোয় সেটাই দেখার বিষয়।’

তবে তার মতে, এই উদ্যোগের পেছনে প্রতিবেশী শক্তিধর রাষ্ট্র ভারতকে একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টাও থাকতে পারে। কারণ, এই তিন দেশের কারও সঙ্গেই ভারতের সম্পর্ক বর্তমানে খুব একটা ভালো নয়।
মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘ভারতকে দেখানোর একটা প্রয়াস থাকতে পারে যে, আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি তাহলে অনেক কিছু করা সম্ভব। ভারতকে নাড়া দিয়ে দেখা যে তারা এগিয়ে আসে কিনা। এর আগেও বিসিআইএম করিডোর বন্ধ হয়ে যায় ভারতের অনাগ্রহেই, সার্কও অচল হয়ে আছে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলুল হালিম রানা এই ত্রিপক্ষীয় কাঠামোকে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা হিসেবে দেখছেন। তার মতে, ‘এই তিন দেশের সঙ্গেই ভারতের আস্থা সংকট রয়েছে সীমান্ত ইস্যু, কাশ্মীর প্রসঙ্গ এবং আঞ্চলিক নেতৃত্বের প্রশ্নে।’

ফজলুল হালিম রানা বলেন, ‘জোটটি যদি কেবল অর্থনৈতিক সহযোগিতায় সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে আন্তর্জাতিকভাবে বড় কোনো সংকট তৈরি নাও হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, চীন এমন কাঠামোকে প্রাথমিকভাবে অর্থনৈতিক কূটনীতি হিসেবে উপস্থাপন করলেও তা দীর্ঘমেয়াদে কৌশলগত প্ল্যাটফর্মে পরিণত হতে পারে।’ এতে ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়ার পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক একটি নতুন বলয়ের উত্থান ঘটতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

ড. ফজলুল হালিম আরও বলেন, ‘পশ্চিমা শক্তিগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান এই উদ্যোগকে চীনের প্রভাব বিস্তারের কৌশল (ইনফ্লুয়েন্স প্রজেকশন) হিসেবে দেখছে। ফলে এটি দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার পাশাপাশি ব্লক রাজনীতির পুনরুত্থানের ইঙ্গিতও বহন করতে পারে।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এই অধ্যাপকের মতে, ভারত কোয়াড, বিমস্টেক ও আইওআরএর মতো কাঠামোর মাধ্যমে একটি নিজস্ব বলয় তৈরি করছে, যেখানে চীনের অংশগ্রহণ নেই। ফলে চীন বিকল্প কাঠামো তৈরিতে আগ্রহী, বিশেষ করে এমন দেশগুলোকে নিয়ে যাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক টানাপোড়েনপূর্ণ।

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের জন্য এটি একটি কূটনৈতিক সুযোগ, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কোণঠাসা অবস্থায়। আর বাংলাদেশের জন্য এটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ও উন্নয়ন সহযোগিতা জোরদারের একটি সম্ভাবনা।’

অধ্যাপক ফজলুলের ভাষায়, ‘ভারতের আগমুহূর্তে এই কাঠামোর উত্থান এবং এতে ভারতের অনুপস্থিতি নিছক উন্নয়নমূলক কোনো উদ্যোগ নয়; বরং এটি কৌশলগত বার্তা পাঠানোর প্রচেষ্টা এই বিশ্লেষণ অনেক পর্যবেক্ষকই করছেন।’

চীন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পেছনে রয়েছে একাধিক আঞ্চলিক ও ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে এই উদ্যোগকে ভারত কীভাবে দেখবে, এবং তা দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত ভারসাম্যে কী প্রভাব ফেলতে পারে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা অনেকে মনে করছেন, ত্রিপক্ষীয় এই উদ্যোগে যুক্ত হওয়ার আগে বাংলাদেশের জন্য আঞ্চলিক বাস্তবতা, বিদ্যমান সম্পর্ক ও সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়াগুলো গভীরভাবে মূল্যায়ন করা জরুরি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এহসানুল হক বলেন, ‘এই ধরনের জোটে যাওয়ার আগে বাংলাদেশকে অবশ্যই একটি সুপরিকল্পিত হোমওয়ার্ক করতে হবে। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ ছাড়া কৌশলগত এমন পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক হবে না। কারণ, অবশ্যম্ভাবীভাবে ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া আসবে এটা অপ্রত্যাশিত কিছু নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ করে পাকিস্তানের সঙ্গে যদি বাংলাদেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়, তাহলে ভারত সেটা ইতিবাচকভাবে নেবে না। ভারতের দিক থেকে এই ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হবে এমনটা ভাবাও কঠিন। ফলে এই পরিস্থিতি সামলানো বাংলাদেশের জন্য কিছুটা কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে।’

