খুঁজুন
বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

দূষণ রোধে টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা কেন প্রয়োজন?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২:১৫ অপরাহ্ণ
দূষণ রোধে টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা কেন প্রয়োজন?

একাডেমিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবেশ দূষণ আলোচনায় ইদানীং মার্কসকে তেমন একটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। অথচ মার্কসের দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, পরিবেশ দূষণের মূল কারণ হলো, পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থা, যা মুনাফার জন্য প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত ও অবৈধ শোষণ করে। মার্কস তার রচনায় (বিশেষত Capital এবং Grundrisse) উল্লেখ করেছিলেন যে, পুঁজিবাদ মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে একটি বিপর্যয়কর ফাটল (Metabolic Rift) সৃষ্টি করে, যা পরিবেশের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

মার্কসবাদী দৃষ্টিকোণে পরিবেশ দূষণের কয়েকটি মূল কারণ রয়েছে। এর মধ্যে পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থা অন্যতম, যেখানে পুঁজিপতিরা মুনাফা বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করে এবং পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট করে। অতিরিক্ত শিল্পায়নও এক গুরুত্বপূর্ণ কারণ, যেখানে কারখানা, রাসায়নিক শিল্প এবং কৃষির অতিরিক্ত যান্ত্রিকীকরণ বায়ু, পানি ও মাটির দূষণ বাড়িয়ে তোলে।

নব্য উদারনৈতিক (Neoliberal) নীতিও পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী, কারণ এটি বেসরকারিকরণ ও বাজারমুখী অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টি উপেক্ষা করে। তাছাড়া, শ্রমিক শ্রেণির শোষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি অন্যতম সমস্যা, যেখানে শিল্প ও খনি এলাকায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্য উপেক্ষিত হয়, যা দূষণের কারণে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এর পাশাপাশি, নব্য উদারনৈতিক নীতি পরিবেশ সংরক্ষণের চেয়ে বাজারমুখী অর্থনীতির প্রসার ও মুনাফাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। পরিবেশবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পরিবর্তে বেসরকারিকরণ এবং কর্পোরেট লোভকে প্রাধান্য দেওয়ার ফলে পরিবেশগত সংকট আরও ঘনীভূত হয়।

একদিকে শিল্পের বিকাশ ঘটে, অন্যদিকে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা উপেক্ষিত হয়। বিশেষত, শিল্প ও খনি এলাকায় শ্রমিকরা চরম পরিবেশগত ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে বাধ্য হয়, যা তাদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তোলে। ফলে, পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অনিয়ন্ত্রিত বিকাশ শুধুমাত্র পরিবেশের জন্য নয়, বরং সামগ্রিক মানবসমাজের জন্যও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে।

দূষণ এখন বিশ্বব্যাপী একটি প্রধান হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে, যা প্রতি বছর লক্ষাধিক অকাল মৃত্যু এবং মারাত্মক পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মার্কসের কথার সত্যতা বর্তমান পৃথিবীতে দৃশ্যমান দূষণের চিত্রের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। দূষণ এখন বিশ্বব্যাপী একটি প্রধান হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে, যা প্রতি বছর লক্ষাধিক অকাল মৃত্যু এবং মারাত্মক পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বায়ু দূষণ একাই প্রতি বছর ৯ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু ঘটায়, যেখানে শুধুমাত্র বাংলাদেশেই ২,৭২,০০০-এর বেশি মানুষ অকালে মারা যায়, যা দেশের জিডিপির ৮.৩২ শতাংশ ক্ষতি করে। যুক্তরাজ্যে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর ১,১০০ জন ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। পানি দূষণের ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ১.৪ মিলিয়ন অকাল মৃত্যু ঘটে এবং বাংলাদেশের ভূ-পৃষ্ঠ ও ভূগর্ভস্থ পানি বিষাক্ত ধাতু ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ায় দূষিত, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। মাটির দূষণও বিপজ্জনক, যেখানে ভারী ধাতু, কীটনাশক এবং শিল্প বর্জ্য খাদ্য নিরাপত্তা ও মানবস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশে, মাটির জৈব উপাদান ২ শতাংশের নিচে নেমে গেছে, যা কৃষি উৎপাদনকে হুমকির মুখে ফেলছে। এই পরিবেশগত বিপর্যয় রোধে নীতিগত সংস্কার ও টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

এই সমস্যা নিরসনে বিশ্বে সবচেয়ে উচ্চারিত প্রপঞ্চই হলো টেকসই উন্নয়ন। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ২০১৫ সালে এটি ঘোষণার বহু আগেই মার্কস এ বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। মার্কসবাদী দর্শনে, পুঁজিবাদী কাঠামোর মধ্যে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়, কারণ পুঁজিবাদ সর্বদা মুনাফাকেই অগ্রাধিকার দেয়, যা প্রকৃতির শোষণ ও দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কর্পোরেট স্বার্থ ও বাজারপ্রধান অর্থনীতির প্রভাবে পরিবেশ সংরক্ষণ উপেক্ষিত হয়, ফলে জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অতিব্যবহার অব্যাহত থাকে।

