চাঁদপুর সদর উপজেলার ৬নং মৈশাদী ইউনিয়নের হামানকর্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মিজানুর রহমান খানের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীকে অশ্লীল ইঙ্গিত, শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিতসহ নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ম্যানেজিং কমিটির বিষয়ে স্থানীয় অভিভাবক সদস্যদের সাথে কোন যোগাযোগ না করে নিজে মনমতো কমিটি করেন। বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে তার ভালো সর্ম্পক নেই।
অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, স্বেচ্ছাচারীতা ও সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানা অনিয়মেরও অভিযোগ রয়েছে মাধ্যমিকের এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান আমাদের রেজিস্ট্রেশনের কথা বলে বিদ্যালয়ে এনে সারাদিন ক্লাশে বসিয়ে রেখেছেন, অথচ তিনি নিজেই বিদ্যালয়ে আসেন নি। এমনকি ওনার ইচ্ছেমতো সময়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসেন। তিনি বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বদনাম করেন যে, শিক্ষকরা নাকি ঠিকমতো পাঠদান করাতে পারেন না।
বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী আফরোজা আক্তার বলেন, আমরা ক্লাশ সিক্সে ছিলাম স্যার আমাদের কাছ থেকে আইডি কার্ড দেয়ার কথা বলে ২০০ টাকা করে নিয়েছে আর এখনোও বিদ্যালয়ের আইডি কার্ড দেননি। আমরা যদি খেলাধুলা করতে চাই, মিজানুর রহমান স্যার আমাদেরকে খেলাধুলা করতে বারন করেন। মেয়েদের নাকি খেলাধুলা ইসলাম জায়েজ নাই, খেলাধুলা করা ইসলামে হারাম। খেলাধুলা করার জন্য ক্রীড়া সামগ্রী চাইলে তিনি বলেন ক্রীড়া সামগ্রীর বাজেট নেই। আমাদেরকে নামাজ পড়তে বললেও অথচ বিদ্যালয়ে একটি নামাজের কক্ষ নেই। টিফিন করার ব্যবস্থা নেই। সবমিলিয়ে প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতায় চলে আমাদের বিদ্যালয়টি।
অভিযোগ সূত্রে বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার আরো জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কথা বলায় ক্লাসের মেধাবী শিক্ষার্থীকে সবার সামনে স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ লেখিয়েছে তিনি।
বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর আরে শিক্ষার্থী রহিমা আক্তার জানান, বছরের শুরুতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়নি, পুরস্কার বিতরণ তারিখ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আমাদের কে হুমকি ধুমকি দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন বাতিলের হুমকি দেয়।
এছাড়াও বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরাও প্রধান শিক্ষকের কাছে একপ্রকার জিম্মি বলে ধারনা করা হচ্ছে। তিনি তার ক্ষমতা অব্যবহার করে সহকারী শিক্ষক মাহবুবুর রহমানকে শোকজ করে আবার সেই শোকজের লেটার তিনি চিরে পেলেন। তার এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ থেকে মুক্তি পেতে প্রশাসনের সুর দৃষ্টি কামনা করছেন ভুক্তভোগীরা।
এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মোঃ রাসেল মিয়া ও সাইফুল ইসলাম বাবুল মৃর্ধারা বলেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম, দূর্নীতির অভিযোগ পেয়েছি। তিনি বিশেষ করে ছাত্রীদের কে শারীরিক ও মানসিক টর্চারের অভিযোগ পেয়েছি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারীতা ও সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানা অনিয়মেরও অভিযোগ রয়েছে। আমরা এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনের মাধ্যমে তার উপযুক্ত শাস্তি কামনা ও পদত্যাগ দাবি করছি।
অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান খানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মো. জাকির হোসেন
dailyalokitochandpur@gmail.com, +8801613090707
Copyright © 2025 Dailyalokitochandpur. All rights reserved.