খুঁজুন
রবিবার, ৬ জুলাই, ২০২৫, ২২ আষাঢ়, ১৪৩২

কচুয়া দুই ভাই, হাজীগঞ্জে ২ জন, শাহরাস্তিতে ১ জন, ফরিদগঞ্জে দুই স্কুলছাত্রী

চাঁদপুরে পৃথক ঘটনায় দুই ভাইসহ সাতজনের মরদেহ উদ্ধার

মনিরুজ্জামান বাবলু/ মো. ইউনুছ/ আনিছুর রহমান সুজন
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ১:২৪ পূর্বাহ্ণ
চাঁদপুরে পৃথক ঘটনায় দুই ভাইসহ সাতজনের মরদেহ উদ্ধার

চাঁদপুরের চার উপজেলায় পৃথক ঘটনায় সাতজনের মৃতুর খবর পাওয়া গেছে। সোমবার সন্ধ্যায় কচুয়া উপজেলায় ইরি ধানে পানি দিতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যান দুই ভাই। শাহরাস্তি উপজেলায় স’মিলে গাছ কাটতে গিয়ে এক যুবক, হাজীগঞ্জে ছেলের সাথে অভিমানে মায়ের আত্মহনন ও নানার বাড়ীতে বেড়াতে গিয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া একই দিনে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় পৃথক স্থান থেকে দুই স্কুল ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

কচুয়া উপজেলায় সোমবার সন্ধ্যায় কচুয়া উপজেলার কাদলা ইউনিয়নের শাসন খোলা গ্রামের বড় বাড়ীর পাশে ইরি-বোরো সেলু মেশিন দিয়ে পানি দিতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হন দুই ভাই। তারা হলেন, আবুল হাসানাত বকাউল (৩৫) ও খোরশেদ আলম বকাউল (৫০)। মুমূর্ষ অবস্থায় তাদেরকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তানভীর আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হাসপাতালে আনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার আগেই তারা মারা যান।

পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দুই ভাই বাড়ির পাশে সেচ পাম্প (সেলু মেশিন) দিয়ে ধান খেতে পানি দিতে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারে বিদ্যুৎপৃষ্ট গুরুতর আহত হয়।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবরটি আমারা পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। নিহতদের পরিবার পক্ষ থেকে অভিযোগ করলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দুপুরে শাহরাস্তি উপজেলার আয়নাতলী বাজারে স’ মিলে গাছ কাটতে গিয়ে মারা যান যুবক মো. কবির হোসেন। সে একই উপজেলার চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের নুনিয়া মাইজের বাড়ির বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, দুপুর আড়াইটায় স’ মেইলে গাছ কাটানোর সময় মেশিনে পড়ে যায়। তাকে স্থানীয়রা শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে সোমবার বিকালে হাজীগঞ্জ উপজেলার সুহিলপুর গ্রামে তাকরিম নামের এক শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। সে শাহরাস্তি উপজেলার করবা গ্রামের সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে। হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার পরিবার জানায়, সে নানার বাড়ীতে বেড়াতে গিয়ে পানিতে পড়ে মারা যায়। তার বয়স হয়েছিল ২ বছর।
অন্যদিকে হাজীগঞ্জে ছেলে ও ছেলের বউয়ের সাথে অভিমান করে পারভীন বেগম (৪০) নামের মা আত্মহনন করেন। সোমবার দুপুরে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের তারালিয়া গ্রামের জমাদ্দার বাড়িতে পারিবারিক কলহের জেরে কীটনাশক খেয়ে পেলেন তিনি। পারভীন বেগম ওই বাড়ির মো. মনির হোসেনের স্ত্রী।

স্থানীয় বাসিন্দা সফিক ও সাঈদ বলেন, সকাল থেকেই পারিবারিক বিষয় নিয়ে ছেলে মিজানুর রহমান ও ছেলের বউ রিয়ার সাথে পারভিন বেগমের ঝগড়া-বিবাদ চলে আসছিল। এক পর্যায়ে ছেলে ও ছেলের বউয়ের উপর অভিমান করে তিনি কীটনাশক পান করে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনেরা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পারভীন বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যান।’

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহমেদ তানভীর হাসান বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই পারভীন বেগম মারা যান।

হাজীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না পেলে এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হবে।

