খুঁজুন
বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ৬ কার্তিক, ১৪৩২

বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার স্টেশন: মহড়ায় হাঁকডাক, কাজে শূন্য

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:৪০ অপরাহ্ণ
বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার স্টেশন: মহড়ায় হাঁকডাক, কাজে শূন্য

বছরের পর বছর মহড়ায় দক্ষতা দেখিয়ে বাহবা কুড়ালেও বাস্তবে ব্যর্থতার মুখে পড়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব ফায়ার ইউনিট। মাত্র ২৮০ মিটার দূরত্বের আগুনও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি তারা। শুরুতে এই আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে এড়ানো যেতো শত শত কোটি টাকার ক্ষতি।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিদুর্ঘটনায় নিজেদের সক্ষমতা জানান দিতে রানওয়ের পাশে বছরে বেশ কয়েকবার মহড়ার আয়োজন করে বেবিচক। এ মহড়ায় অংশ নিয়ে নিজেদের কসরত দেখান বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা। মহড়া শেষে করতালিতে বাহবা দেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বাস্তবে যখন বিমানবন্দরটির কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে তখন তারা আর পেরে ওঠেননি।

যদিও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা এবং বেবিচক চেয়ারম্যানের দাবি, আগুন লাগার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার কর্মীরা।

তবে প্রশ্ন উঠেছে, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে যদি ঘটনাস্থলে ফায়ার কর্মীরা পৌঁছে থাকেন, তাহলে তারা কেন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেন না? ৩০ সেকেন্ডে তো পুরো কার্গো ভিলেজে আগুন ছড়ানোর কথা নয়। আবার এটি বড় কোনো বিস্ফোরণের ঘটনাও নয়, যেটা মুহূর্তেই চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, বেবিচকের নিজস্ব ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের গাফিলতি ও অদক্ষতার কারণে ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়নি। আবার বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে থাকা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সংশ্লিষ্টদেরও দায় কম নয়। কারণ, কার্গো ভিলেজের সামনের অ্যাপ্রোনে আমদানি করা শত শত টন মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছিল বিমান। ফলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি কার্গো ভিলেজের কাছে যেতে পারেনি। যদিও পাইপ দিয়ে অনেক দূরের আগুনও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। প্রায় ২৭ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলে। আগুন নেভাতে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরাও আগুন নেভাতে যোগ দেন। ভয়াবহ এই আগুনের কারণে কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল ও অন্য বিমানবন্দরে অবতরণও করাতে হয়েছে। আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে লাগা আগুনে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাসহ আমদানিকারকদের পণ্য সামগ্রীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং তথা উড়োজাহাজে পণ্য ওঠানো-নামানো এবং সরবরাহের কাজটি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এরই অংশ হিসেবে তারা কার্গো ভিলেজ এবং এর সামনে অ্যাপ্রোনে মালামাল স্তূপ করে রাখে। এর মধ্যে গত শনিবার দুপুর ২টায় কার্গো ভিলেজের ভেতরে আগুন লাগে। তখন বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের (এটিসি) মাধ্যমে বার্তা যায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ফায়ার স্টেশনে। নির্দেশনা পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায় দুটি ইউনিট (প্রতিটি ইউনিটে ছয়জন করে সদস্য)। তবে অ্যাপ্রোনে অগোছালোভাবে রাখা পণ্যের স্তূপের কারণে তারা উৎসের কাছে গিয়ে আগুন নেভানোর সুযোগ পায়নি। দূর থেকে পানি ছিটিয়ে লাভ হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানবন্দরের দুজন ফায়ার কর্মী জানান, শাহজালাল বিমানবন্দরে মোট চারটি পানির গাড়ি আছে। এর মধ্যে একটি অকেজো। যখন কার্গোতে আগুন লাগে, তখন বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা করছিল। তাই দুটি গাড়ি নিয়ে তারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু যেখানে ফায়ারের গাড়ি রাখা হয়েছে, সেখান থেকে আগুনের উৎস পর্যন্ত পাইপ ঘুরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। অর্থাৎ, এত লম্বা পাইপ গাড়িতে ছিল না। তাই বাইরে থেকে ছড়িয়ে সঠিক জায়গায় পানি পৌঁছানো যায়নি। এর মধ্যে বাতাসে আগুন চারপাশে ছড়াতে থাকে। আবার বিমানবন্দর চালু থাকায় বাকি একটি গাড়িও এখানে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী বিমানবন্দরের রানওয়ের কাছাকাছি অন্তত দুটি ফায়ার গাড়ি সবসময় প্রস্তুত রাখতে হয়।

