খুঁজুন
সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

বইমেলার অর্থনীতি : বৈষম্য প্রেক্ষিত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২:২৮ অপরাহ্ণ
বইমেলার অর্থনীতি : বৈষম্য প্রেক্ষিত

‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাসব্যাপী চলছে বইমেলা। মেলায় অংশ নেওয়া ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ১ হাজার ৮৪ ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৬০৯টি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এবার মোট প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি, যার মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩৬টি। লিটলম্যাগ চত্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায় করা হয়েছে। সেখানে ১৩০টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিশু চত্বরে ৭৪টি প্রতিষ্ঠানকে ১২০ ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মেলার পুরো মাস জুড়ে এইসব স্টলে থাকে ভিড়। প্যাভিলিয়ন বা স্টলে ব্যস্ততা অঢেল, তড়িৎ চলাফেরা, হাঁক-ডাক, শোরগোল লেগেই থাকে। এর বাইরে ক্রেতা-পাঠকদের ভিড়, গাদাগাদি, ঠেলাঠেলি তো আছেই। বই ব্যাগে ভরা হচ্ছে, টাকা দেওয়া হচ্ছে, রশিদ কাটা হচ্ছে—সব মিলিয়ে একটা দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার।

আশেপাশে অনেক স্টল সাজানো গোছানো। রংপুর থেকে এসেছে একটি প্রকাশনী সংস্থা। স্মিতহাস্যের এক যুবক বসে আছেন স্টলে। মাঝে মাঝে দুই একজন সেখানে আসছেন, দুই চারটা বই উল্টেপাল্টে দেখে চলে যাচ্ছেন। না, বই বিক্রি হচ্ছে না তেমন। কেউ বইগুলোর সামনে দাঁড়ালে বিক্রেতা যুবকটির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠছে—প্রত্যাশা করছেন যে, বই বিক্রি হতে পারে।

যে কেউ কোনো বই হাতে নিলে, সে যুবাটি বইটি সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছেন। তাতে কিছুটা ফল হচ্ছে—কেউ কেউ দুই একটা বই কিনছেন বটে। কিন্তু তেমনটা নয়। ক্যাশবাক্সের দিকে তাকিয়ে দেখা গেল, সেখানে ক’টা একশ টাকার নোট ভিন্ন আর কিছুই নেই। ‘এমন বিক্রি-বাট্টা হলে দোকানের ভাড়াই যে উঠবে না’—ভ্রু-কুঞ্চিত হয় বিক্রেতা যুবাটির।

বিজ্ঞাপন

ঠিক সে সময়েই আমি দাঁড়ালাম স্টলের সামনে। চোখ যায় একটি কবিতার বইয়ের দিকে। পকেট থেকে টাকা বের করি বইটি কেনার উদ্দেশে। কিনে নেই বইটি—তাকাই বিক্রেতা যুবকটির পরিতৃপ্ত মুখের দিকে।

সে স্টল থেকে কৌণিকভাবে অস্থায়ীভাবে তৈরি করা পথ দিয়ে ক্লান্ত পায়ে চলছিলেন একজন। আটপৌরে শাড়ি পরা প্রৌঢ়া মহিলা, কাঁধে একটি ঝোলা, হাতে ধরা কটি বই—এমনভাবে ধরেছেন যেন সবাই দেখতে পায়। বোঝা গেল যে, হাতে ধরা বইটির লেখক তিনি নিজে। পাশ দিয়ে কেউ গেলেই মহিলা থামাচ্ছেন, এগিয়ে ধরছেন তার বইটি, অনুরোধ করছেন কিনতে।

…এই যে এত সব পার্থক্য, এত যে ফারাক, তার তো একটা অর্থনৈতিক ব্যাপ্তি আছে—যা আসলে বৈষম্যের। আন্দাজ করতে পারি যে, চুক্তি সম্পাদনের সময়ে প্রথম বইটির লেখকের যে সম্মানী ধরা হয়েছে, দ্বিতীয় লেখকের ভাগ্যে তা জোটেনি।

উঁহু, এ পর্যন্ত কাউকেই সে বইটি কিনতে দেখা গেল না। কেউ তার অনুরোধের দিকে ভ্রূক্ষেপ না করে তাকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছেন, কেউ কেউ অবশ্য মৃদু হেসে হাত নেড়ে তাদের অপারগতার কথা মহিলাকে জানাচ্ছেন। মুখোমুখি আমরা দুইজন থামি। মহিলাটি আমার সামনে তার বইটি তুলে ধরলে আমি বিনাবাক্যে সেটি কিনে নেই। খুশির আভা ছড়িয়ে পড়ে আমাদের দুইজনের মুখেই—তিনি বিক্রি করতে পেরে এবং আমি কিনতে পেরে।

