খুঁজুন
সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫, ১৭ চৈত্র, ১৪৩১

শীতের পিঠা সমাচার

অধ্যাপক মো. মসিউল আযম
প্রকাশিত: সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৫:০২ অপরাহ্ণ
শীতের পিঠা সমাচার

শীত মৌসুমে রসের পিঠা। আবহমান কাল থেকেই যশোরের রয়েছে এর অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্য। আত্মীয়-স্বজনেরা এ সময়ে তাকিয়ে থাকেন কবে পিঠা আসবে, এর স্বাদ গ্রহণ করবো।

শৈশবে স্কুলের পাঠ্যবইয়ে একটি কবিতার কথা এখনা মনে পড়ে- ‘যশোর জেলায় আছে রে ভাই, পাটালী গুড়, খেজুর গাছ, ফরিদপুরের কি মজাদার, পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ।’

এবার পিঠা খাওয়ার বাস্তব অভিজ্ঞতা আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। ইতোপূর্বে এ ধারণা আমার ছিল না। সাধারণ মানুষের পিঠা খাওয়ার স্বাদ এখন নাগালের বাইরে।

কর্ম সুবাদে বর্তমানে আমার তিন মেয়ে জামাই, নাতি-নাতনিরা ঢাকার বাসিন্দা। এবার তারা পিঠা খেতে চেয়েছিল। ঢাকায় পিঠা খাওয়া বা পাওয়া যায়, কিন্তু মেয়েদের বাপের বাড়ির পিঠা, বিশেষ করে যশোরের পিঠার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। তাদের আবদার পূরণে পিঠার উপকরণ জোগাতে হিমশিম খাওয়ার জোগাড়। তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে পিঠা খেতে পারবে?

আশির দশকে সপরিবারে বসবাস করতাম যশোর শহরের ঘোপ সড়ক ও জনপথ বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারে। শীতের সকালে শহরের আশে পাশে গ্রাম থেকে ছিকে-বাক কাঁধে নিয়ে রস বিক্রি করতে আসত চাষিরা। প্রতি ঠিলে রস পাওয়া যেত দশ-বারো টাকায়। আর দুধ কিনতাম পনেরো-ষোল টাকা সের। পাটালী কিনেছি প্রতি সের পঁচিশ-ত্রিশ টাকায়। তখন ১নং-২নং বলে কোনো পাটালী ছিল না, সবই ছিল ১নং।

পিঠা খেতে প্রায় পঞ্চাশ বছর পর এসে এখন দুই ঠিলে রস কিনেছি ৭০০/, দুধ চার কেজি ২৮০/-, চালের গুড়া তৈরি করতে আলো-চাল পাঁচ কেজি ৩৫০/-, পিঠা স্বাদ বাড়াতে দুই কেজি পাটালী ৬০০/-। ভাগ্যবশত বাড়ির নারিকেল গাছে দুটি ঝুনা নারিকেল পাওয়া গেছে বলে কিছুটা রক্ষা।

মাটির ছাঁচে তৈরি পিঠা একটি বড় টিনের হাঁড়িতে রাখা হয়। ভারী ওজনের সেই হাঁড়ি বহন করা আমার একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। সেটি বহনের জন্যে সঙ্গী হিসেবে শক্তিশালী একজন প্রতিবেশীকে পাওয়া যায়। বাড়ি থেকে যশোর স্টেশন পর্যন্ত ইজি বাইক ভাড়া ২০০/-, যশোর থেকে ঢাকা-কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত দুজনের ট্রেনভাড়া ১,১০০/-, কমলাপুর স্টেশন থেকে ঢাকা মিরপুর পর্যন্ত সিএনজি ভাড়া ৫০০/- সর্বমোট ৩,৭৩০/-। এখন টাকার অংকে হিসাব করলে প্রতি পিস পিঠার মূল্য যাই পড়ুক, সেটি বড় কথা নয়। তবু মেয়ে জামাই, নাতি-নাতনিরা পিঠা খেতে চেয়েছে সেটি আমার কাছে বড় আনন্দের কথা।

গ্রামে এখন ঢেঁকির প্রচলন নেই। যশোরের এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে গ্রামের বাড়িতে ঢেঁকিঘর নির্মাণ করেছি। শীত মৌসুমে মহিলারা পালাক্রমে ঢেঁকি ব্যবহার করছেন। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত আলো-চাল, কুমড়া বড়ির ডাল ইত্যাদি কোটায় ব্যস্ত থাকেন। তাদের বসার জন্যে আসন, বৈদ্যুতিক আলো, টয়লেট ব্যবস্থা করেছি, বাচ্চাদের খেলাধূলার জন্য আরও কিছু ভবিষ্যত কর্ম-পরিকল্পনা রয়েছে।

লেখক: প্রবীণ সাংবাদিক, কলাম লেখক ও উন্নয়ন কর্মী

মাত্র ৫ টাকায় ঈদের নতুন পোশাক : হাসি ফুটলো ৫০০ শিশুর

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫, ৮:৪৬ অপরাহ্ণ
মাত্র ৫ টাকায় ঈদের নতুন পোশাক : হাসি ফুটলো ৫০০ শিশুর

মাত্র ৫ টাকা! এই টাকায় হয়তো আমরা এক কাপ চা কিনি কিন্তু চাঁদপুরের ফরাক্কাবাদের ৫০০ শিশুর কাছে এই ৫ টাকা ছিল ঈদের নতুন জামার স্বপ্ন পূরণের চাবিকাঠি। ঈদের আনন্দ যেখানে অনেকের জন্য নতুন পোশাকের হাসি, সেখানে ফরাক্কাবাদের শত শত সুবিধাবঞ্চিত শিশুর সেই হাসি ছিল অনিশ্চিত। তাদের সেই স্বপ্নপূরণে এগিয়ে এসেছে স্বপ্নতরু সামাজিক সংগঠন।