এছাড়া একই দিনে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় পৃথক স্থান থেকে দুই স্কুল ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উপজেলার রামদাসেরবাগ ও পশ্চিম পোঁয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ওই দুই কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম জানান, রামদারসেরবাগ গ্রামের বাবুল মোল্লা ও রিনা আক্তার দম্পত্তির মেয়ে রাখি আক্তার (১৫) স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়–য়া শিক্ষার্থী। সে সোমবার সকালে নিজেদের ঘরের বাতরুমের ঝর্ণার সাথে গলায় ফাঁস দেয়। পরে রাখির মা তার মেয়েকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে ডাক চিৎকার দিলে প্রতিবেশিরা এসে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

অপরদিকে, ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম পোঁয়া গ্রামে বসত ঘরের আঁড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় মাঈশা আক্তার (১৩) নামে এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সে ওই গ্রামের মো. মোস্তফা ও জেসমিন আক্তার দম্পত্তির মেয়ে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণীতে পড়–য়া শিক্ষার্থী। মাঈশার মা বলেন, আমি বাড়ির কাজের জন্য ঘরের বাহিরে ছিলাম। কিছুক্ষণপর ঘরে এসে দেখি আমার মেয়ে ঘরের আঁড়ার সাথে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় ঝুলে আছে। পরে আমার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এসে পুলিশকে খবর দেয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহআলম বলেন, খবর পেয়ে দুটি ঘটনাস্থল থেকে রাখি আক্তার ও মাঈশা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দুটি ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

১৫ বছরের সাংবাদিকতা নিয়ে তদন্ত হবে: প্রেস সচিব

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ৮:২৯ অপরাহ্ণ
১৫ বছরের সাংবাদিকতা নিয়ে তদন্ত হবে: প্রেস সচিব

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরের সাংবাদিকতা নিয়ে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হবে।’

প্রেস সচিব শনিবার (৫ জুলাই) সকালে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) পর্যালোচনা ও মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকরা বিগত সরকার আমলে সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল।

এই নিয়ন্ত্রণ থেকে বের হতে স্বাধীন সাংবাদিকতা রক্ষা করার চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ সময় সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন ৩০ হাজার টাকা করার কথাও বলেন তিনি।

এর থেকে উত্তরণের পথ খোঁজা হচ্ছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, কোনো এজেন্সি যাতে গণমাধ্যমকে ভয় দেখাতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে গণমাধ্যম স্বাধীন এবং এতে সরকার ন্যূনতম হস্তক্ষেপ করছে না।

সভায়, সম্প্রচার মাধ্যমের জন্য আলাদা কমিশন গঠন, সাংবাদিকদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ও আলাদা বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়েছে সাংবাদিকদের এই সংগঠন। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের চারমাস পার হলেও এ নিয়ে অগ্রগতি নেই কেন সেই প্রশ্নও তোলে সংগঠনটি।

শিগগির চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে: খাদ্য উপদেষ্টা

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ৮:০১ অপরাহ্ণ
শিগগির চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে: খাদ্য উপদেষ্টা

খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, চলতি মৌসুমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য মজুত রয়েছে। প্রচুর বোরো ধান উৎপাদনের ফলে খুব শিগগির চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে।

শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে যশোর সার্কিট হাউজের সভাকক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। খুলনা বিভাগের খাদ্যশস্য সংগ্রহ, মজুত ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে এ মতবিনিময় সভা হয়।

খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, সরকার চাহিদা মতো ধান-চাল সংগ্রহ শেষ করেছে। আগামী মাস থেকে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি শুরু হবে। এটা শুরু হলে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।

তিনি আরও বলেন, চালের দাম কিছুটা বেড়েছে, এটা সত্য। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে নওগাঁ ও কুষ্টিয়ার সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী মাসের শুরু থেকে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি হবে। এবার ৫৩ লাখ পরিবারকে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। এটি শুরু হলে দ্রুতই সুফল মিলবে।

চালের বাজারে মূল্য কমছে না কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি খাদ্য মজুতের বর্তমান স্থিতিশীলতা বজায় থাকে, তবে শিগগির চালের বাজার সহনীয় হয়ে উঠবে। তবে কোনো সিন্ডিকেট থাকলে তা ভেঙে দিতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তবে এমনভাবে দাম কমানো যাবে না যাতে কৃষক তার উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন।

তিনি আরও বলেন, দেশের খাদ্য মজুত বর্তমানে অত্যন্ত সন্তোষজনক পর্যায়ে। খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হয়েছে। এরই মধ্যে ৭২ শতাংশ ধান ও চাল সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শতভাগ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।

