খুঁজুন
রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১০ কার্তিক, ১৪৩২

হাইমচর বাজাপ্তী রমনী মোহন উবি’র প্রধান শিক্ষক

ফ্যাসিবাদের দোসর আব্দুল মান্নান শিকদারের খুঁটির জোর কোথায়?

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:৫৫ অপরাহ্ণ
ফ্যাসিবাদের দোসর আব্দুল মান্নান শিকদারের খুঁটির জোর কোথায়?

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সময়ে গড়ে ওঠা দুর্নীতিবাজ হাইমচর বাজাপ্তী রমনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফ্যাসিবাদের দোসর আব্দুল মান্নান বহাল তবিয়তে রয়ে গেছেন।
তার বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সময় দুর্নীতির নানা অভিযোগ উঠলেও সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের সহযোগিতায় কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে। এখন তিনি রং বদলে, ভোল পাল্টে, সুবিধা মতো কখনো জামায়াত, কখনো বিএনপির সমর্থক বলে নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিভাবক জানায়, ২০০৯ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে আব্দুল মান্নান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়। অভিযোগ আছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি নুর হোসেন পাটওয়ারীর প্রেসক্রিপশনে তাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। আর এই নিয়োগের পর থেকে শুরু হয় বিদ্যালয়টি আওয়ামীকরণ। বিদ্যালয়ের যে কোনো অনুষ্ঠানে সবসময় অতিথি করা হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের উপর হামলা-মামলার ১নং আসামি উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারীকে।
কমিটির সদস্য জানান, আব্দুল মান্নান বিদ্যালয়ের সকল কিছু একক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে করে থাকেন। উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্ব ভাগিয়ে নেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর শিক্ষক আব্দুল মান্নান। এভাবে শিক্ষক আব্দুল মান্নান হয়ে যান হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। আওয়ামীলীগের হাইমচর উপজেলা অঘোষিত শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারীর ডান হাত হিসেবে পরিচিত আব্দুল মান্নান থেমে থাকিননি কোন অপকর্ম থেকে। উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারীর নির্বাচনী সকল প্রচার-প্রচারণা, বিভিন্ন কলাম লেখা এবং নূর হোসেন পাটোয়ারীর বক্তব্য স্ক্রিপ লিখে দেওয়ার দায়িত্ব আসে শিক্ষক আব্দুল মান্নানের হাতে। এভাবেই আওয়ামী লীগের কাজ করে যান হাইমচর উপজেলাতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর পুরাণ বাজার ডিগ্রি কলেজর অধ্যক্ষ রতন কুমার যেমন ডা. দীপু মনির হয়ে কাজ করতেন। তেমনি হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেনের হয়ে কাজ করেন আওয়ামী শিক্ষক আব্দুল মান্নান।
তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে হাইমচরের চরাঞ্চলে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে নৌকা মার্কার হয়ে প্রচার-প্রচারণা করে থাকেন। ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নুর হোসেন বিজয়ী হয়ে চট্টগ্রামে শপথ অনুষ্ঠানের ছবিতে দেখা যায় আওয়ামী শিক্ষক আব্দুল মান্নানকে। হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে তিনি প্রতিষ্ঠিত করতেও সক্ষম হন তিনি। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডাঃ দীপু মনি হাইমচর সফরে আসলে প্রটোকল দিতেন আওয়ামী শিক্ষক আব্দুল মান্নান। দীপু মনির সাথে বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায় তাকে।
সাবেক এক ছাত্র জানান, হাসিনার আমলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাবলে পুরো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেকোনো সিদ্ধান্ত হতো তার সিন্ডিকেট মাধ্যমে। বিএনপি-জামায়াতের শিক্ষকদের সব যায়গায় কোনঠাসা করে রাখাসহ নানান ধরনের হয়রানি করতেন শিক্ষক আব্দুল মান্নান। বিভিন্ন ইস্যুতে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি। ক্ষমতা ও শিক্ষকদেরকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য তিনি সাংবাদিক না হয়েও উপজেলা চেয়ারম্যান নিয়ন্ত্রিত তৎকালীন হাইমচর প্রেসক্লাবের সদস্য পদ বাগিয়ে নেন। এই আওয়ামী প্রেসক্লাব ৫ আগস্টের পর বিলুপ্ত হয়ে যায়।
