খুঁজুন
মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৫ ভাদ্র, ১৪৩২

নারী উদ্যোক্তাদের চোখে জয়ের স্বপ্ন

চাঁদপুরে জমে উঠেছে বৈশাখী মেলা

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬:০৮ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে জমে উঠেছে বৈশাখী মেলা

চাঁদপুর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে চলছে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে ২০ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। উদ্বোধনের পর থেকে যতই দিন যাচ্ছে ততই মেলা জমজমাট হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত নারী এবং শিশুসহ সববয়সী মানুষের সমাগমে মুখরিত থাকে মেলা প্রাঙ্গণ। এবারের মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের তৈরী পণ্যের পাশাপাশি শিশুদের বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, ডরিমন ট্রেনসন বিভিন্ন রাইড রাখা হয়েছে। ফলে মেলার বেচাকেনাও আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। এতে করে নতুন উদ্যমে সাফল্যের পথে হাঁটার স্বপ্ন দেখছেন চাঁদপুরের নারীর উদ্যোক্তারা।

চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এবারের বৈশাখী মেলায় সবমিলিয়ে ৩৮টি স্টল স্থান পেয়েছে। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে এবারের মেলায় অংশ নেওয়া ৩৮টি স্টলের মধ্যে ১টি (মুড়ি, মুরলী, মিষ্টান্নের স্টল) বাদে বাকি সবগুলোই চাঁদপুরের নারী উদ্যোক্তাদের। তারা হলেন নুসরাত, তাজিয়া রাব্বি তিথি. পাপড়ি বর্মন, মুই মারমা, শান্তা মোবারক, অর্পিতা, বাবলী, মমতাজ বেগম, নিলু আক্তার, মায়া আক্তার, মৌসুমী আক্তার আয়াত, নিশি আক্তার, রোজিনা আক্তার, জাহিন আক্তার, জরিনা, বেগম প্রমুখ। এছাড়াও পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি পুনাক এর ২ টি স্টল রয়েছে।

সরজমিনে মেলা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের ছোট্ট মাঠ জুড়ে বর্ণীল আলোয় ঝলমল করছে মেলার স্টলগুলো। যেখানে চাঁদপুরের নারী উদ্যোক্তারা নিজেদের তৈরী হরেক রকম পণ্য দিয়ে স্টল সাজিয়েছেন। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে হাতে তৈরি ঘর সাজানোর আসবাবপত্র, নকশি কাঁথা, বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন কারুপণ্য, নকশীকাঁথা, মাটির জিনিসপত্র, হাতের কারুকাজ করা থ্রি-পিস, পর্দা, চাদর, পাটজাত গৃহস্থালি পণ্য, গৃহস্থালি কাজের ব্যবহারিক দরকারি সব পণ্যের সমাহার। এছাড়া নারীদের সাজসজ্জার দৃষ্টিনন্দন গহনা ও প্রসাধনীসহ হাতে তৈরি বিভিন্ন রকমের খাবার বিক্রি করা হচ্ছে। মাঠের মাঝে রয়েছে শিশুদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন রাইডস।

বৈশাখী মেলার স্টলগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি স্টলেই নানাবয়সী নারী ও পুরুষ এবং শিশুরা ভিড় করে তাদের পছন্দের পণ্য কিনছেন। তবে আগত ক্রেতা এবং দর্শনার্থীদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি। এসব স্টলগুলোতে হাতে তৈরী পণ্যের দিকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি।

বৈশাখী মেলায় অংশ নেওয়া নারী উদ্যোক্তা তাজিয়াস গ্যালারির স্বত্বাধিকারী তাজিয়া রাব্বি তিথি বলেন, এই ধরনের মেলা আমাদের মত নারী উদ্যোক্তার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। কারন আমরা চাইলেই বড় প্রতিষ্ঠান খুলে আমাদের পণ্য প্রদর্শন এবং বিক্রয় করতে পারিনা। এই ধরনের মেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমরা আমাদের পণ্যগুলো প্রদর্শন, বিক্রয় এবং ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারছি। এজন্য আমি চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং এর প্রেসিডেন্ট মুনিরা আক্তার আন্টিকে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি চাঁদপুর জেলা প্রশাসনকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যে তারা আমাদেরকে এমন একটি মেলায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিয়েছেন।