তিনি আরও বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে সরু জাতের ধানচাষের কারণে ধান সংগ্রহে কিছু সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে এবং ভবিষ্যতে এর সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সভায় খাদ্য বিভাগের মহাপরিচালক আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবির, যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আলমগীর বিশ্বাস, যশোর জেলা উপ-পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন এবং খুলনা বিভাগের ১০ জেলার জেলা প্রশাসক ও খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পুরোনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হতে আসিনি, খেলার নিয়ম বদলাতে এসেছি:নাহিদ ইসলাম

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ৭:৩৮ অপরাহ্ণ
পুরোনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হতে আসিনি, খেলার নিয়ম বদলাতে এসেছি:নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‌আমরা পুরোনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হতে আসিনি। আমরা খেলার নিয়ম বদলাতে এসেছি। খেলার নিয়ম বদলাতে হবে। রাজনীতির নিয়ম বদলাতে হবে ।

তিনি আরও বলেন, ‘বিচার ও সংস্কারের পরই নির্বাচন। তারা বলছে বিচার দেরি হবে, কিন্তু বিচার শুরু করতে হবে। বিচার দৃশ্যমান হতে হবে। যে সরকারই আসুক না কেন, এই বিচারে কেউ হাত দিতে পারবে না।’

বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে শনিবার (৫ জুলাই) বগুড়ায় পথযাত্রা ও পথসভা করে এনসিপি। সেখানে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

জুলাই আন্দোলনের শহীদদের পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানি, আপনাদের পরিবারের যে ক্ষতি হয়েছে, পৃথিবীর যা কিছুই দেওয়া হোক, সেই ক্ষতি পূরণ হবে না। আপনাদের পরিবারের সদস্যরা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন, মানুষের মুক্তির জন্য শহীদ হয়েছেন, স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘ফেরাউন চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। স্বৈরশাসকদের কখনো না কখনো পতন হয়। এবারও সেই ফেরাউনের পতন হয়েছে। আমরা এখন চাই, যে কারণে শহীদরা মারা গেলেন…একটা স্বাধীন দেশ যেখানে স্বৈরাচার থাকবে না, সেরকম একটা দেশ গঠন করবো। সেটার জন্য আমাদের আরও সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।’

শহীদ পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে থাকতে চাই। গত এক বছর দেশে অনেক কিছু হয়েছে। আমরা হয়তো আপনাদের প্রতি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারিনি। আরও আগেই আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত ছিল। সেটা পারিনি, এজন্য আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি, আপনাদের সঙ্গে সম্পর্কটা আজীবনের। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করবো আপনাদের পাশে থাকার।’

জুলাই ঘোষণাপত্র ও সংস্কারের বিষয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘শহীদ পরিবার যারা আছে তাদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। শুধু এই সরকার নয়, যেই সরকারই ক্ষমতায় আসুক, এটা করতে হবে। এটার জন্য আমরা জুলাই ঘোষণাপত্রের কথা বলছি। যে জুলাই ঘোষণাপত্রে এই শহীদদের কথা থাকবে, এই পরিবারগুলোর কথা থাকবে এবং সেটা সংবিধানে যুক্ত করা হবে। জুলাই ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের কী কী সংস্কার লাগবে সেই কথা থাকবে। আমরা এই দুটি দাবিতে সারাদেশে পদযাত্রা করছি।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, বগুড়া বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার হয়েছে। বগুড়ার নাম শুনলে তাদের কোথায় চাকরি দেওয়া হতো না। বগুড়াবাসীকে নির্বিচারে ভুয়া ও মিথ্যা মামলা দেওয়া হতো। জুলাই গণঅভ্যুথানে বগুড়ায় পনেরর বেশি নিহত ও সাতশর বেশি আহত হয়েছেন। আমারা শুনতে পেরেছি, বগুড়া প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। জুলাই গণঅভ্যুথানের দাবি, নিরপেক্ষ প্রশাসন, নিরপেক্ষ পুলিশ ও নিরপেক্ষ আদালত।

এসময় বগুড়ার প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আপনারা নির্দিষ্ট কোনো দলের হয়ে কাজ করবেন না।

পথসভার আগে বগুড়ায় পর্যটন মোটেলে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এনসিপির নেতাকর্মীরা।