এক শিক্ষক জানান, বাজাপ্তী রমনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয়কে তিনি আওয়ামীলীগের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের মতো করে পরিচালনা করে থাকেন। এখানে যে কোনো অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের মতো করেই পরিচালনা করে থাকেন। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ ও দুর্নীতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করেন। প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে স্কুলে একক আওয়ামী আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ম্যানেজিং কমিটিতে কোন পরিবর্তন আসেনি।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান শিকদারের সাথে কথা তিনি বলেন, আমার ব্যাপারে যে অভিযোগগুলো মিথ্যা। আমি কোন ফ্যাসিবাদ ছিলাম না। আমার সাথে নুর হোসেন পাটওয়ারীর সাথে আওয়ামীলীগের সম্পর্ক ছিলো না। আমার সাথে একজন দাতা সদস্যের সমস্যা সে এই অভিযোগগুলো ফেইজবুকে দিয়েছে।
স্কুলের জমি দাতা সদস্য ইঞ্জি: আ: রহিম তালুকদার অভিযোগ করেন, তার জমিতে তার অনুমতি ছাড়া আওয়ামীলীগের ক্ষমতা ব্যবহার করে ফ্যাসিষ্ঠ মান্নান সিকদার ১টি দ্বিতলা ভবন নির্মান করেন।
জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের জমিদাতা ও বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষানুরাগী সদস্য, নয়ানী লক্ষীপুর গ্রামের হাসান ইমাম মাসুদ।
তার অভিযোগগুলো হচ্ছে- ১। শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম করতেন। যত নিয়োগ হয়েছিল প্রত্যেকের কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকা নিয়ে নিয়োগ দিয়েছেন। বিশেষ করে লাইব্রিয়ান নিয়োগে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে জাল সার্টিফিকেটের (ডিপ্লোমা) ধারীকে নিয়োগ দিয়েছেন।
২। অভ্যন্তরীণ স্কুলের বেতন বৈষম্য-অভ্যন্তরীণ বন্টন নীতিমালা অনুসরণ না করে প্রধান শিক্ষক প্রতি মাসে প্রায় ২৫,০০০/-টাকা নেয়, সাথে মোবাইল বিল ও মোটরসাইকেল এর জ্বালানী তেলের বিল নেয়। কিন্তু অন্যান্য শিক্ষকদেরকে প্রতি মাসে ১৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা দেয়। সার্টিফিকেট ফি ও প্রসংশাপত্র ফিসহ অন্যান্য সকল ফি প্রধান শিক্ষক নিজে নিয়ে নেয়। অন্য শিক্ষকরা এর কিছুই পায় না।
৩। বিদ্যালয়ের প্রতিটি সরকারি বরাদ্দকৃত উন্নয়নমূলক কাজ বাবদ স্কুলের অভ্যন্তরীণ ক্যাশ থেকে ১০% থেকে ২০% কমিশন নিতেন। বিশেষ করে প্রতিবছর এসএসসি পরীক্ষার্থীর কোর্চিং এর ফি থেকে অনিয়ম করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা উন্নয়নের নামে নিতেন। কিন্তু উন্নয়নের কোন হিসাব দিতেন না।
৪। বিদ্যালয়ের বড় দুইটি টিনের ঘর ছিল। ঘর দু’টি প্রধান শিক্ষক তার নিজের লোকদের কাছে নিয়ম বর্হিভূত ভাবে বিক্রি করে ছিলেন। ঘর দু’টির আনুমানিক বাজার মূল্য ৬ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকা। সঠিক নিয়মে ঘর দু’টি বিক্রি হয়েছে কিনা এবং সরকার সঠিক মূল্য পেয়েছে কিনা তা তদন্ত করা দরকার।
৫। বিগত বারো (১২) বছর যাবত গোপনে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন করেছিলেন এবং তার ইচ্ছেমত সদস্য ও সভাপতি নির্বাচিত করে পরের দিন ঘোষণা দিতেন। যাতে কেউ আইন অনুযায়ী ইচ্ছা করলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে।
৬। নিয়ম থাকলেও প্রধান শিক্ষক স্কুলে কোন ক্লাশ নেয় না। স্কুলে হাজিরা খাতায় সই দিয়ে চলে যায়। অনেক সময় অনুপুস্থিত থেকেও পরের দিন হাজিরা খাতায় সই করেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত একটানা দুই মাস ইন্ডিয়াতে অবস্থান করে। উল্লেখ্য যে, প্রতি বছর সে একবার হলেও ইন্ডিয়াতে অবস্থান করেন।
৭। গত ১২ বৎসর যাবত স্কুলে নামমাত্র অর্থ কমিটির মাধ্যমে হিসাব নিকাশ করেন। প্রধান শিক্ষকের ইচ্ছেমত খরচ এবং ভাউচার করেন। স্কুলে হিসাব নিকাশের জন্য জরুরি ভাবে অডিট করা প্রয়োজন।
৮। প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সময় শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কিমিটির কিছু সদস্যের সাথে অশোভন আচরণ করতেন। বিশেষ করে ম্যনেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল মান্নান গাজীকে তার আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা হয়রানি ও হেনস্তা করেছেন। কোন শিক্ষক অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাকে অন্যায়ভাবে হেনস্তা এবং শোকজ করেছেন। এই পর্যন্ত কয়েকজন শিক্ষককে অন্যায়ভাবে শোকজ করেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অনিয়মের অভিযোগ আছে। যা তদন্ত করিলে বাহির হবে।
কিন্তু এতকিছু পরও আওয়ামী শিক্ষক আব্দুল মান্নান দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন উপজেলার সর্বস্তরে। সে মনে করেন এখনো আওয়ামীলীগ ক্ষমতায়।

ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫০ অপরাহ্ণ
ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছিল ২২ দিনের ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞা। এসময় নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল। দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে নদীতে নামবেন জেলেরা।

শেষ সময়ে কেউ মেরামত করছেন নৌকা, কেউবা পুরোনো জাল সেলাই করে নিচ্ছেন নতুন করে। চোখে মুখে আনন্দের অনুভূতি থাকলেও আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। তারা বলছেন, এবছর ভরা মৌসুমেও নদীতে ইলিশের দেখা মেলেনি। আর এখন মৌসুম শেষ। জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলে কষ্টের পাল্লা ভারী হবে।

এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন চাঁদপুরে নিবন্ধিত ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু তা ছিল জেলেদের কাছে অপ্রতুল। ওই সময় জীবিকা হারিয়ে চরম কষ্টে পড়েন জেলেরা।

এদিকে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ ধরতে না গেলেও নিষেধাজ্ঞার পর বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে এবং মহাজন ও এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করতে হয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মূল জেলেদের কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা থেকে বাদ পড়েছে। অথচ যারা মাছ ধরতে জীবনেও নদীতে নামেনি এমন বিভিন্ন পেশার বেশ কিছু মানুষ সরকারী সহায়তার কার্ড পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। এমনকি বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা পেয়েও সরকারের নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে নির্বিচারে মা ইলিশ শিকার করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে সরকারের পরবর্তী সহযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ারও আহ্বান জানান।

মৎস্য কর্মকর্তারা আশা করছেন, ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার গত বছরের চেয়ে মাছের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে পারে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হয়নি। এবার রেকর্ড পরিমাণে ইলিশ উৎপাদন হতে পারে।

তিনি আরও জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করেছিল সরকার।

এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চালানো ৪৪৫ টি অভিযানে ৭৭ টি মামলা ও ৭৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১১৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাঁজা প্রদান করা হয়। এছাড়া ৬ কোটি মিটার অবৈধ জাল, ১১০০ টন ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় প্রদান করাহয়।

জনশ্রুতি আছে অভিযানে সময় অনেক জেলে সরকারের বরাদ্দ করা চাল পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই উপকূলের জেলেরা জাল, নৌকা, ট্রলার ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। বিশেষ করে হরিনা ঘাট, আখনের ঘাট, পুরানবাজার রনাগোয়াল, লঞ্চ ঘাট, হাইমচরের নীলকমল, মতলব উত্তর মোহনপুর নৌঅঞ্চলের জেলেরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথবাহিনি। এ ঘটনায় দুই মাদক কারবারি পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের ছোট বাড়ি এলাকা থেকে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীর খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জেলা ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান ও ফরিদগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত রাজিব চক্রবর্তী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকদিরামপুর গ্রামের খলিল বেপারির ছেলে মাদক কারবারি আল-আমিন (২৫) ও তার সহযোগী হত্যা মামলার আসামি রুবেল হোসেন (২৮) ফজরের নামাজের পর একটি প্রাইভেটকারে করে বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে আসে। পরে আল-আমিনের বাড়ির গোসলখানায় গাঁজাগুলো লুকিয়ে রাখে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