“মানবতার কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ” এই স্লোগানকে হৃদয়ে ধারণ করে, দীর্ঘদিন ধরে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে স্বপ্নতরু। তারই ধারাবাহিকতায় আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে স্বপ্নতরু সামাজিক সংগঠনের ফরাক্কাবাদ শাখা আয়োজন করে এক ব্যতিক্রমী ঈদ বাজারের।

শনিবার সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলার ফরাক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ যেন রঙিন হয়ে ওঠে সেই শিশুদের হাসিতে। অনুষ্ঠানে প্রায় ৫ শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাতে ৫ টাকার বিনিময়ে তুলে দেওয়া হয় নতুন ঈদের পোশাক।

তবে এটি কোনো দান নয়, ছিল এক সম্মানের আয়োজন। শিশুদের হাতে জামা তুলে দেওয়া হয় ‘ক্রয় করার’ অনুভূতি দিয়ে, যাতে তারা বুঝতে পারে এই জামা তারা নিজেরাই কিনেছে, দয়ার হাত পেতে নয়।
স্বপ্নতরু সামাজিক সংগঠনের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন বলেন, “আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। আমরা চাই, কেউ যেন ঈদের দিনে নতুন জামা না পেয়ে কষ্টে না থাকে। সেই ভাবনা থেকেই ৫ টাকার বিনিময়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে নতুন পোশাক বিতরণ করা হয়েছে। যাতে তারা বোঝে, এ আনন্দ তাদের নিজের অধিকার।”

ঈদের নতুন জামা হাতে পেয়ে অনেক শিশুর চোখে ছিল খুশির জল। কারও হাতে রঙিন জামা, কারও হাতে নতুন ফ্রক, কেউবা পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে বলছিল এবার আমিও নতুন জামা পরব!”
ফরাক্কাবাদের স্কুল মাঠের সেই দৃশ্যটা যেন ছিল মানবতার সবচেয়ে সুন্দর ছবির মতো।

মাত্র ৫ টাকায় কেনা জামার বিনিময়ে শত শত শিশুর মুখে ফুটে উঠলো ঈদের হাসি। স্বপ্ন দেখুক তারা, এগিয়ে যাক মানবতা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং স্বপ্নতরু সংগঠনের সকল শাখার সদস্যরা।

চাঁদপুর এসএসসি ৯৩ ব্যাচ বন্ধু মহলের ইফতার মাহফিলে যুগ্ম সচিব নাজমুল আহসান

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫, ৮:১৪ অপরাহ্ণ
চাঁদপুর এসএসসি ৯৩ ব্যাচ বন্ধু মহলের ইফতার মাহফিলে যুগ্ম সচিব নাজমুল আহসান

চাঁদপুর এসএসসি ৯৩ ব্যাচ বন্ধু মহলের ইফতার মাহফিলে বাংলাদেশ সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয়ে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত বন্ধু মোহাম্মদ নাজমুল আহসানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন ৯৩ ব্যাচের সকল বন্ধুরা।

চাঁদপুর এসএসসি ৯৩ ব্যাচ বন্ধু মহলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর শহরের রেডচিলি চাইনিজ এন্ড রেষ্টুরেন্টে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

ইফতার মাহফিলে অংশ নেন এসএসসি ৯৩ ব্যাচের বন্ধু ও বাংলাদেশ সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয়ে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত মোহাম্মদ নাজমুল আহসান।

ইফতার মাহফিলের পূর্বে ৯৩ ব্যাচের সকল বন্ধুরা মিলে পদোন্নতিপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব নাজমুল আহসানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
পরে বন্ধু মহলের আব্দুল গফুরের দোয়া ও মুনাজাত পরিচালার মাধ্যমে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় চাঁদপুরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের এসএসসি ৯৩ ব্যাচের সকল বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের পাশে দাঁড়ালেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক

শওকত আলী
প্রকাশিত: শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫, ৭:৪৩ অপরাহ্ণ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের পাশে দাঁড়ালেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক

পবিত্র ঈদুল ফিতর সুন্দরভাবে উদযাপন করার লক্ষ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।

শনিবার জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে জেলার প্রতিটি উপজেলায় আহত ও শহিদ পরিবারের কাছে ঈদ উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়।

জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, চাঁদপুর জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৪৫ জন আহত এবং ৩১ জন শহীদ পরিবারকে ঈদ উপহার প্রদান করা হয়। এছাড়াও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ২৯ জন শহীদ পরিবারকেও জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ঈদ সামগ্রী দেয়া হয়।

ঈদ সামগ্রীর মধ্যে ২ কেজি পোলাওয়ের চাল, সয়াবিন তেল ২ লিটার, সেমাই ৪ প্যাকেট, চিনি ১ কেজি, কিসমিস ও গুড়া দুধ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন জানান, আমি চেয়েছি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা যেন পবিত্র ঈদুল ফিতর সুন্দরভাবে উদযাপন করতে পারে তার জন্যে একটু ক্ষুদ্র উপহার সামগ্রী দেয়া হয়েছে।

ডিসি আরো বলেন, শুধুমাত্র ঈদ নয়, সবসময়ই চাঁদপুর জেলা প্রশাসন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত এবং শহীদ পরিবারের পাশে থাকবে। আমি আশাকরি রাষ্ট্রও সবসময়ই তাদের পাশে আছে এবং থাকবে। কারণ রাষ্ট্র সবসময়ই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত এবং শহীদদের কথা ভাবেন এবং চিন্তা করেন।