খুঁজুন
রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

বন্যা নিয়ন্ত্রণে ৩৩০০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করলো বিশ্বব্যাংক

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ৬:০৮ অপরাহ্ণ
বন্যা নিয়ন্ত্রণে ৩৩০০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করলো বিশ্বব্যাংক

বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব ও ভবিষ্যতে দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ২৭ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৫০ পয়সা ধরে)। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুমোদন করা হয়েছে এ ঋণ।

বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটির ঢাকা অফিস জানায়, বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকদের বোর্ড এই ঋণ অনুমোদন দেয়। এই অর্থ ২০২৪ সালের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর পুনরুদ্ধার, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণ ও পুনর্বাসন, কৃষিব্যবস্থার উন্নয়ন এবং মানুষের জীবিকার সুরক্ষায় ব্যয় করা হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, ‘বাংলাদেশ সাসটেইনেবল রিকোভার, ইমারজেন্সি প্রিপেয়ারনেস অ্যান্ড রেসপন্স (বি-স্ট্রং)’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের গ্রামীণ এবং বন্যা সুরক্ষা বিষয়ক অবকাঠামো নির্মাণ ও পুনর্গঠন করা হবে। এর ফলে প্রায় ১৬ লাখ মানুষ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে সুরক্ষা পাবে।

এই অর্থায়নের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ বিষয়ক অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং দুর্যোগ প্রস্তুতিতে একটি অগ্রণী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী পরিচিত। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি এবং ঘন ঘন ও তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশের অর্থনীতি এবং জনগণের জীবনযাত্রার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে স্থিতিশীলতা গড়ে তোলা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার।

তিনি বলেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের দুর্যোগ প্রস্তুতি ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করবে। পাশাপাশি সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জীবিকা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে অবকাঠামো, কৃষি ও জীবিকার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি ভবিষ্যতের বন্যার বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা অর্জনে সহায়ক হবে। এর আওতায় ৭৯টি বহুমুখী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও পুনর্বাসন করা হবে। একই সঙ্গে জলবায়ু সহিষ্ণু করে সংযোগকারী রাস্তা ও সেতুগুলো তৈরি করা হবে। স্বাভাবিক সময়ে এসব আশ্রয়কেন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এছাড়া বন্যা সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মেরামত ও পুনর্বাসন এবং খাল পুনঃখননের কাজও এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। বন্যা পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়নেও সহায়তা করা হবে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত করতে নৌকা, সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ ও মহড়ার ব্যবস্থা করা হবে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট স্বর্ণা কাজী এই অর্থায়ন প্রসঙ্গে বলেন, এই প্রকল্পটি একই সঙ্গে পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের চাহিদা এবং দীর্ঘমেয়াদি দুর্যোগ স্থিতিশীলতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়। ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন অ-ভৌত কার্যক্রমের সমন্বয়ে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে পুনরুদ্ধার ও স্থিতিশীলতা তৈরির একটি সামগ্রিক পদ্ধতি নিশ্চিত করা যাবে। ভবিষ্যতে বন্যার ঝুঁকি কমিয়ে দুর্বল জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের আয়ের সুযোগ বাড়াতে আর্থিক সহায়তা ও বাজার-সংশ্লিষ্ট দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেবে। পাশাপাশি অস্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করা হবে। এর মাধ্যমে ৩ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে অন্তত ৬৫ হাজার কৃষি পরিবারকে উচ্চ ফলনশীল, জলবায়ু সহিষ্ণু ও টেকসই ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি, কৃষি যন্ত্রপাতি ও উন্নত সেচ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সহায়তা করা হবে। মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহের জন্য বীজ গ্রাম স্থাপন করা হবে এবং নারীদের বসতবাড়ি ও কমিউনিটি বাগানে উৎসাহিত করা হবে। টেকসই কৃষি পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার জন্য কৃষক দলও গঠন করা হবে। এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির উন্নতি ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের পাশে চাঁসক ইসলামী ছাত্র আন্দোলন

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ৮:৪৪ অপরাহ্ণ
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের পাশে চাঁসক ইসলামী ছাত্র আন্দোলন

শনিবার সকাল ১১টায় সারাদেশে একযোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে চাঁদপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রের কয়েকটি ভ্যানুতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূরীকরণে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর সরকারি কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রকমের সহায়তা প্রদান করেন। তীব্র গরমের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ও অভিভাবকদের মাঝে ফ্রীতে মিনারেল ওয়াটারের ব্যাবস্থা করেন। বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী উপহার হিসেবে প্রদান করেন।

বহু শিক্ষার্থীরা তীব্র যানজটের কারণে উপকেন্দ্রে পৌছাতে দেরি হওয়ায় দ্রুততার সহিত অন্যান্য উপকেন্দ্রে পৌঁছে দেয়ার ব্যাবস্থা করেন।

এছাড়াও শ্রেণীকক্ষ খুঁজে দেওয়া, অভিভাবকদের বসার স্থানের ব্যবস্থা, তাদের আনুষঙ্গিক ব্যাগ মোবাইল জমা রাখা সহ বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হয়।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি ডি.এম ফয়সাল, সহ-সভাপতি কে.এম মাসুদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ ফরহাদ, সদস্য আল আমিন সাইফি, ইব্রাহিম মজুমদার, বায়েজিদ বেপারী ও মিনহাজুল ইসলাম প্রমুখ।

ফেসবুকে পরকিয়া সম্পর্ক করে প্রবাসীর স্ত্রীকে ভারতে পাচার, আটক নারী

শওকত আলী
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ৮:২৯ অপরাহ্ণ
ফেসবুকে পরকিয়া সম্পর্ক করে প্রবাসীর স্ত্রীকে ভারতে পাচার, আটক নারী

