খুঁজুন
রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১০ কার্তিক, ১৪৩২

ফরিদগঞ্জে দুধ উৎপাদন প্রকল্পের টাকা গেল কোরবানির পশুতে

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ৮:৪৭ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে দুধ উৎপাদন প্রকল্পের টাকা গেল কোরবানির পশুতে

দুধের উৎপাদন কম দেশের এমন ৫০ উপজেলায় ১০০ সমবায় সমিতি গঠন করে সরবরাহ বাড়াতে ২০২২ সালে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এর মধ্যে রয়েছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা। এই উপজেলায় দুটি দুগ্ধ সমিতির মাধ্যমে ১০০ জনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ঋণ বিতরণ হয় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। তবে এসব ঋণ গ্রহীতা যাচাই বাছাইয়ে করা হয়েছে ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতি। ঋণের টাকা বিনিয়োগ হয়েছে অন্য খাতে। ৬১ জনের মাঝে অনুসন্ধান করে মিলেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২৯ জনই ঋণের টাকা কোরবানিতে বিক্রির জন্য পশু ক্রয়, অন্যের গোয়াল ঘর দেখিয়ে ঋণ নেয়া, কয়েকজনের নামের টাকা নিয়েছেন একজন। উপজেলা সমবায় দপ্তর থেকে বলা হচ্ছে এই ধরণের অনিয়মের তথ্যের প্রাথমিক সত্যতা তারাও পেয়েছেন।

সম্প্রতি সময়ে উপজেলার দুটি দুগ্ধ সমিতির ঋণ গ্রহীতাদের বাড়িতে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। সরেজমিন অনুসন্ধানে ‘দুগ্ধ ঘাটতি উপজেলায় দুগ্ধ সমবায়ের কার্যক্রম সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যের সাথে মিল পাওয়া যায়নি অনেক ঋণ গ্রহীতার বাড়িতে। ঋণ বন্টন হয়েছে উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ৩ ইউনিয়নে।

চান্দ্রা দুগ্ধ সমবায় সমিতির ৫০জন বালিথুবা ইউনিয়নের। গাজীপুর দুগ্ধ সমবায় সমিতির ৫০জন হলেন সুবিদপুর ও পাইকপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। বাকী ১৩ ইউনিয়নে ঋণ পাওয়ার যোগ্য গ্রহীতা থাকলেও এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। দুটি সমিতিই গঠন হয় ২০২৩ সালে।

উপজেলা সমবায় কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি চান্দ্রা বাজারে দুটি দুগ্ধ সমিতির ১০০ জন ঋণ গ্রহীতাদের মাঝে উন্নত জাতের গাভী ক্রয় করার জন্য ১লাখ ৬০ হাজার করে ঋণের চেক প্রদান করা হয়। প্রকল্প পরিচালক তোফায়েল আহম্মদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এসব চেক ঋণ গ্রহীতাদের হাতে তুলেদেন। ঋণ বিতরণের প্রায় ৪ মাস পর অর্থাৎ এপ্রিল মাসেও অনেক ঋণ গ্রহীতা গাভী ক্রয় করেনি। তবে একজন গ্রাহক তার ঋনের টাকা ফেরত দিয়েছেন।

চান্দ্রা দুগ্ধ সমবায় সমিতি: এই সমিতির মাধ্যমে ঋণ পেয়েছেন ৫০ জন সদস্য। ঋণ গ্রহীতা ২৯ জনের মধ্যে অনুসন্ধান চালানো হয়। এর মধ্যে ১৭ জন গাভী ক্রয় করেননি। ঋণের টাকা বিনিয়োগ করেছেন অন্য খাতে।

ঋনের টাকা যথাযথ বিনিয়েগের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি গ্রহীতা সকদীরামপুর গ্রামের সফিকুর রহমান, মদনেরগাঁও গ্রামের জহিরুল হকের। জহিরুল হক উপজেলা প্রাণী সম্পদ এর আওতায় একটি প্রকল্পে চাকরি করেন। তার মা ফয়েজুন্নেছা বলেন, ঋণের টাকা কোরবানিতে বিক্রির জন্য ষাঁড় গরু ক্রয় করেছেন।

সকদীরামপুর গ্রামের ঋণ গ্রহীতা নাজমা আক্তার। তার সাথে কথা হয়। তিনি জানেননা কত টাকা ঋণ নিয়েছেন এবং কী কাজে। পরে জানালেন তার ভাই ইসমাইল জানেন এই বিষয়ে। জানা গেল ইসমাইল ফেলকন নামে আরেক সমিতির মালিক। তিনি নিজে এবং তার বোনের নামে ঋণ নিয়ে অন্য কাজে বিনিয়োগ করেছেন।