মেলায় অংশ নেওয়া নারী উদ্যোক্তা বিথী আক্তার এবং আয়েশা আক্তার তানিয়া বলেন, নারী উদ্যোক্তারা অনেক প্রতিবন্ধকতা এবং বাধা-বিত-বিপত্তিকে মাড়িয়ে পরিবারের সাপোর্ট নিয়ে এগিয়ে যাওয়া স্বপ্ন দেখে। এরপরেও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তাদের সাপোর্টের প্রয়োজন। সেই কাজটি করে যাচ্ছে চাঁদপুর উইমেন চেম্বার। তারা নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এই মেলায় মাধ্যমে অসংখ্য নারী উদ্যোক্তারা তাদের পণ্যগুলো বিক্রয়ের সুযোগ পেয়েছে। আগামীতেও যাতে এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকে, এজন্য আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি।

চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মুনিরা আক্তার বলেন, এবারের মেলায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসন আমাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন। মূলত নারীর উদ্যোক্তাদের তৈরি পণ্যগুলো প্রদর্শন, বিক্রয় এবং ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের এই মেলার আয়োজন করা। এতে নারী উদ্যোক্তারা অনেক বেশি উপকৃত হবে।

তিনি আরো বলেন, চাঁদপুরে জেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, গণমাধ্যমসহ সর্বমহলের সহযোগিতার ফলে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মেলার আয়োজন করতে পেরেছি। দিন যতই যাচ্ছে মেলার দর্শনার্থী এবং ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়ছে। বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে। এজন্য আমরা সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

শাহরাস্তিতে ​মহিলা মাদরাসার কমিটির বিরুদ্ধে মানববন্ধন

মো. সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ
শাহরাস্তিতে ​মহিলা মাদরাসার কমিটির বিরুদ্ধে মানববন্ধন

শাহরাস্তিতে বলশিদ মহিলা মডেল আলিম মাদরাসার নতুন কমিটি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামকে সভাপতি করার পর থেকেই এই বিতর্ক শুরু হয়। তার পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। ইতিমধ্যে কমিটির তিনজন সদস্য পদত্যাগও করেছেন।

​স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদরাসার কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াটি ছিল অস্বচ্ছ ও গোপনে। তারা বলছেন, মাদরাসার নাম তিনবার পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথমে “ফজিলতের নেছা মহিলা মাদরাসা”, পরে “শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা মাদরাসা” এবং এখন “বলশিদ মডেল মহিলা আলিম মাদরাসা” নাম রাখা হয়েছে। যদিও মাদরাসার ফটকে এখনও আগের নামফলকই ঝুলছে। ​এছাড়াও সভাপতি আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে আরও কিছু গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

​তিনি একসাথে একাধিক মাদরাসার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। ​তার স্ত্রী নাজমা বেগম মাদরাসার অফিস সহকারী হলেও তিনি নাকি বাড়িতে বসেই হাজিরা খাতায় সই করেন। ​তাদের পরিবারের আরও পাঁচজন সদস্য মাদরাসার বিভিন্ন পদে চাকরি করছেন।

অভিভাবক সদস্য খোরশেদ আলম জানান, “আমার দুই মেয়ে এখানে পড়ে। আমাকে হঠাৎ ডেকে অভিভাবক সদস্য হিসেবে সই করতে বলা হয়। এটা একটা কৌশল ছিল বুঝতে পেরে আমি পদত্যাগ করেছি।”

​ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, “গোপনে অসৎ উদ্দেশ্যে এই কমিটি করা হয়েছে। আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানতাম না।”

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন জানান, অধ্যক্ষের কক্ষের চাবি ও কমিটির সব নথিপত্র সভাপতির কাছেই থাকে।

​সভাপতি আমিনুল ইসলাম সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মাদরাসার নাম দুইবার পরিবর্তন হয়েছে, তিনবার নয়। অন্য প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হয়েও এখানে সভাপতি হওয়া নিয়মসিদ্ধ। যারা পদত্যাগ করেছেন, সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।”

​উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেন জানিয়েছেন, “কমিটি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

স্থানীয়দের দাবি, এই বিতর্কিত কমিটি বাতিল করে একটি স্বচ্ছ কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে যদি সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সুপার মনিরুজ্জামানকে অপসারণ করা না হয়, তাহলে তারা আরও কঠোর আন্দোলন করবেন।

এলাকাবাসীর সর্বস্তরের জনগণের অংশ গ্রহনে  মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন,ওই সময় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় এলাকাবাসী সৈয়দ আহমেদ দুলাল, কামরুল আহসান মজুমদার, মমতাজ উদ্দিন ভূঁইয়া, শাহ আলম খান, বাবুল হোসেন পাটোয়ারী, গিয়াস উদ্দিন মিয়াজী, লিপন, মনির হোসেন, রুহুল আমিন পাটোয়ারী, কিরণ মুন্সি, মোশারেফ মেম্বার, হেলাল মুন্সী, সাগরসহ বহু অভিভাবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের হামলায় শিশুসহ মা ও মেয়ে আহত

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৯:৩০ অপরাহ্ণ
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের হামলায় শিশুসহ মা ও মেয়ে আহত

চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০ নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের মাঝি বাড়িতে পারিবারিক কলহের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় বসত ঘর ভাংচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়ও প্রতিপক্ষের হামলায় শিশু সহ মা ও মেয়ে আহত হয়েছে। এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনার বিবরনে ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের মাঝি বাড়ির দুলাল গংদের সাথে শাহানারা বেগমের সাথে সম্পত্তিগত ও পারিবারিক ভাবে বিরোধ চলে আসছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দুলাল, সানু (৫০) ও তাদের ৩ মেয়ে বিথী, রিমা, সাবিনা জোরপূর্বক শাহানারা বেগমের বসত ঘরে প্রবেশ করে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় শাহানারা বেগম, তার মেয়ে জান্নাত আক্তার ও নাতনি ১০ বছরের শিশু উম্মে আইমান গুরুতর আহত হয়। এছাড়াও হামলাকারীরা তাদের বসত ঘর সহ ভিতরের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে। শাহানারা বেগমদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে উপস্থিত লোকজন শাহানারা বেগম সহ আহতদের উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। শাহানারা বেগম ও নাতিন উম্মে আইমানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং জান্নাত আক্তারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি দেন।

জান্নাত আক্তার বলেন, তাদের সাথে আগে থেকেই পারিবারিক বিষয় নিয়ে একটু দ্বন্দ ছিলো। তারা প্রতিনিয়ত আমাদেরকে প্রাণে মারার হুমকি দিত এবং নুন থেকে চুন ঘষলেই তারা আমাকে ও আমার মাকে মারতে আসতো। রবিবার আমি ঘরে বসে আমার মামাতো বোনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলতেছি, এ সময় আমাদের ঘরের পাশ দিয়ে রিমা যাওয়ার সময় কি শুনে তার বাবা মা ও বোনদেরকে নিয়ে এসে আমাদেরকে মারধর করে এবং গালিগালাজ করতে থাকে।

শাহানারা বেগমের ছেলে অলিউল্লাহ বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম না। যখনই আমি বাড়ি থেকে সরে যাই তখনই তারা আমার মাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়। আমার বোন স্বামীর বাড়ি থেকে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসছে, তাদের উপর এভাবে হামলা করেছে এবং পরবর্তীতে আমার বোন ও আমি বাড়িতে না থাকলে আমার মাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। আমাদের অপরাধ আমরা তাদের বংশের না এবং স্থানীয় না, আমরা মামার বাড়িতে থাকি এজন্য আমরা বাড়ি থেকে সরে যাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়। তাই আমি প্রশাসনের কাছে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসীদের শাস্তির আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার চাই।

শাহানারা বেগমের ছেলে অলিউল্লাহ বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় দুলাল, সানু, বিথী, রিমা, সাবিনাকে বিবাদী কের একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ বাহার মিয়া বলেন, বিষয়টি জেনেছি, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখতেছি।

