মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচরের পালস্-এইড জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এ চিকিৎসা নিতে আসা এক প্রসূতির বিল ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।
ভাইরাল হওয়া বিল অনুযায়ী, তানজিলা নামে এক রোগী শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি হন। বিলের বিবরণে উল্লেখ রয়েছে—ভর্তি ফি ৫’শ টাকা, কেবিন ভাড়া ১হাজার টাকা, হাসপাতাল NVD চার্জ ৭হাজার টাকা, ওষুধ বাবদ ৫’শ টাকা এবং ‘সার্জন ফি’ ৬হাজার টাকা। সর্বমোট বিল দাঁড়ায় ১৫ হাজার টাকা।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘সার্জন ফি’, যেটা সাধারণত সিজারিয়ান অপারেশনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও এই রোগীর ক্ষেত্রে নরমাল ডেলিভারি (NVD) হয়েছে বলে দাবি করেন রোগীর পরিবার।
চিকিৎসা নীতিমালা অনুযায়ী, রোগীর চিকিৎসা ও সার্ভিস সংক্রান্ত প্রতিটি খরচ স্বচ্ছভাবে উপস্থাপন এবং নির্দিষ্ট খাত অনুযায়ী ব্যাখ্যা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এমন ঘটনা একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে অনীহা সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর প্রতি আস্থা হারাচ্ছে জনগণ।
এলাকাবাসীর দাবি, পালস্-এইড হাসপাতালের এ ধরনের বিলিং প্রক্রিয়ার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ হয়রানির শিকার না হয়।
তবে রোগীর পরিবারসহ অনেকেই এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন। তাদের দাবি, যদি জটিলতা থেকে থাকে, তাহলে সেটা আলাদা খাতে উল্লেখ করা উচিত ছিল। ‘সার্জন ফি’ নামে চার্জ করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
প্রসূতির আত্মীয় মো. মোজাম্মেল কাজী বলেন, আমার আত্মীয় তানজিলার প্রসব বেদনা উঠলে হাসপাতালে নিয়ে যাই। কয়েক মিনিটের মধ্যেই নরমাল ডেলিভারি হয়ে যায়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১৫ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দেয়। এত বেশি বিলের কারণ জানতে চাইলে তারা খারাপ ব্যবহার করে।
এছাড়া মোহনপুর থেকে আসা রোগী মো. সুমন অভিযোগ করেন, আমার স্ত্রীর ডেলিভারির জন্য গেলে কর্তৃপক্ষ সরাসরি বলে সিজার করতে হবে। উপায়ান্তর না পেয়ে রাজি হয়ে যাই। পরে ২৫ হাজার টাকা বিল নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের ম্যানেজার মো. লিমন বলেন, আমরা সাধারণত নরমাল ডেলিভারির জন্য রোগীদের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা নেই। তবে এই রোগীর ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা ছিল, তাই অতিরিক্ত সার্ভিস বাবদ ১৫ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা সামাজিক মাধ্যমে দেখেছি। আমি চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণে আছি। সাধারণত নরমাল ডেলিভারিতে এত টাকা তো বিল নেওয়ার কথা না। যদি অনিয়ম হয়ে থাকে, তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মো. জাকির হোসেন
dailyalokitochandpur@gmail.com, +8801613090707
Copyright © 2025 Dailyalokitochandpur. All rights reserved.