এসব ঋণ গ্রহীতা সকলে বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের। এর মধ্যে মিনু বেগম, তফুরী বেগম, মো. নুর মিয়া, মো. ওয়াসিম হোসেন, ফাতেমা বেগম, নাছির উদ্দিন, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন গাজী, মো. সেলিম মিয়া, ফাহিমা আক্তার ও রৌশন আরা বেগম গাভী ক্রয় করেননি। এদের মধ্যে ওয়াসিম হোসেন ঋণের টাকায় নিম্নমানের ওষুধ কিনে মজুদ করেছেন। স্থানীয় ফার্মেসীতে তিনি এসব ওষুধ বিক্রি করেন। তার বাড়িতে গিয়ে গোয়াল ঘরের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

ঋণ গ্রহীতা মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন। তিনি চান্দ্রা দুগ্ধ সমিতির সমন্বয়ক। তিনি নিজে, তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম, ঋণ গ্রহীতা নুরুন্নাহার আক্তার লাকী ও মো. নাছির উদ্দিন ঋনের টাকা নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন তাদের পূর্বের গরুর খামারে। লাকী ও নাছির উদ্দিনের গাভী দেখার জন্য বাড়িতে গেলে সকলে একই খামার দেখান। তাদের এই খামারে আছে ২৮টি ষাঁড় গরু। এসব ষাঁড় বিক্রি করবেন কোরবানির হাটে। এসব তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে ঋণ গ্রহীতা শাহাবুদ্দিন।

গাজীপুর দুগ্ধ সমবায় সমিতি: এই সমিতির মাধ্যমে ঋণ পেয়েছেন ৫০ জন সদস্য। ঋণ গ্রহীতা ৩৩ জনের মধ্যে অনুসন্ধান চালানো হয়। এর মধ্যে ১৪ জনই গাভী ক্রয় করেননি। সমিতিরি ঋণ গ্রহীতা সাখাওয়াত হোসেন, রাজু হোসেন. মো. কাইয়ুম এর বাড়িতে গিয়ে গরুর কোন অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি। তারা অন্যের গোয়াল ঘর দেখিয়ে ঋনের টাকা নিয়েছেন। তাদের বাড়ীর লোকজনের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়। সাখাওয়াত মুন্সিরহাট বাজারে জুতার ব্যবসায়ী, রাজু বাড়িতে থাকেন না এবং কাইয়ুম বালু ব্যবসায়ী। কাইয়ুম জানালেন, তিনি গোয়াল ঘর ঠিক করে গরু ক্রয় করবেন। গোবার চিত্রা গ্রামের মোহাম্মদ রাশেদ খান ও নুর হোসেন খানের বাড়িতে গিয়ে গোয়াল ঘরের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাদের পরিবারের সদস্যরা জানালেন তারা কোন গরু ক্রয় করেননি।

পাশ্ববর্তী ঘড়িহানা গ্রামের সরদার বাড়িতে বেশ কয়েকজন নিয়েছেন ঋনের টাকা। তাদের আগ থেকে অনেকের গোয়ালঘর এবং বিভিন্ন ধরণের গরু আছে। এই বাড়ির জসিম উদ্দিন মিন্টু ছিলেন গাজীপুর দুগ্ধ সমিতির সমন্বয়ক। তিনি নিজ বাড়ির লোকদের এবং আশপাশের ১১ জনের ঋণ নেয়ার কাজে সহযোগিতা করেন। এদের মধ্যে অনেকেই আগ থেকে কোটি টাকা বিনিয়োগ করে খামার করেছেন।

জসিম উদ্দিন বলেন, এই ঋণ বিতরণের সময় সমিতিতে যাদের নাম ছিলো, চূড়ান্ত করার দিন তা পাওয়া যায়নি। উপজেলা সমবায় অফিসার এবং ওই কার্যালয়ের কর্মচারিরা তালিকা চূড়ান্ত করেছেন। ওইদিন আমি উপস্থিত হয়ে দেখলাম রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উপস্থিতি। ওই সময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের সামনে সাহস করে কোন কথা বলতে পারিনি। যে কারণে ঋণের টাকা বিতরণে অনিয়ম হয়েছে।

