খুঁজুন
রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১০ কার্তিক, ১৪৩২

জুলাই গণঅভ্যুত্থান

শহীদ পরিবার-গুরুতর আহতদের ফ্ল্যাট দেবে সরকার

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫, ৫:২৫ অপরাহ্ণ
শহীদ পরিবার-গুরুতর আহতদের ফ্ল্যাট দেবে সরকার

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও চূড়ান্তভাবে অক্ষম আহতদের (গুরুতর আহত) ফ্ল্যাট দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রাজধানীর মিরপুরে নেওয়া হচ্ছে দুটি প্রকল্প। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভাও হয়েছে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৪শ-১৫শ ফ্ল্যাট নির্মাণের চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। প্রাথমিক প্রস্তাব অনুযায়ী শহীদ পরিবারকে ১২৫০ বর্গফুট ও গুরুতর আহতদের এক হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে।

জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও গুরুতর আহতদের কীভাবে সুবিধা দেওয়া যায়, সেটি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। এজন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ এটি নিয়ে কাজ করছে। তারা প্রাথমিকভাবে একটি প্রস্তাবও দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ও সেই বিষয়টি পজিটিভলি চিন্তা-ভাবনা করছে।

দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।

প্রাথমিকভাবে দুই প্রকল্পে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, সড়ক, মসজিদ, স্কুল ইত্যাদি সুবিধাগুলো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে করা হবে। তাই ব্যয় অনেকটাই কমে যাবে। ব্যয়ের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত বছরের জুলাই মাসে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলন একসময় সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। শেষে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। আন্দোলনে শহীদ হন শত শত ছাত্র-জনতা। আহতও হন কয়েক হাজার মানুষ।

গত ১৫ জানুয়ারি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ৮৩৪ জন শহীদের তালিকার গেজেট প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার। এছাড়া কয়েক দফায় ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে তিনটি ক্যাটাগরিতে (‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণি) আহতদের তালিকাও প্রকাশ করা হয়।

এ বিষয়ে একটা চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে, কথা উঠেছে আমাদের দিক থেকে এদের (অভ্যুত্থানে নিহত-আহত) জন্য কিছু করা উচিত। সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এটি অনুমোদিত হলে এ বিষয়ে বলা যাবে।-জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসির

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘ক’ ক্যাটাগরির (অতি গুরুতর আহত) ৪৯৩ জনের নামের তালিকার গেজেট প্রকাশ করা হয়। তালিকা করার দায়িত্বে স্বাস্থ্য বিভাগ থাকলেও তালিকা প্রকাশ করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এতে শহীদ ও আহতদের নাম ছাড়াও গেজেট নম্বর, মেডিকেল কেস আইডি, বাবার নাম, বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে।

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ এ শহীদ পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নীতিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী অতি গুরুতর আহতরা ‘ক্যাটাগরি-এ’ অন্তর্ভুক্ত হবেন। উভয় হাত বা পা বিহীন, সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন, সম্পূর্ণভাবে মানসিক বিকারগ্রস্ত ও স্বাভাবিক কাজ করতে অক্ষম— এমন আহত ব্যক্তি অতি গুরুতর আহত হিসেবে বিবেচিত হবেন।

প্রকল্প দুটি দ্রুত চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাতে রাজি হননি গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ-১) মো. আব্দুল মতিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও গুরুতর আহতদের কীভাবে সুবিধা দেওয়া যায়, সেটি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। এজন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ এটি নিয়ে কাজ করছে। তারা প্রাথমিকভাবে একটি প্রস্তাবও দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ও সেই বিষয়টি পজিটিভলি চিন্তা-ভাবনা করছে।’

বিষয়টি এখনো একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি, কোন পর্যায়ে কী করা যায়। প্রকল্প করতে কত টাকা লাগবে, কোথায় করবো, কতজনের জন্য করবো, কীভাবে করবো— সবকিছুই আলোচনার মধ্যে রয়েছে। একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। একটি প্রকল্প নিতে গেলে অনেকগুলো কনসেপ্টচুয়াল ইস্যু আছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুমোদনের বিষয় রয়েছে।’

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসির জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বিষয়ে একটা চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে, কথা উঠেছে আমাদের দিক থেকে এদের (অভ্যুত্থানে নিহত-আহত) জন্য কিছু করা উচিত। সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এটি অনুমোদিত হলে এ বিষয়ে বলা যাবে।’

