খুঁজুন
বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

গুম-খুন-নির্যাতন: গণভবনে হবে ‘হরর মিউজিয়াম’

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫, ৭:৫৮ অপরাহ্ণ
গুম-খুন-নির্যাতন: গণভবনে হবে ‘হরর মিউজিয়াম’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, সর্বোচ্চ সংখ্যক ব্যক্তিকে গুম, খুন ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিল এলিট ফোর্স খ্যাত র‌্যাব। তারা ভিকটিম ভেদে গুম করে নৌকায় করে নিয়ে হত্যা করে পেট কেটে নদীতে ফেলে দিতেন। কাউকে গুলি কিংবা ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করতেন। কাউকে আবার হত্যা করে ট্রেনে বস্তাবন্দি মরদেহটি ট্রেন লাইনের পাশে ফেলে রাখতেন। ট্রেনের নিচে পিষ্ট হয়ে মরদেহ ক্ষতবিক্ষত হয়ে বেওয়ারিশ হয়ে যেত। আবার কাউকে চলন্ত গাড়ির সামনে ফেলে দেওয়া হতো।

তিনি বলেন, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার ভিকটিমদের কল্পনাতীত ভয়াবহ ঘটনা বাংলাদেশ তথা ও বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে রাজধানীর গণভবনের নির্মিতব্য জাদুঘরের একটি অংশে ‘হরর মিউজিয়াম’ স্থাপিত হবে।

বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গুম সংক্রান্ত কমিশনের প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে এসব তথ্য জানান তিনি।

শফিকুল আলম জানান, গুম সংক্রান্ত কমিশন তাদের দ্বিতীয় মধ্যবর্তীকালের (ইন্টেরিম) প্রতিবেদন আজ (বুধবার) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছেন।

গুম কমিশনের চারজন সদস্য এসময় উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- বিচারপতি মইনুল ইসলাম, নুর খান লিটন, সাজ্জাদ হোসেন এবং নাবিলা ইদ্রিস।

কমিশন তাদের প্রতিবেদনের বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন। প্রতিবেদনের বিস্তারিত শোনার পর প্রধান উপদেষ্টা গুম সংক্রান্ত বিষয়ে আশুকরণীয় কী কী তা জানতে চান এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গুম কমিশন তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন যেন দ্রুত দেওয়ার জন্য তাগিদ দেন। তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইন ও বিচার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।

শফিকুল আলম জানান, গুম কমিশনের পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে এক হাজার ৭৭০ জন ব্যক্তির গুমের অভিযোগ ছিল। দ্বিতীয় দফার প্রতিবেদনে এ সংখ্যা প্রায় এক হাজার ৮৫০ জন বলে জানানো হয়। গতকাল পর্যন্তও নতুনভাবে গুমের শিকার ভিকটিমের স্বজনদের অভিযোগ পাওয়া অব্যাহত রয়েছে বলে জানান।

তিনি জানান, মোট প্রাপ্ত অভিযোগের মধ্যে এক হাজার ৩৫০টি গুমের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। গুমের শিকার ব্যক্তির স্বজনরা কমিশনের কাছে সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত ঘটনা তুলে ধরেছেন।

কারও কারও ক্ষেত্রে দুই-তিন ঘণ্টা আবার কেউবা একাধিক দিন সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। গুম কমিশনের সদস্যরা কখনো কখনো গোটা সপ্তাহ ধরেই এ নিয়ে কাজ করছেন। কমিশনের সদস্যরা প্রয়োজনে ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করেছেন।

শফিকুল আলম জানান, আইনগত কারণে গুম কমিশনের প্রতিবেদনের সবগুলো অধ্যায় প্রকাশ না করলেও তারা সাতটি অধ্যায় প্রেস উইংয়ের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে গণমাধ্যমে প্রকাশ করবেন। প্রতিদিন দুটি করে অধ্যায় প্রকাশ করা হবে।

তিনি জানান, গুম কমিশনের প্রতিবেদনে টর্চার কীভাবে হয় এবং কারা কারা অপরাধী ছিল তা উঠে এসেছে। এককভাবে র‌্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট সর্বোচ্চ সংখ্যক ব্যক্তিকে গুমের সঙ্গে জড়িত ছিল।

