হাইমচরের পল্লীর রনি বাড়ীতে বসেই বিভিন্ন শাড়ী প্রস্তুতে দৃষ্টি কেড়েছে


জেলা চাঁদপুরের হাইমচরের পল্লীর মোহাম্মদ রনি পাটোয়ারী তার নিজ বাড়ীতে বসেই প্রসিদ্ব মানের নামী-দামী বেনারশি, কাতান ও জামদানী শাড়ী তৈরী করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন এবং সকলের দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছেন। এখানে সব চেয়ে বেশী প্রস্তুত হচ্ছে এবং অর্ডার পড়ছে বিভিন্ন দামের রকমারী জামদানী শাড়ী।
এখানে প্রস্তুত করা জামদানী ৩৮শ’ টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যস্ত বিক্রি হচ্ছে। অর্ডার পেলে ৪/৫ লাখ টাকা দামের জামদানি শাড়ীও তৈরিতে রনির পারদর্শীতা রয়েছে।
তিনি হাইমচর এলাকার ৩ নাম্বার দক্ষিণ আলগী দুর্গাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম চর কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা। প্রতিনিয়ত নিজ এলাকা ছাড়িয়ে এই জামদানি শাড়ীর বেশী চাহিদা ও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে মরিয়া এই তরুন উদ্যোক্তা রনি পাটোয়ারী।
মঙ্গলবার দিনব্যাপী নিজের একটি দো’চালা টিনের ঘরে ক্ষুদ্র পরিসরে জামদানি শাড়ী তৈরিতে রনির ব্যস্ততা দেখা যায়।
রনির পিতা মো: বিল্লাল হোসেন পাটোয়ারী প্রতিবেদককে জানান, আমার ছেলে প্রায় ২০ বছর আগে পারিবারিক অভাব অনাটন কাটাতে হাইমচর ছেড়ে পারি জমায় নারায়ণগঞ্জ শহরে। পরে সেখানে নানা জায়গায় থেকে জামদানি কাপড় বুনার পুরো কাজ শিখে সে পুনরায় এলাকায় ফিরে আসেন। রনির একাডেমিক তেমন পড়াশুনা না থাকলেও এখন এই শাড়ী বিক্রির উপার্জনের অর্থ দিয়েই সংসার চালাচ্ছে।
রনির মা সালমা বেগম জানান, সুতা, নাটাই, কাঠের ফ্রেম, সিজার, কেচিসহ নানা যন্ত্রপাতি দিয়ে একা হাতে এক একটি জামদানী তৈরি করতে রনির ৩/৪ দিন সময় লেগে যায়। তাই নানান স্থান থেকে অর্ডার আসলেও তা ডেলিভারি দিতে ওর সময় লেগে যাচ্ছে। যদি সামর্থ্যবানরা এগিয়ে আসতো তাহলে রনির এখানে আরও অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করা যেত।
বিভিন্ন রকমের জামদানি শাড়ী প্রস্তুতে উদ্যোক্তা রনি পাটোয়ারী জানান, আমাদের ৭ ভাইবোনের মধ্যে এখন পরিবারসহ এলাকায় জামদানি শাড়ী তৈরি করে আমি সাড়া ফেলছি। তবে এ কাজটিতে আরও অনেকের কর্মসংস্থান তৈরির প্রত্যাশা রয়েছে। এজন্য আমার প্রয়োজন সরকারি বেসরকারি ভাবে অর্থ সহায়তা।
রনি পাটোয়ারী আরও জানান, আমার তৈরি এক একটি জামদানি শাড়ীর বর্তমান মূল্য ৩৮শ’ টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যস্ত। তবে যেকানো চাহিদানুযায়ী অর্ডার পেলে ৪/৫ লাখ টাকা দামের জামদানি শাড়ীও তৈরিতে আমার পারদর্শীতা রয়েছে। আমার এ কাজকে এগিয়ে নিতে আমি সবার দোয়া ও সহায়তা কামনা করছি।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা চাঁদপুরের হাইমচর ৩নাম্বার দক্ষিণ আলগী দূর্গাপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান সর্দার আব্দুল জলিল বলেন, রনির এ ধরনের রকমারী জামদানি শাড়ীর এই ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানকে অনেক বড় করতে আমার পরিষদ থেকে সহায়তা চাইলে সহায়তা করা হবে। আমি চাই এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাক এবং দেশ বিদেশে এর খবর ছড়িয়ে পড়ে এর চাহিদা ছড়িয়ে পড়ুক।
এ বিষয়ে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, প্রশাসনিক বিভিন্ন মেলায় এই রকমারী জামদানি শাড়ীকে তুলে ধরাসহ এ শিল্পটিকে ছড়িয়ে দিতে রনি পাটওয়ারীর এই শিল্প তৎপরতাকে ঘিরে আরও ব্যাপকভাবে কর্মপরিকল্পনা নেয়া হবে। এ জন্য আমার পরিষদ থেকে যেকোন সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকার আশ্বাস দিতে পারি।
আপনার মতামত লিখুন