এর কিছু সময় পর ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি বিমানবন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নানান অব্যবস্থাপনার কারণে তারা আগুন নেভাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেননি। আবার বিমান দ্রুত পণ্যগুলো সরিয়ে দিতে পারলে কাছাকাছি গিয়ে পানি ছিটানো যেতো। তাহলে আগুন এত ছড়িয়ে পড়তো না, এত ক্ষয়ক্ষতিও হতো না।

নিজস্ব ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাওয়ার ১০ মিনিট পরে যায় বিমানবাহিনীর ফায়ার ইউনিট। এরপর সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। আগুন নেভাতে ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট এবং সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসার সদস্যরা কাজ করে। প্রায় সাত ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত ৯টার দিকে বিমানবন্দর চালু হয়। আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয় প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর।

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেননি বিমানের কার্গো পরিদপ্তরের পরিচালক শাকিল মেরাজ।

তবে গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় বিমান একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে কারও গাফিলতি থাকলে তা তদন্তে উঠে আসবে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের তিনদিন পর মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেবিচকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুরো বিষয় তুলে ধরেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক। তবে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সে যে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে তার কোনো দায় নেননি তিনি।

মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকের ভাষ্য, কার্গো ভিলেজটি বেবিচকের হলেও এটির কার্যক্রম পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সিঅ্যান্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং) এজেন্ট ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে সেখানে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে আছে বিমান। আর মালামালগুলো ক্লিয়ার করার দায়িত্ব সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের। এছাড়া সেখানে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রয়েছে। এগুলো ম্যানেজ করার দায়িত্ব তাদের।

তবে তদন্তের আগে কাউকে দায় দিতে চান না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তদন্ত যেহেতু চলছে, এটা শেষ হওয়ার আগে কিছু বলা ঠিক নয়। আমি কারও দিকে আঙুল তুলতে চাই না।’

বেবিচক চেয়ারম্যান কারও দিকে আঙুল তুলতে না চাইলেও তার নিজস্ব ফায়ার স্টেশনের সক্ষমতা কতটুকু আছে সে বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নগুলো বারবার এড়িয়ে যান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই এলাকায় (কার্গো ভিলেজ) প্রায় ১৪০টি ফায়ার এক্সটিংগুইশার ছিল। আমরা কাগজপত্রে প্রমাণ পেয়েছি, নিয়মিত ফায়ার সেফটি কার্যক্রম চলতো। শুধু জুন মাসেই প্রায় ২০০ জন কর্মীকে ফায়ার ড্রিল প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে একদিন আমরা ফায়ার ড্রিল অনুশীলন করি। এটি সাধারণত বিমান সংক্রান্ত দুর্ঘটনা বা আগুনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য করা হয়। এর বাইরে প্রতিদিন আমাদের ফায়ার টিম বিভিন্ন সেকশনে গিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালায়।’

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ওইদিন রাতেই সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এই কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে (২৩ অক্টোবর) প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এই কমিটি অগ্নিকাণ্ডের কারণ, ক্ষয়ক্ষতি এবং কার কী দায়দায়িত্ব ছিল তা নির্ধারণ করবে।