এহসানুল হকের মতে, ‘এই ধরনের জোটে যোগ দেওয়ার আগে সুবিধা-অসুবিধাগুলো বাস্তবভিত্তিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। কারণ, ভারতের সঙ্গে চীন ও পাকিস্তান উভয়েরই ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক বৈরি সম্পর্ক রয়েছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে বাংলাদেশকে সতর্কতার সঙ্গে আগাতে হবে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বৈঠকটিকে ‘অনানুষ্ঠানিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, আঞ্চলিক শান্তি, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ত্রিদেশীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পারস্পরিক সমঝোতার বিষয়গুলো বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের কথা জানানো হয়েছে।
বৈঠকের পর শুক্রবার চীন ও পাকিস্তান পৃথক বিবৃতি দিলেও বাংলাদেশ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় একদিন পর। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বৈঠকটিকে ‘অনানুষ্ঠানিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, আঞ্চলিক শান্তি, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বাংলাদেশের বিবৃতিতে জানানো হয়, সহযোগিতা জোরদারে অবকাঠামো, যোগাযোগ, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, সমুদ্রবিষয়ক কার্যক্রম, তথ্যপ্রযুক্তি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ কয়েকটি খাত চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘এই উদ্যোগ কোনো তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে নয়’—এ কথাটিও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়।
পাকিস্তানের বিবৃতিতে জনকেন্দ্রিক উন্নয়নের অভিন্ন আকাঙ্খার কথা তুলে ধরে বলা হয়, চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে ইসলামাবাদ আগ্রহী।

তিন দেশের বিবৃতিতেই ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্তের কথা পুনরায় উল্লেখ করা হয়েছে, যা ভবিষ্যৎ ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে কাজ করবে।

চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ চীন থেকে ৮ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে এবং চীনে রপ্তানি করেছে ৪৬১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। গত অর্থবছরে চীন থেকে মোট আমদানি মূল্য ছিল ১৬ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার, অন্যদিকে রপ্তানির পরিমাণ ছিল মাত্র ৭১৫ মিলিয়ন ডলার।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। এরপরও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রধান প্রতিবেশী ভারত এখনও বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশ ৯০০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। তার বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১৫৭ কোটি ডলারের।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়লেও সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কিছুটা উষ্ণতা দেখা যাচ্ছে। কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ছে, ভিসা নীতি শিথিল হচ্ছে এবং বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা উল্লেখযোগ্যভাবে গড়ে ওঠেনি। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, এই বাণিজ্যের পরিমাণ ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও কম।

কচুয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ পাঠানের জন্ম বার্ষিকীতে দোয়ার আয়োজন

কচুয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫, ৮:০৬ অপরাহ্ণ
কচুয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ পাঠানের জন্ম বার্ষিকীতে দোয়ার আয়োজন

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পালাখাল ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসার গভর্নিং বডির কয়েক বারের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ পাঠানের ৭৪ তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সকালে এ উপলক্ষে পালাখাল ছালেহীয়া আলীম মাদ্রাসার সামনে চির শায়িত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ পাঠানের কবর জিয়ারত শেষে মাদরাসা জামে মসজিদে মরহুমের জান্নাতময় জীবন কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।

এ সময় মাদরাসার অধ্যক্ষ মুফতী আব্দুর রাজ্জাক আনোয়ারী, উপাধ্যক্ষ মোঃ সাদিকুর রহমান, আরবি প্রভাষক আব্দুর কুদ্দুস খান, সহকারী অধ্যাপক মোঃ হোসেন খান, মইনুল হাসান, আরবি প্রভাষক মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ, সহকারী মৌলভী মো: শরীফ হোসেন, হাফেজ ফজলুর রহমানসহ মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, কচুয়া উপজেলায় যুদ্ধকালীন কমান্ডার ও ঐতিহ্যবাহী পালাখাল ছালেমিয়া আলিম মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ পাঠান উপজেলার পালাখাল গ্রামের মৃত: আনসর আলী পাঠানের সন্তান। তিনি ১৯৭১ সালে জীবন বাজি রেখে রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি পালাখাল সালেহীয়া আলিম মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি ও নারায়নগঞ্জস্থ চাঁদপুর জেলা সমিতির সভাপতি সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে সুনামের সাথে জড়িত ছিলেন।

সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ পাঠান ১৯৫২ সালের ৩০ জুন জন্ম গ্রহণ করেন এবং ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর জীবনের মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেছেন।

হাজীগঞ্জে প্রাইম ব্যাংকের দুই গ্রাহকের টাকা উধাও

মোঃ ইউসুফ বেপারী
প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫, ৭:৪০ অপরাহ্ণ
হাজীগঞ্জে প্রাইম ব্যাংকের দুই গ্রাহকের টাকা উধাও