এই সমিতির ঋণ গ্রহীতা সুখরঞ্জন, মরিয়ম বেগম, মো. সাইফুল, ফাতেমা বেগম, নাছিমা বেগম, জিয়াউল হক ও মো. আলমের বাড়িতে কোন গরু পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে ফাতেমা বেগম এর স্বামী সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির। তাদের বাড়িতে কোন লোক নেই। থাকেন চাঁদপুর শহরে। সাইফুল ইসলাম নামে ঋণ গ্রহীতা দেখালেন তার ভাইয়ের গোয়াল ঘর।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঋণ বিতরণের জন্য দুটি সমিতির সদস্য যখন চূড়ান্ত হয়, তখন আমি এই উপজেলায় ছিলাম না। তবে ঋণ বিতরণ হয়েছে আমি দায়িত্বরত অবস্থায়। যেসব সদস্যের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এসেছে, তাদের বিষয়ে আমরাও তদন্ত করে দেখছি। কেউ কেউ কোরবানিতে বিক্রির জন্য ষাঁড় ক্রয় করেছেন।

তিনি আরো বলেন, আমাদের তদন্তে যাদের অনিয়ম পাওয়া যাবে, তাদের বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ ঋণের ২ লাখ টাকার মধ্যে ১লাখ ৬০ হাজার টাকার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও পরবর্তী ৪০ হাজার টাকা চেক বিতরণ অপেক্ষমান। এসব বিষয়গুলো সামনে রেখে আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম চালাতে হবে।

চাঁদপুর জেলা সমবায় কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, এই ঋণ বিতরণ সম্পর্কে আমি অবগত না। তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না। এই ধরণের অনিয়ম হয়ে থাকলে প্রকল্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হবে। যারা ঋণের টাকা নিয়ে অনিয়ম করেছেন তাদের বিষয়ে পরবর্তীতে নিদের্শনা আসবে এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবো।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুরের সমবায়ী ও বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন শেখ বলেন, দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারের এই প্রকল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঋণ বিতরণ এবং নেয়ার ক্ষেত্রে যদি অনিয়ম হয়ে থাকে, তাহলে অব্যশই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫০ অপরাহ্ণ
ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছিল ২২ দিনের ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞা। এসময় নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল। দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে নদীতে নামবেন জেলেরা।

শেষ সময়ে কেউ মেরামত করছেন নৌকা, কেউবা পুরোনো জাল সেলাই করে নিচ্ছেন নতুন করে। চোখে মুখে আনন্দের অনুভূতি থাকলেও আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। তারা বলছেন, এবছর ভরা মৌসুমেও নদীতে ইলিশের দেখা মেলেনি। আর এখন মৌসুম শেষ। জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলে কষ্টের পাল্লা ভারী হবে।

এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন চাঁদপুরে নিবন্ধিত ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু তা ছিল জেলেদের কাছে অপ্রতুল। ওই সময় জীবিকা হারিয়ে চরম কষ্টে পড়েন জেলেরা।

এদিকে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ ধরতে না গেলেও নিষেধাজ্ঞার পর বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে এবং মহাজন ও এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করতে হয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মূল জেলেদের কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা থেকে বাদ পড়েছে। অথচ যারা মাছ ধরতে জীবনেও নদীতে নামেনি এমন বিভিন্ন পেশার বেশ কিছু মানুষ সরকারী সহায়তার কার্ড পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। এমনকি বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা পেয়েও সরকারের নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে নির্বিচারে মা ইলিশ শিকার করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে সরকারের পরবর্তী সহযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ারও আহ্বান জানান।

মৎস্য কর্মকর্তারা আশা করছেন, ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার গত বছরের চেয়ে মাছের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে পারে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হয়নি। এবার রেকর্ড পরিমাণে ইলিশ উৎপাদন হতে পারে।

তিনি আরও জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করেছিল সরকার।

এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চালানো ৪৪৫ টি অভিযানে ৭৭ টি মামলা ও ৭৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১১৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাঁজা প্রদান করা হয়। এছাড়া ৬ কোটি মিটার অবৈধ জাল, ১১০০ টন ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় প্রদান করাহয়।

