
চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২ নং চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর ও বালিয়া ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে পৃথক স্থানে মা-ছেলে সহ তিনজনের মৃত্যু হয়। বুধবার পানিতে ডুবে যাওয়ার সময় ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মা খাদিজা বেগম (২৮) ও ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিকের মৃত্যু হয়েছে। একই দিন পানিতে ডুবে ২ বছর বয়সী শিশু মাকসুদার মৃত্যু হয়।
মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের মামা সুমন হোসেন জানান, আবু বক্কর সিদ্দিকীর মা খাদিজা বেগম কামরাঙ্গীরচর বাসা ভাড়া থাকেন। কিছুদিন আগে তার বাবা মারা গিয়েছেন। গত ২ দিন আগে বাবার কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে চাঁদপুরে আসেন। আবু বক্কর সিদ্দিক গোসল করতে গিয়ে সাঁতার না জানার কারণে পানির নিচে তলিয়ে যায়। খাদিজা বেগম তাকে বাঁচাতে গেলে সেও পানিতে ডুবে যায়। পরে চিৎকার শুনে স্থানীয়রা খাদিজা বেগম ও আবু বক্কর সিদ্দিককে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত খাদিজা বেগম চাঁদপুর শহরের বাখরপুর গ্রামের মৃত মান্নান বেপারীর মেয়ে।
একই দিনে দুপুরে পানিতে ডুবে শহরের দক্ষিণ বালিয়া সাবদী গ্রামের ফজলু সরকারের ২ বছর বয়সী শিশু মাকসুদার মৃত্যু হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাকসুদা সকলের অগোছরে কখন যেন পানির নিচে তলিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে পুকুর পাড়ে গিয়ে ভাসমান অবস্থায় মাকসুদাকে দেখতে পায়।
মাকসুদার ফুফাতো ভাই সাব্বির হোসেন জানান, ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির উঠোনেই ধানের কাজ করছিলাম। পাশাপাশি মাকসুদাকে কোলে নিয়ে আদর করি। প্রায় দু’ঘণ্টা কাজ করে ক্লান্ত হয়ে পড়ায় ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ ডাক চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেলে বাহিরে গিয়ে দেখি মাকসুদা পানি থেকে উঠিয়ে মাথায় নিয়ে পানি বের করার চেষ্টা চলছে।
পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মোহাম্মদ বেলাল জানান, এক ঘণ্টার ব্যবধানে হাসপাতালে পানিতে ডুবে যাওয়া তিনজন রোগীকে নিয়ে আসা হয়। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তারা মৃত্যুবরণ করেন। এই সময়টাতে শিশুরা বেশিরভাগ পানিতে ডুবেই মারা যান। সে ক্ষেত্রে পরিবারের লোকজনকে আরো সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।