মব করে ‘মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধকে’ খাটো করার সুযোগ নেই: সেনাসদর

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮:৩৭ অপরাহ্ণ
মব করে ‘মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধকে’ খাটো করার সুযোগ নেই: সেনাসদর

কোনো ‘মব’ বা কোনোকিছু করে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে সেনাসদর। সোমবার ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।

মুক্তিযোদ্ধার বাসায় মব সৃষ্টি করে হামলার বিষয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের আগেও যেভাবে সশ্রদ্ধ সম্মান করেছি, আজও করি এবং ভবিষ্যতেও অন্তরের অন্তস্তল থেকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করবো। কোনো মব মুক্তিযোদ্ধা কিংবা মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করার কোনো সুযোগ নেই।

মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের বাড়ির সামনে একটি মব সৃষ্টি হয়েছিল, যখন সেনাবাহিনী মেসেজ পেয়েছে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউনিট উপস্থিত হয়ে মব নিয়ন্ত্রণ করেছে। এ ব্যাপারে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও উন্নতি হবে ইনশাআল্লাহ।

মবের বিষয়ে কর্নেল শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, মবের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। যেখানে যখন মব হয়েছে সেখানে সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনী দ্রুততার সঙ্গে পৌঁছে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। কয়েকটি জায়গায় আমাদের যে বিলম্ব হয়েছে সেটা সোর্স থেকে তথ্য পেতে বিলম্ব হয়েছে। যেকোনো ঘটনা ঘটার পর সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন হয়। তারপর সেনাবাহিনীকে অনুরোধ জানানো হয়, এর মধ্যে কিন্তু কিছু কালক্ষেপণ হয়ে গেছে, তারপর আমাদের নিকটস্থ ক্যাম্প থেকে যদি পেট্রোল পাঠায় তখনো কিছু সময় লাগে। এই সময়ের মধ্যে কোনো ঘটনা ঘটে গেলে এটার দায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিতে পারে না। এমন একটি উদাহরণ দেখানো যাবে না যে সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করা হয়েছে সেনাবাহিনী সেখানে যায়নি বা সেনাবাহিনীর সামনে মব হয়েছে; সেনাবাহিনী যায়নি। এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিনে দিনে অবনতির দিকে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে নৃশংসভাবে কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বাসায় হামলা করা হয়েছে। যারা মব সৃষ্টি করে আইন হাতে তুলে নিচ্ছে তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ধৈর্যের ও পরিশ্রমের সঙ্গে সরকার ও দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। আইনশৃঙ্খলা উন্নতি কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা সেনাবাহিনীর একমাত্র কাজ নয়।

সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়ারের মাধ্যমে গ্রেপ্তার/আটক এবং হস্তান্তর করা যায়। কোনো জুডিশিয়ারি কিংবা আইনি প্রক্রিয়ায় সেনাবাহিনী কাউকে সাজা দিতে পারে না। সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সমন্বিতভাবে একত্রে কাজ করতে হবে। অলরেডি সবাই কাজ শুরু করেছে।’

অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর সমন্বয়ের অভাব আছে কিনা জানতে চাইলে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একটা ঘটনা কিংবা মবের সৃষ্টি হলো সেখানে ইমিডিয়েটলি একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে গিয়েছে এবং তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। পরবর্তীতে সেখানে সেনাবাহিনীকে রিকোয়েস্ট করার বিষয়টি যদি বিলম্ব হয় কিংবা আমাদেরকে পরে সংবাদ জানানো হয় তাহলে সেনাবাহিনী সেখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে খারাপ ঘটনার উদ্ভব হয়ে যেতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটা জায়গায় ঘটনা ঘটেছে কেউ জানে না, এমনকি পুলিশও জানে না। আমরা চেষ্টা করছি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি করার জন্য।’

রাজবাড়ীতে নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলার’ মরদেহ তুলে নিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া ও দরবারে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘রাজবাড়ীর ঘটনা অনেক পরে সেনাবাহিনী জানতে পারে। যখনই জানতে পেরেছে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর রাত ১১টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেপ্তারে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তৎপর।’