খুঁজুন
সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ২৪ চৈত্র, ১৪৩১

আন্দোলনকারীদের না পেটানো সেই পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি পদক

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৬:১৭ অপরাহ্ণ
আন্দোলনকারীদের না পেটানো সেই পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি পদক

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পুলিশ সদস্যের দায়িত্ব পালন করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। নেটিজেনরা ভিডিওটি শেয়ার করে পুলিশ সদস্যদের কাজের ধরণ দেখে প্রশংসা করেন। সেই পুলিশ সদস্যের নাম কনস্টেবল মো. রিয়াদ হোসেন। পুলিশে ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক-পিপিএম’ পদক পাচ্ছেন পুলিশ কনস্টেবল রিয়াদ হোসেন। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত।

আন্দোলন দমনে বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশিং কৌশল প্রয়োগ করায় রিয়াদকে এই পদক দেওয়া হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশে গত ২৭ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তৌফিক আহমেদ এতে সই করেন। যা রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে নাগরিকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে জনশৃঙ্খলা রক্ষায় অভিনব বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশিং কৌশলের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ সদস্য রিয়াদ হোসেনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম-সেবা)’ প্রদান করা হলো। প্রজ্ঞাপনের তারিখ থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে।

অতীতে বাংলাদেশ পুলিশ পদক-বিপিএম এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক-পিপিএম পদক পুলিশ সপ্তাহে পুলিশ সদস্যদের পরিয়ে দেওয়া হতো। রিয়াদের বেলায় এবার তা ভিন্নভাবে দেওয়া হচ্ছে।

লাঠিপেটা না করে বরং লাঠিপেটার অভিনয় করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে দেখা যায় একজন পুলিশ সদস্যকে। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রশংসায় ভাসেন কনস্টেবল রিয়াদ হোসেন।

এ ঘটনার পর রিয়াদ গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। তিনি বলেন, ঘটনার দিন একদল আন্দোলনকারী সচিবালয়ের গেটের দিকে আসতে থাকে এবং সচিবালয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় তাদের বাধা দেওয়া হয় এবং আমাদের সিনিয়র অফিসাররা বোঝান, সচিবালয় একটি সংরক্ষিত এলাকা, এখানে প্রবেশ করা নিষেধ। তো তাদের (আন্দোলনকারীদের) বোঝানো হয়, যেন সচিবালয়ে প্রবেশ না করে। কিন্তু বুঝিয়ে তাদের দমন করা যাচ্ছিলো না। সিনিয়র স্যাররা ছিলেন, তাদের নির্দেশনায় আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিই ওখানে এবং সম্পূর্ণ কম বলপ্রয়োগ করে যেন কারও ক্ষতিসাধন না হয়।

তিনি আরো বলেন, আমি রাস্তায় আঘাত করে, পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি ছিল তাতে আঘাত করে, ভয় দেখিয়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশ থেকে পাওয়া প্রশিক্ষণ থেকেই তিনি এমনটি করেন বলে জানান রিয়াদ।

জাতীয় নির্বাচনে দেওয়ালে লিখে প্রচারণা নয়, থাকবে না তোরণ

আলোকিত চাঁদপুর ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:২৩ অপরাহ্ণ
জাতীয় নির্বাচনে দেওয়ালে লিখে প্রচারণা নয়, থাকবে না তোরণ

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দেওয়ালে লিখে কোনো ধরনের প্রচারণা করা যাবে না। পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো গেট বা তোরণ নির্মাণ করা যাবে না। চলাচলের পথে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে এমন কিছুও করা যাবে না।

সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতসহ প্রচারণায় পোস্টার না রাখার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিমালা তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আচরণ বিধিমালার খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন তা অনুমোদনের জন্য নির্বাচন কমিশনে উপস্থাপন করা হবে।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।

আচরণবিধি মালায় খসড়া প্রস্তাবে দেখা গেছে, দেওয়ালে লিখে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। কালি বা রং দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে দেওয়াল ছাড়াও কোনো দালান, বাড়ি বা ঘরের ছাদ, সেতু, সড়ক দ্বীপ, রোড ডিভাইডার, যানবাহন বা অন্য কোনো স্থাপনায় প্রচারণামূলক কোনো লিখন বা অঙ্কন করা যাবে না।

প্রতীক হিসেবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার সংক্রান্ত বাধা-নিষেধ রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রতীক হিসেবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না। গেট বা তোরণ নির্মাণ, প্যান্ডেল বা ক্যাম্প স্থাপন ও আলোকসজ্জাকরণ সংক্রান্ত বাধা নিষেধ রয়েছে।

কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বা মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি এগুলো নির্মাণ করতে পারবে না। নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ৪০০ বর্গফুটের অধিক স্থান নিয়ে কোন প্যান্ডেল তৈরি করা যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে বিদ্যুতের সাহায্যে কোনো প্রকার আলোকসজ্জা করা যাবে না। কোনো সড়ক কিংবা জনগণের চলাচল ও সাধারণ ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত স্থানে নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন নয়।