এতটা পথ হেঁটে ক্লান্ত বোধ করি। বসে পড়ি সিমেন্ট বাঁধানো একটা বেঞ্চিতে। ব্যাগ থেকে বোতল বের করে কয়েক ঢোঁক পানি খাই, মুখ মুছি। তারপর এক এক করে কেনা বই তিনটি চোখের সামনে তুলে ধরি। বই তিনটির বিষয়বস্তুর উৎকর্ষতা কোনটি কী রকম, তা জানি না, তবে উল্টে-পাল্টে দেখে তিনটি জিনিস পরিষ্কার হয়ে যায় আমার কাছে।

এক, তিনটে বইয়ের প্রথমটি একজন খ্যাতিমান লেখকের লেখা; দ্বিতীয় বইটির কবির পরিচিতি আছে কিছুটা, কিন্তু তিনি বিখ্যাত কোনো কবি নন, আর তৃতীয় বইটির লেখক একেবারেই অজানা আমার কাছে।

দুই, সেই সঙ্গে প্রচ্ছদ ও প্রচ্ছদ শিল্পীর নামের দিকে বুঝতে পারি যে, বই তিনটির লেখকদের মতো তাদের প্রচ্ছদ শিল্পীদের মধ্যেও তারতম্য রয়েছে। প্রথম বইটির প্রচ্ছদ শিল্পী আমাদের দেশের অন্যতম এক শিল্পী, অন্য দুটোর শিল্পী আমার কাছে অপরিচিত।

তিন, বই তিনটির কাগজ, ছাপা, অঙ্গসৌষ্ঠব, বাঁধাইের ভেতরেও ফারাক অনেক।

এইসব ভাবতে ভাবতে মনে হলো, এই যে এত সব পার্থক্য, এত যে ফারাক, তার তো একটা অর্থনৈতিক ব্যাপ্তি আছে—যা আসলে বৈষম্যের। আন্দাজ করতে পারি যে, চুক্তি সম্পাদনের সময়ে প্রথম বইটির লেখকের যে সম্মানী ধরা হয়েছে, দ্বিতীয় লেখকের ভাগ্যে তা জোটেনি। হয়তো তার সঙ্গে কোনো চুক্তিপত্রই সম্পাদিত হয়নি। চুক্তি কিংবা সম্মানীর কথা তো অপ্রাসঙ্গিক তৃতীয় লেখকের ক্ষেত্রে। তেমনি সম্মানীর নিশ্চয়ই উল্লেখযোগ্য তারতম্য আছে তিন প্রচ্ছদ শিল্পীর মধ্যে। বই উল্টে বুঝতে পারলাম যে, তৃতীয় বইটির লেখক এবং প্রচ্ছদ শিল্পী একই ব্যক্তি—হতে পারে, সেই ব্যক্তিটি একাধারে লেখক এবং শিল্পী, কিন্তু এমনও তো হতে পারে ব্যয় সংকোচ করার জন্যেই এমনটা করা হয়েছে। সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই, প্রথম বইটির প্রকাশনার পেছনে বেশ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। বইটির কাগজ অত্যন্ত দামি। বিখ্যাত মুদ্রকের কাছে বইটি ছাপা হয়েছে। মুদ্রণের ছোঁয়া বইটির পাতায় পাতায়। ভুল তেমনটা চোখে পড়ে না। বাঁধাই অত্যন্ত শক্ত, খুলে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই।

এর বিপরীতে অন্য দু’টি বইয়ের পেছনে যে অর্থের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা স্পষ্ট। বইয়ের কাগজ অত ভালো নয়, ছাপা ভালো মানের নয়, ছাপার ভুলও অনেক। মানে, নিখুঁত সম্পাদনার জন্যে প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় করা যায়নি। বাঁধাইও হয়েছে সস্তা জায়গায়—ফলে, বাঁধাইয়ের অবস্থাও সঙ্গিন। মনে হচ্ছে, বই এখনই খুলে খুলে আসবে। সারা মেলা বাতিতে বাতিতে ঝলমল করছে। চোখ মেলে তাকাই চারদিকে। কোনো কোনো স্টল বা প্যাভিলিয়নের আকার, সাজসজ্জা, বাতি আর জৌলুস চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। অন্যগুলো যেন লুকিয়ে রাখতে চাইছে নিজেকে।

উঠে পড়লাম, এবার ফিরতে হবে। দুইজন সুবেশ ভদ্রলোক আমার সামনে চলছেন। তাদের পেছনে অন্য আরেকজন লোক বিশাল দুটো বইয়ের ব্যাগ দুই হাতে বহন করছেন—ব্যাগের ভারে বহনকারী প্রায় নুয়ে পড়েছেন। কানে এলো, প্রথম ব্যক্তিটি পরম পরিতৃপ্তির সঙ্গে দ্বিতীয় ব্যক্তিটিকে বলছেন, ‘প্রায় ৫ হাজার টাকা কিনলাম’। ‘কী কী বই কিনলেন?’

