খুঁজুন
সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ, ১৪৩২

ফরিদগঞ্জে ভুয়া কবিরাজের প্রতারণা ফাঁস, সাংবাদিককে হুমকি, থানায় অভিযোগ

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৮:৪০ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে ভুয়া কবিরাজের প্রতারণা ফাঁস, সাংবাদিককে হুমকি, থানায় অভিযোগ

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৫ নম্বর রূপসা ইউনিয়নের আমিরা বাজারে দীর্ঘদিন ধরে ‘খাজা ঔষধালয়’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ভুয়া চিকিৎসা সেবা দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন শেখ মোঃ মোখলেছুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। যিনি নিজেকে ‘ডাক্তার’ এবং ‘কবিরাজ’ বলে পরিচয় দিয়ে নারী-পুরুষদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার নানা অলৌকিক সমাধান দেওয়ার দাবি করে আসছিলেন।

বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া একাধিক অভিযোগ অনুযায়ী, এই স্বঘোষিত কবিরাজ প্রলোভন ও মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বহু মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। রোগ নিরাময়ের নামে অসংখ্য নারী-পুরুষের সঙ্গে অবৈজ্ঞানিক ও অবাস্তব কথাবার্তা বলে তাদের মানসিকভাবে প্রভাবিত করতেন তিনি। এই প্রতারক নানা রকম “জ্বীন তন্ত্র”, “তাবিজ”, “ভালোবাসার টান তৈরি করা” ইত্যাদি নামে চিকিৎসা প্রদান করে আসছিলেন।

একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদক গোপনে অনুসন্ধান শুরু করেন। সংবাদকর্মীর পরিচয় গোপন রেখে, একজন সাধারণ রোগীর ভঙ্গিতে কবিরাজ মোখলেছুর রহমানের ক্লিনিকে সরাসরি গিয়ে দেখা করেন।

প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে কবিরাজ জানান, রোগী অর্থাৎ প্রতিবেদকের “ভাবি” নাকি তার সঙ্গে প্রেমে পড়ে যাবে, যদি নির্দিষ্ট কিছু তাবিজ ব্যবহার করা হয়। তিনি বলেন, “৬ হাজার টাকা দিলেই জ্বীন ব্যবহারে আপনার ভাবিকে আপনার প্রতি আকৃষ্ট করে তুলব। এক মাসের মধ্যে গভীর রাতে সে আপনাদের ঘরে চলে আসবে এবং ভবিষ্যতে আপনার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবে।”

এই ধরনের বক্তব্য শুধু প্রতারণামূলক নয়, ভয়াবহ অনৈতিক এবং মানসিকভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত হিসেবেও দেখা যেতে পারে।

এই সব কথোপকথন প্রতিবেদক নিজের মুঠোফোনে গোপনে ভিডিও রেকর্ড করেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর কবিরাজের দালাল আশপাশের লোকজন বিষয়টি আঁচ করতে পারে এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেদকের উপর চড়াও হয়। তারা তার ফোন কেড়ে নিয়ে রেকর্ড করা ভিডিওগুলো মুছে দেয়।

প্রতিবেদক যখন নিজের সাংবাদিক পরিচয় প্রকাশ করেন, তখন পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কবিরাজের অনুসারীরা তাকে সংবাদ প্রচার না করার জন্য হুমকি দিতে থাকে, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং তাকে “ভুয়া সাংবাদিক” বলে অপবাদ দেয়।

কবিরাজের একজন দালাল (মনির করিম নামে একজন ব্যক্তি) তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিবেদকের একটি ভিডিও আপলোড করে অপমানজনক ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে থাকে। একই সঙ্গে, কবিরাজ মোখলেছুর রহমান স্থানীয় চিহ্নিত ক্যাডার বাহিনীকে ফোন করে ডেকে আনে। তারা প্রতিবেদককে হুমকি দেয় যে, সংবাদ প্রকাশ করলে তাকে “চাঁদাবাজ” হিসেবে গণপিটুনি দিয়ে জনসমক্ষে অপদস্থ করা হবে।

