খুঁজুন
শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৯ কার্তিক, ১৪৩২

‘সংস্কারের আলোচনা যতবেশি দীর্ঘায়িত হবে দেশ ততবেশি সংকটে পড়বে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২:১৯ পূর্বাহ্ণ
‘সংস্কারের আলোচনা যতবেশি দীর্ঘায়িত হবে দেশ ততবেশি সংকটে পড়বে’

সংস্কার প্রস্তাবের আলাপ-আলোচনা যতবেশি দীর্ঘায়িত হবে দেশ ততবেশি সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, যদি নির্বাচন প্রক্রিয়া দেরি হয়, যদি সংস্কার সংস্কার করে আমরা সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করতে থাকি তাহলে যে স্বৈরাচারকে বাংলাদেশের সকল মানুষ, দল-মত নির্বিশেষে, শ্রেণিপেশা নির্বিশেষে সকল মানুষ একত্রিত হয়ে এদেশ থেকে বিতাড়িত করে দিয়েছে তারা সুযোগ পেয়ে যাবে আবার দেশের মানুষের কাঁধে চেপে বসার। কাজেই সমাজের বিজ্ঞ, সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ যারা সংস্কারের কথা বলছেন আপনাদের সকলের কাছে রাজনৈতিক দলের অবস্থান থেকে আপনাদের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, সংস্কার সংস্কার বক্তব্য রেখে এই আলাপ দয়া করে দীর্ঘায়িত করবেন না। কারণ আপনারা সংস্কারের আলাপ যত দীর্ঘায়িত করবেন দেশ ততবেশি সংকটের মুখে পড়বে, আপনারা সংস্কার আলাপ যত দীর্ঘায়িত করবেন দেশে তত ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কদমতলীতে রাষ্ট্র মেরামতে দলটির এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে শ্যামপুরের কদমতলীর বালুর মাঠে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধান অতিথি তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, বহু মানুষ ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য হতাহত হয়েছে। জবাবদিহিতা নিশ্চিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে সমস্যার জট খুলতে শুরু করবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কাজ যত দ্রুত শুরু হবে, তত দ্রুত দেশকে রক্ষা করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারের সামনে একমাত্র বিএনপিই সংস্কারের কথা বলেছিল। আড়াই বছর আগেই এই ৩১ দফা দেওয়া হয়েছিল। ৩১ দফার সাথে সরকারের সংস্কার প্রস্তাবনায় খুব বেশি ফারাক নেই। এসময় ১০ টাকা কেজি চাল দেওয়ার মতো মিথ্যা আশ্বাস না দিয়ে বাস্তবতার আলোকে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করতে চাই।

নির্বাচন ছাড়া কোনো ভিন্ন পথ নেই মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, সংস্কারের প্রস্তাবগেুলো যদি বাস্তবায়ন করতে হয় তাহলে সবার আগে নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচনের মাধ্যমে যাদেরকে জনগণ দায়িত্ব দেবে সংস্কারের কাজ তারাই শুরু করতে পারবে, তাদেরকে শুরু করতেই হবে। সংস্কারের কাজ করতে হলে তা নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই সংস্কার বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। কারণ যারা নির্বাচিত হয়ে আসবে তারা জনগণের কাছে ওয়াদাই করবে যে, তারা সুযোগ পেলে বাস্তবায়ন করবে এই সব সংস্কার।

তিনি আরও বলেন, সংস্কারকে যত দ্রুত বাস্তবায়ন করা যাবে দেশের মানুষকে তত দ্রুত আমরা বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারব। কাজেই আসুন এই সংস্কারকে বাস্তবায়ন করতে হলে উপায় একটাই যে সংস্কার প্রস্তাব বিএনপি দিয়েছে, যে সংস্কার প্রস্তাব অন্তবর্তীকালীন সরকারের কমিশনগুলো তৈরি করে দিয়েছে। এই সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো রাস্তা নাই।