পরে এলাকাবাসী পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।

এলাকাবাসী জানায়, রুবেল হোসেন এর আগে একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। গত ১০ দিন আগে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আবারও মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে ওঠে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের বাইক্কারবাগানের পাশের ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী সোহেল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে মামলার অন্যতম আসামি ছিল রুবেল হোসেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন স্বপন মিয়াজী জানান, সকালে ফজরের নামাজের পর এলাকাবাসী আমাকে জানায়, এ এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি রুবেল জেল থেকে বের হয়ে আবারও মাদক কারবারির সাথে জড়িয়ে পড়েছে এবং বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে থানা পুলিশকে খবর দেই। তিনি আরো জানান, তাদের কারনে এ এলাকার যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্ আলম বলেন, সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ডিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করি। তবে মূল মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। আল-আমিনের বাবা খলিল বেপারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগ শুরু করলেন ইঞ্জি. মমিনুল হক

মো. ইউসুফ বেপারী
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:২১ অপরাহ্ণ
ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগ শুরু করলেন ইঞ্জি. মমিনুল হক

হাজীগঞ্জে ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে নিজ ইউনিয়নে গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করলেন বিএনপির কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক ইঞ্জি. মমিনুল হক।

শুক্রবার দিনব্যাপী তিনি উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করেন। এরমধ্যে তিনি ইউনিয়নের নোয়াদ্দা, উত্তর রায়চোঁ, বড়কুল রামকানাই উচ্চ বিদ্যালয়, রায়চোঁ বাজার, মধ্য বড়কুল, আড়ুলি, মোল্লাডহর, দিকচাইল, সেন্দ্রা ও কোন্দ্রা এলাকায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন।

পথসভায় ইঞ্জি. মমিনুল হক চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে ইউনিয়নবাসীর সম্মতি চাইলে উপস্থিত লোকজন একযোগে হাত উঁচিয়ে সম্মতি প্রকাশ এবং ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এসময় তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির ২২টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভায় গণসংযোগ ও পথসভা কার্যক্রম শুরু করলাম। দেশের মানুষ বিএনপিকে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। তারা ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে তারেক রহমানকে আগামির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাছান মিয়াজীর সভাপতিত্বে গণসংযোগ ও পথসভায় সফর সঙ্গী ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ রহিম পাটওয়ারী, বিএনপি নেতা আব্দুল কাদের মিয়া, ইঞ্জি. জাহাঙ্গীর আলম, ইমান হোসেন, অহিদুল ইসলাম মোহন, আব্দুল গফুর পাটওয়ারী, ওলি উল্যাহ, আলমগীর হোসেন, মোশারফ হোসেন, তাফাজ্জল হোসেন বতু, শাহাদাত হোসেন মিলন, জামাল মেম্বার, মিজানুর রহমান, মাসুদ রানা, উপজেলা মৎসজীবি দলের সভাপতি মো. ইমান হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম চৌধুরী মিঠু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক এসএম ফয়সাল হোসাইন, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব দ্বীন ইসলাম টগর, ছাত্রনেতা শামছুদ্দিন খাঁন নূর, কবির হোসেন রাজু, ইউনিয়ন যুবদল নেতা আব্দুল জব্বার, ইকবাল বেপারী, ইমাম হোসেন, আব্দুল মতিন, আলাউদ্দিন, হেলাল উদ্দিন, হোসেন মজুমদার, স্বেচ্ছাসেবক নেতা মাসুম চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, সুমন রাজ, হাসানাত, সোহাগ, কৃষক নেতা মিজানুর রহমান, ছাত্রনেতা আলামিন দিনু, হাবিবুর রহমান, ওসমান গণি, সাব্বির হোসেন, শেখ ফরিদসহ সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।