খুঁজুন
বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ, ১৪৩২

আরাকান আর্মির নির্যাতন

ফের রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কা, নতুন করে এসেছে ১ লাখ ১৮ হাজার

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫, ৫:৪০ অপরাহ্ণ
ফের রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কা, নতুন করে এসেছে ১ লাখ ১৮ হাজার

‘রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির দখলে যাওয়ার পর থেকে মংডু শহরে কোনো কাজকর্ম করতে পারছি না। চিকিৎসা নেই। সবসময় আরাকান আর্মির সদস্যরা বাড়িতে হানা দেয়। বিভিন্ন অজুহাতে মারধর করে। তাই মংডু শহরে থাকতে না পেরে এক সপ্তাহ আগে পরিবারসহ বাংলাদেশে চলে এসেছি। আমার মতো অসংখ্য রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য রাখাইনের বিভিন্ন সীমান্তে অবস্থান করছে।’

এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন মিয়ানমারের মংডু শহরে আরাকান আর্মির নির্যাতনের শিকার হয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা করিম উল্লাহ। তিনি কক্সবাজারের বালুখালি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন।

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আবারও রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা করছেন রোহিঙ্গারা। গত দেড় বছরে নতুন করে আরও এক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। অনুপ্রবেশ করতে সীমান্তে আরও অনেকে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটলে বা ঠেকানো না গেলে রোহিঙ্গা সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। এতে তারা নানামুখী চাপে পড়বেন। এমনিতেই অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।

১০ দিন আগে রাখাইনের মংডু প্রামপ্রো এলাকা থেকে পালিয়ে পালং ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন রহিম উল্লাহ। তিনি বলেন, ‌মংডু শহরে কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হলে আরাকান আর্মিকে টাকা দিতে হয়। আগে ইয়াঙ্গুন শহর থেকে মালামাল আসতো। এখন তাও বন্ধ। রাখাইনে খাদ্য সংকট। আরাকান আর্মির নির্যাতন দিন দিন বাড়ছে। মংডু প্রামপ্রো এলাকার শত শত রোহিঙ্গা বাড়িঘর ছেড়ে অনেকেই পাহাড়ে, নাইক্ষ্যংছড়ি, ঘুমধুম ও উখিয়া সীমান্তের ওপারে অবস্থান করছেন। রাখাইনে থাকতে না পেরে বাংলাদেশে চলে আসার জন্য তারা অপেক্ষা করছেন।

তিনি আরও বলেন, আরাকান আর্মির নির্যাতনে কোনো যুবক গ্রামে থাকতে পারে না। যাদেরকে ধরে নিয়ে যায় তারা আর ফিরে আসে না। আরাকান আর্মি আমাদের নিয়ে খেলছে। তারা খুন করতেও বিন্দুমাত্র চিন্তা করে না।

পালিয়ে আসা হোসনে আরা বলেন, আমার এক সন্তানকে আরাকান আর্মি গুলি করে হত্যা করেছে। আমি কোনোরকম বাকি সন্তানদের নিয়ে টেকনাফের জাদিমুড়া ক্যাম্পে চলে এসেছি।

রোহিঙ্গাদের চাপ বাড়তে থাকায় শঙ্কা প্রকাশ করেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা চাপ যদি বাড়তে থাকে, তাহলে স্থানীয়দের জন্য আরও নানান সমস্যা সৃষ্টি হবে। অনেক রোহিঙ্গা এখন ডাকাতি, অপহরণ বাণিজ্য জড়িয়ে পড়ছে। ক্যাম্পের পাশে থাকা স্থানীয়দের বাড়িতে হামলা-ডাকাতি হচ্ছে।

পালংখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটলে আমরাও মনে হয় থাকতে পারবো না। কারণ হলো উখিয়া ও টেকনাফে যেসব পাহাড় ছিল, তার শত শত একর জায়গায় ক্যাম্প গড়ে উঠেছে। সেখানে রোহিঙ্গারা বসবাস করছে। নতুন করে থাকার জন্য ক্যাম্পে আর জায়গা নেই। রাখাইন সংঘাতের কারণে গত ১৩-১৪ মাসে নতুন করে এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, আগে থেকে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের চাপ সহ্য করে আমরা বসবাস করছি। আবারও যদি নতুন করে রোহিঙ্গা ঢল নামে, তাহলে আমরা কোথায় যাবো? সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা দরকার।

নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয় কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মিজানুর রহমান বলেন, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এই পর্যন্ত এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ করেছেন। তারা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে রয়েছেন। তবে পালিয়ে আসা নতুন এসব রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোসহ সীমান্ত এলাকায় কোস্ট গার্ড ও বিজিবির সদস্যরা সতর্ক পাহারায় রয়েছেন বলে জানান টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন।

এ বিষয়ে ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. সিরাজ আমিন বলেন, আগের তুলনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের কার্যক্রমগুলো দেখভাল করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়।নতুন রোহিঙ্গারা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে থাকছেন বলেও জানান তিনি।