এছাড়া, প্রতিবেদকের পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা করা হয়। এই সংকটজনক অবস্থায় প্রতিবেদক দ্রুত ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর প্রায় ৪৫ মিনিটের মধ্যে থানার এসআই সঞ্জয় ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং সাংবাদিককে উদ্ধার করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কবিরাজের ক্যাডার বাহিনী এলাকা থেকে পালিয়ে যায়।

পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কবিরাজ মোখলেছুর রহমান নিজেই প্রতারণার কথা স্বীকার করে। আশপাশের সাধারণ মানুষও পুলিশকে ঘটনার সত্যতা এবং সাংবাদিকের উপর হামলার বিষয়ে অবগত করেন।

ঘটনার পর ৬ এপ্রিল ফরিদগঞ্জ থানায় ডাঃ শেখ মোঃ মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এতে সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা, হুমকি দেওয়া, গোপনে ধারণ করা ভিডিও মুছে ফেলা, অপপ্রচার চালানো এবং একজন সংবাদকর্মীর ওপর মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়।

এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এমন প্রতারকদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নিয়ে খেলা করার সাহস না পায়।

এছাড়া অনেকে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে পরিচালিত এই ধরনের ভুয়া চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন ও নিরাপদ রাখতে।

এই ঘটনা শুধু একজন কথিত কবিরাজের মুখোশ উন্মোচনের ঘটনা নয়, বরং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, স্বাধীন অনুসন্ধান এবং মত প্রকাশের অধিকার নিয়েও এক বড় প্রশ্ন তুলেছে। একজন পেশাদার সংবাদকর্মী যখন প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য মাঠে নামেন, তখন তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব। একই সঙ্গে সমাজে থাকা এ ধরনের প্রতারকদের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।

মতলবে বাবার মৃত্যুর ৪ ঘণ্টা পর ছেলের মৃত্যু

মোঃ রবিউল আলম
প্রকাশিত: সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫, ১০:৩৬ অপরাহ্ণ
মতলবে বাবার মৃত্যুর ৪ ঘণ্টা পর ছেলের মৃত্যু

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা মো. আবুল হাসেম খান (৬০) এর মৃত্যুর ৪ ঘন্টা পার ছেলে মো. সোলেমান খান (৩০) ও মৃত্যু বরণ করেন।

জানা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলার উত্তর ডিঙ্গাভাঙ্গা গ্রামের মো. সোলেমান খান (৩০) অসুস্থ হয়ে গত বৃহস্পতিবার ভর্তি হন চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে। রোববার সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে একই হাসপাতালে ভর্তি হন তাঁর বাবা মো. আবুল হাসেম খান (৬০)। ২৮ জুলাই সোমবার ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসাধীন আবস্থায় মারা যান মো. আবুল হাসেম খান। বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনে চিকিৎসাধীন সোলেমান খান আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাবার মৃত্যুর ৪ ঘণ্টা পর সোমবার সকাল ৯টায় মারা যান তিনি।

অল্প সময়ের ব্যবধানে একই পরিবারের দুজনের মৃত্যুতে তাঁদের পরিবার নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পারিবারিক কবরস্থানে তাঁদের লাশ দাফন করা হয়েছে।

মো. আবুল হাসেম খান ও মো. সোলেমান খানের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার উত্তর ডিঙ্গাভাঙ্গা গ্রামে। মো. আবুল হাসেম খানের চার ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে সোলেমান খান বড়। মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদরের গাউছিয়া মার্কেটে সোলেমানের দর্জি দোকান ছিল। তাঁর আয়েই সংসার চলত বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা।

সোলেমান খানের ছোট ভাই মো. শাহাজালাল খান বলেন, ‘এত অল্প সময়ে বাবা ও বড় ভাইকে হারাইলাম। এই কষ্ট ও শোক ক্যামনে সহ্য করুম। বড় ভাইয়ের আয়েই সংসার চলত।’

মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেহ আহাম্মদ বলেন, তিনি ঘটনাটি জেনেছেন। এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি। দুজনের মৃত্যুই অসুস্থতাজনিত।

মতলবে ভূয়া ১৪ ফেসবুক আইডির বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতার জিডি

মোঃ রবিউল আলম
প্রকাশিত: সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫, ১০:০২ অপরাহ্ণ
মতলবে ভূয়া ১৪ ফেসবুক আইডির বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতার জিডি

মতলব দক্ষিণ উপজেলায় বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে অপপ্রচার করছে অসংখ্য ফেইক আইডি। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাধারণ মানুষের নামে ফেইজবুকে ফেইক আইডির মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য, ছবি ও ভিডিও এডিটিং এবং গুজব ছড়িয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। আর এই সব ফেইক আইডির বিরুদ্ধে জিডি করলেন উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির ছাত্র প্রতিনিধি ও চাঁদপুর ‘ল’ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র মোঃ ফয়সাল খন্দকার।

রবিবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় ১৪টি ফেইক আইডির নাম ও লিঙ্ক উল্লেখ করে উপজেলার জনপ্রিয় ছাত্রদল নেতা ফয়সাল খন্দকারের জিডি করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ডিউটি অফিসার জিয়াউল হক মিলন।

জিডির অভিযোগ থেকে জানা যায়, সামাজিক, রাজনৈতিক ও পরিবারিকভাবে সম্মানহানি করার জন্য ছাত্রদল নেতা মোঃ ফয়সাল খন্দকারের নামে মিথ্য তথ্য ও ছবি এডিটিং করে ভিন্ন তারিখ ও সময়ে ফেইক আইডির মাধ্যমে ফেইজবুকে কয়েকটি পোস্ট করা হয়। ফেইক আইডি গুলোর মধ্যে মতলবের কিং, মতলব আমার গৌরবময় দীপ্ত, সংবাদ সারাদেশ, মতলবের আয়নাঘর, মতলব বার্তা, গুপ্ত রাজনীতি, Matlab Wants Peace, Snigdha Zaman, Ismail Prodhan, Md Jamal, মতলবের সিআইডি, সংবাদ সারাদেশ, পরিমনি, আজকের মতলব উল্লেখ্য যোগ্য।

তথ্য মতে, জিডিতে উল্লেখিত ফেইক আইডিগুলোসহ আরও অনেক ফেইক আইডির মাধ্যমে মতলব দক্ষিণ উপজেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাধারণ মানুষের নামে নানা রকম উস্কানিমূলক তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে প্রতিনিয়ত। রীতিমতো এসব আইডিগুলি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে তথ্য ছড়িয়ে ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ দাবি করছে। এই সমস্ত ফেক আইডির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে বহুবার। তারপরও আইনের তোয়াক্কা না করেই, নির্ধিয়ায় চালাচ্ছে এসব বেনামি আইডিগুলি। উপজেলায় সম্প্রীতি কিছু আইডি বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ থেকে শুরু করে সাংবাদিক পর্যন্ত সকলের নামে বিভ্রান্তমূলক তথ্য ছড়িয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে দিন রাত সমান তালে। যে কোন নির্বাচন ও দলের কমিটি গঠন করার সমেয় আসলেই এসব ফেক আইডির জন্ম হয় অনেক বেশি।

থানায় জিডি করার বিষয়ে একাধিক রাজনৈতিক মামলার আসামি ছাত্রদল নেতা ফয়সাল খন্দকার বলেন, ২০১৪ সালের ২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার হয়েছি। ২০২৩ সালে নয়পল্টনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে আহত হই। ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ মতলব দক্ষিণ থানার সাবেক ওসি রিপন বালা তুলে নিয়ে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে এবং ১৪ জুলাই উপজেলা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমার উপর অতর্কিতভাবে হামলা করে পাঁজরের হাড় ভেঙে দেয়। ছাত্রদলের রাজনীতিতে আমার ত্যাগ ও অর্জনকে কলঙ্কিত করতে একটি পক্ষ ওই সকল ফেইক আইডির মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