একজন প্রার্থী দলীয় ও সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় নির্বিশেষে প্রতিটি ইউনিয়নে সর্বোচ্চ একটি এবং প্রতিটি পৌরসভা বা সিটি করপোরেশন এলাকার প্রতি ওয়ার্ডে একটির অধিক নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন করতে পারবে না।

প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্য বা কোনো শার্ট, জ্যাকেট, ফতুয়া, ক্যাপ ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী ক্যাম্পে ভোটারদের কোনরূপ কোমল পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন বা কোনরূপ উপঢৌকন দেওয়া যাবে না। বিলবোর্ড ব্যবহার সংক্রান্ত বাধা-নিষেধ রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে কোনো প্রকারের স্থায়ী বা অস্থায়ী বিলবোর্ড ভূমি বা অন্য কোন কাঠামো বা বৃক্ষ ইত্যাদিতে স্থাপন বা ব্যবহার করা যাবে না।

 

চাঁদপুরে অসুস্থ সাংবাদিকদের মাঝে কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:০৫ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে অসুস্থ সাংবাদিকদের মাঝে কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে চাঁদপুরের ৯ জন অসুস্থ ও অসচ্ছল সাংবাদিকদের মধ্যে কল্যাণ অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়েছে।

সোমবার বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ৯ জন সাংবাদিককে ৪ লাখ ৮০হাজার টাকা প্রদান করা হয়।

অনুদানের চেক সাংবাদিকের হাতে তুলে দেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে বলেন, বিগত প্রায় ১১ বছর কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা বিতরণ হয়েছে একটি মতাদর্শের লোকদের মাঝে। পর্যালোচনা করে দেখেছি ৬ হাজার চেকের মধ্যে এক পত্রিকার একজন পেয়েছে। একই লোক বার বার অনুদান পেয়ে একসময় আবেদনের যোগ্যতা হারিয়েছে। মূলত তখন বৈষম্য করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে বৈষম্য হবেনা। এখানে যিনি পেশায় সাংবাদিক এবং অসুস্থ তিনি অবশ্যই অনুদান পাবেন। আমরা কোন মতাদর্শ দেখব না। যোগ্যব্যক্তি আবেদনের মাধ্যমে সহায়তা পাবেন।

এই সাংবাদিক নেতা বলেন, আমরা সাংবাদিকদের কল্যাণে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমাদের সন্তানদের পড়ালেখার জন্য বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। বীমা করার জন্যও চিন্তা ভাবনা চলছে। আমরা চাইবো সাংবাদিকরা বিনামূল্যে চিকিৎসা পায় এমন একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার জন্য। যেখানে সাংবাদিক ছাড়া অন্যরা অর্থ ব্যয় করে চিকিৎসা নিবেন।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ৬০ জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অনেকে। সাংবাদিকতা করার জন্য আমরা এখন একটি মুক্ত ও স্বাধীন সময় পেয়েছি। এই সময়টাকে আমাদেরকে কাজে লাগাতে হবে। তবে এক্ষেত্রে সুযোগ পেয়ে অপসংবাদিকতা করা যাবে না।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশের বর্তমান সরকার নানা উদ্যোগ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। গণমাধ্যমেও সংস্কার করা হচ্ছে। সংস্কার এই দেশে সাংবাদিকদের কাজ করাও অনেকটা চ্যালেঞ্জিং হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশ গড়ার জন্য আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব ও প্রেসক্লাবের সভাপতি রহিম বাদশা।

আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে দেন বাংলাদেশের খবর পত্রিকার সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ও দৈনিক গণজাগরণ পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক ফরিদ আহমেদ রিপন।
প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাবেক সভাপতি জালাল চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন মিলন, শাহাদাত হোসেন শান্ত, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, জিএম শাহীন, মির্জা জাকির, লক্ষ্মন চন্দ্র সূত্রধর, আল ইমরান শোভন ও রিয়াদ ফেরদৌস।
আরো বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ, মুনির চৌধুরী, প্রথম আলো চাঁদপুর প্রতিনিধি আলম পলাশ, সময় টিভির নিজস্ব প্রতিনিধি ফারুক আহমেদ, প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল আউয়াল রুবেল, সাংগঠনিক সম্পাদক তালহা জুবায়ের, ইব্রাহিম রনি ও কোষাধ্যক্ষ সালাউদ্দিন খান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংবাদিকদের সাথে পরিচিত হন প্রধান অতিথি সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ।

ফরিদগঞ্জে ভুয়া কবিরাজের প্রতারণা ফাঁস, সাংবাদিককে হুমকি, থানায় অভিযোগ

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৮:৪০ অপরাহ্ণ
ফরিদগঞ্জে ভুয়া কবিরাজের প্রতারণা ফাঁস, সাংবাদিককে হুমকি, থানায় অভিযোগ

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৫ নম্বর রূপসা ইউনিয়নের আমিরা বাজারে দীর্ঘদিন ধরে ‘খাজা ঔষধালয়’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ভুয়া চিকিৎসা সেবা দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন শেখ মোঃ মোখলেছুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। যিনি নিজেকে ‘ডাক্তার’ এবং ‘কবিরাজ’ বলে পরিচয় দিয়ে নারী-পুরুষদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার নানা অলৌকিক সমাধান দেওয়ার দাবি করে আসছিলেন।

বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া একাধিক অভিযোগ অনুযায়ী, এই স্বঘোষিত কবিরাজ প্রলোভন ও মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বহু মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। রোগ নিরাময়ের নামে অসংখ্য নারী-পুরুষের সঙ্গে অবৈজ্ঞানিক ও অবাস্তব কথাবার্তা বলে তাদের মানসিকভাবে প্রভাবিত করতেন তিনি। এই প্রতারক নানা রকম “জ্বীন তন্ত্র”, “তাবিজ”, “ভালোবাসার টান তৈরি করা” ইত্যাদি নামে চিকিৎসা প্রদান করে আসছিলেন।

একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদক গোপনে অনুসন্ধান শুরু করেন। সংবাদকর্মীর পরিচয় গোপন রেখে, একজন সাধারণ রোগীর ভঙ্গিতে কবিরাজ মোখলেছুর রহমানের ক্লিনিকে সরাসরি গিয়ে দেখা করেন।

প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে কবিরাজ জানান, রোগী অর্থাৎ প্রতিবেদকের “ভাবি” নাকি তার সঙ্গে প্রেমে পড়ে যাবে, যদি নির্দিষ্ট কিছু তাবিজ ব্যবহার করা হয়। তিনি বলেন, “৬ হাজার টাকা দিলেই জ্বীন ব্যবহারে আপনার ভাবিকে আপনার প্রতি আকৃষ্ট করে তুলব। এক মাসের মধ্যে গভীর রাতে সে আপনাদের ঘরে চলে আসবে এবং ভবিষ্যতে আপনার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবে।”

এই ধরনের বক্তব্য শুধু প্রতারণামূলক নয়, ভয়াবহ অনৈতিক এবং মানসিকভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত হিসেবেও দেখা যেতে পারে।

এই সব কথোপকথন প্রতিবেদক নিজের মুঠোফোনে গোপনে ভিডিও রেকর্ড করেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর কবিরাজের দালাল আশপাশের লোকজন বিষয়টি আঁচ করতে পারে এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেদকের উপর চড়াও হয়। তারা তার ফোন কেড়ে নিয়ে রেকর্ড করা ভিডিওগুলো মুছে দেয়।

প্রতিবেদক যখন নিজের সাংবাদিক পরিচয় প্রকাশ করেন, তখন পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কবিরাজের অনুসারীরা তাকে সংবাদ প্রচার না করার জন্য হুমকি দিতে থাকে, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং তাকে “ভুয়া সাংবাদিক” বলে অপবাদ দেয়।

কবিরাজের একজন দালাল (মনির করিম নামে একজন ব্যক্তি) তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিবেদকের একটি ভিডিও আপলোড করে অপমানজনক ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে থাকে। একই সঙ্গে, কবিরাজ মোখলেছুর রহমান স্থানীয় চিহ্নিত ক্যাডার বাহিনীকে ফোন করে ডেকে আনে। তারা প্রতিবেদককে হুমকি দেয় যে, সংবাদ প্রকাশ করলে তাকে “চাঁদাবাজ” হিসেবে গণপিটুনি দিয়ে জনসমক্ষে অপদস্থ করা হবে।

এছাড়া, প্রতিবেদকের পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা করা হয়। এই সংকটজনক অবস্থায় প্রতিবেদক দ্রুত ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর প্রায় ৪৫ মিনিটের মধ্যে থানার এসআই সঞ্জয় ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং সাংবাদিককে উদ্ধার করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কবিরাজের ক্যাডার বাহিনী এলাকা থেকে পালিয়ে যায়।

পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কবিরাজ মোখলেছুর রহমান নিজেই প্রতারণার কথা স্বীকার করে। আশপাশের সাধারণ মানুষও পুলিশকে ঘটনার সত্যতা এবং সাংবাদিকের উপর হামলার বিষয়ে অবগত করেন।

ঘটনার পর ৬ এপ্রিল ফরিদগঞ্জ থানায় ডাঃ শেখ মোঃ মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এতে সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা, হুমকি দেওয়া, গোপনে ধারণ করা ভিডিও মুছে ফেলা, অপপ্রচার চালানো এবং একজন সংবাদকর্মীর ওপর মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়।

এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এমন প্রতারকদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নিয়ে খেলা করার সাহস না পায়।

এছাড়া অনেকে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে পরিচালিত এই ধরনের ভুয়া চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন ও নিরাপদ রাখতে।

এই ঘটনা শুধু একজন কথিত কবিরাজের মুখোশ উন্মোচনের ঘটনা নয়, বরং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, স্বাধীন অনুসন্ধান এবং মত প্রকাশের অধিকার নিয়েও এক বড় প্রশ্ন তুলেছে। একজন পেশাদার সংবাদকর্মী যখন প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য মাঠে নামেন, তখন তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব। একই সঙ্গে সমাজে থাকা এ ধরনের প্রতারকদের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।