অন্যদিকে ঘটনা তদন্তে সোমবার (২০ অক্টোবর) পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। পাঁচ সদস্যের এই তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে। কমিটির সদস্যদের ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া রোববার (১৯ অক্টোবর) বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেছে। সবকটি কমিটি তাদের তদন্ত কাজ চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) সদস্য। এ সংস্থা বেসামরিক বিমান চলাচলে মান ও নিয়ম তৈরি এবং বাস্তবায়ন করে। এর মধ্যে রয়েছে বিমান চলাচল, নিরাপত্তা ও পরিবেশগত মান। এছাড়া দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে এবং আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলকে আরও নিরাপদ ও দক্ষ করতে কাজ করে সংস্থাটি। কানাডার মন্ট্রিলে এ সংস্থার সদর দপ্তর অবস্থিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেবিচকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, আইসিএও নিয়ম অনুযায়ী একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে সব ধরনের আগুন নির্বাপণের কার্যকর ব্যবস্থা থাকা দরকার। কিন্তু শাহজালাল বিমানবন্দরে সেটা নেই। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও চরম অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতা রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বিমানবন্দরটি আইসিএও’র গ্রেডে মান হারাবে।

তবে এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, ‘অগ্নিদুর্ঘটনার পর আমরা কী পদক্ষেপ নিয়েছি আইসিএও এটা দেখবে। আমাদের করণীয় নিয়ে হয়তো দিকনির্দেশনা দেবে। কিন্তু এর মাধ্যমে বিমানবন্দরটির গ্রেড বা মান কমবে না।’

চাঁদপুর পৌরসভার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার বাঁশখালিতে বদলি

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫৯ অপরাহ্ণ
চাঁদপুর পৌরসভার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার বাঁশখালিতে বদলি

চাঁদপুর পৌরসভার হিসাবরক্ষক কর্মকর্তার পদে পরিবর্তন এনেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ।

২০ অক্টোবর জারি করা এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, চাঁদপুর পৌরসভার বর্তমান হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমানকে বদলি করে বাঁশখালী পৌরসভা (চট্টগ্রাম)-এ পাঠানো হয়েছে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভার হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আরিফ মঈন উদ্দিন চৌধুরীকে চাঁদপুর পৌরসভার হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আদেশ অনুযায়ী, উভয় কর্মকর্তাকে ২৯ অক্টোবর ২০২৫ তারিখের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্ব যথাযথভাবে হস্তান্তর করে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ৩০ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ থেকে তাঁদের স্বপদে অবমুক্ত (Stand Released) গণ্য করা হবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ কবির উদ্দিন স্বাক্ষরিত এ আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়, বদলি হওয়া কর্মকর্তারা নতুন কর্মস্থলে যোগদানের দিন থেকেই তাঁদের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।

উল্লেখ্য, চাঁদপুর পৌরসভার হিসাবরক্ষক বিভাগ শহরের আর্থিক প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর, যেখানে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন মো. মশিউর রহমান। তাঁর বদলির ফলে নতুন কর্মকর্তা আরিফ মঈন উদ্দিন চৌধুরীর দায়িত্ব গ্রহণে পৌরসভার আর্থিক কার্যক্রমে নতুন গতি আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র: স্থানীয় সরকার বিভাগ, গৌর-২ শাখা, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।

চাঁদপুরে জাতীয় নিরাপদ সড়ক চাই দিবস পালিত

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৪৩ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে জাতীয় নিরাপদ সড়ক চাই দিবস পালিত

‘মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপদ গতি কমাবে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চাঁদপুরে জাতীয় নিরাপদ সড়ক চাই দিবস-২০২৫ উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার সকাল ১০টায় চাঁদপুর সদর উপজেলা মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মহসিন উদ্দিন।