হাজীগঞ্জ বাজারের প্রাইম ব্যাংকের দুই গ্রাহকের ২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা উধাও হয়েছে। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, দুই গ্রাহক জুন মাসেই নতুন একাউন্ট খুলে। এই মাসেই তাদের একাউন্ট থেকে বিকাশে টাকা লেনদেন হয়।

সোমবার দুপুরে ব্যাংকে পৃথকভাবে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে দুই গ্রাহক তাদের একাউন্টে কোন টাকা পায়নি। গ্রাহকেরা হলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা এলাকার মাসুদা বেগমের ১ লাখ ৩১ হাজার ও কচুয়া উপজেলার সাচার এলাকার সুমি আক্তারের এক লাখ ২৭ হাজার টাকা। তাদের দুজনের স্বামী মালয়েশিয়া প্রবাসী। স্বামীর কথামতো তারা প্রাইম ব্যাংকে একাউন্ট খুলে লেনদেন শুরু করেন। এখন ব্যাংকে রাখা টাকা ফেরত চেয়ে পৃথক দুটো অভিযোগ দেন তারা।

ভুক্তভোগী মাসুদা বেগম বলেন, চেক বই নিতে এসে দেখি একাউন্টে টাকা নাই। স্বামীর কথা মতো প্রাইম ব্যাংকে একাউন্ট খুলেন তিনি।

সাচার থেকে আসা গ্রাহক সুমি আক্তার বলেন, স্বামীর কথামতো ব্যাংকে টাকা চেক করতে গিয়ে দেখি একাউন্ট শূন্য। এটা কিভাবে সম্ভব? কোন প্রকার ওটিপি বা ম্যাসেজ আসেননি। আমরা টাকাগুলো ফেরত চাই।

ব্যাংক স্ট্যাটমেন্টে দেখা যায়, গেল ২৫ জুন মাসুদা বেগমের একাউন্ট থেকে ৭ বারে ৮০ হাজার টাকা, ২৬ জুন ৪১ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে টাকাসহ মোট ১ লাখ ২১ হাজার টাকা কেটে নেয়া হয়।

অন্যদিকে সুমি আক্তারের একাউন্ট থেকে ২৬ জুন তিনবারে ৫৫ হাজার, ২৯ জুন ৪ বারে ৭৭ হাজার টাকাসহ মোট ১ লাখ ২৭ হাজার বিকাশে কেটে নেয়া হয়।

হাজীগঞ্জ প্রাইম ব্যাংক শাখার ম্যানেজার মুহাম্মদ আবু সাঈদ ভুঁইয়া কথা বলতে নারাজ হলেও মিডিয়া কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলছেন, দুই গ্রাহকের একই নিয়মে টাকা লেনদেন হয়েছে। বিকাশের মাধ্যম তাদের এই লেনদেন হয়। এই ব্যাপারে বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মালয়েশিয়ায় আটক ৩৬ বাংলাদেশি আইএসের সঙ্গে যুক্ত: পুলিশ

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫, ৭:০৭ অপরাহ্ণ
মালয়েশিয়ায় আটক ৩৬ বাংলাদেশি আইএসের সঙ্গে যুক্ত: পুলিশ

মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির পুলিশ বিভাগ।

সোমবার মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক দাতুক সেরি মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল ফেডারেল সিআইডি পরিচালকের দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠান স্থানীয় সাংবাদিকদের সামনে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আটক বাংলাদেশিরা আইএস-এর চরমপন্থী বিশ্বাস এবং জঙ্গী কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের মতাদর্শ ছিল সহিংস। নিরাপত্তা অপরাধ (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন ২০১২ (সোসমা) এর অধীনে তাদের আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্যদের অধিকতর তদন্তের জন্য আটক রাখা হচ্ছে। গ্রেফতার করা কয়েকজনকে ইতোমধ্যেই ফেরত পাঠানো হয়েছে।

সম্প্রতি আইএস এর কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৬ জন বাংলাদেশিকে আটক করে মালয়েশিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তিনি জানান, মামলা এবং তদন্তের আরও বিস্তারিত জানাতে শীঘ্রই একটি সংবাদ সম্মেলন করা হবে।

এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুতিন ইসমাইল বলেন, ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সমন্বিত নিরাপত্তা অভিযান সেলাঙ্গর এবং জোহর বারু প্রদেশে তিনটি ধাপে পরিচালিত হয়।

আটকদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে শাহ আলম এবং জোহর বারু দায়রা আদালতে দন্ডবিধির সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত অপরাধ এর অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে। আরও ১৫ জনকে কারাদন্ড দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে এবং ১৬ জন এখনও জঙ্গী আন্দোলনে জড়িত থাকার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

বিশেষ শাখার সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা গেছে যে, এই দলটি দেশে আইএস-অনুপ্রাণিত মতাদর্শ চালু করেছে এবং বাংলাদেশি কমিউনিটি থেকে সদস্য নিয়োগ করাচ্ছে।