খুঁজুন
রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১০ কার্তিক, ১৪৩২

পাথৈর ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসা বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত

মোঃ সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়
প্রকাশিত: বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৭:২৬ অপরাহ্ণ
পাথৈর ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসা বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত

চাঁদপুর জেলার শাহারাস্তি উপজেলার বহু আলোচিত একটি দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জল্পনা কল্পনার গল্পের মাঝে আমরা যেন হাবুডুবু খাচ্ছি। দেশ স্বাধীন হওয়ার ঠিক পরের বছর অর্থাৎ ১৯৭২ সালের পহেলা জানুয়ারি এই প্রতিষ্ঠানটির জন্ম।

স্বাধীনতার ৫৩ বছর শেষে যেন প্রতিষ্ঠানটি তার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে অভিশাপ দিচ্ছে শিক্ষা সংশ্লিষ্টদেরকে!

১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের (তৎকালীন হাজীগঞ্জ থানার এবং কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত) পাথৈর গ্রামের মাঝামাঝি উপজেলার মধ্য দিয়ে বহমান একমাত্র নদী ডাকাতিয়ার দক্ষিণ পাড়ের ৩০০ গজের মধ্যে ৩ একর ৭২ শতক জায়গায় স্থাপিত হয় ‘পাথৈর ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসা’।

এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা হিসেবে তৎকালীন সময়ে অনেকের মধ্যে অন্যতম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাওলানা আলী আকবর এবং প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নির্বাহ করেন মাওলানা এমদাদুল হক।

এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকায় একটি মহল উক্ত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির জায়গা নিজেদের দখলে নিতে উঠে পড়ে লাগেন। তৎকালীন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায়‌ উদ্যোক্তাগন প্রতিষ্ঠানটি ভালোভাবে পরিচালনায় মাদ্রাসার পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন। শুরু থেকে তাদের শক্ত অবস্থানের কারণে কায়েমী স্বার্থবাদীদের অভিলাষ ভেস্তে যায়। দীর্ঘ বছর নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতে মামলা চলে। শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালত থেকে মাদ্রাসার পক্ষে রায় আসে। বলা যায় একের পর এক মামলার ঘানি টানতে টানতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পাঠদানে আশাতীত সাফল্যে বিঘ্ন ঘটে।

মাদ্রাসার বর্তমান সুপার মোঃ আব্দুর রহিম বলেন, ১৯৭২ সালে গোড়ার দিকে অত্র এলাকার কতিপয় শিক্ষানুরাগী বিদগ্ধ ব্যক্তিবর্গ এলাকার ছেলে-মেয়েদের শিক্ষাগ্রহনের সুবিধার্থে পাথৈর ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসাটি স্থাপন করেন। শুরুতেই মাদ্রাসাটির জায়গার উপর কুনজর পড়ে একটি কুচক্রী মহলের। তারা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বহু ষড়যন্ত্র করেন। তারা মাদ্রাসাটির জায়গার মালিকানা দাবি করে একের পর এক মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করেন। বহু বছর মামলাগুলো কঠোর হস্তে মোকাবিলা করেন এলাকার বিদুৎসাহী বিশিষ্ট জনেরা। শেষ পর্যন্ত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিম্ন আদালত ও হাইকোর্ট মাদ্রাসার পক্ষে রায় দেন ২০২৫ সালের গোড়ার দিকে। এসময়ে মামলা মোকদ্দমার পিছনে সময় দিতে গিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় প্রভাব পড়ে। যার ফলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে অনেকটাই ব্যর্থ হয়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এসময় অত্র প্রতিষ্ঠানের নামে নতুন ভবন নির্মাণে অর্থ মঞ্জুর হলেও মিথ্যা মামলা মোকদ্দমা থাকায় মঞ্জুর হওয়া অর্থ ভবন নির্মাণ না করে ফেরৎ যায়। তবে এখন আর মাদ্রাসার বিরুদ্ধে কোন মামলা মোকদ্দমা নেই। এখন সময় এসেছে শুধু সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার।

মাদ্রাসাটিতে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩১৫ জন। কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা ১১ জন আর শিক্ষকের শূন্য পদের সংখ্যা ৯টি, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংখ্যা ৫ জন।

