উৎসবমুখর পরিবেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব-শক্তি, সময় ও রূপান্তরের প্রতীক শ্রী শ্যামা বা কালী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে চাঁদপুরে। শাস্ত্রমতে কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দেবী কালীর আবির্ভাব ঘটে, যিনি অসুর বিনাশ করে শুভ শক্তির জয় নিশ্চিত করেন।
সোমবার শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকায় প্রথমবারের মতো এ পূজার আয়োজন করেছে শ্রী পূজারী সংঘ। আয়োজকরা জানান, এবারের আয়োজন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন উৎসাহ ও ভক্তির সঞ্চার করেছে।
হিন্দু শাস্ত্রমতে দেবী কালী হলেন শক্তি, সময় ও রূপান্তরের প্রতীক। তিনি অজ্ঞান ও অন্ধকারকে দূর করে জ্ঞান, আলো ও ন্যায়ের প্রতিফলন ঘটান। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে তাঁর আবির্ভাব ঘটে। যখন সমগ্র সৃষ্টিজগৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে, তখনই দেবী কালী মহাশক্তিরূপে প্রকাশিত হয়ে অসুর বিনাশ ও মানবকল্যাণে আবির্ভূত হন। এই পূজার মাধ্যমে ভক্তরা জীবনের অশুভ শক্তি দূর করে শুভের জয় কামনা করেন।
কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় শ্রী শ্যামা বা কালী পূজা। এই রাতে পূজা মন্ডপের এলাকাজুড়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, আরতি, মন্ত্রপাঠ ও ভক্তিগীতিতে মুখরিত হয় পরিবেশ।
আয়োজকদের মধ্যে অভিজিৎ সাহা জয় জানায়, প্যান্ডেলটি সাজানো হয়েছে ঐতিহ্যবাহী শৈলীতে, সাথে যুক্ত হচ্ছে আধুনিক আলোকসজ্জা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ভক্তদের জন্য থাকবে প্রসাদ বিতরণসহ বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন। দেবী কালী সকলের জীবনে শান্তি, কল্যাণ ও শুভ শক্তির জয় বয়ে আনবেন এই প্রত্যাশা।
আয়োজকদের মধ্যে সুমন মজুমদার জানায়, এই নতুন পূজাকে ঘিরে এলাকায় তৈরি হয়েছে উৎসবের আমেজ। নারী-পুরুষ, শিশু ও প্রবীণ সবাই উৎসবের আমেজের জন্যে প্রস্তুত। পূজার দিন রাতভর থাকবে পূজার্চনা, ভক্তিসঙ্গীত ও দীপপ্রজ্জ্বলন।
সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা আরেক আয়োজক সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, শত্রু বিনষ্ট, ডাকিনী, যুগিনী শান্তির কল্পে শ্যামা মায়ের আবির্ভাব হয়। জগতের সকলের শান্তির জন্যে এবং অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে মা নিশিতে জাগ্রত হন। মূলত জগতের শান্তির বার্তা বয়ে আনার জন্যেই মায়ের আবির্ভাব। কর্নেশ, অঙ্গনেশ, অঞ্জলি, চক্ষুদান, প্রান প্রতিষ্ঠা এবং জঙ্গ বিত্তা দিতে সমাপ্তি হবে মায়ের আরাধনা।
তিনি আরো জানান, এটা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয় বরং আমাদের ঐক্য, ভক্তি ও সৌহার্দ্যের প্রতীক। গত তিন বছর আমরা দুর্গাপূজা সুন্দরভাবে উদযাপন করেছি। তখন থেকেই আমাদের প্রত্যাশা ছিলো মা কালীকে আরাধনা করার। অবশেষে সেই আশা পূরণ হচ্ছে। মা যেন অন্ধকারকে আলোয় রূপান্তরিত করে, সকল শত্রুর বিনাশ ঘটিয়ে দেশের মঙ্গল বয়ে আনে, এটাই আমাদের প্রার্থনা।
এদিকে উৎসবটি শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘনভাবে সম্পন্ন করতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। পূজামণ্ডপ এলাকায় রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা টহল, মনিটরিং ও জননিরাপত্তার ব্যবস্থা।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মো. জাকির হোসেন
dailyalokitochandpur@gmail.com, +8801613090707
Copyright © 2025 Dailyalokitochandpur. All rights reserved.