ফয়সাল খন্দকার আরও জানান, আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করছেন এবং সাইবার ক্রাইম ইউনিটেও অভিযোগ জানাবেন। তার ধারণা, দলীয় রাজনীতিতে গ্রুপিং এর কারণে একটি চক্র সক্রিয় এবং এর পেছনে একাধিক ব্যক্তি জড়িত।

এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণ থানার ওসি মো. সালেহ আহাম্মদ বলেন, উপজেলায় আমরা অনেক ফেসবুক ফেইক একাউন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা ইতিমধ্যে চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছি। অতি শীঘ্রই এসব ফেইক আইডির মালিকদের ধরে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

শহীদ সিয়াম সর্দারের কবর জিয়ারত করলেন গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫, ৯:৫০ অপরাহ্ণ
শহীদ সিয়াম সর্দারের কবর জিয়ারত করলেন গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করেন সিয়াম সরদার। চাঁদপুর সদর উপজেলার ৬ নং মৈশাদী ইউনিয়নের সোহাগ সরদারের ছেলে সিয়াম সরদার (ওরফে জিহাদ) ( ১৭) এর রুহের মাগফিরাত কামনায় দক্ষিণ হামান কর্দ্দি জামে মসজিদে ২৮ জুলাই সোমবার বাদ আসর চাঁদপুর জেলা গণঅধিকার পরিষদের আয়োজনে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে।

মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন চাঁদপুর জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক কাজী রাসেল, সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান, যুগ্ম আহবায়ক সাংবাদিক মোঃ জাকির হোসেন, যুগ্ম সদস্য সচিব সামিউল প্রধান, ওমর সালমান, জেলা যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম শরীফ হোসেন, সদর উপজেলা যুব অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব আলামিন সুমন,পৌর যুব অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব মাসুদ রানা নিশান, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খলিলুর রহমান, ১০ নং লক্ষীপুর মডেল ইউনিয়ন যুব অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মাহাবুব অলিউল্লাহসহ ওই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং মুসল্লিগণ ।

দোয়া শেষে সবাই তার কবর জিয়ারত করেন এবং পরিবারের সাথে কথা বলেন নেতৃবৃন্দরা। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা ইমরান হোসেন।

সিয়াম সরদারের বাবা আবেগ আপ্লুত কন্ঠে বলেন, আমার একমাত্র ছেলে দেশের কল্যাণের জন্য শহীদ হয়েছেন আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করেন। আমি একজন দিনমজুরের কৃষক আমার ছেলে সিয়াম টাইলস মিস্ত্রির কাজ করতেন ২৪ এর ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে ১৮ই জুলাই ঢাকায় মিরপুর ১০ বেনারসী মার্কেটের সামনে আন্দোলনরত অবস্থায় বুলেটের আঘাতে নির্মম ভাবে মৃত্যুবরণ করেন। আমার ছেলের বাম চোখ দিয়ে বুলেট ঢুকে পিছন দিয়ে বের হয়ে যায়, কত না কষ্ট পেয়েছে আমার ছেলেটা। আমরা খবর পেয়েছি ঐদিন রাত পৌনে বারোটার সময় পরদিন শুক্রবার জানাজা শেষে তাকে দাফন করেছি। একমাত্র ছেলেকে হারিয়েছি দুঃখ নেই কারণ আমার ছেলের মত আরো শত শত দেশপ্রেমীরা জীবন দিয়েছে এবং দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছে। আমার ছেলে সহ সকল শহীদদের জন্য আমি দোয়া চাচ্ছি আপনারাও দোয়া করবেন আল্লাহ যেন সবাই বেহেশত নসিব করেন।

সিয়ামের বোন হাঁসি ইসলাম জানায়, সরকার থেকে আমরা সহযোগিতা পাচ্ছি এছাড়াও বিএনপি, জামাত, ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা আমাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। আমরা সরকার, প্রশাসন ও আপনারাসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।