চাঁদপুরে আন্ত:বিভাগীয় ডাকাত দলের তিন সদস্য আটক, ট্রাক জব্দ

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫, ৩:০৮ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে আন্ত:বিভাগীয় ডাকাত দলের তিন সদস্য আটক, ট্রাক জব্দ

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজারে এসকিউ ক্যাবলের গোডাউনে ডাকাতির ঘটনায় আন্ত:বিভাগীয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দুটি ট্রাক ও তালা কাটার সরঞ্জাম (বড় কাটার)।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. লুৎফুর রহমান।

গ্রেপ্তার আসামীরা হলেন- পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা থানার নলুয়াবাগী এলাকার মৃত ছাত্তার হাওলাদারের ছেলে মো. সাহাব উদ্দিন ওরফে সাবু (৪৮), একই থানার কালাই কিশোর এলাকার গোলাপ খানের ছেলে মো. জামাল খান (৪৫) ও দিনাজপুর জেলার বিরল থানার কাজীপাড়া এলাকার মৃত বাবুল মিয়ার ছেলে রতন ওরফে কালু (৩৬)।

পুলিশ জানায়, হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজারে গত ১৬ জুন রাতে এসকিউ ক্যাবলের গোডাউনে থাকা সংরক্ষিত বৈদ্যুতিক ক্যাবল লুট করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় ১৮ জুন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার হারুনুর রশিদ হাজীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ডাকাত দলের সদস্যদের আসামী করে মামল করে।

পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিবরে সার্বিক নির্দেশনায় মামলাটি হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাজীব শর্মার নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার ও আসামী গ্রেপ্তার করতে অভিযান পরিচালনা করে।

পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৮ জুলাই বগুড়া সদর থানার মহাস্থানগড় এলাকা থেকে আসামী সাহাবুদ্দিনকে গ্রেফতার করে। তার হেফাজতে থাকা ডাকাতি মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক ও তালা কাটার সরঞ্জাম (বড় কাটার) উদ্ধার করে। সাহাবুদ্দিনের দেয়া তথ্যে কুষ্টিয়া সদর থানা এলাকা থেকে আসামী রতন ও জামাল খানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, গ্রেপ্তার আসামীরা আন্ত:বিভাগীয় ডাকাত দলের সদস্য। আসামী সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় পাঁচটি, রতনের বিরুদ্ধে দুটি ও জামালের বিরুদ্ধে নয়টি ডাকাতি এবং চুরির মামলা রয়েছে। আসামীদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চাঁদপুর আদালতে পাঠানো হবে।

চাঁদপুরের বিএনপির তিন নেতা বহিস্কার

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫, ৩:০১ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরের বিএনপির তিন নেতা বহিস্কার

চাঁদাবাজী, দখলদারী, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা ধরণের অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমাম হোসেন হাজী, জেলা বিএনপির সদস্য ও ছেঙ্গারচর পৌর বিএনপি সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান লস্কর, মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও নারায়ণপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন ভুঁইয়া প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বেরিফাইড ফেসবুক পেজে সংগঠনের পেডে প্রেস বিজ্ঞতির মাধ্যমে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর রয়েছে।

এদিকে এই তিন নেতার মধ্যে আব্দুল মান্নান লস্কর কারাগারে রয়েছেন। তিনি মতলব উত্তর উপজেলার গরু ব্যবসায়ী আহম্মদ উল্লার দায়ের করা চাঁদাবাজি মামলায় কারাগারে রয়েছেন।

মতলবে চাচার ঘুষিতে ভাতিজার মৃত্যু

আলআমীন পারভেজ
প্রকাশিত: বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫, ২:৪২ অপরাহ্ণ
মতলবে চাচার ঘুষিতে ভাতিজার মৃত্যু

নিহত মেকানিক মাঈনুদ্দিন।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণচক গ্রামে পারিবারিক বিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তারই চাচার বিরুদ্ধে।

বুধবার ৩০ জুলাই সকালে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ফারুকের স্ত্রী মাফিয়া বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল হক।

নিহত ব্যক্তি হলেন রুহুল আমিন সরকারের ছেলে মাইনুদ্দিন সরকার (৪৫)। তিনি একজন ইলেক্ট্রিসিটি মিস্ত্রি ছিলেন এবং ব্রাহ্মণচক চৌরাস্তা মোড়ে ইলেক্ট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম (টিভি, রেডিও, ঘড়ি) মেরামতের একটি দোকান পরিচালনা করতেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাইনুদ্দিন সরকারের স্ত্রী মানছুরা বেগমের মাধ্যমে ফারুক সরকার (৫২) নামের এক ব্যক্তি একটি বেসরকারি এনজিও ব্যুরো বাংলাদেশ থেকে কিস্তিতে ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করছিলেন না। এনিয়ে বুধবার সকালে মাইনুদ্দিন ব্রাহ্মণচক সড়কে ফারুক সরকারকে কিস্তি শোধের কথা বললে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে চাচা ফারুক সরকার কিল-ঘুষি মারলে মাইনুদ্দিন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাইনুদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খবর পেয়ে চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফর রহমান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) খাইরুল কবির এবং মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।