জনশ্রুতি আছে অভিযানে সময় অনেক জেলে সরকারের বরাদ্দ করা চাল পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই উপকূলের জেলেরা জাল, নৌকা, ট্রলার ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। বিশেষ করে হরিনা ঘাট, আখনের ঘাট, পুরানবাজার রনাগোয়াল, লঞ্চ ঘাট, হাইমচরের নীলকমল, মতলব উত্তর মোহনপুর নৌঅঞ্চলের জেলেরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথবাহিনি। এ ঘটনায় দুই মাদক কারবারি পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের ছোট বাড়ি এলাকা থেকে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীর খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জেলা ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান ও ফরিদগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত রাজিব চক্রবর্তী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকদিরামপুর গ্রামের খলিল বেপারির ছেলে মাদক কারবারি আল-আমিন (২৫) ও তার সহযোগী হত্যা মামলার আসামি রুবেল হোসেন (২৮) ফজরের নামাজের পর একটি প্রাইভেটকারে করে বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে আসে। পরে আল-আমিনের বাড়ির গোসলখানায় গাঁজাগুলো লুকিয়ে রাখে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

পরে এলাকাবাসী পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।

এলাকাবাসী জানায়, রুবেল হোসেন এর আগে একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। গত ১০ দিন আগে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আবারও মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে ওঠে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের বাইক্কারবাগানের পাশের ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী সোহেল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে মামলার অন্যতম আসামি ছিল রুবেল হোসেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন স্বপন মিয়াজী জানান, সকালে ফজরের নামাজের পর এলাকাবাসী আমাকে জানায়, এ এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি রুবেল জেল থেকে বের হয়ে আবারও মাদক কারবারির সাথে জড়িয়ে পড়েছে এবং বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে থানা পুলিশকে খবর দেই। তিনি আরো জানান, তাদের কারনে এ এলাকার যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্ আলম বলেন, সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ডিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করি। তবে মূল মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। আল-আমিনের বাবা খলিল বেপারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগ শুরু করলেন ইঞ্জি. মমিনুল হক

মো. ইউসুফ বেপারী
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:২১ অপরাহ্ণ
ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগ শুরু করলেন ইঞ্জি. মমিনুল হক

হাজীগঞ্জে ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে নিজ ইউনিয়নে গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করলেন বিএনপির কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক ইঞ্জি. মমিনুল হক।

শুক্রবার দিনব্যাপী তিনি উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করেন। এরমধ্যে তিনি ইউনিয়নের নোয়াদ্দা, উত্তর রায়চোঁ, বড়কুল রামকানাই উচ্চ বিদ্যালয়, রায়চোঁ বাজার, মধ্য বড়কুল, আড়ুলি, মোল্লাডহর, দিকচাইল, সেন্দ্রা ও কোন্দ্রা এলাকায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন।

পথসভায় ইঞ্জি. মমিনুল হক চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে ইউনিয়নবাসীর সম্মতি চাইলে উপস্থিত লোকজন একযোগে হাত উঁচিয়ে সম্মতি প্রকাশ এবং ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এসময় তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির ২২টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভায় গণসংযোগ ও পথসভা কার্যক্রম শুরু করলাম। দেশের মানুষ বিএনপিকে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। তারা ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে তারেক রহমানকে আগামির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাছান মিয়াজীর সভাপতিত্বে গণসংযোগ ও পথসভায় সফর সঙ্গী ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ রহিম পাটওয়ারী, বিএনপি নেতা আব্দুল কাদের মিয়া, ইঞ্জি. জাহাঙ্গীর আলম, ইমান হোসেন, অহিদুল ইসলাম মোহন, আব্দুল গফুর পাটওয়ারী, ওলি উল্যাহ, আলমগীর হোসেন, মোশারফ হোসেন, তাফাজ্জল হোসেন বতু, শাহাদাত হোসেন মিলন, জামাল মেম্বার, মিজানুর রহমান, মাসুদ রানা, উপজেলা মৎসজীবি দলের সভাপতি মো. ইমান হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম চৌধুরী মিঠু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক এসএম ফয়সাল হোসাইন, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব দ্বীন ইসলাম টগর, ছাত্রনেতা শামছুদ্দিন খাঁন নূর, কবির হোসেন রাজু, ইউনিয়ন যুবদল নেতা আব্দুল জব্বার, ইকবাল বেপারী, ইমাম হোসেন, আব্দুল মতিন, আলাউদ্দিন, হেলাল উদ্দিন, হোসেন মজুমদার, স্বেচ্ছাসেবক নেতা মাসুম চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, সুমন রাজ, হাসানাত, সোহাগ, কৃষক নেতা মিজানুর রহমান, ছাত্রনেতা আলামিন দিনু, হাবিবুর রহমান, ওসমান গণি, সাব্বির হোসেন, শেখ ফরিদসহ সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।