খুঁজুন
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১৬ বৈশাখ, ১৪৩২

গণহত্যা, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনকল্পে জেলা প্রশাসনের ব্যাপক কর্মসূচী

জাহাঙ্গীর রাজু
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ১:৩৮ পূর্বাহ্ণ
গণহত্যা, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনকল্পে জেলা প্রশাসনের ব্যাপক কর্মসূচী

আজ ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং আগামীকাল ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনাত ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে চাঁদপুর জেলায় ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন জেলা প্রশাসন। এ উপলক্ষে গত ৬ মার্চ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযোদ্ধের আত্মোৎসর্গকারী ৩০ লাখ শহীদ সম্ভ্রম হারানো ২ লাখ মা বোনকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করে এবং স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের গুরুত্¦ ও তাৎপর্য তুলে ধরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বাঙালী জাতীর সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা। কষ্ঠার্জিত এ স্বাধীনতা যেন ম্লান না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সজাগ থাকতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে দেশ মাতৃকার কল্যাণে কাজ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এ বছর পবিত্র রমজান মাসে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন হবে বিধায় রমজানের পবিত্রতার প্রতি সংশ্লিষ্ট সকলকে সজাগ থাকতে হবে।

সভায় সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন এর অনুমতিক্রমে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোস্তফিজুর রহমান দিবসগুলো পালনকল্পে কর্মসূচীগুলো উপস্থাপন করেন।

কর্মসূচীগুলো:
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস:
১৭ মার্চ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত সুবিধা জনক সময়ে শহরের হাসনা আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, বাস স্ট্যান্ড, বড় স্টেশন মোলহেডে ২৫ মার্চের গণহত্যার উপর বস্তুনিষ্ঠ ও নৈর্ব্যত্তিক দূর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামান্য চিত্র প্রদর্শনী, ২০ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারীগরি সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যাক্তি ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গণহত্যা ও ঐতিহাসিক মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে স্মৃতি চারণ ও আলোচনা সভা, ২৫ মার্চ বাদ আসর সকল মসজিদ, মন্দির ও গির্জায় বিশেষ মুনাজাত ও প্রার্থনা, ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১০ টায় ১ মিনিটের জন্য জরুরী স্থাপনা ও কেপিআই ব্যাতীত জেলায় প্রতীকি ব্ল্যাক আউট।

সভায় গৃহীত অন্যান্য সিদ্ধান্তসমূহ নিম্নরূপ:
১. ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবন/স্থাপনাসমূহে কোন অবস্থাতেই আলোকসজ্জা করা যাবে না মর্মে সিদ্ধান্ত হয়।
২. জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, চাঁদপুর ২০ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরিসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে ২৫ মার্চ গণহত্যা ও মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৩. গণহত্যা দিবসের সকল কর্মসূচিতে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত দপ্তরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ আবশ্যিকভাবে উপস্থিত থাকবেন।
৪. জেলা তথ্য অফিসার ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচি বহুল প্রচারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে নিম্নবর্ণিত কর্মসূচি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