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, গত ৪ মে প্রকল্প এলাকার ভেতরে প্রয়োজনীয় পরিষেবা (গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, সড়ক, মসজিদ, স্কুল ইত্যাদি) সুবিধা দিতে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম। এর আগে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ও নিজেরা একটি বৈঠক করে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, শহীদ পরিবার ও চূড়ান্তভাবে অক্ষম আহত পরিবারের জন্য এটি করা হচ্ছে। আহতদের তিনটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে। ক-ক্যাটাগরির আহতদের আমরা ফলো করবো। শহীদ ও চূড়ান্ত অক্ষম আহত সবাইকে ফ্ল্যাট দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। পূর্ণ সম্মান আমরা নিহত ও আহতদের দিতে চাই।

মিরপুরে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের জমিতে দুটি প্রকল্পের অধীনে আবাসনটা তৈরি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মিরপুর-১৪ নম্বর সেক্টরে পুলিশ স্টাফ কলেজের উল্টো দিকে একটি প্রকল্প নেওয়া হবে। মিরপুর-৯ এ পল্লবী থানার পেছনে আরেকটি প্রকল্প নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে।’

শহীদ পরিবারকে ১২৫০ বর্গফুট ও চূড়ান্তভাবে অক্ষম আহত পরিবারকে এক হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

তিনি আরও জানান, সেখানে সব ধরনের পরিষেবাসহ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। প্রকল্প এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, দোকান, কমিউনিটি সেন্টার, মার্কেটসহ অন্য প্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। দু’বছরের মধ্যে প্রকল্প দুটি শেষ করা হবে। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন করবে।

জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের ধরনভেদে ‘ক’, ‘খ’, এবং ‘গ’ শ্রেণিতে ভাগ করে সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে সরকার। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, আহত বা জুলাই যোদ্ধারা আজীবন চিকিৎসা সুবিধা পাবেন এবং তারা ভাতাও পাবেন। যারা অতি গুরুতর আহত (ক-শ্রেণি) তারা এককালীন পাঁচ লাখ টাকা পাবেন এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। একটি অঙ্গহানি হয়েছে এমন আহত (খ-শ্রেণি) যারা আছেন তারা প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা ভাতা পাবেন এবং তারা এককালীন তিন লাখ টাকা পাবেন। সামান্য আহত (গ-শ্রেণি) যারা ছিলেন, চিকিৎসা নিয়েছেন, ভালো হয়ে গেছেন, তারা চাকরিসহ পুনর্বাসন কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার পাবেন। তারা কোনো ভাতা পাবেন না।

যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারকে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে শহীদ পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে, আগামী অর্থবছরে তারা বাকি ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র পাবেন।

ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫০ অপরাহ্ণ
ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছিল ২২ দিনের ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞা। এসময় নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল। দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে নদীতে নামবেন জেলেরা।

শেষ সময়ে কেউ মেরামত করছেন নৌকা, কেউবা পুরোনো জাল সেলাই করে নিচ্ছেন নতুন করে। চোখে মুখে আনন্দের অনুভূতি থাকলেও আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। তারা বলছেন, এবছর ভরা মৌসুমেও নদীতে ইলিশের দেখা মেলেনি। আর এখন মৌসুম শেষ। জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলে কষ্টের পাল্লা ভারী হবে।

এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন চাঁদপুরে নিবন্ধিত ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু তা ছিল জেলেদের কাছে অপ্রতুল। ওই সময় জীবিকা হারিয়ে চরম কষ্টে পড়েন জেলেরা।

এদিকে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ ধরতে না গেলেও নিষেধাজ্ঞার পর বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে এবং মহাজন ও এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করতে হয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মূল জেলেদের কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা থেকে বাদ পড়েছে। অথচ যারা মাছ ধরতে জীবনেও নদীতে নামেনি এমন বিভিন্ন পেশার বেশ কিছু মানুষ সরকারী সহায়তার কার্ড পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। এমনকি বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা পেয়েও সরকারের নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে নির্বিচারে মা ইলিশ শিকার করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে সরকারের পরবর্তী সহযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ারও আহ্বান জানান।

মৎস্য কর্মকর্তারা আশা করছেন, ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার গত বছরের চেয়ে মাছের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে পারে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হয়নি। এবার রেকর্ড পরিমাণে ইলিশ উৎপাদন হতে পারে।

তিনি আরও জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করেছিল সরকার।

এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চালানো ৪৪৫ টি অভিযানে ৭৭ টি মামলা ও ৭৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১১৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাঁজা প্রদান করা হয়। এছাড়া ৬ কোটি মিটার অবৈধ জাল, ১১০০ টন ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় প্রদান করাহয়।

