খুঁজুন
সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫, ১৬ আষাঢ়, ১৪৩২

চাঁদপুরে মাদ্রাসা ছাত্র মিলন হত্যায় দুই জনের মৃত্যুদন্ড, একজনের যাবজ্জীবন

আলোকিত চাঁদপরি রিপোর্ট
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ৭:৩৪ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে মাদ্রাসা ছাত্র মিলন হত্যায় দুই জনের মৃত্যুদন্ড, একজনের যাবজ্জীবন

চাঁদপুরের কচুয়ায় সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে মাদ্রাসা ছাত্র মো. মিলন হোসেনকে (১২) শ্বাসরোধ এবং পানিতে ডুবিয়ে হত্যার দায়ে আসামী শামিম হোসেন (২৮) ও সোহাগ হোসেনকে (২৮) মৃত্যুদন্ড এবং অপর আসামী মো. রাব্বি হোসেনকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) এর বিচারক সৈয়দ তাফাজ্জল হোসেন হিরু এই রায় দেন।

হত্যার শিকার মিলন হোসেন কচুয়া কান্দিরপাড় গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. তাজুল ইসলামের ছেলে। মিলন স্থানীয় চাপাতলী মাদ্রাসা ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলো।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী শামিম হোসেন কান্দিরপাড় প্রধানিয়া বাড়ির মো. ইমাম হোসেন ও সোহাগ হোসেন পাশবর্তী পাড়াগাঁও গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী রাব্বি হোসেন কান্দিরপাড় গ্রামের ফরাজি বাড়ির আবুল বাসারের ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, হত্যার শিকার মিলনের পিতা তাজুল ইসলামের সাথে আসামীদের স্বজনদের সম্পত্তিগত বিরোধ ছিলো। ওই বিরোধের কারণে ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ২৯ জুন দুপুর আনুমান ১টার দিকে মাদ্রাসা ছাত্র মিলন বাড়ি থেকে পাশের রহিমানগর বাজারে যায়। বাজার থেকে বাড়িতে না ফেরায় পরদিন ৩০ জুন কচুয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে তার ভাই মো. রিপন হোসেন (২৫)।

এরপর ২ জুলাই স্থানীয়দের মাধ্যমে মিলনের পরিবার জানতে পারে সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে আসামী শামিম, সোহাগ ও রাব্বি মিলনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কান্দিরপাড় জনৈকি ইব্রাহিম খলিলের ধনচের জমিতে নিয়ে পানিতে ডুবিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

বাদী রিপন হোসেন জানান, আসামীদের নাম পরিচয় জানার পর প্রথমে স্থানীয় লোকজন শামীমকে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাকি দুই আসামী সোহাগ ও রাব্বির নাম পাওয়া যায়। এরপর তাদেরকে স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ২ জুলাই ঘটনাস্থল থেকে মিলনের মরদেহ উদ্ধার ও আসামীদের থানা হেফাজতে নেন।

এই ঘটনায় ওইদিনই মিলনের বড় ভাই রিপন হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়াজেদ আলী ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামলাটি দীর্ঘ ১০ বছর চলাকালীন সময়ে ২২ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। আসামীদের অপরাধ স্বীকার ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক তাদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন।

রায়ে আসামী শামিম হোসেন ও সোহাগ হোসেনকে মৃত্যুদন্ড, ১ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। অপর আসামী রাব্বিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল হক কমল।

কচুয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ পাঠানের জন্ম বার্ষিকীতে দোয়ার আয়োজন

কচুয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫, ৮:০৬ অপরাহ্ণ
কচুয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ পাঠানের জন্ম বার্ষিকীতে দোয়ার আয়োজন

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পালাখাল ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসার গভর্নিং বডির কয়েক বারের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ পাঠানের ৭৪ তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সকালে এ উপলক্ষে পালাখাল ছালেহীয়া আলীম মাদ্রাসার সামনে চির শায়িত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ পাঠানের কবর জিয়ারত শেষে মাদরাসা জামে মসজিদে মরহুমের জান্নাতময় জীবন কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।

এ সময় মাদরাসার অধ্যক্ষ মুফতী আব্দুর রাজ্জাক আনোয়ারী, উপাধ্যক্ষ মোঃ সাদিকুর রহমান, আরবি প্রভাষক আব্দুর কুদ্দুস খান, সহকারী অধ্যাপক মোঃ হোসেন খান, মইনুল হাসান, আরবি প্রভাষক মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ, সহকারী মৌলভী মো: শরীফ হোসেন, হাফেজ ফজলুর রহমানসহ মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, কচুয়া উপজেলায় যুদ্ধকালীন কমান্ডার ও ঐতিহ্যবাহী পালাখাল ছালেমিয়া আলিম মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ পাঠান উপজেলার পালাখাল গ্রামের মৃত: আনসর আলী পাঠানের সন্তান। তিনি ১৯৭১ সালে জীবন বাজি রেখে রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি পালাখাল সালেহীয়া আলিম মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি ও নারায়নগঞ্জস্থ চাঁদপুর জেলা সমিতির সভাপতি সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে সুনামের সাথে জড়িত ছিলেন।

সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ পাঠান ১৯৫২ সালের ৩০ জুন জন্ম গ্রহণ করেন এবং ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর জীবনের মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেছেন।