কর্মসূচীগুলো:
১ মার্চ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে রচনা ও আবৃতি প্রতিযোগীতার আয়োজন, ১৬ থেকে ২৬ মার্চ প্রতিদিন বিকাল বা সন্ধ্যায় বাবুরহাট, বাগাদী চৌরাস্তার মোড়, চাঁদপুর ডাকঘরের নিকট সেতুর পাদদেশে পুরান বাজারে স্বাধীনতা যুদ্ধের বস্তুনিষ্ঠ ও নৈবির্ত্তিক মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামন্য চিত্র প্রদর্শনী, ২৬ মার্চ সারাদিন চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিশুদের রচনা প্রতিযোগীতা ও আবৃতি, শিশু একাডেমীতে শিশুদের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা, সূর্যোদয়ের সাথে সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত এবং বেসরকারি ভবন সমূহে যথাযথ মর্যাদার সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, চাঁদপুর শহরের অঙ্গিকার পাদদেশে একত্রিশ বার তপোধ্বনীর মাধ্যমে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভ সূচনা, ভোর ৫ টা ৫৬ মিনিটের পর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরনে অঙ্গিকার পাদদেশে পুষ্পস্তবক অর্পন, সন্ধ্যা থেকে চাঁদপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত এবং বেসরকারি ভবন সমূহে আলোকসজ¦া, শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকা সহ বিভিন্ন পতাকা ও ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করন, সকাল সাড়ে ৮টায় জেলা প্রশাসক কৃর্তক চাঁদপুর স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ (রমজান মাস বিবেচনায় ডিসপ্লে ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবেনা), দুপুর ১২ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী ও কোষ্ট গার্ডের জাহাজ সমূহ জনসাধারণরে দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা, সকাল ১০ টায় চাঁদপুর ক্লাব মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠান, বাদ আসর জাতীর শান্তি, সমৃদ্ধি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির ও গির্জা সহ প্যাগোডা ও অন্যান্য উপসনালয়ে মোনাজাত ও প্রার্থনা। সুবিধা জনক সময়ে সকল হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশু পরিবার এবং বাক শ্রবন প্রতিবন্ধী স্কুলে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন।

গৃহীত অন্যান্য সিদ্ধান্তসমূহ নিম্নরূপঃ
১. গৃহীত কর্মসূচির প্রতিটি ভেন্যুর নিরাপত্তা বিধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করা হয়।
২. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল মহান স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ দক্ষ ও মানসম্মত করার জন্য অংশগ্রহণকারী দলসমূহের যথাযথ পূর্বপ্রস্তুতিসহ প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৩. জেলা তথ্য অফিসার, চাঁদপুর মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচিসমূহ বহুল প্রচারের নিমিত্ত এবং জাতীয় পতাকার সঠিক মাপ, রং এর ব্যবহার সম্পর্কে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ২০ মার্চ হতে প্রারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৪. জেলা স্কাউটের সহকারী পরিচালক জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সমাবেশে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক স্কাউটসদের তালিকা সংগ্রহ করবেন।
৫. চাঁদপুর পৌরসভার প্রশাসক ২৬ মার্চ সন্ধ্যা হতে রাত পর্যন্ত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে সড়ক, সড়কদ্বীপ, শপথ চত্বর, ইলিশ চত্বর, অঙ্গীকার ও মুক্তিসৌধ এলাকাসহ অন্যান্য শুরুত্বপূর্ণ স্থানে আলোকসজ্জা করার জন্য এবং গণপূর্ত বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী চাঁদপুর সার্কিট হাউজ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং বাসভবনে আলোকসজ্জা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৬. জেলা ক্রীড়া অফিসার চাঁদপুর স্টেডিয়ামে সমাবেশের নিমিত্ত মঞ্চ, প্যান্ডেল ও মাঠ প্রস্তুত করাসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি নিশ্চিত করবেন এবং কুচকাওয়াজ উপ-কমিটিকে সহায়তা করবেন।
৭. স্থানীয় সকল দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকগণ দিবসটি উদযাপনে গৃহীত কর্মসূচি বহুল প্রচারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং নিজ নিজ পত্রিকায় বিশেষ নিবন্ধ/ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবেন।
৮. চাঁদপুর সদর উপজেলা ব্যতিত অন্য সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিবসটি সরকারি কর্মসূচি ও নির্দেশনা অনুসরণ করে উদযাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। চাঁদপুর সদর উপজেলা জেলা প্রশাসনের সাথে যুক্ত হয়ে দিবসটি উদযাপন করবেন।
৯. মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচিতে সকল কলেজ ও স্কুলের শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ এবং ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য অধ্যক্ষ, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রধান শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
১০. বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোডের নির্বাহী প্রকৌশলী দিবসটি উদযাপনের সকল ভেন্যুতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করবেন।
১১. ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স উপ-সহকারী পরিচালক ২৫ মার্চ এবং ২৬ মার্চ প্রত্যুষে অথবা সুবিধাজনক সময়ে কুচকাওয়াজ কমিটির সাথে সমন্বয় করে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে পানি ছিটিয়ে ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থ্য গ্রহণ করবেন।
১২. মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সকল সরকারি, আধা- সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত দপ্তরের সকল কর্মকর্তাগণ আবশ্যিকভাবে উপস্থিত থাকবেন।