তারেক রহমান বলেন, আমি মনে করি, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায় এটা সকলকে অনুধাবন করতে হবে। কোনো কোনো ব্যক্তি বলেন যে, নির্বাচন হলেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? আমি বলি, সাথে সাথে সব সমস্যার সমাধান হবে না। কিন্তু নির্বাচন হলে জনগণের ভোটের মাধ্যমে, জনগণের রায়ের মাধ্যমে যে দল বা যে ব্যক্তি বা যারা দেশ পরিচালনার সুযোগ পাবে তারা সমস্যার জট বা সমস্যার যে গিট্টু সেগুলো আস্তে আস্তে খুলতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ ও মানুষের সেবা করা। দেশের মানুষ ১৫ বছর যাবৎ স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে ভোটের জন্য, বাক স্বাধীনতা অর্জন করার জন্য, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। মানুষের চাহিদা, দেশের উন্নয়নের বিষয় বিবেচনায় রেখে বিএনপি প্রথমে ২৭ দফা ঘোষণা করেছিল। তার পরবর্তীতে বিএনপি যাদেরকে নিয়ে স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে আন্দোলনে কাজ করেছে তাদেরকে নিয়ে আমরা ৩১ দফা প্রণয়ন করেছি। যারা সংস্কার সংস্কার করছেন প্রতিদিন। এই মানুষগুলোকে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখিনি। আজকে যারা সংস্কারের কথা বলছেন তাদেরকে আমরা আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। অথচ দুই আড়াই বছর আগে বিএনপি বলেছিল সংস্কারের কথা। কারণ আমরা জানতাম স্বৈরাচারের পতন হবে। আমরা আগস্টের ৫ তারিখ সেটা হবে হয়তো সেটা জানতাম না।

তারেক রহমান বলেন, যানজট একটা ভয়ানক সমস্যা। প্রত্যেক মানুষকে যানজটের যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। এই যানজটকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। কাজেই আমাদের উপায় বের করতে হবে। বায়ু দূষণে ঢাকা বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। দিল্লির সাথে বায়ু দূষণে কম্পিটিশন চলছে। কোনোদিন দিল্লি এক নম্বরে ঢাকা দ্বিতীয়, কোনোদিন ঢাকা প্রথম দিল্লি দ্বিতীয়। আমি রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বুঝি জবাবদিহিতা না থাকলে কোন রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখা সম্ভব না। আমাদের সংসারেও কিন্তু জবাবদিহিতা থাকে। জবাবদিহিতা ছিল না বলেই দেশের সম্পত্তি লুটপাট করে বিদেশে পাচার করতে পেরেছে শেখ হাসিনা ও তার দোসররা। যদি সত্যিকার অর্থে মানুষের ভোটে সকল পর্যায়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতো তাহলে এসব সমস্যা থাকতো না। আপনারা যে মানুষটিকে নির্বাচন করতেন তিনি সবকিছু দেখতেন আপনাদের সমস্যা থাকতো না। কারণ নিবাচিত ব্যক্তি চিন্তা করতো মানুষের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা যদি না করি; তাহলে যখন আবার ভোট হবে তখন আমি হেরে যাব। ১৭ বছরে বিএনপিসহ বিরোধী দলের অসংখ্য নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। গুম-খুন হয়েছেন, সারাদেশে দলের লক্ষ লক্ষ মানুষ নির্যাতিত হয়েছে অধিকারের আদায়ের জন্য। জবাবদিহিতা হচ্ছে নির্বাচন, সেটা জাতীয় নির্বাচনই হোক, আর স্থানীয় সরকার নির্বাচনই হোক। একটা নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হতে হবে। দশ টাকার কথা বলে ৭০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানো হলে ৫ আগস্ট এর মতো অবস্থা হবে। আমরা যদি দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাই, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাই; তাহলে অবশ্যই নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হবে। যত দ্রুত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব দিতে পারব তত দেশকে ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারব। নির্বাচন হলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে তা আমরা বলিনি। কিন্তু যারা নির্বাচিত হবেন তারা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হবেন। ভোটের অধিকারের জন্য বহু মানুষ জীবন দিয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন ভোটের অধিকারের জন্য। লক্ষ লক্ষ মানুষ গত ১৭ বছরে বাংলাদেশে বাংলাদেশের বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব সালাহউদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন প্রমুখ।

ফরিদগঞ্জের পাইকপাড়ায় বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

আনিসুর রহমান সুজন
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:৪৯ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জের পাইকপাড়ায় বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ব্যাংকিং ও রাজস্ব বিষয়ক সম্পাদক ও চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লায়ন মো. হারুনুর রশিদ বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন।

বৃহষ্পতিবার বিকালে ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের শাহী বাজার, চৌরঙ্গী বাজার, আমিরা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন।

এসময়ে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশে নির্ধারিত হবে, দেশ কোনপথে চলবে। স্বাধীনতার ঘোষক বহুদলিয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দল জাতীয়তাবাদের আদর্শ বিএনপি প্রতি মানুষের আস্থা রাখবে না অন্য কিছু। কিন্তু এদেশের মানুষ কখনো ভুল করবে না, কারণ তারা দেশে বিএনপিই একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা এদেশের মানুষের মনের ভাষা বুঝে। কিভাবে এদেশের মানুষকে সুখে শান্তিতে এবং অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে পারবে।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান, পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি বিল্লাল কোম্পানী, সাবেক যুগ্মআহ্বায়ক টুটুল পাটওয়ারী, সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোখলেছুর রহমান ভুট্টো, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মানিক পাটওয়ারী, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক সেলিম মাহমুদ রাঢ়ী, সাবেক যুগ্মআহ্বায়ক হারুন পাঠান, জেলা যুবদলের সদস্য ফজলুর রহমান, ফরিদগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি আবুল খায়ের রুবেল, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন, কামরুল হাসান, বিএনপি নেতা সেলিম পাটওয়ারী, মশিউর রহমান, রিপন পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের বিএনপি, যুবদল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সাগর-রুনি হত্যা মামলা:

