খুঁজুন
রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

চাঁদপুর জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৬২ হাজার পশু

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫, ৮:১৩ অপরাহ্ণ
চাঁদপুর জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৬২ হাজার পশু

চাঁদপুরে ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৬২ হাজার ৯৮টি পশু। জেলায় চাহিদা রয়েছে ৭৬ হাজার পশুর। এতে দাপ্তরিক হিসেবে পশুর সংকট থাকবে ১৪ হাজার। তবে আশপাশের জেলার পশু হাটে উঠলে এই সংকট থাকবে না বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। দাম ভালো পেলে লোকসান কাটাতে পারবে বলে মনে করেন খামারিরা।

সম্প্রতি সময়ে সদর ও আশপাশের উপজেলায় খামারি এবং প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যে জানা যায়, জেলায় তালিকাভুক্ত খামারি রয়েছে ৩ হাজার ৭৭০ জন। খামারগুলোতে গরু উৎপাদন হয়েছে ৪২ হাজার ৪ শত ৯৭টি। ছাগল ভেড়া ও অন্যান্য পশু উৎপাদন হয়েছে ১৯ হাজার ৬০১টি। সব মিলিয়ে মোট উৎপাদন হয়েছে ৬২ হাজার ৯৮টি।

কোরবানির জন্য গবাদি পশু প্রয়োজন ৭৬ হাজার ৩৫৪টি। হিসেব মতে গবাদি পশু সংকট রয়েছে ১৪ হাজার ২৫৬টি। চলতি বছর জেলায় ষাঁড় গরু উৎপাদন হয়েছে ২৪ হাজার ২৪৭, বলদ ৭ হাজার ৭৮১, গাভী ১০ হাজার ৪৬৯ টি। সর্বমোট গরু উৎপাদন হয়েছে ৪২ হাজার ৪৯৭টি। মহিষ ২১৭, ছাগল ১৮ হাজার ৪৫৮, ভেড়া ৮৩০ ও অন্যান্য পশু ৯৬টি।

সদর উপজেলার কল্যাণপুর ইউনিয়নের খামারি কামাল ফরাজি বলেন, গত ৭ বছর আমাদের খামারে দুগ্ধ উৎপাদনের পাশাপাশি কোরবানির জন্য পশু পালন করা হয়। এ বছর আমাদের শতাধিক ষাঁড় বিক্রির জন্য প্রস্তুত। আশা করি দাম ভালো পেলে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবো। কারণ পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে।

একই এলাকার খামারি মো. মোশারফ বলেন, অন্য জেলা থেকে পশু আসলেও স্থানীয়ভাবে পালিত কোরবানির পশুর চাহিদা বেশি। আমাদের খামারে নিজেদের উৎপাদিত ঘাস ও দানাদার খাদ্যে ষাঁড়গুলো কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে আমাদের সমস্যা হচ্ছে শ্রমিকের দৈনিক হাজিরা ও খাদ্যের দাম বেশি। বিক্রি মূল্যের উপর নির্ভর করবে আমাদের লাভ- লোকসান। দেড় লাখ থেকে শুরু করে পাঁচ লাখ টাকা মূল্যে ষাঁড় আছে খামারে।

কল্যাণপুরের স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন গাজী বলেন, এলাকায় একাধিক খামারি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত খাবারে এস ষাঁড় প্রস্তুত করেছে। তারা যদি ষাঁড়গুলোর দাম ভালো পায় তাহলে টিকে থাকতে পারবে। লোকসানে পড়লে খামারি সংখ্যা কমে যাবে এবং বিনিয়োগে আগ্রহ হারাবে।

ওই এলাকার ফারিজ এগ্রো ফার্মে শহর থেকে কোরবানির জন্য ষাঁড় দেখতে এসেছেন ক্রেতা গিয়াস উদ্দিন মিলন। তিনি বলেন, এই খামারের ষাঁড়গুলো দেখে পছন্দ হয়েছে। দরদামে ঠিক থাকলে কেনা যাবে।

সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের খামারি মান্নান বলেন, খামারে এখন গরুর সংখ্যা কম। কারণ বিক্রিতে খরচ উঠে আসে না। এতে অনেকে আগ্রহ হারিয়েছে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার খামারি জসিম উদ্দীন মিন্টু বলেন, গবাদি পশুর খাদ্যের দাম বৃদ্ধি, খড়ের অপর্যাপ্ততা এবং শ্রমিক সংকটের কারণে অনেকের ইচ্ছে থাকলেও গবাদিপশু পালনে আগ্রহ হারাচ্ছে। খামারি তৈরি করার জন্য সরকারি প্রণোদনা প্রয়োজন।