দ্বিতীয় ব্যক্তির প্রশ্ন। ‘তাতো ঠিক বলতে পারবো না। দোকানি যেগুলো ভালো বলেছে, সেগুলোই কিনে নিয়েছি। তার কথা শুনে মনে হলো, তিনি যেন মাছ কিনতে বেরিয়েছিলেন। ‘সেকি! পড়ে দেখেননি?’, দ্বিতীয় ব্যক্তি আঁতকে ওঠেন। ‘পড়ার কি সময় আছে আমার? বসার ঘরে সাজিয়ে রাখবো, দেখতে পাবে সবাই’, প্রথম ব্যক্তির জবাব। তাদের দুইজনকে পাশ কাটিয়ে যখন একটি শিশুতোষ প্রকাশনীর পাশ দিয়ে যখন যাচ্ছি, তখন দেখি আরেক দৃশ্য। বাচ্চাদের একটি বই নিয়ে বাবা-ছেলেতে টানাটানি। বুঝলাম, ছেলেটি বইটি চায়, কিন্তু বাবা তাকে নানাভাবে বোঝাচ্ছেন যে, তার পকেটে আর এত টাকা নেই।

‘তোমাকে না তিনটে বই কিনে দিলাম, বাবা। আর তো কেনার মতো টাকা নেই আমার কাছে’। ‘বইটার দাম বেশি না, বাবা। মাত্র দু’শো টাকা। দাও না কিনে?’ ‘না, বাবা। এবার আর হবে না’। ‘এরমধ্যেই ৭০০ টাকার বই কিনেছি। আর টাকা নেই আমার কাছে’, বাবার কণ্ঠস্বরটি করুণ হয়ে ওঠে।

ছেলের হাত থেকে বইটি নিয়ে বাবা ফেরত রেখে দেন, তারপর পা বাড়ান সামনের দিকে। ছেলেটি মুখ কালো করে বাবাকে অনুসরণ করে—একবার করুণ চোখে তাকায় পেছনের দিকে, ফেলে আসা বইটির দিকে। এই তো প্রায় ফটকের কাছে এসে গেছি। সারা মেলা বাতিতে বাতিতে ঝলমল করছে। চোখ মেলে তাকাই চারদিকে। কোনো কোনো স্টল বা প্যাভিলিয়নের আকার, সাজসজ্জা, বাতি আর জৌলুস চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। অন্যগুলো যেন লুকিয়ে রাখতে চাইছে নিজেকে। মনে মনে ভাবি, ওই বড় বড় স্টল বা প্যাভিলিয়নগুলো না জানি কত খরচ হয়েছে—প্রখ্যাত স্থপতি, বিখ্যাত শিল্পী, দক্ষ মিস্ত্রি, দামি উপকরণ ও অনুষঙ্গ। জানি, ছোট ছোট স্টলগুলোর সঙ্গতি হয়নি এসব করার। অল্প অর্থে কাজ সেরেছে তারা।কথায় কথায় আমরা আজকাল অসমতার কথা বলি, বলি অর্থনৈতিক বৈষম্যের কথা। বইমেলার ক্ষেত্রেও সেটা সত্যি। বইমেলার অর্থনীতিই তো একমাত্র কথা নয়, শেষ কথা তো নয়, সে অর্থনীতির বৈষম্য যে বড় প্রকট।

ড. সেলিম জাহান ।। ভূতপূর্ব পরিচালক, মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তর এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ বিভাগ, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র

দৈনিক আলোকিত চাঁদপুরের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক রাজুর মায়ের দাফন সম্পন্ন 