টাস্কফোর্স কমিটিকে শেষবারের মতো ৬ মাসের সময় দিলেন হাইকোর্ট

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:০৭ অপরাহ্ণ
টাস্কফোর্স কমিটিকে শেষবারের মতো ৬ মাসের সময় দিলেন হাইকোর্ট

আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটিকে শেষবারের মতো ৬ মাসের সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, এই ৬ মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতেই হবে।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ। সাগর-রুনির পরিবারের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর তদন্ত থেকে র‌্যাবকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৬ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে চার সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করা হয়।

টাস্কফোর্সের অন্য তিন সদস্য হলেন— পুলিশ সদর দপ্তর ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ থেকে অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক পদমর্যাদার একজন করে দুজন এবং র‌্যাব থেকে পরিচালক পদমর্যাদার একজন।

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ পর্যন্ত ১১৩ বার সময় বাড়ানো হয়েছে।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরোয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন।

ফিলিস্তিনি বন্দিদের লাশে নৃশংস নির্যাতনের চিহ্ন, ভয়ংকর তথ্য প্রকাশ গার্ডিয়ানের

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ৫:২৮ অপরাহ্ণ
ফিলিস্তিনি বন্দিদের লাশে নৃশংস নির্যাতনের চিহ্ন, ভয়ংকর তথ্য প্রকাশ গার্ডিয়ানের

গাজা উপত্যকায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির পর সেখানে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর নির্যাতন, বেআইনি হত্যাকাণ্ড ও সন্দেহজনক মৃত্যুর ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান তাদের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইসরাইলি সামরিক বন্দিশালা ‘সেডিতিমান’ থেকে ফেরত আসা ১৯৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দির লাশে নৃশংস নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার সুস্পষ্ট চিহ্ন পাওয়া গেছে।

ফিলিস্তিনি চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ফেরত পাওয়া লাশগুলোতে হাত-পা বাঁধা, চোখ বেঁধে রাখা এবং কাছ থেকে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে— যা প্রমাণ করে তারা বন্দি অবস্থায়ই হত্যা হয়েছেন। খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের চিকিৎসকেরা আরও জানান, কয়েকটি লাশ ইসরাইলি ট্যাংকের চাকার নিচে পিষ্ট হওয়ারও প্রমাণ পাওয়া গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক মুনির আল-বার্শ বলেন, “লাশের ব্যাগে থাকা নথি দেখে মনে হচ্ছে এগুলো নেগেভ মরুভূমির সেডিতিমান সামরিক বন্দিশিবির থেকে আনা হয়েছে।”

লন্ডনভিত্তিক গার্ডিয়ান তাদের প্রতিবেদনে চিকিৎসা সনদ, গোপন ছবি এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য তুলে ধরে জানিয়েছে— ইসরাইলি সেনাদের এই কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের নতুন অধ্যায় উন্মোচন করতে পারে।

জাতিসংঘের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক মরিস টিডবল-বিন্স এসব ভয়াবহ তথ্যের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ভুক্তভোগীদের পরিচয় নির্ধারণ ও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে স্বচ্ছ তদন্ত অপরিহার্য।”

এদিকে ২০ মাস ইসরাইলি কারাগারে বন্দি থাকা এক ফিলিস্তিনি সাংবাদিক জানিয়েছেন, বন্দিদের শীতল আবহাওয়ায় নগ্ন অবস্থায় রাখা হতো, তাদের হাত ও চোখ বেঁধে টানা ১০০ দিন ধরে আটক রাখা ও কুকুর দিয়ে নির্যাতন করা হতো।

মানবাধিকার সংস্থা ‘ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাইলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মৃত্যুর হার নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে। সংস্থাটির মতে, গত দুই বছরে তারা ইসরাইলি আটক কেন্দ্রে পরিকল্পিত নির্যাতনের একাধিক ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করে।

সংস্থাটি আরও বলেছে, “নতুন তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এখনই একটি আন্তর্জাতিক স্বাধীন তদন্ত শুরু করা জরুরি, নইলে এসব অপরাধের দায় এড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।”