তিনি বলেন, আমরা যদি সকলে আইন মেনে চলি, তাহলে সড়কে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে। আমাদের ড্রাইভার ও পথচারীদের আরও সচেতন হতে হবে। সচেতনতা বাড়লে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনই আমরা শুনি কোনো না কোনো দুর্ঘটনার খবর। কিন্তু আমরা যদি চালক থেকে পথচারী সবাই নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি, তাহলে অনেক প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। ট্রাফিক আইন মানা শুধু পুলিশের কাজ নয়, এটা আমাদের সবার দায়িত্ব। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, জনসচেতনতা এবং পরিবার থেকে সচেতনতা শুরু করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (পিপিএম) মুহাম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, গাড়ি চালানোর সময় কখনই ওভার কনফিডেন্সে থাকা যাবে না। অনেক সময় আমরা চিন্তা করি ‘আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব’; কিন্তু বাস্তবে এক মুহূর্তের ভুলেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। তাই সতর্কতা ও ধৈর্যই নিরাপদ সড়কের মূল চাবিকাঠি।

তিনি আরও বলেন, চাঁদপুরে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে আমরা ট্রাফিক আইন বাস্তবায়নের পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করার বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে নিয়ম মেনে চললে সড়ক হবে নিরাপদ।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা. জুবায়ের, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস. এম. এন. জামিউল হিকমা, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ, চাঁদপুর জেলা “নিরাপদ সড়ক চাই” সংগঠনের সভাপতি এম. এ. লতিফ, মাইক্রোবাস মালিক শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন হাওলাদার প্রমুখ।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহার এবং সঞ্চালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিশাল দাস।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর বিআরটিএর ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মোঃ আলাউদ্দিন। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মসজিদের ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ জুনায়েদ আহমেদ এবং গীতাপাঠ করেন বিমল চন্দ্র দে।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক ও পরিবহন শ্রমিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাফিক আইন মেনে চলা, মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার, অতিরিক্ত গতি পরিহার, পথচারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিয়মিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালুর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

স্ত্রীর কু-প্ররোচনায় মাকে মারধর, ছেলের বিরুদ্ধে বাবার অভিযোগ

মো. ইউসুফ বেপারী
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:২০ অপরাহ্ণ
স্ত্রীর কু-প্ররোচনায় মাকে মারধর, ছেলের বিরুদ্ধে বাবার অভিযোগ

Oplus_131072

হাজীগঞ্জে স্ত্রীর কু-প্ররোচনায় মাকে মারধরের অভিযোগে ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এক বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে হাজীগঞ্জ উপজেলার ৪নং কালচোঁ ইউনিয়নের সাকছিপাড়া খান বাড়িতে।

জানা যায়, গেলো শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকালে পারিবারিক এক ঘটনার জেরে ছেলে মাসুদ খান তার স্ত্রী’র কু-প্ররোচনায় পড়ে মা মনোয়ারা বেগমকে মারধর করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী মুছা খান হাজীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মাসুদ খান দীর্ঘদিন ধরে মা-বাবার ভরণপোষণ না দিয়ে উল্টো তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করে আসছে। সামান্য কথাবার্তার জের ধরে মাসুদ ও তার স্ত্রী প্রায়ই মা-বাবাকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

মনোয়ারা বেগম বলেন, ছেলে মাসুদ ও তার বউয়ের কারণে শান্তিতে থাকতে পারি না। গত শুক্রবার মুছা খান গোসল করতে গেলে পুকুরে থাকা মাসুদকে উঠতে বলেন। এ নিয়েই মাসুদ রেগে গিয়ে রাতে আমাকে বেধড়ক মারধর করে।

বাবা মুছা খান অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে প্রায়ই আমাদের গালাগালি ও মারধর করে। এলাকায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এসব বিষয়ে বাধা দিলেই আমাদের ওপর চড়াও হয়। আমি এর বিচার চাই।

স্থানীয় বাসিন্দারাও জানান, মাসুদ খান এলাকার উশৃঙ্খল চরিত্রের লোক এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

তাদের ভাষ্যমতে, মাসুদের আচরণে পরিবার তো বটেই, আশপাশের মানুষও অতিষ্ঠ।

অভিযুক্ত মাসুদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনেও একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।