চাঁদপুর শহর জামায়াতের গণসংযোগ ও পথসভা

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:৫০ অপরাহ্ণ
চাঁদপুর শহর জামায়াতের গণসংযোগ ও পথসভা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চাঁদপুর শহর শাখার উদ্যোগে দাওয়াতী পক্ষ অভিযান উপলক্ষে গণসংযোগ ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের হাকিমপ্লাজা, হকার্স মার্কেট, জোড় পুকুরপাড় সড়ক ও বাইতুল আমীন চত্বর ব্যাপক দাওয়াতী কাজ এবং পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশের শূরার সদস্য ও চাঁদপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা বিল্লাল হোসাইন মিয়াজী।

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করতে চায়। আমরা বিশ্বাস করি, জমিন আল্লাহর কাজেই এই জমিনের মধ্যে হুকুম চলবে আল্লাহর। আল্লাহর আইনের মধ্যে কোন ভুল নাই, মানুষের তৈরি আইনের মধ্যে ভুল আছে। মানুষ যখনই আল্লাহর আইন বাদ দিয়ে মানুষের তৈরি আইনের দিকে যায়, তখন বারবার হোচঁট খায়, প্রতারিত হয় এবং মানুষ তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত ও শোষণমুক্ত করার জন্য তিনি সবাইকে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।

আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর শহর জামায়াতের আমীর অ্যাডভোকেট শাহজাহান খান। উপস্থিত ছিলেন শহর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী মো: সাইফুল ইসলাম সবুজ, জামায়াতের ১০নং ওয়ার্ড আমীর গোলাম মাওলা, ৭নং ওয়ার্ডের সভাপতি ও সম্ভাব্য কমিশনার প্রার্থী নুর মোহাম্মদ খোকা, ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি মাইনুল ইসলাম প্রধান, সম্ভাব্য কমিশনার প্রার্থী হাসান আল বান্না, আলাউদ্দিন ঢালী, আলমগীর বন্ধুকশীসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ।

কচুয়ায় খড়ের গাঁদা আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কৃষাণীর মৃত্যু

মনিরুজ্জামান বাবলু
প্রকাশিত: সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:২৯ অপরাহ্ণ
কচুয়ায় খড়ের গাঁদা আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কৃষাণীর মৃত্যু

বজ্রপাতে নিহত কৃষাণী বিশখা।

কচুয়ায় বজ্রপাতে বিশখা সরকার (৩৫) নামে এক কৃষাণীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার উত্তর কচুয়া ইউনিয়নের নাহারা গ্রামের রাধা গবিন্দ বাড়ির কৃষাণী বাড়ির পাশে অবস্থিত জমি হতে খড়ের গাঁদা আনতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন।

নিহত বিশখা সরকার উত্তর কচুয়া ইউনিয়নের নাহারা গ্রামের হরিপদের স্ত্রী। বিশখা সরকার তিন কন্যা সন্তানের জননী।

পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, বাড়ির পাশে খড়ের গাঁদা আনতে বাড়ী থেকে বের হবার পথে ঝড়-বৃষ্টির কবলে পড়েন। পরে বজ্রপাতের শিকার হন তিনি। তাকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. জাহিদ হোসাইন জানান, তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে বজ্রপাতে আতঙ্কিত হয়ে মারা যেতে পারেন। তাকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান। আকাশে কালো মেঘ দেখলেই নিজেদের প্রতি প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও নিরাপদ আশ্রয়ে যেত বলছেন এই চিকিৎসক।

বাংলাদেশে লাইসেন্স পেলো স্টারলিংক

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:১৯ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশে লাইসেন্স পেলো স্টারলিংক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনজিএসও সেবাদাতা স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার তিনি এ লাইসেন্স অনুমোদন করেন বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে।