জনশ্রুতি আছে অভিযানে সময় অনেক জেলে সরকারের বরাদ্দ করা চাল পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই উপকূলের জেলেরা জাল, নৌকা, ট্রলার ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। বিশেষ করে হরিনা ঘাট, আখনের ঘাট, পুরানবাজার রনাগোয়াল, লঞ্চ ঘাট, হাইমচরের নীলকমল, মতলব উত্তর মোহনপুর নৌঅঞ্চলের জেলেরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথবাহিনি। এ ঘটনায় দুই মাদক কারবারি পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের ছোট বাড়ি এলাকা থেকে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীর খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জেলা ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান ও ফরিদগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত রাজিব চক্রবর্তী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকদিরামপুর গ্রামের খলিল বেপারির ছেলে মাদক কারবারি আল-আমিন (২৫) ও তার সহযোগী হত্যা মামলার আসামি রুবেল হোসেন (২৮) ফজরের নামাজের পর একটি প্রাইভেটকারে করে বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে আসে। পরে আল-আমিনের বাড়ির গোসলখানায় গাঁজাগুলো লুকিয়ে রাখে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

পরে এলাকাবাসী পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।

এলাকাবাসী জানায়, রুবেল হোসেন এর আগে একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। গত ১০ দিন আগে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আবারও মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে ওঠে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের বাইক্কারবাগানের পাশের ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী সোহেল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে মামলার অন্যতম আসামি ছিল রুবেল হোসেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন স্বপন মিয়াজী জানান, সকালে ফজরের নামাজের পর এলাকাবাসী আমাকে জানায়, এ এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি রুবেল জেল থেকে বের হয়ে আবারও মাদক কারবারির সাথে জড়িয়ে পড়েছে এবং বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে থানা পুলিশকে খবর দেই। তিনি আরো জানান, তাদের কারনে এ এলাকার যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্ আলম বলেন, সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ডিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করি। তবে মূল মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। আল-আমিনের বাবা খলিল বেপারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগ শুরু করলেন ইঞ্জি. মমিনুল হক

মো. ইউসুফ বেপারী
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:২১ অপরাহ্ণ
ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগ শুরু করলেন ইঞ্জি. মমিনুল হক

হাজীগঞ্জে ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে নিজ ইউনিয়নে গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করলেন বিএনপির কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক ইঞ্জি. মমিনুল হক।

শুক্রবার দিনব্যাপী তিনি উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করেন। এরমধ্যে তিনি ইউনিয়নের নোয়াদ্দা, উত্তর রায়চোঁ, বড়কুল রামকানাই উচ্চ বিদ্যালয়, রায়চোঁ বাজার, মধ্য বড়কুল, আড়ুলি, মোল্লাডহর, দিকচাইল, সেন্দ্রা ও কোন্দ্রা এলাকায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন।

পথসভায় ইঞ্জি. মমিনুল হক চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে ইউনিয়নবাসীর সম্মতি চাইলে উপস্থিত লোকজন একযোগে হাত উঁচিয়ে সম্মতি প্রকাশ এবং ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এসময় তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির ২২টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভায় গণসংযোগ ও পথসভা কার্যক্রম শুরু করলাম। দেশের মানুষ বিএনপিকে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। তারা ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে তারেক রহমানকে আগামির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাছান মিয়াজীর সভাপতিত্বে গণসংযোগ ও পথসভায় সফর সঙ্গী ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ রহিম পাটওয়ারী, বিএনপি নেতা আব্দুল কাদের মিয়া, ইঞ্জি. জাহাঙ্গীর আলম, ইমান হোসেন, অহিদুল ইসলাম মোহন, আব্দুল গফুর পাটওয়ারী, ওলি উল্যাহ, আলমগীর হোসেন, মোশারফ হোসেন, তাফাজ্জল হোসেন বতু, শাহাদাত হোসেন মিলন, জামাল মেম্বার, মিজানুর রহমান, মাসুদ রানা, উপজেলা মৎসজীবি দলের সভাপতি মো. ইমান হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম চৌধুরী মিঠু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক এসএম ফয়সাল হোসাইন, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব দ্বীন ইসলাম টগর, ছাত্রনেতা শামছুদ্দিন খাঁন নূর, কবির হোসেন রাজু, ইউনিয়ন যুবদল নেতা আব্দুল জব্বার, ইকবাল বেপারী, ইমাম হোসেন, আব্দুল মতিন, আলাউদ্দিন, হেলাল উদ্দিন, হোসেন মজুমদার, স্বেচ্ছাসেবক নেতা মাসুম চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, সুমন রাজ, হাসানাত, সোহাগ, কৃষক নেতা মিজানুর রহমান, ছাত্রনেতা আলামিন দিনু, হাবিবুর রহমান, ওসমান গণি, সাব্বির হোসেন, শেখ ফরিদসহ সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।