হাজীগঞ্জে প্রাইম ব্যাংকের দুই গ্রাহকের টাকা উধাও

মোঃ ইউসুফ বেপারী
প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫, ৭:৪০ অপরাহ্ণ
হাজীগঞ্জে প্রাইম ব্যাংকের দুই গ্রাহকের টাকা উধাও

হাজীগঞ্জ বাজারের প্রাইম ব্যাংকের দুই গ্রাহকের ২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা উধাও হয়েছে। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, দুই গ্রাহক জুন মাসেই নতুন একাউন্ট খুলে। এই মাসেই তাদের একাউন্ট থেকে বিকাশে টাকা লেনদেন হয়।

সোমবার দুপুরে ব্যাংকে পৃথকভাবে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে দুই গ্রাহক তাদের একাউন্টে কোন টাকা পায়নি। গ্রাহকেরা হলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা এলাকার মাসুদা বেগমের ১ লাখ ৩১ হাজার ও কচুয়া উপজেলার সাচার এলাকার সুমি আক্তারের এক লাখ ২৭ হাজার টাকা। তাদের দুজনের স্বামী মালয়েশিয়া প্রবাসী। স্বামীর কথামতো তারা প্রাইম ব্যাংকে একাউন্ট খুলে লেনদেন শুরু করেন। এখন ব্যাংকে রাখা টাকা ফেরত চেয়ে পৃথক দুটো অভিযোগ দেন তারা।

ভুক্তভোগী মাসুদা বেগম বলেন, চেক বই নিতে এসে দেখি একাউন্টে টাকা নাই। স্বামীর কথা মতো প্রাইম ব্যাংকে একাউন্ট খুলেন তিনি।

সাচার থেকে আসা গ্রাহক সুমি আক্তার বলেন, স্বামীর কথামতো ব্যাংকে টাকা চেক করতে গিয়ে দেখি একাউন্ট শূন্য। এটা কিভাবে সম্ভব? কোন প্রকার ওটিপি বা ম্যাসেজ আসেননি। আমরা টাকাগুলো ফেরত চাই।

ব্যাংক স্ট্যাটমেন্টে দেখা যায়, গেল ২৫ জুন মাসুদা বেগমের একাউন্ট থেকে ৭ বারে ৮০ হাজার টাকা, ২৬ জুন ৪১ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে টাকাসহ মোট ১ লাখ ২১ হাজার টাকা কেটে নেয়া হয়।

অন্যদিকে সুমি আক্তারের একাউন্ট থেকে ২৬ জুন তিনবারে ৫৫ হাজার, ২৯ জুন ৪ বারে ৭৭ হাজার টাকাসহ মোট ১ লাখ ২৭ হাজার বিকাশে কেটে নেয়া হয়।

হাজীগঞ্জ প্রাইম ব্যাংক শাখার ম্যানেজার মুহাম্মদ আবু সাঈদ ভুঁইয়া কথা বলতে নারাজ হলেও মিডিয়া কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলছেন, দুই গ্রাহকের একই নিয়মে টাকা লেনদেন হয়েছে। বিকাশের মাধ্যম তাদের এই লেনদেন হয়। এই ব্যাপারে বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মালয়েশিয়ায় আটক ৩৬ বাংলাদেশি আইএসের সঙ্গে যুক্ত: পুলিশ

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫, ৭:০৭ অপরাহ্ণ
মালয়েশিয়ায় আটক ৩৬ বাংলাদেশি আইএসের সঙ্গে যুক্ত: পুলিশ

মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির পুলিশ বিভাগ।

সোমবার মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক দাতুক সেরি মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল ফেডারেল সিআইডি পরিচালকের দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠান স্থানীয় সাংবাদিকদের সামনে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আটক বাংলাদেশিরা আইএস-এর চরমপন্থী বিশ্বাস এবং জঙ্গী কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের মতাদর্শ ছিল সহিংস। নিরাপত্তা অপরাধ (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন ২০১২ (সোসমা) এর অধীনে তাদের আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্যদের অধিকতর তদন্তের জন্য আটক রাখা হচ্ছে। গ্রেফতার করা কয়েকজনকে ইতোমধ্যেই ফেরত পাঠানো হয়েছে।

সম্প্রতি আইএস এর কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৬ জন বাংলাদেশিকে আটক করে মালয়েশিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তিনি জানান, মামলা এবং তদন্তের আরও বিস্তারিত জানাতে শীঘ্রই একটি সংবাদ সম্মেলন করা হবে।

এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুতিন ইসমাইল বলেন, ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সমন্বিত নিরাপত্তা অভিযান সেলাঙ্গর এবং জোহর বারু প্রদেশে তিনটি ধাপে পরিচালিত হয়।

আটকদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে শাহ আলম এবং জোহর বারু দায়রা আদালতে দন্ডবিধির সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত অপরাধ এর অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে। আরও ১৫ জনকে কারাদন্ড দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে এবং ১৬ জন এখনও জঙ্গী আন্দোলনে জড়িত থাকার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

বিশেষ শাখার সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা গেছে যে, এই দলটি দেশে আইএস-অনুপ্রাণিত মতাদর্শ চালু করেছে এবং বাংলাদেশি কমিউনিটি থেকে সদস্য নিয়োগ করাচ্ছে।