চাঁদপুরে ইলিশের বেচা-কেনা শুরু, সরবরাহ কম থাকায় দাম আকাশছোঁয়া

মনিরুজ্জামান বাবলু
প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫ । ৬:২২ অপরাহ্ণ

দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে দেশের ইলিশের সবচেয়ে বড় পাইকারী বাজার চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাট সরগম হয়ে উঠছে। তবে প্রথম দিনে সরবরাহ কম হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতারা হতাশ। সরবরাহ বাড়লে কম দাম দাবী ব্যবসায়ীদের।

সকাল থেকে নদী থেকে ইলিশ ধরে জেলেরা আড়তে ধীরে ধীরে ভিড়ছে। ঘাটে ১ কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ টাকায়, ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৭শ টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়।

ক্রেতারা বলছেন, ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। এর আগে এমন দাম হয়নি ইলিশের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ ঘাটে না আসায় দাম চড়া। অন্যান্য বছর প্রথমদিনে ১শ /২শ মণ ইলিশ উঠলেও এবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৮ থেকে ১০ মণ ইলিশ ঘাটে এসেছে। জেলে ও ব্যবসায়ীদের দাবী, দুই মাসের অভিযান এবার কঠোরভাবে হয়নি।

এদিকে জাটকা সংরক্ষণে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে জেলা টাস্কফোর্সের ১ হাজার ৬৪ অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে ৩৯৭ জেলে। এর মধ্যে ৫ জনকে ভ্রাম্যমান আদালতে কারাদন্ড, ১২৪ জনকে ৩ লাখ ৩ হাজার ১০ টাকা জরিমানা এবং বাকি ২৬৮ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে চাঁদপুর জেলা মৎস্য দপ্তর ও নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার কার্যালয়।

জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণে দেশের অন্যতম অভয়াশ্রম কেন্দ্র মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ছিলো। সরকারি এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স। এ সময় ১ হাজার ৬৪ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অভয়াশ্রম এলাকায় জাটকা ধরায় জেলা মৎস্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে গ্রেপ্তার হয় ১২৯ জেলে। এর মধ্যে ৩৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৫জনকে কারাদন্ড এবং ১২৪ জনকে জরিমানা করে জেলা প্রশাসন কর্তৃক নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

জাটকা জব্দ হয় ৬.৭৬৬ মেট্টিক টন এবং অন্যান্য মাছ জব্দ হয় ৩.০৫২ মেট্টিক টন। কারেন্টজাল জব্দ হয় ১২ লাখ ৭০৫ মিটার, বেহুন্দি জাল ১৩টি এবং অন্যান্য জাল ৩৩৪টি। জব্দকৃত সরঞ্জাম নিলামে বিক্রি হওয়া ১লাখ ২০ হাজার টাকা জমা সরকারি কোষাগারে।

নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের সিনিয়র সহাকরী পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, জাটকা সংরক্ষণ অভিযানের দুই মাসে চাঁদপুর অংশে একটি থানা ও পাঁচটি পুলিশ ফাঁড়ি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ৯ কোটি ৯০ লাখ ৩৪ হাজার মিটার কারেন্টজাল জব্দ এবং ১৮ মেট্টিক টন জাটকা জব্দ করে। একই সময় জব্দ করা হয় মাছ ধরার ১২৩ টি নৌযান। জেলে গ্রেপ্তার হয় ২৬৮ জন। এদের বিরুদ্ধে ১১১ টি নিয়মিত মামলা হয়।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, জাতীয় সম্পদ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকা রক্ষায় অভয়াশ্রম এলাকায় কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। যেসব জেলে আইন অমান্য করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আশা করি এই কঠোর অবস্থানের সুফল জেলার ৪৩ হাজার জেলে পাবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. জাকির হোসেন ।  কপিরাইট © দৈনিক আলোকিত চাঁদপুর

প্রিন্ট করুন