জালিয়াতি ও দুর্নীতির দায়ে
উপাধ্যক্ষ কামরুল আহসান চৌধুরীর অপসারণের দাবি এলাকাবাসীর


শাহরাস্তি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চিতোষী ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ কামরুল আহসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। কলেজ সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, অভিভাবক এবং স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, কামরুল আহসান চৌধুরী ২০২৪ সালের ২২ আগস্ট কোনো বৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়া ছাড়াই এবং কলেজ গভর্নিং বডির রেজুলেশন ব্যতিরেকেই উপাধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে তিনি তৎকালীন ইউএনও ও গভর্নিং বডির সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে ঘোষণা করেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও বিধিবহির্ভূত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্ব গ্রহণের পর কামরুল আহসান কলেজের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৭০ লাখ ৭০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন, যার একটি মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। এছাড়াও, শিক্ষক এবং কর্মচারীদের বিভিন্ন আর্থিক দাবি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিকভাবে মেনে না চলায় কলেজে একাধিকবার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়।
২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল এবং ২৪ মে তারিখে কলেজে শিক্ষকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগও উঠে এসেছে। অভিযোগে বলা হয়, এক ঘটনায় শিক্ষক মো. আবু ছায়েদ কলেজ অধ্যক্ষকে ঘুষি মেরে আহত করেন এবং অপর একটি ঘটনায় অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে হাজিরা খাতা ছিনিয়ে নেওয়া হয়, যা এখনো জমা দেওয়া হয়নি।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, বৈধ এমপিওভুক্ত অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়াকে জোরপূর্বক কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়, যার সিসিটিভি ফুটেজ এখনো সংরক্ষিত আছে। গভর্নিং বডির গঠনে স্বচ্ছতা ও নিয়ম অনুসরণ না করে তিনি নিজের অনুগত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করেন, যার ফলে প্রতিষ্ঠানটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে পড়ে এবং শিক্ষার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে কলেজে নতুন অধ্যক্ষের যোগদানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ অবস্থায় অভিভাবক ও এলাকাবাসীর দাবি, একজন ওয়ারেন্টভুক্ত ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি কীভাবে একটি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে থাকতে পারেন? তারা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত, কলেজে নিরপেক্ষ গভর্নিং বডি গঠন এবং কামরুল আহসান চৌধুরীর দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক কামরুল আহসান মুঠোফোনে জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের মামলাটি চলমান রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন