
জনবল সংকটে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে মতলব দক্ষিণের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। এতে করে টেনেটুনেই যেন চলছে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির কর্মযজ্ঞ।
রোববার সকালে ওই কার্যালয়ে গেলে জনবল সংকটের এমন তথ্য উঠে আসে।
সরজমিনে দেখা যায়, একাই একশ’ হিসেবে হরদম কাজ করছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। তিনিই এখানে সকল কাজের কাজী। যদিও তার সাথে এখানে সেতু প্রকল্পের কার্য সহকারী পদায়িত রয়েছেন।
যদিও বাৎসরিক বাজেট বিবেচনায় এই উপজেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে চলতি অর্থ বছরে কমপক্ষে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তথ্য মতে, ২০১৭ সাল থেকে এই কার্যালয়টিতে অফিস সহায়ক, ২০২৩ সাল থেকে অফিস সহকারী, ২০২২ সাল থেকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদটি শুন্য রয়েছে। যদিও অন্যান্য উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পিআইও ছাড়াও উপ-সহকারী প্রকৌশলী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, কার্য সহকারী ও অফিস সহায়ক কর্মরত আছেন।
এসব তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে মতলব দক্ষিণের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এখানে জনবল সংকটের কারনে আমাকেই অফিস সহকারী, অফিস সহায়কসহ সকল দায়িত্ব দাপ্তরিক প্রয়োজনে একা পালন করতে হচ্ছে। পুরনো একটি ল্যাপটপে যাবতীয় দাপ্তরিক কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছি। আমার জন্য মাঠ পর্যায়ের প্রকল্পের তদারকী কাজে ব্যবহারের জন্য দেয়া মোটরসাইকেলটিও অকেজো হয়ে পড়ে আছে। তবে এমন পরিস্থিতিতেও প্রকল্প মনিটরিং কাজসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সচেষ্ট রয়েছি।
স্থানীয়রা বলছেন, এই মতলবে ২টি আশ্রয় কেন্দ্র, ২০টি সেতু নির্মাণ প্রকল্প, ৪৩ জন অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস নির্মাণ প্রকল্প, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি, গ্রামীণ অবকাঠামো সংষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি, টিআর-কাবিখা প্রকল্পের আওতায় ব্যাপক সংখ্যক প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া কম্বল, ঢেউটিন, শুকনো খাবার, জিআর কর্মসূচীও চলমান রয়েছে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও কার্য সহকারী প্রায়শই কোন প্রকল্প তদারকি কাজে মাঠে গেলে বেশিরভাগ সময়ই কার্যালয়টি তালাবদ্ধ থাকে। এতে দুর্যোগে সাড়াদানসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, জনবল সংকটের বিষয়ে আমি বিগত মার্চ মাসে একটি স্মারক পত্রের মাধ্যমে শুন্য পদ পূরনের জন্য মহাপরিচালক মহোদয়কে অনুরোধ করেছি। আমার বিশ্বাস অচিরেই কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের কর্মসূচী সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে সচেষ্ট হবেন।
একই সুরে কথা বললেন চাঁদপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জাহিদ হাসান খান। তিনি বলেন, শুধু মতলব দক্ষিণ নয়, আমার জেলা কার্যালয়েও জনবল সংকট রয়েছে। এতে বিভাগীয় কার্যক্রম তদারকীও কঠিন হয়ে পড়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানে আমি এ কথা মহাপরিচালক মহোদয়কে অবহিত করেছি।
আপনার মতামত লিখুন