এর আগে গত ২৫ মার্চ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) নন-জিওসটেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটর ইন বাংলাদেশ শীর্ষক লাইসেন্সিং গাইডলাইন জারি করে।

ওই গাইডলাইনের আওতায় স্টারলিংক সার্ভিসেস বাংলাদেশ নন-জিওসটেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটর লাইসেন্সপ্রাপ্তির জন্য প্রযোজ্য ফি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিটিআরসি বরাবর আবেদন করেছে। প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে আবেদনকৃত লাইসেন্স ইস্যুর জন্য গত ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ২৯৪তম কমিশন সভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

স্টারলিংক বাংলাদেশের ইন্টারনেটে নতুন সংযোজন। শ্রীলংকার পরে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বৈশ্বিক এ স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করলো।

এ প্রসঙ্গে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ে শেখ হাসিনা সরকারের উপর্যুপরি ইন্টারনেট বন্ধের প্রতিবাদে স্টারলিংককে বাংলাদেশে নিয়ে আসা একটা গণদাবিতে পরিণত হয়েছিল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বিনিয়োগবান্ধব হিসেবে একটা বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল প্রধান উপদেষ্টার। বাংলাদেশের হাওর-বাওড় দ্বীপাঞ্চলে, দুর্গম পার্বত্য এলাকায়, বিশেষভাবে উপকূলীয় দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন এবং মানসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেসব অঞ্চলে এখনো ফাইবার পৌঁছেনি সেখানে দ্রুততম সময়ে মানসম্পন্ন ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা স্বউদ্যোগী হয়ে স্পেসএক্স সিইও ইলন মাস্ককে ফোন করে ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংককে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানান।

এ লক্ষ্য অর্জনে বিডা, বিটিআরসি, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় নিবিড়ভাবে কাজ করেছে বলেও জানান তিনি।

ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, স্টারলিংকের সেবাগুলোর মধ্যে একটা প্রাথমিক সেবা হচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট, যেখানে লোডশেডিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাবে না, যেটা আইএসপির ক্ষেত্রে হয়। অনেক ক্ষেত্রে যদি লম্বা সময় ধরে লোডশেডিং থাকে, মোবাইল টাওয়ারের ব্যাটারির ব্যাকআপ ফুরিয়ে গেলে মোবাইল ইন্টারনেটেও বিঘœ ঘটে। স্টারলিংকের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা হবে না।

‘আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, বাংলাদেশে ফাইবার নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি সীমিত। উপরন্তু এই ফাইবার নেটওয়ার্কের উল্লেখযোগ্য অংশ টেলকো গ্রেডের নয়। বাংলাদেশের অন্তত ৬৫ শতাংশ টেলিযোগাযোগ টাওয়ার এখনো ফাইবারাইজেশনের বাইরে, সেখানে মাইক্রোওয়েভ দিয়ে সেবা দেওয়া হয়, খুবই সীমিত ধারণক্ষমতা। আবার আমাদের মোবাইল নেটওয়ার্কের যে কাভারেজ ও ক্যাপাসিটি আছে, তাতেও সমস্যা আছে, হাইওয়ে মোবিলিটি কভারেজের সমস্যা আছে। স্টারলিংক এসব সমস্যার সমাধান করবে’- বলেন তিনি।

ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, স্টারলিংক বাংলাদেশের মোবাইল ফোন এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করবে। এর মাধ্যমে ভয়েস কল এবং ডেটা বান্ডেলভিত্তিক গতানুগতিক ইন্টারনেট সেবাদান ব্যবস্থা ডিজিটাল সার্ভিসকেন্দ্রিক নতুন রূপান্তরে মধ্য দিয়ে যাবে।

‘স্টারলিংকের সার্ভিসের ফলে কমিউনিকেশন ইন্ডাস্ট্রিতে ডিরেগুলেশনের সূচনা হবে, প্রতিযোগিতা বাড়বে, শহর কিংবা গ্রামভেদে নিরবচ্ছিন্ন এবং মানসম্পন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট প্রাপ্তির নিশ্চয়তা তৈরি হবে’- যোগ করেন তিনি।