মধ্যরাতে মেঘনায় ইলিশ ধরতে নামবে জেলেরা

আলোকিত চাঁদপুর রিপোর্ট
প্রকাশের সময়: বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ । ৮:১১ অপরাহ্ণ

জাটকা রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাসের অভয়াশ্রম শেষে ইলিশ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে চাঁদপুরের মেঘনা পাড়ের হাজার হাজার জেলে। জাল ও নৌকা মেরামত করার কাজে এখন তাদের ব্যস্ত সময় পার হচ্ছে।

সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ মধ্যরাতে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরতে নামবে জেলেরা। ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন জেলে ও মৎস্য বিভাগ।

কিছু জেলের অভিযোগ নিষেধাজ্ঞার সময়ে অসাধু জেলেরা কারেন্টজাল ব্যবহার করে জাটকা নিধন করেছে।

সরেজমিন সদর উপজেলার আনন্দবাজার, শহরের টিলাবাড়ি, পুরাণ বাজার রনাগোয়াল, দোকানঘর, মধ্য বাখরপুর, বহরিয়া ও হরিণা ফেরিঘাট এলাকার জেলে পাড়ায় দেখা গেছে অধিকাংশ জেলে তাদের নৌকা মেরামত ও জাল প্রস্তুত করার কাজ করছে। মেঘনা সংযুক্ত খালগুলোতে জেলেদের শত শত নৌকা। ভোর থেকেই মাছ ধরার সরঞ্জাম প্রস্তুতের কাজ করছে। দীর্ঘ দুই মাস অবসর সময় কাটানোর পর আবারও জেলে পাড়া সরগরম হয়ে উঠেছে।

সদরের আনন্দ বাজার এলাকার জেলে বিল্লাল হোসেন বলেন, এবছর জাটকা রক্ষায় যে অভিযান দিয়েছে, তাতে আমাদের মহল্লার শত শত জেলে বেকার হয়ে পড়ে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কারণে আমরা নদীতে নামিনি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে মাসে ৪০ কেজি চাল সহায়তায় সংসার চালোনা খুবই কঠিন।

দোকানঘর এলাকার জেলে সেলিম মিয়া বলেন, জাটকা বড় হওয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা দিলেও এক শ্রেণির জেলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে জাটকা নিধন করেছে এবং গোপনে বিক্রি করেছে। আমরা নিষেধাজ্ঞা মেনেছি এবং জাল প্রস্তুত করছি ইলিশ ধরার জন্য।

মধ্য বাখরপুর এলাকার জেলে শাহজাহান মিজি বলেন, দুই মাসের অভিযান পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমরা ঋণ নিয়ে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে জাল নৌকা প্রস্তুত করেছি। নদীতে নামলে বুঝা যাবে ইলিশ পাওয়া যায় কিনা। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।

একই এলাকার জেলে আজাদ খান বলেন, ‘‘তিন লাখ খরচ কইরা নাও ঠিক করছি। নদীতে নামমু, যদি ইলিশ পাই, তাইলে কিস্তিুও দিতে পারমু এবং খাইয়া বাঁচমু।”

সদরের মৎস্যজীবী নেতা তছলিম ব্যাপারী বলেন, ইলিশ পাওয়ার আশায় জেলেরা নদীতে নামবে এবং সেই হিসেবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা এসব জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরীর জন্য চেষ্টা করছি এবং উপকরণ দেয়া হচ্ছে। ইলিশ পাওয়া না পাওয়া হচ্ছে প্রাকৃতিক বিষয়।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, মার্চ-এপ্রিল দুই মাস পদ্মা-মেঘনায় আমরা কঠোর নজরদারিতে রেখেছি। জেলার নিবন্ধিত প্রায় ৪৩ জেলের প্রত্যেককে ৪ মাস ৪০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের নদীতে নামতে দেয়া হয়নি। আশা করি জেলেরা তাদের কাঙ্খিত ইলিশ পাবে।

উল্লেখ্য, ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনার প্রায় ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার। এই সময় ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ ছিলো।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. জাকির হোসেন ।  কপিরাইট © দৈনিক আলোকিত চাঁদপুর

প্রিন্ট করুন