এর বিপরীতে, প্রকৃত পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক পরিকল্পিত অর্থনীতির প্রয়োজন, যেখানে উৎপাদন ব্যবস্থা জনস্বার্থ ও পরিবেশগত ভারসাম্যের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হবে। তাই দূষণের টেকসই ও সামগ্রিক সমাধান খুঁজতে আমাদের মার্কসের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়টি বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। মার্কসবাদীরা বিশ্বাস করে, প্রকৃত পরিবেশ সুরক্ষার জন্য পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তে পরিকল্পিত অর্থনীতি ও সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এই মডেলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যার মধ্যে টেকসই কৃষি ও শিল্পনীতি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এটি শুধু পরিবেশ রক্ষাই করবে না বরং শ্রমিকদের সুরক্ষাও নিশ্চিত করবে। আসলে, টেকসই উন্নয়ন মডেলের মূল ভিত্তিই হলো এই নীতিগুলো বাস্তবায়ন করা।

পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ব্যবস্থা গঠনে বিভিন্ন উদ্যোগ গৃহীত হচ্ছে, যার মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার অন্যতম। বর্তমানে বিশ্বে সৌর ও বায়ু শক্তির অবদান ১৩ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে, যা ২০৫০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে (IEA, 2023)। টেকসই উৎপাদনের জন্য শূন্য-কার্বন কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে, যেমন টয়োটা ও বিএমডব্লিউ ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন-নিউট্রাল উৎপাদনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

কৃষিক্ষেত্রে, জৈব কৃষি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ৭৫ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে পরিচালিত হচ্ছে (FAO, 2023), যা রাসায়নিকের ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে। ড্রিপ ইরিগেশন ব্যবহারে ৪০-৫০ শতাংশে পানি সাশ্রয় সম্ভব, যা কৃষিতে টেকসই ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। নির্মাণ ক্ষেত্রে, LEED সার্টিফাইড সবুজ ভবন সাধারণ ভবনের তুলনায় ২৫-৩০ শতাংশ কম জ্বালানি ব্যবহার করে এবং ২০ শতাংশ কম কার্বন নিঃসরণ ঘটায়। প্যাকেজিংয়ে, পুনর্ব্যবহারযোগ্য ও বায়োডিগ্রেডেবল উপকরণ ব্যবহারের প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে, যেখানে কাগজের প্যাকেজিং ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৫০ বিলিয়ন ডলারের বাজারে পরিণত হবে (McKinsey, 2023)। পরিবহন খাতে, বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি ২০২৩ সালে ১৪ মিলিয়ন ইউনিট ছাড়িয়ে গেছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী মোট গাড়ির ৪০ শতাংশ হতে পারে (IEA, 2023)। এসব উদ্যোগ পরিবেশের ক্ষতি না করে উন্নয়নকে টেকসই রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এরপর সম্পদের ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যাতে শুধু ধনীরা নয়, সব মানুষ পরিবেশগত সুবিধা ভোগ করতে পারে। সম্পদের ন্যায্য বণ্টন পরিবেশের ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। বর্তমানে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশ মানুষের দখলে রয়েছে বিশ্বের মোট সম্পদের প্রায় ৭০ শতাংশ। এই বিপুল বৈষম্য পরিবেশের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করে। ধনী ব্যক্তিরা অতিরিক্ত ভোগ করে, যা বর্জ্য উৎপাদন বাড়ায় এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারের দিকে পরিচালিত করে। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি দরিদ্র দেশগুলোয় সম্পদের বৈষম্য ১০ শতাংশ কমানো যায়, তাহলে খাদ্য উৎপাদন ৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ২০ শতাংশ মানুষ তাদের জীবনযাত্রার মাধ্যমে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করে, তা দরিদ্রতম ২০ শতাংশ মানুষের তুলনায় প্রায় ২০ গুণ বেশি। অন্যদিকে, দরিদ্র জনগোষ্ঠী প্রায়শই তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য পরিবেশের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়, যেমন বনভূমি ধ্বংস করা বা মাটি ক্ষয় করা। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ১.৬ বিলিয়ন মানুষ বনভূমির ওপর নির্ভরশীল, যাদের অধিকাংশই দরিদ্র।