অত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠাকালে এলাকার জনসংখ্যা ছিল অনেক কম। ঐ সময় মাদ্রাসাটির মাঠের মাঝামাঝি দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে মাদ্রাসার সীমানা ঘেঁষে উত্তর পাশে নির্ধারিত রাস্তা থাকা সত্ত্বেও মাঝমাঠ দিয়ে এলাকার মানুষ যাতায়াত করতো। সময়ের ব্যবধানে দীর্ঘ ৫৩ বছর শেষে আজ এলাকার জনসংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে। এখনও এই প্রতিষ্ঠানটির মাঝখান দিয়ে এলাকার মানুষ পূর্বের ন্যায় যাতায়াত করে। যার ফলে শ্রেণিকক্ষের স্বাভাবিক পাঠদান ও শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। তাই মাদ্রাসার উত্তর পাশ দিয়ে যাতায়াতের রাস্তাটি এলাকার মানুষের চলাচলের জন্য সংস্কার করা সহ অনতিবিলম্বে মাদ্রাসার বাউন্ডারি ওয়ালটি নির্মাণ করা জরুরি প্রয়োজন।

এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর মাদ্রাসা ক্যাম্পাসের উত্তর প্রান্তে শ্রেণি কক্ষ হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রথমে ২টি টিনের ঘরের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। মাঠের দক্ষিণ প্রান্তে ২টি ছোট পুরানো টিনের ঘরে শিশুদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় পুরোনো টিনের শ্রেণিকক্ষে বৃষ্টির পানি পড়ে শিক্ষার্থীদের বই-খাতা ভিজে সয়লাব।

মাদ্রাসার সুপার জানান, শ্রেণিকক্ষের উপরের টিনের চালা অপেক্ষাকৃত অনেক নীচু হওয়ায় গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড রোদের তাপে পাঠদান কার্যক্রমে‌ শিক্ষার্থীদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থায় পড়তে হয়। এদিকে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে মাদ্রাসার নামে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুর থেকে একটি টিনশেড ভবন নির্মাণের জন্য ১৯ লাখ টাকার বরাদ্দ পাওয়া যায়।

উক্ত বরাদ্দে একটি টিনশেড ভবনের নির্মাণ কাজ শেষে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে ৫৩.৬২”×২৬” সাইজের ভবন হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিল উত্তোলন করে চলে যায়।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফিস বা শ্রেণিকক্ষের যে পরিমাণ প্রশস্ত বারান্দা হওয়া প্রয়োজন নব-নির্মিত উক্ত টিনশেড ভবনে সেটি বিবেচনায় নেয়া হয়নি যা দেখতে অনেক দৃষ্টিকটু।

তাছাড়া উক্ত টিনশেড ভবনের পূর্ব অংশে দুইটি টয়লেট আকৃতির কিছু একটা নির্মাণের কাজ শুরু করে শেষ না করেই হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে শাহরাস্তি উপজেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুরের সহকারী প্রকৌশলী রাকিবের মোবাইল ফোনে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, সাময়িক একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে বারান্দা, এর চেয়ে বেশি প্রশস্ত রাখার প্রয়োজন নেই। তাছাড়া এই ভবন নির্মাণের ডিজাইন প্রধান কার্যালয় থেকে করা হয়েছে। জানতে চাইলাম সরকারের ১৯ লাখ টাকা বরাদ্দে সাময়িক ভবন নির্মাণ করা হবে কেন? এই প্রশ্নের তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

বর্তমানে এই দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা পরিষদ রয়েছে বলে অধ্যক্ষ জানান। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোঃ আবদুল মতিন।

সরজমিনে গিয়ে সাক্ষাৎ মিলে কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য মোঃ হাবিব এর সাথে। তিনি অত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও বর্তমানে বিরাজমান সমস্যাসমূহ তুলে ধরে বলেন, শুরু থেকে মাদ্রাসাটির নিজস্ব জায়গা ৭৪ শতাংশ জায়গার উপর একটি জলাশয় রয়েছে। উক্ত জলাশয়টিতে মাছ চাষ করলে যে আয় হতো তা যথাযথভাবে পাওয়া গেলে ঐ আয় দিয়ে মাদ্রাসার দৈনন্দিন খরচ অনায়াসে মিটানো সম্ভব ছিল।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, উক্ত জলাশয়ে বর্ষা মৌসুমে মাছ ছাড়লে জলাশয়ের পূর্ব ও দক্ষিণ পাড়ে বসবাসরত ব্যক্তিবর্গ অবাধে উক্ত জলাশয় থেকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এতে মাদ্রাসাটি আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাছাড়া এই জলাশয়ের সাথেই আরও ৭৬ শতাংশ উঁচুনীচু জায়গা দক্ষিণ অংশে আছে যা এখনও কিছু মানুষ দখলে রেখে ভোগদখল করছে।