কমিশনের প্রতিবেদনে ভিকটিমদের কীভাবে তাদের গুম করা হতো এবং কীভাবে মারা হতো সেই চিত্র ফুটে উঠেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিকটিমদের কাউকে নৌকায় নিয়ে যাওয়া হতো, তাকে হত্যা করে পেট কেটে সিমেন্ট করে নদীতে ফেলে দেওয়া হতো, কাউকে গুলি করে, ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করা হতো। কাউকে আবার হত্যা করে ট্রেনে বস্তাবন্দি করে ট্রেন লাইনের পাশে ফেলে রাখা হতো, ট্রেনের নিচে পিষ্ট হয়ে হয়ে মরদেহ ক্ষতবিক্ষত হয়ে যেত, কখনো চলন্ত গাড়ির সামনে ফেলে দেওয়া হতো।

ভিকটিম ও অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জবানবন্দি থেকে গুমসংক্রান্ত কমিশন এ তথ্য জানতে পেরেছে।

প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা শুনে বলেছেন, এটি একটি ভয়াবহ বিষয়। এ বিষয়ে একটি হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত।

শফিকুল আলম জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে গণভবনে একটি জাদুঘর করা হচ্ছে, সেখানে একটি অংশে হরর মিউজিয়ামও রাখা হবে।

যারা এসব অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তারা কী কারণে যুক্ত হয়েছেন সেটিও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। দেখা গেছে যে পুলিশের মধ্যে অনেকে ভালো পোস্টিং (ঢাকায়), ভালো পজিশন ও বার্ষিক পুরস্কার (পিপিএম বিপিএম) বাগিয়ে নিতে এসব অপরাধে যুক্ত হন। বিষয়টা এমন ছিল যত অপরাধ করবেন তত আপনার সুনাম বাড়বে। তবে পুলিশের মধ্যে অনেকে এগুলো করতে চাননি এমন আবেদনপত্র ও গণভবন থেকে উদ্ধার হয়েছে। অপরাধের মাত্রা এমন বিস্তৃতি ছিল যা কল্পনাতীত। অপরাধের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছিল।

তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা গুম সংক্রান্ত কমিশনের সদস্যদের একটি ওয়েবসাইট খোলা ও সেখানে প্রতিটি প্রতিবেদন প্রকাশের পরামর্শ দেন।

শফিকুল আলম আরও জানান, যারা এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল তারা আমাদের আশপাশেরই লোক। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

অধ্যাপক ইউনূস এ সত্যিগুলো বাংলাদেশের সবাইকে জানার সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলেন।

তিনি বলেন, গুমের ভয়াবহতার এই ঘটনাগুলো এখন শুধু বাংলাদেশের বিষয় নয় এটি বৈশ্বিক (গ্লোবাল) বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের বহু দেশের মানুষ ও অসংখ্য মানবাধিকার সংগঠন শেখ হাসিনার আমলে ভয়াবহ এইসব ঘটনা সম্পর্কে জানতে চায়।

গাজার অবস্থা নরকের চেয়েও খারাপ: রেড ক্রস প্রেসিডেন্ট

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫, ৯:০৭ অপরাহ্ণ
গাজার অবস্থা নরকের চেয়েও খারাপ: রেড ক্রস প্রেসিডেন্ট

ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্যা রেড ক্রস (আইসিআরসি) এর প্রেসিডেন্ট মিরিয়ানা স্পোলয়ারিচ বলেছেন, গাজার অবস্থা নরকের চেয়েও খারাপ হয়ে পড়েছে।

জেনেভায় সংস্থাটির সদর দপ্তরে তিনি বলেন, মানবিকতা ব্যর্থ হচ্ছে। রাষ্ট্রগুলো যুদ্ধ বন্ধ করতে, ফিলিস্তিনের দুর্ভোগের অবসান করতে এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করতে যথেষ্ট করছে না।

তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের মানবিক মর্যাদা হরণ করা হয়েছে এবং মানবিক কার্যক্রম বিষয়ক আন্তর্জাতিক আইনগুলোকে নাই করে দেওয়া হচ্ছে।

আইসিআরসি এমন একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন যারা যুদ্ধ এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করে। গাজায় তাদের ১৩০ জন কর্মী আছে, যাদের বেশিরভাগই ফিলিস্তিনি।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে সার্জিক্যাল হাসপাতাল পরিচালনা করে সংস্থাটি। সম্প্রতি এই হাসপাতালের কাছে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, গতকাল সকালে হাসপাতালে ১৮৪ জনকে আনা হয়েছে যার মধ্যে ১৯ জন ছিলেন মৃত। আরও আটজন পরে মারা গেছেন।

আইসিআরসি সাধারণভাবে রেড ক্রস হিসেবে পরিচিত। তাদের জেনেভা কনভেনশনের তত্ত্বাবধায়ক মনে করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য এটি করা হয়েছে।

মিরিয়ানা স্পোলয়ারিচ বলছেন, যুদ্ধের নিয়ম আছে এবং সেটি সব পক্ষের জন্য প্রযোজ্য।

সূত্র: বিবিসি

হাজীগঞ্জ সুন্নিয়া হাফিজিয়া নূরানী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মেধা পুরষ্কার প্রদান

মোঃ ইউসুফ বেপারী
প্রকাশিত: বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫, ৮:৫৬ অপরাহ্ণ
হাজীগঞ্জ সুন্নিয়া হাফিজিয়া নূরানী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মেধা পুরষ্কার প্রদান

হাজীগঞ্জ সুন্নীয়া হাফিজিয়া নূরানী দাখিল মাদ্রাসা ও উম্মে হানি সুন্নীয়া হাফিজিয়া নূরানী মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সবক, মেধা পুরষ্কার ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার সকালে হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজার মিঠানিয়া ব্রিজের পূর্ব পাশে অবস্থিত মাদ্রাসার হলরুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওলানা জুনায়েদ হোসেন আল ক্বাদেরী।

অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মো. আল আমিনের সঞ্চালনায় কোরআন শরীফ প্রতিযোগিতা, কোরআন শরীফ বাংলায় অনুবাদ ও ইংরেজিতে অনুবাদ ও বক্তব্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এরপর শ্রেণিকক্ষের পরিক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন অতিথিরা।

উক্ত অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার আলিয়া শাখার প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. আমান উল্ল্যাহ সহ মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

দারুল কুরআন আন্তর্জাতিক হিফজ্ মাদ্রাসায় অভিভাবক সমাবেশ ও পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা

মোঃ ইউসুফ বেপারী
প্রকাশিত: বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫, ৮:৪৯ অপরাহ্ণ
দারুল কুরআন আন্তর্জাতিক হিফজ্ মাদ্রাসায় অভিভাবক সমাবেশ ও পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা

হাজীগঞ্জ উপজেলার মডেল টাউনে অবস্থিত দারুল কুরআন আন্তর্জাতিক হিফজ্ মাদ্রাসায় অভিভাবক সমাবেশ, হিফজ্ ছাত্রদের সবক প্রদান ও বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে।

বুধবার সকালে মাদ্রাসার হলরুমে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ মাওলানা শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ক্বারি ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব হাফেজ মাওলানা কারী আহসান উল্লাহ সৌরভ এবং হাফেজ কারী ইউসুফ আদনান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাফেজ কারী আহসান উল্লাহ সৌরভ বলেন, পবিত্র কুরআনের হিফজ করা শুধু একজন ছাত্রের নয়, বরং একটি পরিবার, সমাজ এবং জাতির জন্য বড় গর্বের বিষয়। এ ধরনের আয়োজন ছাত্রদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং দ্বীনি শিক্ষায় আরও মনোনিবেশ করতে সহায়তা করে।

তিনি আরও বলেন, হিফজে কুরআন শুধু মুখস্থ করলেই যথেষ্ট নয়, এর শিক্ষাকে অন্তরে ধারণ করাই প্রকৃত সফলতা।

বক্তব্য শেষে মাদ্রাসার ১০ জন হিফজ্ শিক্ষার্থীকে সবক প্রদান করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা এবং কৃতি শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা ক্বারী নোমান, হাফেজ মাওলানা নাঈম হোসেন, হাফেজ মাওলা ওমর ফারুক, হাফেজ মহিন উদ্দিন ও হাফেজ নাঈম।

সবশেষে সফল শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও মাদ্রাসার পক্ষ থেকে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সাফল্য এবং ইসলামী শিক্ষা বিস্তারের জন্য প্রার্থনা করা হয়।