সম্পদের ন্যায্য বণ্টনের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো হ্রাস করা সম্ভব। যখন সবার কাছে সমান সুযোগ থাকে, তখন মানুষ তাদের প্রয়োজন মেটাতে পরিবেশের ওপর কম নির্ভরশীল হয়। এটি টেকসই উৎপাদন ও ব্যবহারের দিকে পরিচালিত করে, বর্জ্য হ্রাস করে এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি দরিদ্র দেশগুলোয় সম্পদের বৈষম্য ১০ শতাংশ কমানো যায়, তাহলে খাদ্য উৎপাদন ৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।

এছাড়া, ন্যায্য বণ্টন সামাজিক স্থিতিশীলতা আনতে পারে, যা পরিবেশ সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি স্থিতিশীল সমাজে, মানুষ পরিবেশের দীর্ঘমেয়াদি যত্নের দিকে মনোযোগ দিতে পারে, যা একটি স্বাস্থ্যকর এবং টেকসই পরিবেশের জন্য অপরিহার্য। কার্ল মার্কসের মূল পরিকল্পনা ছিল, রাষ্ট্রের মালিকানাধীন উৎপাদন ব্যবস্থা, যেখানে রাষ্ট্রই সব উৎপাদন ও সম্পদের ওপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ রাখবে। এই ব্যবস্থায় মুক্তবাজার অর্থনীতির মতো অসংখ্য বেসরকারি শিল্প ও কারখানার স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ থাকবে না, কারণ উৎপাদন ব্যবস্থার মূল নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রের হাতে থাকবে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে, অসংখ্য প্রতিষ্ঠান নিজস্ব মুনাফার স্বার্থে উৎপাদন চালিয়ে যায়, যা প্রায়ই পরিবেশের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অর্থনীতিতে, উৎপাদনের সব ক্ষমতা রাষ্ট্রের হাতে কেন্দ্রীভূত থাকবে, তাই পরিবেশের ওপর এর প্রভাবও সরাসরি রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন হবে। ফলে, যদি পরিবেশ দূষণ ঘটে, তাহলে রাষ্ট্রই একমাত্র দায়ী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হবে। অপরদিকে, পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে অসংখ্য পৃথক মালিকানাধীন কারখানা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী, কিন্তু তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা অনেক কঠিন, কারণ তারা বিভিন্ন নিয়মকানুন এড়িয়ে যেতে পারে বা এককভাবে প্রভাব তেমন বোঝা যায় না। প্রশ্ন হলো, একটি কেন্দ্রীয় কর্তৃত্বকে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ, নাকি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের ওপর কার্যকর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সহজ? রাষ্ট্রীয় মালিকানার অধীনে উৎপাদন ব্যবস্থা থাকলে একটি কেন্দ্রীয় নীতি প্রয়োগ করে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি সহজে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, যেখানে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কঠিন এবং পরিবেশ সংরক্ষণ নীতিগুলো কার্যকর করা আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। মার্কসবাদী দৃষ্টিকোণ, পরিবেশ দূষণ কোনো বিচ্ছিন্ন সমস্যা নয়; এটি পুঁজিবাদী শোষণমূলক ব্যবস্থার অনিবার্য পরিণতি। প্রকৃত পরিবর্তন আনতে হলে সামাজিক ন্যায়বিচার ও পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখা প্রয়োজন, যা একটি সমাজতান্ত্রিক ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সম্ভব।

ড. এ কে এম মাহমুদুল হক ।। অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

তরুণ প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম:আশরাফুর রহমান বাবু

মোঃ রবিউল আলম
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:৪২ অপরাহ্ণ
তরুণ প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম:আশরাফুর রহমান বাবু

মতলব দক্ষিণ উপজেলার একঝাঁক তরুনদের আয়োজনে মতলব টিভি কাপ মিনি ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলা সম্পন্ন হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী মতলব নিয়ে হোস্টেল মাঠে মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত ফাইনাল খেলায় ব্যাচ ২০২৪ দলকে ২-০ গোলে হারিয়ে ব্যাচ ২০২৩ বিজয় লাভ করে।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান কাজলের সভাপতিত্বে ও মতলব মিনি ফুটবল টুর্ণামেন্ট কমিটির আয়োজক তানভীর আহমেদ হৃদয়ের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক প্রথম আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি জনাব আশরাফুর রহমান বাবু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম।

উদ্ভোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ.কে.এম. তোফাজ্জল হোসেন লিটন।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পৌর যুবদল নেতা আমির খান, মতলব পৌর বিএনপি নেতা কায়েস প্রধান, মতলব পৌর ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক সাইদুল ইসলাম শিপলু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম লিংকন, মতলব পৌর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ বিল্লাল হোসেন প্রধান, ছাত্রদল নেতা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির সদস্য (ছাত্র প্রতিনিধি) মোঃ ফয়সাল খন্দকার, আমিনুল ইসলাম সাব্বির, অনিক খান ও ছাত্রনেতা মোল্লা মাহিন প্রমূখ