তিনি দ্বীনি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠের মাঝখানে এলাকার মানুষের যাতায়াতের পথটি বন্ধ করে দিয়ে মাদ্রাসার উত্তর পাশের নির্ধারিত রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী সংস্কার করে দেয়া, মাদ্রাসাটির বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ওয়াশ রুম নির্মাণ এবং ছাত্রীদের জন্য নামাজের ঘর নির্মাণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের বিনীত আবেদন জানান।

তিনি এই মহতী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি শাহরাস্তি উপজেলা প্রশাসনের সহ চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সেই সাথে তিনি শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিয়া হোসেনকে সরজমিনে মাদ্রাসাটি পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।

এলাকাবাসীর বক্তব্য, অত্র দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যাতায়াতের রাস্তাগুলো বৃষ্টি বাদলের সময় পানিতে ডুবে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে যায়। যার ফলে বর্ষা মৌসুমে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে অনেক অসুবিধায় পড়তে হয়।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ফ্যাসিলিটিস ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, এলজিইডি এবং শাহরাস্তি উপজেলা প্রশাসন সহ চাঁদপুর জেলা প্রশাসক তাদের সন্তানদের শিক্ষা গ্রহনের সুবিধার্থে অনতিবিলম্বে সমস্যাসমূহ সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে সকলে আশা করেন।

ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫০ অপরাহ্ণ
ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ

ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছিল ২২ দিনের ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞা। এসময় নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল। দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে নদীতে নামবেন জেলেরা।

শেষ সময়ে কেউ মেরামত করছেন নৌকা, কেউবা পুরোনো জাল সেলাই করে নিচ্ছেন নতুন করে। চোখে মুখে আনন্দের অনুভূতি থাকলেও আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। তারা বলছেন, এবছর ভরা মৌসুমেও নদীতে ইলিশের দেখা মেলেনি। আর এখন মৌসুম শেষ। জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলে কষ্টের পাল্লা ভারী হবে।

এদিকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন চাঁদপুরে নিবন্ধিত ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু তা ছিল জেলেদের কাছে অপ্রতুল। ওই সময় জীবিকা হারিয়ে চরম কষ্টে পড়েন জেলেরা।

এদিকে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ ধরতে না গেলেও নিষেধাজ্ঞার পর বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে এবং মহাজন ও এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করতে হয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মূল জেলেদের কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা থেকে বাদ পড়েছে। অথচ যারা মাছ ধরতে জীবনেও নদীতে নামেনি এমন বিভিন্ন পেশার বেশ কিছু মানুষ সরকারী সহায়তার কার্ড পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। এমনকি বেশ কিছু জেলে সরকারি সহযোগিতা পেয়েও সরকারের নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে নির্বিচারে মা ইলিশ শিকার করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে সরকারের পরবর্তী সহযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ারও আহ্বান জানান।

মৎস্য কর্মকর্তারা আশা করছেন, ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার গত বছরের চেয়ে মাছের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে পারে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হয়নি। এবার রেকর্ড পরিমাণে ইলিশ উৎপাদন হতে পারে।

তিনি আরও জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করেছিল সরকার।

এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চালানো ৪৪৫ টি অভিযানে ৭৭ টি মামলা ও ৭৪ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১১৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাঁজা প্রদান করা হয়। এছাড়া ৬ কোটি মিটার অবৈধ জাল, ১১০০ টন ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় প্রদান করাহয়।

জনশ্রুতি আছে অভিযানে সময় অনেক জেলে সরকারের বরাদ্দ করা চাল পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই উপকূলের জেলেরা জাল, নৌকা, ট্রলার ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। বিশেষ করে হরিনা ঘাট, আখনের ঘাট, পুরানবাজার রনাগোয়াল, লঞ্চ ঘাট, হাইমচরের নীলকমল, মতলব উত্তর মোহনপুর নৌঅঞ্চলের জেলেরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