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ
দৈনিক আলোকিত চাঁদপুরের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক রাজুর মায়ের দাফন সম্পন্ন 
দৈনিক আলোকিত চাঁদপুর পত্রিকার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ক্লাবের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম রাজুর মা ফেরদৌসী বেগম (৬৫) এর জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের সকদি পাঁচগাঁও গ্রামের মিয়াজী বাড়ির মরহুম আব্দুছ ছাত্তার মিয়াজির স্ত্রী, সাংবাদিক মো. জাহাঙ্গীর আলম রাজুর মমতাময়ী ‘মা’ ফেরদৌসী বেগম দীর্ঘদিন ফুসফুসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৫ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা ১৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
৬ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায় মরহুমার
জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি ২ ছেলে, ২ মেয়ে ও নাতি নাতনি সহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মরহুমার জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক আলোকিত চাঁদপুর পত্রিকার সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মনিরুজ্জামান বাবলু, বার্তা সম্পাদক মিজান লিটন ভূঁইয়া, দৈনিক প্রিয় চাঁদপুর পত্রিকার বার্তা সম্পাদক আরিফুল ইসলাম শান্ত, সাংবাদিক মারুফ হোসেন,  অলিউল্লাহ মাহবুব, মরহুমার আত্মীয়-স্বজনসহ স্থানীয় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
জানাজার নামাজে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা আব্দুল হাকিম।
সাংবাদিক রাজুর মায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দৈনিক আলোকিত চাঁদপুর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মো. জাকির হোসেন ও জেলা সাংবাদিক ক্লাবের নেতৃবৃন্দ।
ওনারা মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

মধ্যরাতের পর খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হবে

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:৩৫ অপরাহ্ণ
মধ্যরাতের পর খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হবে

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ‘সংকটাপন্ন’ অবস্থায় আজ মধ্যরাতের পর লন্ডনে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের বাইরে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা ইনশাআল্লাহ কাতার এয়ার লাইন্সের মাধ্যমে আজ মধ্যরাতের পর বা আগামীকাল সকালে উনাকে (খালেদা জিয়াকে) লন্ডনে নিয়ে যাবো। দেশ-দেশের বাইরের বেশ কিছু চিকিৎসক উনার সঙ্গে যাবেন।

তিনি দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চেয়েছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং খালেদা জিয়ার পরিবার থেকে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাসকেও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

এদিকে, বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্রের বরাতে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান লন্ডন থেকে ঢাকায় আসছেন। খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

গত ২৩ নভেম্বর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে দ্রুত রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে ওই হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রয়েছেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খালেদা জিয়া ‘খুব ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে’ চলে গেছেন।

৮০ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির সমস্যাসহ নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন।

আরও যে ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলো বিএনপি

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:০১ অপরাহ্ণ
আরও যে ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলো বিএনপি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আরও ৩৬ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।

যেসব আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়:

ঠাকুরগাঁও-২ আসনে আব্দুস সালাম, দিনাজপুর-৫ আসনে এ কে এম কামরুজ্জামান, নওগাঁ-৫ আসনে জাহিদুল ইসলাম ধলু, নাটোর-৩ আসনে মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ-১ আসনে সেলিম রেজা, যশোর-৫ আসনে এম ইকবাল হোসেন, নড়াইল-২ আসনে মো. মনিরুল ইসলাম, খুলনা-১ আসনে আমির এজাজ খান, পটুয়াখালী-২ আসনে মো. শহিদুল আলম তালুকদার, বরিশাল-৩ আসনে জয়নুল আবেদীন, ঝালকাঠি-১ আসনে রফিকুল ইসলাম জামাল।

টাঙ্গাইল-৫ আসনে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ময়মনসিংহ-৪ আসনে মোঃ আবু ওয়াহাব আখন্দ ওয়ালিদ, কিশোরগঞ্জ-১ আসনে মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে শেখ মজিবর রহমান ইকবাল, মানিকগঞ্জ-১ আসনে এস এ জিন্নাহ কবির, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে মোঃ কামরুজ্জামান, ঢাকা-৭ আসনে হামিদুর রহমান, ঢাকা-৯ আসনে হাবিবুর রশিদ, ঢাকা-১০ আসনে শেখ রবিউল আলম, ঢাকা-১৮ আসনে এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, গাজীপুর-১ আসনে মোঃ মজিবুর রহমান, রাজবাড়ী-২ আসনে মোঃ হারুন অর রশীদ।

ফরিদপুর-১ আসনে খন্দোকার নাসিরুল ইসলাম, মাদারীপুর-১ আসনে নাদিরা আক্তার, মাদারীপুর-২ আসনে জাহান্দার আলী খান, সুনামগঞ্জ-২ আসনে নাসির হোসেন চৌধুরী, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে নুরুল ইসলাম, সিলেট-৪ আসনে আরিফুল হক চৈধুরী, হবিগঞ্জ-১ আসনে রেজা কিবরিয়া, কুমিল্লা-২ আসনে মোঃ সেলিম ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম-৩ আসনে মোস্তফা কামাল পাশা, চট্টগ্রাম-৬ আসনে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৯ আসনে মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে নাজমুল মোস্তফা আমীন ও কক্সবাজার-২ আসনে আলমগীর মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ।

এর আগে ২৩৭টি আসনে নিজেদের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে বিএনপি।