পৈত্রিক সম্পত্তি হারানোর শঙ্কায় ফরিদগঞ্জের প্রবাসী আরিফ

আনিসুর রহমান সুজন
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:৩৩ অপরাহ্ণ
পৈত্রিক সম্পত্তি হারানোর শঙ্কায় ফরিদগঞ্জের প্রবাসী আরিফ

গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে জীবিকার টানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে চাকুরি করে এদেশের জন্য রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন ফরিদগঞ্জের প্রবাসী আরিফ। বাড়িতে একমাত্র ভাই থাকলেও তিনিও শারিরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকেও দেখভাল করার কেউ নেই। ফলে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি দেখশোনা করার জন্য তিনি ছাড়া দ্বিতীয় ব্যক্তি নেই। মাঝে মাঝে ছুটিতে বাড়িতে আসার পর পৈত্রিক সম্পত্তি কাগজপত্র হালনাগাদও করেছেন। তারপরও তার সম্পত্তি বেহাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি নিজের পৈত্রিক ভুমির উপর নিজেই মালিকানা সত্ত্ব নিশ্চিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপাসা বাজারের।

সাইনবোর্ড লাগানোর কথা জানিয়ে ভুক্তভোগী প্রবাসী আরিফুর রহমান বলেন, রূপসা মৌজার সিএস ওয়ারিশ সূত্রে মালিক শর্তে বি এস ফাইনাল হওয়ার পরেও নিজেদের প্রকৃত মালিকানা থেকে বঞ্চিত শঙ্কায় আমি আমার পরিবারের পক্ষে রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রূপসা বাজারে সংলগ্ন ভূইয়া বাড়ির সম্পত্তিতে সাইনবোর্ড লাগিয়েছি।
তিনি জানান, তার পিতা নূর মিয়া ও তার দুই ভাই মালিক হন ২৭ শতক জমির। সেই অনুযায়ী ১৪০ নং রূপসা মৌজার সিএস ৮ নং খতিয়ানে দাগ ১৭১৩ আর এস ২৩ খতিয়ান এবং বিএস চূড়ান্ত ৩১৪১ দাগে খারিজি ৩৪৪৩ তার পিতা নূর মিয়া মালিক হন ৯ শতক জমির। এর মধ্যে দুই শতক জমি বিক্রি করার পরে অবশিষ্ট ৭ শতক জমির সকল বৈধ কাগজপত্র আমাদের নামে রেকর্ড রয়েছে। ওই জমির আমি খারিজ সম্পন্ন করে নিয়মিত খাজনাও পরিশোধ করছি। এবার দেশে আসার পর জেনেছি আমার চাচাতো ভাই গোলাম মাওলার ওয়ারিশরা হিস্যার বাইরে গিয়ে আমার অর্বতমানে আমাদের সম্পত্তি অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে। যা আইনগত ভাবে সঠিক নয়।

আরিফুর রহমানের নিকাটাত্মীয় রবিউল ইমাম বাবু জানান, আরিফুর রহমানের পৈত্রিক সম্পত্তির কাগজপত্র সঠিক রয়েছে। কিন্তু কোনভাবেই যেন একজন প্রবাসী দেশে না থাকার সুযোগে নিজের জন্মভূমিতে নিজের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত না হয় সেটাই কাম্য।

বর্তমান এই জমির মালিকানা দাবি করা আশরাফুল আলম ও মাওলানা মোস্তফা কাজী জানান, তারা ওই জমি ক্রয় সূত্রে মালিক।
স্থানীয়রা জানান, আশরাফুল আলম ও মোস্তফা কাজী মালিকানা স্বত্ত্বাবিহীন কাগজপত্র দিয়ে জমি ক্রয়ের কারণে এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

আরিফুর রহমানের ভাতিজা মৃত গোলাম মাওলার ওয়ারিশ গোলাম মাহমুদ গংদের না পাওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মতলব উত্তরে দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক

মতলব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:২৮ অপরাহ্ণ
মতলব উত্তরে দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক

মতলব উত্তর উপজেলায় সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদপুর সদর আর্মি ক্যাম্প হতে মাদক বিরোধী একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। উক্ত অভিযানে মতলব উত্তর উপজেলার উত্তর ঠেটালীয়া এলাকা থেকে মাদক ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুর রহমান (৩৯) এবং মোঃ ইউসুফ সাইদ (৪৭) কে আটক করা হয়।

আটককৃত ব্যক্তির নিকট হতে ৪০০ গ্রাম গাঁজা, ১ টি মোবাইল এবং ১৫০০০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য উদ্ধার কৃত মাদকদ্রব্য ও আটককৃত ব্যক্তিদেরকে মতলব উত্তর থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।