শ্যামল সরকার
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটক ১

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথবাহিনি। এ ঘটনায় দুই মাদক কারবারি পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদিরামপুর গ্রামের ছোট বাড়ি এলাকা থেকে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীর খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জেলা ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান ও ফরিদগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত রাজিব চক্রবর্তী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকদিরামপুর গ্রামের খলিল বেপারির ছেলে মাদক কারবারি আল-আমিন (২৫) ও তার সহযোগী হত্যা মামলার আসামি রুবেল হোসেন (২৮) ফজরের নামাজের পর একটি প্রাইভেটকারে করে বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে আসে। পরে আল-আমিনের বাড়ির গোসলখানায় গাঁজাগুলো লুকিয়ে রাখে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

পরে এলাকাবাসী পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।

এলাকাবাসী জানায়, রুবেল হোসেন এর আগে একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। গত ১০ দিন আগে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আবারও মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে ওঠে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের বাইক্কারবাগানের পাশের ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী সোহেল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে মামলার অন্যতম আসামি ছিল রুবেল হোসেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন স্বপন মিয়াজী জানান, সকালে ফজরের নামাজের পর এলাকাবাসী আমাকে জানায়, এ এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি রুবেল জেল থেকে বের হয়ে আবারও মাদক কারবারির সাথে জড়িয়ে পড়েছে এবং বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে থানা পুলিশকে খবর দেই। তিনি আরো জানান, তাদের কারনে এ এলাকার যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্ আলম বলেন, সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ডিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করি। তবে মূল মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। আল-আমিনের বাবা খলিল বেপারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগ শুরু করলেন ইঞ্জি. মমিনুল হক

মো. ইউসুফ বেপারী
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:২১ অপরাহ্ণ
ধানের শীষ প্রতীকের গণসংযোগ শুরু করলেন ইঞ্জি. মমিনুল হক

হাজীগঞ্জে ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে নিজ ইউনিয়নে গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করলেন বিএনপির কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক ইঞ্জি. মমিনুল হক।

শুক্রবার দিনব্যাপী তিনি উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করেন। এরমধ্যে তিনি ইউনিয়নের নোয়াদ্দা, উত্তর রায়চোঁ, বড়কুল রামকানাই উচ্চ বিদ্যালয়, রায়চোঁ বাজার, মধ্য বড়কুল, আড়ুলি, মোল্লাডহর, দিকচাইল, সেন্দ্রা ও কোন্দ্রা এলাকায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন।

পথসভায় ইঞ্জি. মমিনুল হক চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে ইউনিয়নবাসীর সম্মতি চাইলে উপস্থিত লোকজন একযোগে হাত উঁচিয়ে সম্মতি প্রকাশ এবং ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এসময় তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির ২২টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভায় গণসংযোগ ও পথসভা কার্যক্রম শুরু করলাম। দেশের মানুষ বিএনপিকে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। তারা ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে তারেক রহমানকে আগামির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাছান মিয়াজীর সভাপতিত্বে গণসংযোগ ও পথসভায় সফর সঙ্গী ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ রহিম পাটওয়ারী, বিএনপি নেতা আব্দুল কাদের মিয়া, ইঞ্জি. জাহাঙ্গীর আলম, ইমান হোসেন, অহিদুল ইসলাম মোহন, আব্দুল গফুর পাটওয়ারী, ওলি উল্যাহ, আলমগীর হোসেন, মোশারফ হোসেন, তাফাজ্জল হোসেন বতু, শাহাদাত হোসেন মিলন, জামাল মেম্বার, মিজানুর রহমান, মাসুদ রানা, উপজেলা মৎসজীবি দলের সভাপতি মো. ইমান হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম চৌধুরী মিঠু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক এসএম ফয়সাল হোসাইন, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব দ্বীন ইসলাম টগর, ছাত্রনেতা শামছুদ্দিন খাঁন নূর, কবির হোসেন রাজু, ইউনিয়ন যুবদল নেতা আব্দুল জব্বার, ইকবাল বেপারী, ইমাম হোসেন, আব্দুল মতিন, আলাউদ্দিন, হেলাল উদ্দিন, হোসেন মজুমদার, স্বেচ্ছাসেবক নেতা মাসুম চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, সুমন রাজ, হাসানাত, সোহাগ, কৃষক নেতা মিজানুর রহমান, ছাত্রনেতা আলামিন দিনু, হাবিবুর রহমান, ওসমান গণি, সাব্বির হোসেন, শেখ ফরিদসহ সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।