কচুয়া উপজেলার গোহট উত্তর ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে প্রায় ৩শত বিঘা কৃষি জমি পানির নিচে ডুবে আছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ঐ গ্রামের জমিগুলো পানিতে তলিয়ে থাকার কারণে কৃষকেরা ফসল উৎপাদন করতে পারছে না। এর মাঝেও অনেক কষ্ট করে ঐসব জমিতে ধানের চারা রোপন করলেও তা পচে নষ্ট হচ্ছে।
এছাড়াও থেমে থেমে আসা বৃষ্টির পানি জমে থাকার ফলে আগে থেকে রোপনকৃত ধানের চারাগুলো পানির নিচে ডুবে গিয়ে নষ্ট হয়ে বিপাকে পড়ছেন ওই গ্রামের অনেক কৃষকরা। তাদের চোখের সামনেই নষ্ট হয়ে গেছে শত শত বিঘা জমির ধানের চারা। ফলে কৃষকের বুকে জমছে চাপা আর্তনাদ। তাদের চোখে-মুখে ফসল হারানোর শঙ্কার ছাপ।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বর্ষা মৌসুমে উপজেলার নূরপুর গ্রামে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তারা অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন, যেখানে সেখানে যে যার মতো বাড়ি-ঘর নির্মাণ আর এলাকার বিভিন্ন ব্রিজ ও কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে এলাকার কৃষি জমি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার গোহট ইউনিয়নের নূরপুর ৯নম্বর ওয়ার্ডের ৩ শত বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। কৃষি জামির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় জমিগুলো বর্তমান পানির নিচে ডুবে আছে। জমির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার ফলে প্রায় তিন বছর ধরে ঐ গ্রামের কৃষকেরা তাদের জমিতে ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না। এর মাঝেও অন্যের কাছ থেকে ধার দেনা ও মনের আশা নিয়ে কষ্ট করে ঐসব জমিতে ধানের চারা রোপন করলেও রোপনকৃত চারাগুলো পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে পচে নষ্ট হচ্ছে। পানি বন্দি থাকার ফলে ঐ এলাকার আশেপাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছও মারা যাচ্ছে।
এছাড়া বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই গ্রামের ভিতরে পানি ঢুকে দীর্ঘ সময় ধরে পানির নিচে তলিয়ে থাকে ঐসব পাড়ার রাস্তাগুলো। এর ফলে কৃষকদের উৎপাদিত ধান, আলু ও অন্যান্য কৃষি পণ্য হাট-বাজারে নিয়ে যেতে নানা সমস্যায় পড়তে হয় পাড়ার কৃষকদের। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
ওই গ্রামের কৃষক জহিরুল ইসলাম, অলিউল্লাহ, সেলিম হোসেন, মহিন উদ্দিন, হানিফ ও সুমনসহ অনেকেই বলেন, নূরপুর গ্রামে ফসলি মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য সরকার কালভার্ট নির্মাণ করেছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী আবুল বাশার সেই ব্রিজ ও কালভার্টের মুখে মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে এলাকার কৃষি জমিগুলো জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকা ও জলাবদ্ধতায় কৃষকের সমস্যাটি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমি ঘটনাস্থলে কৃষকদের সাথে কথা বলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও সরকারি কালভার্ট বন্ধ করার বিষয়টি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মো. জাকির হোসেন
dailyalokitochandpur@gmail.com, +8801613090707
Copyright © 2025 Dailyalokitochandpur. All rights reserved.