একই উপজেলার সকদীরামপুর গ্রামের শাহাবুদ্দিন, ছামাদ মিজি, আক্তার হোসেন পাশাপাশি বাসিন্দা। তারা পারিবারিকভাবে ৫ থেকে ৭টি করে কোরবানির ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন। এদের মধ্যে শাহাবুদ্দিন বলেন, তারা নিজেদের পরিশ্রমে এসব পশু লালন পালন করেন। আশা করছেন তাদের ষাঁড় বিক্রিতে লাভবান হবেন।

চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জ্যোতির্ময় ভৌমিক বলেন, এ বছর আমরা কোরবানি প্রস্তুত করার জন্য সার্বিক তত্ত্বাবধান করেছি। যথাসাধ্য চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। আর পশুগুলো প্রাকৃতিক খাবারে বেড়ে উঠেছে।

তিনি আরো বলেন, জেলায় দুই শতাধিক কোরবানির পশুর হাট বসবে। চাহিদার আলোকে কোন ধরণের পশুই সংকট হবে না। কারণ কোরবানির হাটে অন্য জেলার পশু আসলে চাহিদা মিটে যায়। সংকট অবশ্য কাগজে কলমে।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, কোরবানির পশুর হাটগুলোতে আর্থিক লেনদেন ও ক্রেতার নিরাপত্তায় পুলিশবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও পুলিশের টহল সদস্যরাও কাজ করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের পাশে চাঁসক ইসলামী ছাত্র আন্দোলন

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ৮:৪৪ অপরাহ্ণ
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের পাশে চাঁসক ইসলামী ছাত্র আন্দোলন

শনিবার সকাল ১১টায় সারাদেশে একযোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে চাঁদপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রের কয়েকটি ভ্যানুতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূরীকরণে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর সরকারি কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রকমের সহায়তা প্রদান করেন। তীব্র গরমের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ও অভিভাবকদের মাঝে ফ্রীতে মিনারেল ওয়াটারের ব্যাবস্থা করেন। বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী উপহার হিসেবে প্রদান করেন।

বহু শিক্ষার্থীরা তীব্র যানজটের কারণে উপকেন্দ্রে পৌছাতে দেরি হওয়ায় দ্রুততার সহিত অন্যান্য উপকেন্দ্রে পৌঁছে দেয়ার ব্যাবস্থা করেন।

এছাড়াও শ্রেণীকক্ষ খুঁজে দেওয়া, অভিভাবকদের বসার স্থানের ব্যবস্থা, তাদের আনুষঙ্গিক ব্যাগ মোবাইল জমা রাখা সহ বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হয়।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি ডি.এম ফয়সাল, সহ-সভাপতি কে.এম মাসুদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ ফরহাদ, সদস্য আল আমিন সাইফি, ইব্রাহিম মজুমদার, বায়েজিদ বেপারী ও মিনহাজুল ইসলাম প্রমুখ।

ফেসবুকে পরকিয়া সম্পর্ক করে প্রবাসীর স্ত্রীকে ভারতে পাচার, আটক নারী

শওকত আলী
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ৮:২৯ অপরাহ্ণ
ফেসবুকে পরকিয়া সম্পর্ক করে প্রবাসীর স্ত্রীকে ভারতে পাচার, আটক নারী

চাঁদপুরে এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরের প্রতারক সুজিত সরকার আকাশের। দির্ঘদিন তাদের সম্পর্কে একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে প্রবাসীর স্ত্রীকে মোবাইল ফোনে উত্তপ্ত করত। অবশেষে দেখা করার কথা বলে চাঁদপুরে এসে কৌশলে প্রবাসীর স্ত্রীকে গাড়িতে উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এই ঘটনায় প্রবাসীর স্ত্রীর ভাই নয়ন চন্দ্র শীল বাদী হয়ে তিনজনকে বিবাদী করে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন।

মামলা প্রেক্ষিতে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই বিল্লাল হবিগঞ্জের মাধবপুর ৪নং আদাঐর ইউনিয়ন থেকে মামলার দ্বিতীয় আসামী শৈলেন সরকারের মেয়ে স্বরনিকা সরকারকে আটক করে চাঁদপুর মডেল থানা নিয়ে আসে।