চাঁদপুরে এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরের প্রতারক সুজিত সরকার আকাশের। দির্ঘদিন তাদের সম্পর্কে একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে প্রবাসীর স্ত্রীকে মোবাইল ফোনে উত্তপ্ত করত। অবশেষে দেখা করার কথা বলে চাঁদপুরে এসে কৌশলে প্রবাসীর স্ত্রীকে গাড়িতে উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এই ঘটনায় প্রবাসীর স্ত্রীর ভাই নয়ন চন্দ্র শীল বাদী হয়ে তিনজনকে বিবাদী করে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন।

মামলা প্রেক্ষিতে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই বিল্লাল হবিগঞ্জের মাধবপুর ৪নং আদাঐর ইউনিয়ন থেকে মামলার দ্বিতীয় আসামী শৈলেন সরকারের মেয়ে স্বরনিকা সরকারকে আটক করে চাঁদপুর মডেল থানা নিয়ে আসে।

শনিবার দুপুরে পুলিশের হাতে আটক হওয়া দ্বিতীয় আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। তবে প্রবাসীর স্ত্রীকে বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়ায় পাচার করেছ বলে ধারণা করছে পুলিশ।

এই ঘটনায় মামলার বাদী নয়ন চন্দ্র শীল জানায়, আমার ছোট বোনকে মোবাইল ফোনে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করত প্রধান আসামি আকাশ। পরে তারা তিনজন মিলে চাঁদপুরে এসে বাবুরহাট স্কুলের সামনে থেকে গাড়িতে উঠিয়ে তুলে নিয়ে ইন্ডিয়ায় পাচার করে দেয়। এ সময় বোনের সাথে স্বর্ণালংকার ছিল তা অপহরণকারীরা নিয়ে যায়।

এই ঘটনায় পুলিশ প্রধান আসামিকে ধরার জন্য হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে অভিযান চালায়। কিন্তু এর পূর্বেই ছোট বোনকে আসামি আকাশ কৌশলে ইন্ডিয়ায় পাচার করে দেয়। এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত আকাশের বোন জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণ পায় পুলিশ। আমি আমার বোনকে দ্রুত উদ্ধার করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

পুলিশ জানায়, মোবাইল ফোনে পরিচয় হওয়ার পর বাবুরহাট এলাকা থেকে প্রবাসীর স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যায় হবিগঞ্জে। পরে ভিকটিমকে উদ্ধার করার জন্য সেখানে গিয়ে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় মামলার দ্বিতীয় আসামিকে আটক করে চাঁদপুরে এনে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উদ্ধার করার চেষ্টা করা হবে।

কচুয়ায় এক পরিবারের ৮ জন প্রতিবন্ধীর মানবেতর জীবন-যাপন

কচুয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ৮:০০ অপরাহ্ণ
কচুয়ায় এক পরিবারের ৮ জন প্রতিবন্ধীর মানবেতর জীবন-যাপন

পরিবারে জন্ম নেওয়াদের বেশির ভাগই বাক ও শারিরিক প্রতিবন্ধী। ওই পরিবারের বিভিন্ন বয়সের ৮ জন বাক ও দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী রয়েছেন। তারা কেউ কথা বলতে পারেন না। দিন মজুরের কাজ করলেও কথা শুনতে না পারায় এবং কাজের ধরণ বুঝতে না পারায় সচরাচর তাদের কাজও মিলছে না। এ কারনে প্রতিবন্ধী ভাতার সীমিত টাকার উপর নির্ভর করে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর ভাবে জীবন যাপন করছে ওই পরিবারটি।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার মেঘদাইর গ্রামের নতুনপাড়ায় এক বাড়িতে ৮ জন বাক ও দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মেঘদাইর গ্রামের নতুন পাড়ার অধিবাসী আবুল হাসেম জন্মগত ভাবেই একজন বাক প্রতিবন্ধী। তার ছেলে ইসমাইল হোসেন, মেয়ে কুহিনুর আক্তার, বোন সাহিদা আক্তার ও নাতনি রিয়া আক্তার, নাতি সিয়াম হোসেন ও মেয়ের জামাই মহিউদ্দিন শারীরিক প্রতিবন্ধী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবুল হাসেম প্রথমে বাক প্রতিবন্ধী হয়। পরবর্তীতে একে একে তার বোন, মেয়ে ও নাতি-নাতনিসহ পরিবারে প্রতিবন্ধীর সংখ্যা বেড়ে যায়। ফলে এ পরিবারটি এতো সংখ্যক প্রতিবন্ধী নিয়ে পড়েছে বিপাকে। চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মরছে এসব অসহায় প্রতিবন্ধীরা। পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মানবতার কাজে নিয়োজিতদের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

কচুয়া উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. নাহিদ ইসলাম মুঠোফোনে জানান, আবুল হাসেম ও তার পরিবারের অপর শারিরিক প্রতিবন্ধী সদস্যরা সমাজসেবার আওতায় ভাতা পাচ্ছেন। এর বাহিরে অপর সদস্যদের জন্য হুইল চেয়ার ও অন্যান্য সুবিধা দেয়ার সুযোগ থাকলে পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে।

এদিকে বাক প্রতিবন্ধী আবুল হাসেম ও তার মেয়ের জামাতা শারিরিক প্রতিবন্ধী মহিউদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় কেউ সহায়তা করতে চাইলে ০১৭০৩-৩৭৯৬৪৬ নাম্বারে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছেন অসহায় এ পরিবারটি।