শনিবার দুপুরে পুলিশের হাতে আটক হওয়া দ্বিতীয় আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। তবে প্রবাসীর স্ত্রীকে বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়ায় পাচার করেছ বলে ধারণা করছে পুলিশ।

এই ঘটনায় মামলার বাদী নয়ন চন্দ্র শীল জানায়, আমার ছোট বোনকে মোবাইল ফোনে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করত প্রধান আসামি আকাশ। পরে তারা তিনজন মিলে চাঁদপুরে এসে বাবুরহাট স্কুলের সামনে থেকে গাড়িতে উঠিয়ে তুলে নিয়ে ইন্ডিয়ায় পাচার করে দেয়। এ সময় বোনের সাথে স্বর্ণালংকার ছিল তা অপহরণকারীরা নিয়ে যায়।

এই ঘটনায় পুলিশ প্রধান আসামিকে ধরার জন্য হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে অভিযান চালায়। কিন্তু এর পূর্বেই ছোট বোনকে আসামি আকাশ কৌশলে ইন্ডিয়ায় পাচার করে দেয়। এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত আকাশের বোন জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণ পায় পুলিশ। আমি আমার বোনকে দ্রুত উদ্ধার করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

পুলিশ জানায়, মোবাইল ফোনে পরিচয় হওয়ার পর বাবুরহাট এলাকা থেকে প্রবাসীর স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যায় হবিগঞ্জে। পরে ভিকটিমকে উদ্ধার করার জন্য সেখানে গিয়ে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় মামলার দ্বিতীয় আসামিকে আটক করে চাঁদপুরে এনে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উদ্ধার করার চেষ্টা করা হবে।

কচুয়ায় এক পরিবারের ৮ জন প্রতিবন্ধীর মানবেতর জীবন-যাপন

কচুয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ৮:০০ অপরাহ্ণ
কচুয়ায় এক পরিবারের ৮ জন প্রতিবন্ধীর মানবেতর জীবন-যাপন

পরিবারে জন্ম নেওয়াদের বেশির ভাগই বাক ও শারিরিক প্রতিবন্ধী। ওই পরিবারের বিভিন্ন বয়সের ৮ জন বাক ও দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী রয়েছেন। তারা কেউ কথা বলতে পারেন না। দিন মজুরের কাজ করলেও কথা শুনতে না পারায় এবং কাজের ধরণ বুঝতে না পারায় সচরাচর তাদের কাজও মিলছে না। এ কারনে প্রতিবন্ধী ভাতার সীমিত টাকার উপর নির্ভর করে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর ভাবে জীবন যাপন করছে ওই পরিবারটি।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার মেঘদাইর গ্রামের নতুনপাড়ায় এক বাড়িতে ৮ জন বাক ও দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মেঘদাইর গ্রামের নতুন পাড়ার অধিবাসী আবুল হাসেম জন্মগত ভাবেই একজন বাক প্রতিবন্ধী। তার ছেলে ইসমাইল হোসেন, মেয়ে কুহিনুর আক্তার, বোন সাহিদা আক্তার ও নাতনি রিয়া আক্তার, নাতি সিয়াম হোসেন ও মেয়ের জামাই মহিউদ্দিন শারীরিক প্রতিবন্ধী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবুল হাসেম প্রথমে বাক প্রতিবন্ধী হয়। পরবর্তীতে একে একে তার বোন, মেয়ে ও নাতি-নাতনিসহ পরিবারে প্রতিবন্ধীর সংখ্যা বেড়ে যায়। ফলে এ পরিবারটি এতো সংখ্যক প্রতিবন্ধী নিয়ে পড়েছে বিপাকে। চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মরছে এসব অসহায় প্রতিবন্ধীরা। পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মানবতার কাজে নিয়োজিতদের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

কচুয়া উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. নাহিদ ইসলাম মুঠোফোনে জানান, আবুল হাসেম ও তার পরিবারের অপর শারিরিক প্রতিবন্ধী সদস্যরা সমাজসেবার আওতায় ভাতা পাচ্ছেন। এর বাহিরে অপর সদস্যদের জন্য হুইল চেয়ার ও অন্যান্য সুবিধা দেয়ার সুযোগ থাকলে পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে।

এদিকে বাক প্রতিবন্ধী আবুল হাসেম ও তার মেয়ের জামাতা শারিরিক প্রতিবন্ধী মহিউদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় কেউ সহায়তা করতে চাইলে ০১৭০৩-৩৭৯৬৪৬ নাম্বারে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছেন অসহায় এ পরিবারটি।